ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুর শহরে একসময় দাপিয়ে বেড়াত ‘হেলমেট বাহিনী’। এরা রাস্তায় বের হলেই ছড়িয়ে পড়ত আতঙ্ক। এক সারিতে ১০-১২টি মোটরসাইকেল, প্রতিটিতে তিনজন। সবার মাথায় হেলমেট। এই বাহিনী নিয়েই চলতেন সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এপিএস এ এইচ এম ফোয়াদ। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, জমি দখল থেকে শুরু করে এমন কোনো অপরাধ নেই যার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তিনি ছিলেন ‘মহাক্ষমতাধর’।
সেই ফোয়াদ অবশেষে ধরা পড়েছেন। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর নেওয়া হয় ফরিদপুরে। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) জামাল পাশা সেখানে সংবাদ মাধ্যমকে ফোয়াদের গ্রেপ্তারের খবর জানান। গতকাল তাঁকে আদালতে পাঠিয়ে দুই দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে।
ফরিদপুরের মানুষ একপর্যায়ে ধরেই নিয়েছিল ফোয়াদ শেষ পর্যন্ত ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকবেন। কিন্তু ধর্মের কল ঠিকই বাতাসে নড়েছে। ফোয়াদ হলেন ফরিদপুরের রাজনীতিতে খন্দকার মোশাররফের বলয়ের গ্রেপ্তার হওয়া সর্বশেষ ‘সিপাহসালার’। মোশাররফ হোসেনের পাশাপাশি তাঁর জামাতা সিরাজগঞ্জের সাংসদ হাবিবে মিল্লাতেরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন ফোয়াদ। এর আগে এই বলয়ের ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের কয়েকজন জামিনে ছাড়াও পেয়েছেন। মোশাররফ হোসেনের প্রধান দুই সহযোগী সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হোসেন রুবেল গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাগারেই আছেন।
গতকাল ব্রিফিংয়ে ফরিদপুর জেলা পুলিশ জানিয়েছে, ফোয়াদের বিরুদ্ধে আটটি মামলা আছে। তিনটি মামলায় পরোয়ানা ঝুলছে। এর মধ্যে একটি খুনের মামলায় তাঁকে রিমান্ডে আনা হয়েছে। পরিবহনে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে ২০১৬ সালের ১২ জুলাই সেই খুনের ঘটনা ঘটেছিল রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে। ছোটন বিশ্বাস নামের এক খ্রিষ্টান যুবককে খুন করা হয় বরকত ও তাঁর ভাই রুবেলের নির্দেশে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সেই মামলার অভিযোগপত্র থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হয়। পরে বাদীর আবেদনের ভিত্তিতে মামলা নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। সেই মামলায় ফোয়াদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ফোয়াদের বিরুদ্ধে আরও আছে মানি লন্ডারিং মামলা। রুবেল বরকতের দুই হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিং মামলার তিনিও অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফের ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খন্দকার নাজমুল হাসান লেভি, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ফাহিন, শহর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল হাসান ডেভিড, মোহাম্মাদ আলী মিনার ও তারিকুল ইসলাম নাসিম।
পুলিশের ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ২০২০ সালের ১৬ মে রাতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। ১৮ মে সুবল চন্দ্র সাহা কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার আসামি হিসেবে ওই বছরের ৬ জুন রাতে শহর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বরকত, রুবেলসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকেই ফোয়াদ আত্মগোপন করেন। তিনিও সেই মামলার আসামি।
ফোয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত ছিল না। তাঁর হেলমেট বাহিনী ফরিদপুরে দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, হামলা, ভয়ভীতি দেখানো থেকে শুরু করে সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল। রুবেল ও বরকত বিভিন্ন মামলার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সেসব কথা স্বীকারও করেন।
ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক তপন দেবনাথের বাড়িতে ২০১৯ সালের ১৫ মে হামলা করে হেলমেট বাহিনী। তারা পরিবারের সবাইকে বাড়ি থেকে বের করে দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। তপন দেবনাথের অপরাধ, তিনি ফরিদপুরের সাংবাদিক প্রবীর শিকদারের ভগ্নিপতি। প্রবীর শিকদার এই বাহিনীর বিরুদ্ধে অনলাইনে লেখালেখি করেছিলেন। হেলমেট বাহিনী এ ঘটনার এক সপ্তাহ আগে প্রবীর শিকদারের ভাই সুবীর শিকদারের বাড়িতেও হামলা করে। অনেক দিন তপন দেবনাথ নিজের বাড়িতে উঠতে পারেননি। পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক তাঁদের বাড়িতে তুলে দিতে ব্যর্থ হন। পরে ১ মাস ৯ দিন পর পুলিশ মহাপরিদর্শকের নির্দেশে তপন দেবনাথ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজের বাড়িতে ওঠেন।
কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম চৌধুরী একজন ব্যবসায়ী। ৫০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর রাতে হাতুড়ি বাহিনীর ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী তাঁর প্রতিষ্ঠানে হামলা করে। সন্ত্রাসীরা তাঁকে, তাঁর ছেলেকে এবং গাড়িচালককে মারধর করে সোয়া পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে যায়। ঘটনার প্রায় এক বছর পর তিনি মামলা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শামসুল আলমের প্রতিষ্ঠানে হামলার কথা দুই ভাই স্বীকার করেছেন। হেলমেট বাহিনীর প্রধান ফোয়াদ দলবল নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শহীদ সুফি সড়কের মজুমদার ড্রাগ হাউসের ব্যবস্থাপক মানিক চক্রবর্তীর কাছে ৮০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি হাতুড়ি বাহিনী হামলা চালিয়ে মালিক দীপক মজুমদারকে আহত করে।
ছাত্রলীগের রাজনীতি করা ফোয়াদ ছিলেন ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত নেতা। ২০০৮ সালের দিকে বরকত-রুবেল বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আশ্রয় নিয়ে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এ এইচ এম ফোয়াদের সঙ্গে জোট বাঁধেন। সে সময় তাঁদের প্রধান ছিলেন মোশাররফ হোসেনের তৎকালীন এপিএস সত্যজিৎ মুখার্জি ও আওয়ামী লীগ নেতা মোকাররম বাবু। তাঁদের দুজনকেই একটার পর একটা মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে একচ্ছত্র হন ফোয়াদ। জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হওয়ার আগে তিনি জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। মন্ত্রীর এপিএস হওয়ার পর তিনি হয়ে যান ধরাছোঁয়ার বাইরের লোক। রুবেল-বরকত গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি ফরিদপুরের নিয়ন্ত্রকদের অন্যতম ছিলেন। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বিপুল পরিমাণ আয়ও করেন।
তবে ফরিদপুরের বাসিন্দারা বলছেন, রুবেল-বরকত গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত ফরিদপুরে কোনো ব্যক্তির ভাগ্য বা অবস্থান কী হবে, টেন্ডার কে পাবে, কে কোন পদে বসবে, সবকিছুর নিয়ন্তা ছিলেন বরকত-রুবেল ও ফোয়াদ। রুবেল-বরকতসহ কিছু নেতা গ্রেপ্তারের পর সেই রাজনীতিতে তিনটি পক্ষ তৈরি হয়েছে। একটি ধারায় আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন। আরেক পক্ষে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শামীম হক ও পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস।
তৃতীয় পক্ষে আছেন ‘মোশাররফপন্থী’ হিসেবে পরিচিত নেতা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা।
এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী ফরিদপুর সদরে রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে সবাই বলছেন, ফরিদপুরে সব অনৈক্যের পেছনেই আছে টাকাপয়সা নিয়ে গোলমাল। এখানে আদর্শ বলে কিছুই নেই।
ফরিদপুর শহরে একসময় দাপিয়ে বেড়াত ‘হেলমেট বাহিনী’। এরা রাস্তায় বের হলেই ছড়িয়ে পড়ত আতঙ্ক। এক সারিতে ১০-১২টি মোটরসাইকেল, প্রতিটিতে তিনজন। সবার মাথায় হেলমেট। এই বাহিনী নিয়েই চলতেন সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এপিএস এ এইচ এম ফোয়াদ। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, জমি দখল থেকে শুরু করে এমন কোনো অপরাধ নেই যার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তিনি ছিলেন ‘মহাক্ষমতাধর’।
সেই ফোয়াদ অবশেষে ধরা পড়েছেন। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর নেওয়া হয় ফরিদপুরে। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) জামাল পাশা সেখানে সংবাদ মাধ্যমকে ফোয়াদের গ্রেপ্তারের খবর জানান। গতকাল তাঁকে আদালতে পাঠিয়ে দুই দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে।
ফরিদপুরের মানুষ একপর্যায়ে ধরেই নিয়েছিল ফোয়াদ শেষ পর্যন্ত ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকবেন। কিন্তু ধর্মের কল ঠিকই বাতাসে নড়েছে। ফোয়াদ হলেন ফরিদপুরের রাজনীতিতে খন্দকার মোশাররফের বলয়ের গ্রেপ্তার হওয়া সর্বশেষ ‘সিপাহসালার’। মোশাররফ হোসেনের পাশাপাশি তাঁর জামাতা সিরাজগঞ্জের সাংসদ হাবিবে মিল্লাতেরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন ফোয়াদ। এর আগে এই বলয়ের ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের কয়েকজন জামিনে ছাড়াও পেয়েছেন। মোশাররফ হোসেনের প্রধান দুই সহযোগী সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হোসেন রুবেল গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাগারেই আছেন।
গতকাল ব্রিফিংয়ে ফরিদপুর জেলা পুলিশ জানিয়েছে, ফোয়াদের বিরুদ্ধে আটটি মামলা আছে। তিনটি মামলায় পরোয়ানা ঝুলছে। এর মধ্যে একটি খুনের মামলায় তাঁকে রিমান্ডে আনা হয়েছে। পরিবহনে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে ২০১৬ সালের ১২ জুলাই সেই খুনের ঘটনা ঘটেছিল রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে। ছোটন বিশ্বাস নামের এক খ্রিষ্টান যুবককে খুন করা হয় বরকত ও তাঁর ভাই রুবেলের নির্দেশে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সেই মামলার অভিযোগপত্র থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হয়। পরে বাদীর আবেদনের ভিত্তিতে মামলা নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। সেই মামলায় ফোয়াদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ফোয়াদের বিরুদ্ধে আরও আছে মানি লন্ডারিং মামলা। রুবেল বরকতের দুই হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিং মামলার তিনিও অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফের ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খন্দকার নাজমুল হাসান লেভি, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ফাহিন, শহর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল হাসান ডেভিড, মোহাম্মাদ আলী মিনার ও তারিকুল ইসলাম নাসিম।
পুলিশের ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ২০২০ সালের ১৬ মে রাতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। ১৮ মে সুবল চন্দ্র সাহা কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার আসামি হিসেবে ওই বছরের ৬ জুন রাতে শহর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বরকত, রুবেলসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকেই ফোয়াদ আত্মগোপন করেন। তিনিও সেই মামলার আসামি।
ফোয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত ছিল না। তাঁর হেলমেট বাহিনী ফরিদপুরে দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, হামলা, ভয়ভীতি দেখানো থেকে শুরু করে সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল। রুবেল ও বরকত বিভিন্ন মামলার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সেসব কথা স্বীকারও করেন।
ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক তপন দেবনাথের বাড়িতে ২০১৯ সালের ১৫ মে হামলা করে হেলমেট বাহিনী। তারা পরিবারের সবাইকে বাড়ি থেকে বের করে দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। তপন দেবনাথের অপরাধ, তিনি ফরিদপুরের সাংবাদিক প্রবীর শিকদারের ভগ্নিপতি। প্রবীর শিকদার এই বাহিনীর বিরুদ্ধে অনলাইনে লেখালেখি করেছিলেন। হেলমেট বাহিনী এ ঘটনার এক সপ্তাহ আগে প্রবীর শিকদারের ভাই সুবীর শিকদারের বাড়িতেও হামলা করে। অনেক দিন তপন দেবনাথ নিজের বাড়িতে উঠতে পারেননি। পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক তাঁদের বাড়িতে তুলে দিতে ব্যর্থ হন। পরে ১ মাস ৯ দিন পর পুলিশ মহাপরিদর্শকের নির্দেশে তপন দেবনাথ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজের বাড়িতে ওঠেন।
কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম চৌধুরী একজন ব্যবসায়ী। ৫০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর রাতে হাতুড়ি বাহিনীর ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী তাঁর প্রতিষ্ঠানে হামলা করে। সন্ত্রাসীরা তাঁকে, তাঁর ছেলেকে এবং গাড়িচালককে মারধর করে সোয়া পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে যায়। ঘটনার প্রায় এক বছর পর তিনি মামলা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শামসুল আলমের প্রতিষ্ঠানে হামলার কথা দুই ভাই স্বীকার করেছেন। হেলমেট বাহিনীর প্রধান ফোয়াদ দলবল নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শহীদ সুফি সড়কের মজুমদার ড্রাগ হাউসের ব্যবস্থাপক মানিক চক্রবর্তীর কাছে ৮০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি হাতুড়ি বাহিনী হামলা চালিয়ে মালিক দীপক মজুমদারকে আহত করে।
ছাত্রলীগের রাজনীতি করা ফোয়াদ ছিলেন ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত নেতা। ২০০৮ সালের দিকে বরকত-রুবেল বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আশ্রয় নিয়ে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এ এইচ এম ফোয়াদের সঙ্গে জোট বাঁধেন। সে সময় তাঁদের প্রধান ছিলেন মোশাররফ হোসেনের তৎকালীন এপিএস সত্যজিৎ মুখার্জি ও আওয়ামী লীগ নেতা মোকাররম বাবু। তাঁদের দুজনকেই একটার পর একটা মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে একচ্ছত্র হন ফোয়াদ। জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হওয়ার আগে তিনি জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। মন্ত্রীর এপিএস হওয়ার পর তিনি হয়ে যান ধরাছোঁয়ার বাইরের লোক। রুবেল-বরকত গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি ফরিদপুরের নিয়ন্ত্রকদের অন্যতম ছিলেন। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বিপুল পরিমাণ আয়ও করেন।
তবে ফরিদপুরের বাসিন্দারা বলছেন, রুবেল-বরকত গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত ফরিদপুরে কোনো ব্যক্তির ভাগ্য বা অবস্থান কী হবে, টেন্ডার কে পাবে, কে কোন পদে বসবে, সবকিছুর নিয়ন্তা ছিলেন বরকত-রুবেল ও ফোয়াদ। রুবেল-বরকতসহ কিছু নেতা গ্রেপ্তারের পর সেই রাজনীতিতে তিনটি পক্ষ তৈরি হয়েছে। একটি ধারায় আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন। আরেক পক্ষে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শামীম হক ও পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস।
তৃতীয় পক্ষে আছেন ‘মোশাররফপন্থী’ হিসেবে পরিচিত নেতা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা।
এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী ফরিদপুর সদরে রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে সবাই বলছেন, ফরিদপুরে সব অনৈক্যের পেছনেই আছে টাকাপয়সা নিয়ে গোলমাল। এখানে আদর্শ বলে কিছুই নেই।
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১ হাজার ৬৬৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ৯৭২ জন ও অন্যান্য ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৬৯৩ জন। আজ সোমবার পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর এ তথ্য জানান।
৫ দিন আগেরাজধানীর মিরপুরে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ইমরান খান সাকিব ওরফে শাকিল (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে মিরপুর মডেল থানা-পুলিশ। ডিএমপি জানায়, শাকিল পেশাদার ছিনতাইকারী। গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে গাজীপুরের পুবাইল থানার কুদাব পশ্চিমপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়...
১৮ এপ্রিল ২০২৫রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলায় ‘আপন কফি হাউসে’ তরুণীকে মারধরের ঘটনায় কফি হাউসের ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) আল আমিন ও কর্মচারী শুভ সূত্রধরকে এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসান এ আদেশ দেন।
১৫ এপ্রিল ২০২৫ক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়ল অমানবিক দৃশ্য— মেয়েটিকে বেশ কিছুক্ষণ ধমকানো হলো। এরপর ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। সে যেন মানুষ নয়, পথের ধুলো। এর মধ্যেই এক কর্মচারী হঠাৎ মোটা লাঠি নিয়ে আঘাত করে তাঁর ছোট্ট পায়ে। শিশুটি কাতরাতে কাতরাতে পাশের দুটি গাড়ির ফাঁকে আশ্রয় নেয়। কিন্তু নির্যাতন থামে না, সেই লাঠি আব
১৪ এপ্রিল ২০২৫