Ajker Patrika

সিনহা হত্যা মামলা: যেমন ছিল আসামিদের আচরণ

শিপ্ত বড়ুয়া, রামু (কক্সবাজার) 
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ২১: ০১
Thumbnail image

কক্সবাজারের আলোচিত অব. মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণার পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আত্মীয়স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সিনহা হত্যা মামলার রায়ে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন ও সাতজনকে খালাস দেওয়া হয়। 

আজ সোমবার কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে এই রায় দেন। হত্যাকাণ্ডের ১৮ মাসের মাথায় এ রায় দিলেন আদালত। 

যাবজ্জীবন পাওয়া ছয়জনের মধ্যে তিন আসামি নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজউদ্দিন মারিশবুনিয়ার বাসিন্দা, তাঁরা কেউই পুলিশের সদস্য নন। এই তিনজন পুলিশের সোর্স হিসেবে সিনহা হত্যা মামলায় প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা পালন করেছেন বলে আদালত উল্লেখ করেন। তা ছাড়া লিয়াকতের দেওয়া ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার জবানবন্দি ও অন্যদের সাক্ষ্য পর্যালোচনায় সন্দেহাতীতভাবে এই তিন আসামির সংশ্লিষ্টতা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণের কথা বলেন আদালত। 

এদিকে আদালত রায় ঘোষণার পর এজলাসকক্ষেই চিৎকার করেন এই তিন আসামি। তাঁদের সেখানে অন্য আসামিদের দোষী করে গোলযোগ সৃষ্টি করতে দেখা যায়, পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে শান্ত হন তাঁরা। 

অন্যদিকে, আদালতে বরখাস্ত উপপরিদর্শক নন্দদুলাল রক্ষিত, বরখাস্ত কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও কনস্টেবল সাগর দেবকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ঘোষণা করলে নন্দদুলালকে এজলাসেই কান্নাকাটি করতে দেখা যায়। অন্য দুজন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। 

কনস্টেবল রুবেল শর্মার স্ত্রী সকাল থেকে উপস্থিত ছিলেন আদালতে। রায় ঘোষণার পর তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। একপর্যায়ে দায়রা জজ আদালতের পাশে থাকা আইনজীবীদের বিশ্রামাগারে অবস্থান নিতে দেখা যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের আত্মীয়স্বজনদের। আসামিদের প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় বিশ্রামাগার থেকে জানালার কাচ ভেঙে পড়তে দেখা যায়। 

প্রিজন ভ্যানে করে আসামিদের নিয়ে যাওয়ার পথে খালাস পাওয়া সাত আসামি হাসিমুখে বাইরে থাকা জনতাকে চিৎকার করে খালাস খালাস বলে আনন্দ-উল্লাস করতেও দেখা যায়। 

রায় ঘোষণার প্রায় আধা ঘণ্টা পর কড়া নিরাপত্তায় যখন একে একে আসামিদের প্রিজন ভ্যানে তোলার জন্য আনা হচ্ছিল তখন নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ চিৎকার করে বলেন, ‘পুলিশে গুলি গইজ্জে, আঁরা কি গইজ্জ্বি?’ (মানে পুলিশ গুলি করেছে আমরা কি করেছি?) 

অপরদিকে তাঁদের স্বজনেরাও আদালত প্রাঙ্গণে চিৎকার করে কান্না করতে থাকেন। ওসি প্রদীপ ও লিয়াকত মৃত্যুদণ্ডের রায় শোনার পরও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। 

অন্যদিকে ওসি প্রদীপের নিযুক্ত প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তকে আজ আদালতে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি। তবে ওসি প্রদীপের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন খান। তিনি বলেন, ‘আমরা আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আদালত যে রায় দিয়েছেন তাতে আমরা সন্তুষ্ট না। প্রদীপের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ 

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন খালাস পাওয়া সাত আসামির আইনজীবী ও আত্মীয়স্বজনেরা। কারাগারে মুক্তিনামা আদেশ পৌঁছানোর পরই খালাস পাওয়া আসামিরা শিগগিরই মুক্তি পাবেন বলে জানান আইনজীবীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত