Ajker Patrika

গাড়ির কাগজ চুরি করে চোরাই ফোনে চাঁদা আদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২২, ১৫: ৪৫
গাড়ির কাগজ চুরি করে চোরাই ফোনে চাঁদা আদায়

প্রথমে যাত্রীবেশে বাসে উঠত তারা। তারপর কৌশলে চুরি করত গাড়ির মূল কাগজপত্র। পরে তাদের চাঁদা দিয়ে সেসব কাগজ ফেরত নিতে বাধ্য করত এই প্রতারকেরা। চাঁদা আদায় করতেও তারা ব্যবহার করত চোরাই ফোন। শনিবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার বসিলা এলাকা থেকে এমন এক চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ রোববার বেলা ১১টায় সিআইডির সদর দপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন রাকিব মিয়া ওরফে তুফান (২৭), মো. শুকুর আলী (২৮), মো. হৃদয় হোসেন (২১) ও মো. শামীম (২৫)। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত সিমসহ দুটি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন বাসের রেজিস্ট্রেশন সনদ, ফিটনেস সনদ ও ট্যাক্স টোকেনের মূল কপি জব্দ করা হয়।

সিআইডি জানায়, আটকে রাখা গাড়ির কাগজপত্র ফেরত দেওয়ার শর্তে মিরপুর লিংক, খাজাবাবা ও বিকল্প পরিবহন বাসের মালিকদের মাসিক চাঁদা দিতে বাধ্য করে তারা। অন্য মালিকেরা মাসিক চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় চক্রের মূল হোতা তুফান নাম পরিচয় দিয়ে মালিকদের হুমকি প্রদান করতেন।

‘আমি তুফান, আমাকে ঢাকা শহরের অধিকাংশ পরিবহনের মালিক মাসিক চাঁদা দেয়। কোনো পরিবহনের মালিক মাসিক চাঁদা না দিলে আমি সমস্ত গাড়ীর কাগজ চুরি করেই যাব, ঢাকা শহরের কোনো পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না’—বলতেন তুফান।

সিআইডি আরও জানায়, তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গাড়ির মালিকেরা ঢাকার বিভিন্ন থানায় বিষয়টি অবহিত করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। কিন্তু তাতেও কোনো ফল না পাওয়ায় বাসের মালিকেরা বিষয়টি সিআইডি পুলিশকে অবহিত করেন।

অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন বলেন, ‘একটি সংঘবন্ধ চক্র ২০২০ সাল থেকে ঢাকা শহরে চলাচল করা মিরপুর লিংক, শিকড় পরিবহন, খাজাবাবা পরিবহন, প্রজাপতি পরিবহন, রবরব পরিবহনসহ অন্যান্য পরিবহনের বাসে যাত্রীবেসে উঠে অভিনব কায়দায় বাসের ব্লু-বুক ও রেজিস্ট্রেশন সনদসহ অন্যান্য কাগজপত্র চুরি করে। এরপর তারা গাড়ির মালিক, ম্যানেজার ও ড্রাইভারদের নম্বর সংগ্রহ করে চোরাইকৃত প্রতিটি গাড়ির কাগজের জন্য ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।’

অতিরিক্ত ডিআইজি আরও বলেন, ‘মালিকেরা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে চক্রটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ক্ষতিসাধন ও চালকদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। কাগজপত্র ছাড়া রাস্তায় বাস চালাতে না পারায় বাসের মালিকেরা চক্রের দেওয়া মোবাইল নম্বরে কথা বলে চাঁদার পরিমাণ কমিয়ে প্রতি গাড়ির কাগজের জন্য ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে দিতেন। তখন চত্রুটি টাকা পেয়ে গাড়ির কিছু কাগজপত্র ফেরত দিত এবং কিছু কাগজপত্র আটকে রাখত।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, দীর্ঘদিন আসামিরা নিজেদের পরিচয় গোপন করার জন্য ঢাকা শহরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকা থেকে মোবাইল ফোন চুরি করে ওই মোবাইল দিয়ে বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

তারা কীভাবে সিমগুলো নিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ইমাম হোসেন বলেন, ‘অনেকে বাবা-মা ও তার স্ত্রীর নামে সিম রেজিস্ট্রেশন করে থাকে। না দেখে আমরা এখন বলতে পারছি না।’

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাহ আলী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিআইডির এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রশ্নে যে প্রতিক্রিয়া জানাল যুক্তরাষ্ট্র

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত