সাইফুল মাসুম ও মো. শফিকুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
পরিবারের ছোট মেয়ে মুন্নি আক্তার (৮) ছিল বাবার অতি আদরের। বাবাকে ছাড়া সে এক বেলা ভাতও খেত না। ঘুমাত বাবার বাহুতে মাথা রেখে। সেই ছোট্ট মুন্নি আজ একা কবরে ঘুমিয়ে আছে। বাবা জজ মিয়া এ কষ্ট মেনে নেবেন কীভাবে। মেয়ের লাল ফ্রকটা হাতে ধরে কেঁদেই চলেছেন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস নদীর লইস্কা বিলে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যাত্রীবাহী নৌকাডুবিতে মারা গেছেন ২২ জন। এর মধ্যে চারজনই বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর গ্রামের বাসিন্দা জজ মিয়া পরিবারের। ছোট মেয়ে মুন্নি ছাড়া অপর তিনজন হলেন জজ মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪০), শাশুড়ি কমলা বেগম (৬১) ও চাচি মঞ্জু বেগম (৫৯)। এক আত্মীয়কে দেখতে নৌকায় করে জেলার মধ্যপাড়া এলাকায় যাচ্ছিলেন তাঁরা। পথে লইস্কা বিল এলাকায় বালুবোঝাই ট্রলারের ধাক্কায় যাত্রীবাহী নৌকাটি ডুবে যায়।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই ২১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গতকাল শনিবার উদ্ধার হয়েছে আরও একজনের লাশ। সন্ধ্যায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
গতকাল দুপুরে সম্পকনগর রাজবাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে মেয়ে মুন্নির একটি লাল ফ্রক হাতে নিয়ে কাঁদছেন জজ মিয়া। আত্মীয়স্বজন তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ভাঙা গলায় জজ মিয়া বলতে থাকেন, ‘কেডা ফিনবো আমার মাইয়ার ফ্রক।’ তিনি বলেন, ‘কালকে এই সময়ে আমার সাজানো পরিবার ছিল, নৌকা ডুবে আমার সংসার তছনছ হয়ে গেছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘যাত্রীদের ঝুঁকির মধ্য রেখে তিতাস নদে প্রতিদিন অবৈধ অনেক ইঞ্জিলচালিত নৌকা চলে। এতে প্রতিবছর নৌকাডুবিতে আমরা অনেক আত্মীয়স্বজন হারাই। প্রশাসন নজর না দিলে এই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে না।’
নৌকাডুবির ঘটনাস্থলে কথা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, বালুবাহী নৌকার ধাক্কাতেই ডুবেছে যাত্রীবাহী নৌকাটি। তবে এ নৌকাতেও অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয়েছিল। ছিল না কোনো ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা।
উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা
গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে উদ্ধারকাজ সমাপ্ত ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাবেয়া আফসার সায়মা। তিনি জানান, দিনভর উদ্ধারকাজ চালিয়েছে ডুবুরি দল। বিকেলে ডুবে যাওয়া ট্রলারের তলদেশে ডুবুরিরা সর্বশেষ তল্লাশি করেন। সেখানে কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। পরে ট্রলারটি নিরাপদ স্থানে রাখার পর উদ্ধারকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এর আগে গতকাল সকালে নাশরা নামে তিন বছর বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় মোট ২২ জন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন জানান, সব লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দাফনের জন্য প্রতিটি পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
মামলা, আটক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান জানান, নৌকাডুবির ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে গতকাল বিজয়নগর থানায় মামলা করেছেন মো. সেলিম মিয়া নামের এক ব্যক্তি। এ ছাড়া নৌকাটিকে ধাক্কা দেওয়া বালুবাহী নৌকাটির পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আর হতাহতের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নৌযান চলাচল বন্ধ
নৌকাডুবির ঘটনার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা থেকে জেলা শহরে আসা সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
বিজয়নগর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাবেয়া আফসার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি বিবেচনা করে নৌযান চালুর বিষয়ে জানানো হবে।
পরিবারের ছোট মেয়ে মুন্নি আক্তার (৮) ছিল বাবার অতি আদরের। বাবাকে ছাড়া সে এক বেলা ভাতও খেত না। ঘুমাত বাবার বাহুতে মাথা রেখে। সেই ছোট্ট মুন্নি আজ একা কবরে ঘুমিয়ে আছে। বাবা জজ মিয়া এ কষ্ট মেনে নেবেন কীভাবে। মেয়ের লাল ফ্রকটা হাতে ধরে কেঁদেই চলেছেন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস নদীর লইস্কা বিলে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যাত্রীবাহী নৌকাডুবিতে মারা গেছেন ২২ জন। এর মধ্যে চারজনই বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর গ্রামের বাসিন্দা জজ মিয়া পরিবারের। ছোট মেয়ে মুন্নি ছাড়া অপর তিনজন হলেন জজ মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪০), শাশুড়ি কমলা বেগম (৬১) ও চাচি মঞ্জু বেগম (৫৯)। এক আত্মীয়কে দেখতে নৌকায় করে জেলার মধ্যপাড়া এলাকায় যাচ্ছিলেন তাঁরা। পথে লইস্কা বিল এলাকায় বালুবোঝাই ট্রলারের ধাক্কায় যাত্রীবাহী নৌকাটি ডুবে যায়।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই ২১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গতকাল শনিবার উদ্ধার হয়েছে আরও একজনের লাশ। সন্ধ্যায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
গতকাল দুপুরে সম্পকনগর রাজবাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে মেয়ে মুন্নির একটি লাল ফ্রক হাতে নিয়ে কাঁদছেন জজ মিয়া। আত্মীয়স্বজন তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ভাঙা গলায় জজ মিয়া বলতে থাকেন, ‘কেডা ফিনবো আমার মাইয়ার ফ্রক।’ তিনি বলেন, ‘কালকে এই সময়ে আমার সাজানো পরিবার ছিল, নৌকা ডুবে আমার সংসার তছনছ হয়ে গেছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘যাত্রীদের ঝুঁকির মধ্য রেখে তিতাস নদে প্রতিদিন অবৈধ অনেক ইঞ্জিলচালিত নৌকা চলে। এতে প্রতিবছর নৌকাডুবিতে আমরা অনেক আত্মীয়স্বজন হারাই। প্রশাসন নজর না দিলে এই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে না।’
নৌকাডুবির ঘটনাস্থলে কথা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, বালুবাহী নৌকার ধাক্কাতেই ডুবেছে যাত্রীবাহী নৌকাটি। তবে এ নৌকাতেও অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয়েছিল। ছিল না কোনো ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা।
উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা
গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে উদ্ধারকাজ সমাপ্ত ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাবেয়া আফসার সায়মা। তিনি জানান, দিনভর উদ্ধারকাজ চালিয়েছে ডুবুরি দল। বিকেলে ডুবে যাওয়া ট্রলারের তলদেশে ডুবুরিরা সর্বশেষ তল্লাশি করেন। সেখানে কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। পরে ট্রলারটি নিরাপদ স্থানে রাখার পর উদ্ধারকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এর আগে গতকাল সকালে নাশরা নামে তিন বছর বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় মোট ২২ জন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন জানান, সব লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দাফনের জন্য প্রতিটি পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
মামলা, আটক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান জানান, নৌকাডুবির ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে গতকাল বিজয়নগর থানায় মামলা করেছেন মো. সেলিম মিয়া নামের এক ব্যক্তি। এ ছাড়া নৌকাটিকে ধাক্কা দেওয়া বালুবাহী নৌকাটির পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আর হতাহতের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নৌযান চলাচল বন্ধ
নৌকাডুবির ঘটনার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা থেকে জেলা শহরে আসা সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
বিজয়নগর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাবেয়া আফসার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি বিবেচনা করে নৌযান চালুর বিষয়ে জানানো হবে।
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মহসিন মিয়াকে (৪৬) দুবাই থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ইন্টারপোলের রেড নোটিশের ভিত্তিতে দুবাই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
২০ ঘণ্টা আগেসবার সামনে পিটিয়ে হত্যা, পাথরে শরীর থেঁতলে দেওয়া, নিজের বাড়ির সামনে গুলি করে পায়ের রগ কেটে হত্যা, অস্ত্র দেখিয়ে সর্বস্ব ছিনতাই, চাঁদা না পেয়ে গুলি—এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা কয়েক দিন ধরে বেশ আলোচিত। কিন্তু পুলিশ অনেকটাই নির্বিকার। প্রতিটি ঘটনার সিটিটিভি ফুটেজ থাকলেও সব অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
১২ দিন আগেএবার রাজধানীর শ্যামলীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, মানিব্যাগ, কাঁধের ব্যাগ ও মোবাইল ফোন নেওয়ার পর ছিনতাইকারীরা এক যুবকের পোশাক ও জুতা খুলে নিয়ে গেছে।
১৩ দিন আগেমোবাইল চুরির ঘটনায় বোরহান নামের এক তরুণকে বেধড়ক মারধর করা হয়। ছেলেকে বাঁচাতে বোরহানের বাবা রুবির পরিবারের সাহায্য চান। বসে এক গ্রাম্য সালিস। তবে সেই সালিসে কোনো মীমাংসা হয় না। এরই মধ্য নিখোঁজ হয়ে যান বোরহান। এতে এলাকায় রব পড়ে বোরহানকে হত্যা ও লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে। তখন বোরহানের বাবা থানায় অভিযোগ দা
২০ দিন আগে