Ajker Patrika

রাঙামাটিতে শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ১ জনের মৃত্যুদণ্ড

রাঙামাটি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৪, ১৬: ১৭
রাঙামাটিতে শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ১ জনের মৃত্যুদণ্ড

রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে নয় বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে অংবাচিং মারমা ওরফে বামং (৪৬) নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক এ ই এম ইসমাইল হোসেন এ রায় দেন। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. সাইফুল ইসলাম অভি রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ রায়ের ফলে রাষ্ট্র ও সমাজে নারী ও শিশু ভবিষ্যতে আর কেউ আর এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করার সাহস পাবে না।’ 

বিচারক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের আসামিকে দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা ও পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৩০২ ধারার অপরাধে দায়ে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করেন। একই সঙ্গে বিচারক আসামি মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেন। 

রায়ে বলা হয়, ২০১৯ সালে ২ ফেব্রুয়ারি কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের পূর্ব কোদালা এলাকায় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মিতালী মারমা বদ্দ পাড়ায় তার মামার বাসায় প্রাইভেট পড়তে যায়। এ সময় আসামি প্রাইভেট শিক্ষক অংবাচিং মারমা ওরফে বামং অন্য শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে ভিকটিমকে আরও পড়ানোর অজুহাতে রেখে দেয়। 

একপর্যায়ে একা পেয়ে আসামি ধর্ষণ করতে চাইলে ভিকটিম কান্নাকাটি ও চিৎকার করে। এতে আসামি ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে, একপর্যায়ে ভিকটিমকে গলায় কাপড়ের ব্যাগের ফিতা দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। লাশ বস্তায় ভরে ঘরের মাচাংয়ের ওপর তুলে রাখে। 

এতে ভিকটিম বিকেলে বাসায় না যাওয়ায় তার বাবা–মা ও প্রতিবেশীরা খুঁজতে থাকে। পরে আসামির কাছে জানতে চাইলে তার আচরণ সন্দেহ হওয়ায় তার ওপর নজর রাখে। 

পরে আসামি রাতের বেলায় বস্তায় করে লাশ নিয়ে বের হলে হাতেনাতে আটক করে এলাকাবাসী। এতে বস্তা খুলে ভিকটিম মিতালী মারমার লাশ দেখতে পায়। এতে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে গণপিটুনি দেয় ও পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ আসামি বামংকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে ভিকটিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হত্যাচেষ্টা, হত্যা ও লাশ গুমের চেষ্টায় মামলা দায়ের পর আদালতে তোলা হয়। 

দীর্ঘ ছয় বছর মামলা চলার পর বৃহস্পতিবার মামলার চূড়ান্ত রায়ে রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক এ ই এম ইসমাইল হোসেনের আদালতে তোলা হয়। এতে আদালতের বিচারক উপস্থিত মামলার বাদী-বিবাদীদের উভয় পক্ষের সামনে মামলার রায় পড়ে শুনান। 

এতে যাবতীয় সাক্ষ্য প্রমাণাদি সাপেক্ষে আদালতের বিচারক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের আসামি বামংকে দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা ও পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৩০২ ধারার অপরাধে দায়ে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করেন। একই সঙ্গে বিচারক আসামির মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেন। 

তবে আসামি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০ এর ২৮ ধারা অনুযায়ী এ দণ্ডাদেশ ও সাজার বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে ৬০ দিনের মধ্য আপিল দায়ের সুযোগ পাবেন বলে আদেশে জানানো হয়। এ ছাড়া আসামিকে ৬০ দিনের মধ্যে ধার্যকৃত জরিমানার অর্থ ভিকটিমের বাবা–মাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও আদেশ দেওয়া হয়। 

বাদী পক্ষের আইনজীবী মামুনুর রশীদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসামি ও তার পরিবারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে উচ্চতর আদালতে আপিল করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত