Ajker Patrika

অপরাধে জড়াচ্ছে ছাত্রলীগ

সম্পাদকীয়
অপরাধে জড়াচ্ছে ছাত্রলীগ

প্রায়ই খবরের শিরোনাম হয় ছাত্রলীগ। কোনোভাবেই এ ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীদের থামানো যাচ্ছে না। নানা সময়ে এ ছাত্রসংগঠনটির নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, অপহরণ, ধর্ষণ, শিক্ষার্থী নির্যাতন, প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে। অপরাধে জড়িত নেতা-কর্মীদের বহিষ্কারসহ নানা দণ্ডে দণ্ডিত করা হলেও তাঁদের নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও বিরক্ত।

এবার সিলেট ও সুনামগঞ্জের সীমান্ত দিয়ে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসা চিনির চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পুলিশ-বিজিবিকে ম্যানেজ করে চিনি চোরাচালানে সহায়তা করছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। আবার চোরাকারবারিদের সঙ্গে বনিবনা না হলে চালানের গাড়ি ছিনতাই করারও অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এদের সঙ্গে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদের নামও আসছে বলে ২৫ জুন আজকের পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

ছাত্রলীগের জন্ম পাকিস্তান আমলে। জন্মের পর থেকে সংগঠনটি ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছে।

চিনি চোরাচালানে সম্পৃক্ততা নিয়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে প্রথম প্রকাশ্যে অভিযোগ তুলেছিলেন সংগঠনটির সাবেক কেন্দ্রীয় এক নেতা। কিন্তু এ জন্য তাঁর ওপর হামলা করা হয়েছিল গত বছর। এদিকে চিনি চোরাচালানে যুক্ত থাকার ঘটনা তদন্তে কেন্দ্রীয়ভাবে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের মতে, এ সংগঠনের মধ্যে নানা অপকর্ম সংঘটিত হয় মূলত ঠিক সময়ে সম্মেলন না হওয়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ছাত্র সংসদ না থাকা, ক্যাম্পাসগুলোতে একক আধিপত্য থাকা এবং গ্রুপিংসহ আরও নানা কারণে। আবার নেতা হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিতে হয়। এ জন্য সুদ-আসলে টাকা ওঠানোর জন্য নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন নেতা-কর্মীরা। এ থেকে বোঝা যায়, ছাত্রলীগ এখন ব্যবসায়ী সংগঠনে পরিণত হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে অপকর্মের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করা হলেও পরবর্তী সময়ে সেসব পালনে গাফিলতি দেখা যায়। এ কারণে অন্যরাও অপকর্মে জড়িয়ে পড়তে উৎসাহিত হয়।

ছাত্রসংগঠনের কাজ হলো, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে কথা বলা ও আন্দোলন করা। কিন্তু ছাত্রলীগ তাদের এ আসল দায়িত্বের কথা অনেক আগেই ভুলে গেছে। সম্পদ উপার্জনে অধিক মনোযোগী হওয়াই অধিকাংশ নেতা-কর্মীর কাছে প্রধান লক্ষ্য এখন। এ কারণে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারাও বিব্রত। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন যাতে না হয়, সে জন্য তাঁরা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগকেও জানিয়েছেন। চোরাচালান বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপও চেয়েছেন তাঁরা।

ছাত্রলীগের নানা অপকর্ম আওয়ামী লীগের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ দায় তাঁরা এড়াতে পারেন না। তবে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নানা অপকর্ম থেকে নিবৃত্ত করতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকেই দায়িত্ব নিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত