Ajker Patrika

ফেসবুকে অনুসারীদের ‘টাকায় মগ্ন’ না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আবেদ আলীর ছেলে সিয়াম

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২৪, ১০: ৩৪
Thumbnail image

সম্প্রতি দেশের একটি বেসরকারি সম্প্রচারমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের তথ্য। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়। এই সিন্ডিকেটেরই অভিযুক্ত কর্মচারীদের একজন সাবেক পিএসসির চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন। 

ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেরিয়ে আসছে সৈয়দ আবেদ আলী জীবনের নানা দিক। একই সঙ্গে আলোচনায় এসেছেন তাঁর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম। আজ সোমবার দুপুর থেকে এই দুজনের নানা কর্মকাণ্ডের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এসবের মধ্যে আছে উড়োজাহাজ ও প্রাইভেট কারে ভ্রমণ, সমুদ্রপাড়ে সৈয়দ আবেদ আলীর নামাজ পড়ার বিভিন্ন ছবি। পাশাপাশি ভাইরাল হচ্ছে ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামের ফলোয়ারদের প্রতি নানা উপদেশ ও তাঁর নিজস্ব জীবনদর্শন-সংবলিত পোস্ট। 

এরই মধ্যে আবেদ আলী, তাঁর ছেলে সিয়ামসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত ১৮ মে সিয়াম দুঃসময়ের সঙ্গীকে সুদিনে পাশে রাখার পরামর্শ দিয়ে লেখেন, ‘নারীর সততা প্রকাশ পায় পুরুষের শূন্য পকেটে, আর পুরুষের সততা প্রকাশ পায় ভরা পকেটে। যে নারী শূন্য পকেটে পাশে থাকে, সুদিনে তার প্রতি যত্নশীল হওয়া একজন পুরুষের নৈতিক দায়িত্ব। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য হচ্ছে, দুঃসময়ের সঙ্গীকে সুদিনে পাশে রাখা!’ 

গত ২৪ মে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম তাঁর ফেসবুক ফলোয়ারদের টাকার পেছনে না ছোটার পরামর্শ দিয়ে লেখেন, ‘টাকা টাকা করে হয়ে যাচ্ছো অন্ধ, এভাবে চলতে থাকলে বিবেকের দরজা ঠিক হয়ে যাবে বন্ধ। টাকার প্রয়োজন আছে কথা সত্য। তবে টাকায় হওয়া যাবে না মগ্ন।’ 

বাবার নামাজ পড়ার ছবি শেয়ার দিয়েছিলেন সোহানুর রহমান সিয়াম। ছবি: ফেসবুকসৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামের বিভিন্ন পোস্ট দেখে অনুমান করা যায়, তাঁর কাব্যচর্চারও কিছুটা শখ রয়েছে! কিছুটা ছন্দ মিলিয়ে গত ৯ মে এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘সফল হলে চারদিকে ভালোবাসার ছড়াছড়ি, দুঃসময়ে কতজন কেটে পড়েছে তাড়াতাড়ি, বসন্তে কোকিল ডাকে শুনতে লাগে ভালো, সুসময়ে বন্ধু কিনে জ্বালাতে চাই না আলো।’ 

গত ১৬ মের এক পোস্টে লিখেছেন, ‘উপকার করে হয়েছি বোকা... ! বিশ্বাস করে খেয়েছি ধোঁকা। অভিযোগের পাতায় হয়নি লেখা। সময়ের ব্যবধানে আজ একা... !’ 

বাবা, চাচাদের দৈনন্দিন ধর্মচর্চার বিভিন্ন ছবিও নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করতে দেখা গেছে সিয়ামকে। গত ২৪ জুন নিজের দুই চাচার সঙ্গে ফজরের নামাজ পড়ে সেলফি তুলে পোস্ট করে লেখেন, ‘ফজরের নামাজ শেষে আমার প্রিয় বড় চাচা সৈয়দ জাবেদ আলী ও ছোট চাচা সৈয়দ সাবেদ আলীর সাথে। মিসিং ইউ আব্বু।’ 

ফেসবুকে প্রশ্নফাঁসে অভিযুক্ত সৈয়দ আবেদ আলীর ছেলে সোহানুর রহমান সিয়ামের পোস্ট। ছবি: ফেসবুকবাবার নামাজ পড়ার একটি ছবি গত ১৯ মে পোস্ট করে লেখেন, ‘আব্বু কুয়াকাটা গিয়েছিল একটা ব্যবসায়িক সফরে, সেখানে স্থানীয় এক ছোট ভাই ছবিটি তুলে ইনবক্সে দিল। সাধারণত আব্বু কোন ওয়াক্তের নামাজ অবহেলা করে না, যখন যেখানে থাকে তখন সেখানেই পাক-পবিত্র জায়গা খুঁজে নামাজ আদায় করে নেয়। খুব সম্ভবত সৃষ্টিকর্তার প্রতি গভীর ভালোবাসা না থাকলে এটা সম্ভব নয়। আল্লাহ আমার বাবাকে কবুল করুক।’ ছবিটিতে দেখা যায়, পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসে অভিযুক্ত সৈয়দ আবেদ আলী সমুদ্রপাড়ের মতো খোলা জায়গায় তোষকের ওপর নামাজ পড়ছেন। 

বাহারি রঙের পাখির সঙ্গে আবেদ আলীমাদারীপুরের ডাসার উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন সৈয়দ আবেদ আলী। বাবা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে কী করবেন, তা নিয়ে গত ১৫ মে একটি পোস্ট দেন সিয়াম। পোস্টটিতে লেখেন, ‘আমার বাবা সৈয়দ আবেদ আলী বিজয়ী হওয়ার পর আমাদের সর্বপ্রথম কাজ হবে এই নবগঠিত উপজেলার সমস্যাগুলোকে কাগজে-কলমে লিপিবদ্ধ করা। এরপর একে একে সমস্যাগুলো সমাধানে আপনাদের সাথে নিয়েই কাজ করব আমরা। সরকার থেকে কখন কত টাকা বরাদ্দ পাচ্ছি, বরাদ্দের প্রত্যেকটা টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে, তার স্বচ্ছ হিসেব থাকবে উপজেলা চেয়ারম্যান কার্যালয়ে।’ 

ফেসবুকে প্রশ্নফাঁসে অভিযুক্ত সৈয়দ আবেদ আলীর ছেলে সোহানুর রহমান সিয়ামের পোস্ট। ছবি: ফেসবুকসৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামের ফেসবুক পেজটি ভেরিফায়েড। তাঁর প্রোফাইল থেকে জানা যায়, তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা উত্তর শাখার ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক। মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি। তাঁর পড়াশোনা দেশের বাইরে, ভারতের শিলিগুড়িতে। অবশ্য গ্রেপ্তার হওয়ার পর ছাত্রলীগ তাঁকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত