Ajker Patrika

চোরাই গরু জব্দ করে নিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবিকে বাধা, গুলিতে যুবক নিহত

নাইক্ষ্যংছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
Thumbnail image

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত থেকে চোরাই পথে আনা বর্মি গরু জব্দ করে নিয়ে যাওয়ার সময় ১১ বিজিবি টহল দলের ওপর হামলা হয়েছে। এতে ৮ বিজিবি সদস্য আহত হয়েছেন। এ সময় আত্মরক্ষার্থে বিজিবি গুলি চালালে একজন নিহত হয়েছেন। 

বিজিবি জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম আবদু জাব্বার (২৯)। তিনি গরু পাচারের সঙ্গে জড়িত। তিনি কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মৃত জাকের আহমদের ছেলে। 

গুরুতর আহত বিজিবি সদস্যরা হলেন—হাবিলদার মো. মোহাইমিনুল ইসলাম (৩০), নায়েক মো. লুৎফর রহমান (৩২) ও নায়েক মো. আবুল কালাম (২৮)। তাঁরা বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিরা নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। 

ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার (৮ এপ্রিল) রাত ৯টায় নাইক্ষ্যংছড়ি-রামু সড়কের ওপর পূর্ব কাউয়ারখোপের মাস্টার আবদুল্লাহর বাড়ির পাশে। 

স্থানীয়দের হামলায় বিজিবির বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন১১ বিজিবি সূত্র জানায়, নিয়মিত টহল দল খবর পায় রামু কাউয়ারখোপ বাজারের পূর্বপাশের ৬টি বার্মিজ গরু পাচার হচ্ছে। এগুলো নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত থেকে আনা হয়েছে। দলটি গিয়ে সেগুলো জব্দ করে। গরুগুলো নাইক্ষ্যংছড়ির ব্যাটালিয়ন সদরে নেওয়ার পথে বাধা দেয় চোরাকারবারির দল। একপর্যায়ে চোরাকারবারি দলের সদস্য আবদু জাব্বারের সঙ্গে স্বজনেরাও যোগ দেয়। তিন শতাধিক লোক জড়ো হয়। একপর্যায়ে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় বিজিবি এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে আরও উত্তেজনা বাড়ে। আত্মরক্ষার্থে বিজিবি গুলি ছোড়ে। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার লাশ পাঠানো হয়েছে। 

ঘটনাস্থল থেকে বিজিবি ১টি বন্দুক, ১টি কিরিচসহ বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে। 

এ ব্যাপারে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা বলেন, ‘এ ঘটনায় আহত এক গরু টানা শ্রমিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।’ তিনি সশরীরে নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে গিয়েছিলেন বলেও জানান ইউএনও। 

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টানটু সাহা বলেন, ‘আবদু জাব্বারের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার পাঠানো হয়েছে।’ 

জাব্বারের স্ত্রী জাহেদা বেগম বলেন, তিনি স্বামীকে হারিয়ে অসহায়। তাঁর চার সন্তান রয়েছে। তাদের নিয়ে বড়ই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। 

এ বিষয়ে ১১ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিম বলেন, টহল দলের সবাই আহত হয়েছেন। তাঁদের নাইক্ষ্যংছড়ির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজারের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

রেজাউল করিম আরও বলেন, ‘বিজিবি টহল দলের ওপর কাউয়ারখোপ নামক স্থানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি ও স্থানীয় ২ থেকে ৩শ লোক দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে বিজিবি টহল দলের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’ 

গত কয়েক মাসে ১১ বিজিবি ১ হাজার ৩০০ বার্মিজ চোরাই গরু জব্দ করেছে। বিজিবি অভিযান আরও জোরদার করেছে বলেও জানান ১১ বিজিবি অধিনায়ক রেজাউল করিম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত