Ajker Patrika

চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামেও ক্রিকেট-জুয়া

মো. তারেক রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ৫৭
চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামেও ক্রিকেট-জুয়া

চলছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ। শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ঘরে তুলতে মরিয়া অংশ নেওয়া দলগুলো। বিশ্বকাপের এই আসর থেকে গ্রুপপর্বেই বাংলাদেশ বিদায় নিলেও আগ্রহ কমেনি দর্শকের। সেমিফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের অপেক্ষায় তাঁরা। এ নিয়ে চলছে জুয়ার আসরও।

এত দিন শহর এবং শহরের আশপাশে এই জুয়া গ্রাস করলেও এবার ছড়িয়ে পড়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্বকাপ ক্রিকেট উন্মাদনায় জুয়ার ঝড় বইছে চাঁপাইনবাবগঞ্জেও। চায়ের দোকান, সেলুন, ক্লাবপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে এই ক্রিকেট-জুয়া এখন চলছে বেপরোয়াভাবে। জুয়াড়িরা ওড়াচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। সমাজের অভিজাত ও শিক্ষিত শ্রেণি ছাড়িয়ে তরকারিবিক্রেতা, নাপিত, হোটেলের কর্মচারী, রিকশাচালক, দোকানি, বেকার, ফলবিক্রেতা, বিভিন্ন পরিবহনের শ্রমিক (হেলপার ও কন্ডাক্টর) নির্মাণশ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে এ জুয়া। বাদ পড়ছে না স্কুল-কলেজগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও। শুধু স্থানীয় পর্যায়েই নয়, ইন্টারনেটে ক্রিকেট-জুয়ার ফাঁদ পেতে আছে বহু ওয়েবসাইটও। আইপিএল, বিপিএল, বিগব্যাশ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, আন্তর্জাতিক ফুটবল, ক্লাব ফুটবলসহ প্রতিটি খেলার ইভেন্ট ঘিরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জুয়ার আসর বসে। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও ব্যতিক্রম নয়। বিভিন্ন খেলায় এখানকার বাজিকরেরা অংশ নিয়ে থাকেন। বাজিতে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার এমনকি ১ লাখ টাকাও ধরা হয়। বাজি ধরা হয় প্রতিটি ইনিংসে, ওভারে এমনকি প্রতিটি বলেও। বাজি জিতে কেউ রাতারাতি পকেট ভারী করছেন, আবার কেউ হচ্ছেন সর্বস্বান্ত।

ক্রিকেট-জুয়ায় টাকা হেরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুরের বারোরশিয়ার আমিনুল নামে এক যুবক এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। আইপিএলের গত আসরে বাজি ধরে প্রায় ২০ লাখ টাকা ঋণ হয় তাঁর। জুয়ার টাকা ধার দিয়ে জমিও লিখে নেওয়া হয়েছে তাঁর কাছ থেকে। পরিবার জানার পর এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তাঁর মা।

জুয়ায় সব হারিয়ে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই পৈতৃক ভিটেমাটি পর্যন্ত বিক্রি করে নিঃস্ব হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। আর জুয়াড়িরা জুয়ার টাকা জোগাতে গিয়ে চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। একই সঙ্গে ক্রিকেট-জুয়ার হার-জিতকে কেন্দ্র করে পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতাও বাড়ছে। অন্যদিকে জুয়ায় আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে অল্প সময়েই কোটি টাকার মালিক হয়ে যাওয়ার ঘটনাও কম নয়।

কিন্তু অন্য সব জুয়াড়িকে আটক করা যতটা সহজ, ক্রিকেট-জুয়াড়িদের গ্রেপ্তার ততটা সহজ নয়। প্রযুক্তিনির্ভর (মোবাইল) হওয়ায় এ জুয়াও বন্ধ করা সহজ হচ্ছে না। কেননা, বেশির ভাগ লেনদেন হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোজাফফর হোসেন জানান, ‘অপরাধ দৃশ্যমান না হওয়ায় অপরাধীদের আটক বা গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয় না। তবে লেনদেনে সমস্যা হলেই আমরা জানতে পারি এবং ব্যবস্থা নিই। তবে জুয়া বন্ধে বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে পারিবারিক সচেতনতা জরুরি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

বিড়াল নির্যাতনের ঘটনায় গ্রামীণফোন ও অ্যারিস্টোফার্মা কেন আলোচনায়

বাগ্‌বিতণ্ডার মধ্যে সাম্যকে ইট ও ধারালো অস্ত্রের আঘাত করা হয়: ডিএমপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত