Ajker Patrika

সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ, তদন্ত চেয়ে দুদকে আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ, তদন্ত চেয়ে দুদকে আবেদন

সাবেক সংসদ সদস্য, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করা হয়েছে। 

আজ বুধবার দুদকে এই আবেদন করেন ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমী। 

আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি দৈনিক পত্রিকায় ‘চার প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কারসাজির তদন্তে সাকিব আল হাসানের নাম’ ও একই বছরের ৮ নভেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাকিব আল হাসানের ছয় প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কারসাজি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমের এসব প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তদন্ত করে। তদন্তে শেয়ার কারসাজির ঘটনার সত্যতা মিললেও সাকিব বাদে ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। দুদকও সাকিবের বিষয়টি এড়িয়ে যায়। 

আবেদনে আরও বলা হয়, ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে সাকিবের অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার সংবাদ প্রকাশিত হয়। জুয়া কিংবা অনলাইন জুয়া নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও সাকিব ‘বেট উইনার’ নামের অনলাইন জুয়ার প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা দেন। সাকিব বেট উইনার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ক্যাসিনো জুয়া ও ব্যবসা প্রোমোট করে অপরাধ লব্ধ টাকা আয় করেন এবং বিদেশে অর্থপাচার করেন। 

আবেদনে আরও বলা হয়, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জানা যায় সাকিব আল হাসান ‘রিলায়াবল কমোডিটিস এক্সচেঞ্জ কোম্পানি’ এবং ‘বুরাক কমোডিটিস এক্সচেঞ্জ কোম্পানি’–এর মাধ্যমে জনৈক রাশেক রহমানের সঙ্গে অংশীদারি ব্যবসা করেছেন। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশ থেকে সোনা আমদানি ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকারের শুল্ক ও রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ব্যবসা করেছে। দুটি কোম্পানির মাধ্যমে কর ফাঁকি এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে। 

এ ছাড়া সাতক্ষীরা উপজেলার ধাতিনা খালি এলাকায় সাকিব আল হাসানের একটি অ্যাগ্রো ফার্ম রয়েছে। এই ফার্মে একটি কাঁকড়ার খামার রয়েছে। ওই ফার্মের মাধ্যমে কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে সাকিবের বিরুদ্ধে। 

আবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে ক্রিকেট ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন করে শাস্তি পান সাকিব আল হাসান। সাকিব আল হাসান ক্রিকেট ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ আসার পর দোষ স্বীকার করেন। দুর্নীতির অভিযোগ স্বীকার করার পরও তাঁর বিরুদ্ধে দুদক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। 

আবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনী হলফনামায় ব্যবসা ও সম্পদের তথ্য এবং আয়ের উৎস গোপন করেছেন সাকিব। 

আবেদনে ব্যারিস্টার নাওমী উল্লেখ করেন, এসব বিষয় তদন্ত করে সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। 

আবেদনের বিষয়ে ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমী আজকের পত্রিকাকে জানান, তিনি দুদকে আবেদন করেছেন। দুদক আবেদন পত্রটি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাকিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ উত্থাপিত হলেও বিগত সরকারের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় তদন্ত হয়নি। সরকার পরিবর্তন হওয়ায় তিনি মনে করেন এখন দুদক স্বাধীন। তারা তদন্ত করবে। তাই জনস্বার্থে তিনি এই আবেদন করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত