কামরুল হাসান

বন্ধুমহলে আরিফ রহমানের নাম ছিল ‘মটু আরিফ’। যেমন দেহ তেমন খায়, উচ্চতাও সেই রকম। কথায় কথায় নিজেকে বলত ‘বোগরার ছৈল’ (বগুড়ার ছেলে)। যেন বগুড়া বাড়ি হওয়া বিরাট কিছু। খাওয়ার শেষপাতে বাচ্চাদের মুখে যেভাবে দুধভাত লেগে থাকে, আরিফের মুখেও সেভাবে লেপটে থাকত বগুড়ার আঞ্চলিক উচ্চারণ। ৯০-এর পর ঢাকায় থানা গাড়তে এসেছিল বগুড়ার দৈনিক করতোয়ার সাংবাদিক হিসেবে। তারপর আনন্দপত্র বাংলা সংবাদ থেকে চলে গেল আজকের কাগজে, ক্রাইম রিপোর্টার হয়ে। একদিন দুপুরে আরিফের ফোন।
বন্ধু, ‘হামাক একটা কাম করে দিবু। না করবু ন্যা কিন্তু। এক ছৈল খুব বিপদে পড়ছে। তুই না হলে হবি ন্যা।’
আরিফ এভাবেই বলে। আমি বললাম, আগে বল কী হয়েছে।
আরিফ যা বলল, তা আমাকে একটু চিন্তায় ফেলে দিল। এটিএন বাংলার প্ল্যানিং এডিটর কেরামত উল্লাহ বিপ্লব তখন বাংলাবাজার পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার। কসকো সাবানের উৎপাদনকারী কমান্ডার সোপ কোম্পানি ছিল পত্রিকাটির মালিক। তেজগাঁও শিল্প এলাকায় অফিস। সেখান থেকে রিকশায় করে বেশ রাতে মগবাজারের বাসায় ফিরছিলেন বিপ্লব। তাঁর রিকশাটি মগবাজার মসজিদের সামনে এলে একদল ছিনতাইকারী গতিরোধ করে। তারা বিপ্লবকে মেরেধরে তাঁর মোবাইল ফোনসহ সবকিছু কেড়ে নেয়। ছিনতাইকারীদের হাতে সবকিছু খোয়ালেও বিপ্লবের আফসোস ছিল শখের মোবাইল ফোনটি নিয়ে। যে করেই হোক ফোনটা উদ্ধার করে দিতে হবে। আরিফের পীড়াপীড়িতে বললাম, দেখি কাউকে অনুরোধ করে উদ্ধার করা যায় কি না। তখন সবার হাতে হাতে যেমন মোবাইল ফোন ছিল না, তেমনি মোবাইল ফোনের কলরেকর্ড, কললিস্ট বা অবস্থান জানার ব্যবস্থাও ছিল না। ফোন একবার হারালে মহাবিপদ।
বিপ্লবের সেই ফোন উদ্ধারের জন্য প্রথম কল দিলাম রমনা থানার তৎকালীন ওসি রফিকুল ইসলামকে। দেখি এ ঘটনা তিনি আমার আগেই শুনেছেন। বললেন, এই ফোন উদ্ধার করা তাঁর পক্ষে একেবারে অসম্ভব। তবে একটা পথ বাতলে দিলেন। বললেন, কারওয়ান বাজার থেকে মগবাজার রেলগেট পর্যন্ত এলাকায় যেসব চাঁদাবাজি-ছিনতাই হয়, সবই করে পিচ্চি হান্নানের ছেলেরা। আর রেলগেটের দক্ষিণ দিকের নিয়ন্ত্রণ আরমানের হাতে। আরমান যুবলীগের নেতা লিয়াকত হোসেনের ঘনিষ্ঠ। লিয়াকতকে বললে কাজ হতে পারে।
নিউ ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনের উলটো দিকে মোটর পার্টসের মার্কেট হেলেনা সেন্টারে যুবলীগের নেতা লিয়াকতের আস্তানা। সেই আস্তানায় টিঅ্যান্ডটির একটি ফোন ছিল। ফোন দিলাম সেই নম্বরে। লিয়াকত নিজেই ফোন ধরে সব শুনে বললেন, ‘একটু অপেক্ষা করেন, দেখি কী করা যায়।’ বিকেলের দিকে জনকণ্ঠের পিএবিএক্স নম্বরে ফোন দিলেন আরমান নিজেই। বললেন, ছিনতাইকারীদের তিনি শনাক্ত করেছেন, ফোনও পাওয়া গেছে। যাঁর ফোন তাঁকে এসে নিয়ে যেতে হবে। ছিনতাই হওয়ার পর বিপ্লব খুব ভয় পেয়ে গেছেন। ফোন আর নিতে আসেন না। পরে আরিফসহ এসে ফোনটা লিয়াকতের অফিস থেকে বুঝে নেন বিপ্লব।
এ গল্পের শেষের দিকে যে আরমানের কথা বললাম, সেই আরমানই ছিল সরকারের পুরস্কার ঘোষিত ১২ নম্বর শীর্ষ সন্ত্রাসী। তবে আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’–এ শুধু সন্ত্রাসী আরমানের গল্প বলব না। বলব এই সন্ত্রাসীকে সঙ্গে নিয়ে একটি রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের গল্প। যে ষড়যন্ত্র শুধু গণমাধ্যমের চাপে খুব বেশি দূর এগোতে পারেনি।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। আপনাদের নিশ্চয় সেই মামলার জজ মিয়ার কথা মনে আছে? এই জজ মিয়া গল্পের প্লট সাজাতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমানকেও আনা হয়েছিল। জজ মিয়াকে দিয়ে যেভাবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়, সেভাবে আরমানের জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু গণমাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক লেখালেখির পর সব ভেস্তে যায়। ‘জজ মিয়াকে নিয়ে পুলিশের আষাঢ়ে গল্প’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি রিপোর্ট তখন বেশ হইচই ফেলেছিল। তবে ষড়যন্ত্র নিয়ে বলার আগে আরমানের কীর্তিকলাপগুলো একটু বলি।
আরমানের বাবার নাম এস এম আইনুল হক। দুই ভাই, তিন বোনের মধ্যে আরমান সবার বড়। বড় মগবাজার এলাকায় বছরের পর বছর ধরে তাঁদের পরিবারের বসবাস। আরমান দেখতে যেমন স্মার্ট, কথাবার্তায় তেমনি বিনয়ী। খুব নিচু স্বরে কথা বলতেন। কথা বলার সময় কারও চোখের দিকে তাকাতেন না। তাঁর পোশাক-আশাক ছিল চোখধাঁধানো। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকার যে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল, তাতে আরমানের জন্য বরাদ্দ ছিল ৫০ হাজার টাকা। ওই সময় তাঁর ছবিসহ পোস্টার সারা দেশে সাঁটানো হয়। তখন আরমানের বিরুদ্ধে হত্যাসহ মামলা ছিল ১৩টি।
এবার বলি, আরমান কী করে এত বড় সন্ত্রাসী হলেন। আপনাদের নিশ্চয় সেই ‘সেভেন স্টার’ নামকরণের গল্পটা মনে আছে। কথিত সেই সেভেন স্টার বাহিনীর প্রধান ছিলেন ত্রিমাতি সুব্রত বাইন। মগবাজার ও এর আশপাশের এলাকা ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। সুব্রত বাইনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন মোল্লা মাসুদ আর টিক্কা। মগবাজারের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোখলেছুর রহমান ছিলেন টিক্কার আপন মামা। স্বাভাবিকভাবেই টিক্কা মগবাজার এলাকায় খুব প্রভাবশালী ছিলেন।
সেভেন স্টারের সেই সুব্রত বাইনের হাত ধরেই সন্ত্রাসী জগতে আসেন আরমান। সুদর্শন আরমান তখন চাঁদাবাজি করতেন। কিছুদিনের মধ্যে মোল্লা মাসুদ ও টিক্কার সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। সুব্রত বাইনের সঙ্গ ত্যাগ করে যোগ দেন লিয়াকতের দলে। খুব অল্প দিনেই তিনি মুরগি মিলন ও লিয়াকতের ডানহাতে পরিণত হন। সে সময় মুরগি মিলনের সঙ্গে তাঁর দারুণ ভাব জমে যায়। দুজন একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। মিলনের হয়ে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকার চোরাচালান নিয়ন্ত্রণের কাজ নেন আরমান।
এভাবে বেশ কয়েক বছর পার হয়। ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে। এরপর অবস্থা বুঝে লিয়াকত ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। আরমান তখন কারওয়ান বাজারের সন্ত্রাসী পিচ্ছি হান্নানের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। সেখানেও এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। সম্পর্কটাও ভেঙে যায়। শেষ পর্যন্ত লিয়াকতের সঙ্গে ভারতে পাড়ি জমান। সেখানে কিছুদিন কলকাতার একটি হোটেলে ছিলেন। কিন্তু ২০০২ সালের ১৯ নভেম্বর কলকাতা পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। তবে কিছুদিন পরেই তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। এরপর লিয়াকত দেশে ফিরে এলেও আরমান ভারতেই থেকে যান।
ফিরে আসেন ২০০৫ সালের মে মাসের দিকে। ঢাকায় ফিরে কেরানীগঞ্জে তাঁর বোনের বাড়ির পাশে একটি বাড়িভাড়া নিয়ে আত্মগোপন করেন। ওই বছরের ৩ জুন রাতে ধানমন্ডির একটি বাড়ি থেকে র্যাব তাঁকে গ্রেপ্তার করে। আরমানকে গ্রেপ্তারের পর শুরু হয় সেই ষড়যন্ত্রের খেলা।
আরমানকে গ্রেপ্তারের সাত-আট দিন পর, ২০০৫ সালের ১০ জুন নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে জজ মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি পুলিশ। তাঁকে কয়েক দফা রিমান্ডে এনে অনেক মারধর করা হয়। আরমানকে গ্রেপ্তারের পরের দিন (১১ জুন) মগবাজারের আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা মোখলেছুর রহমান ও আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর আরমান, জজ মিয়া এবং মোখলেছকে নিয়ে একটি গল্প ছেড়ে দেওয়া হয় বাজারে। সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়, মোখলেছুর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করার ষড়যন্ত্র করেছিল। মোখলেছুর রহমানকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেপ্তারও দেখানো হয়। আর বলা হয়, শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমান নোয়াখালীর জজ মিয়াকে আগে থেকেই চেনেন। গ্রেনেড হামলার পর তাঁরা একসঙ্গে ভিনদেশে অবস্থান করেছিলেন। (প্রথম আলো, ১৬ জুন ২০০৫)
র্যাবের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল চৌধুরী ফজলুল বারী এই সময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, র্যাব আরমানের কাছ থেকে ২১ আগস্ট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে (প্রথম আলো, ১৬ জুন ২০০৫)। আরমানকে জেরা করার পর তখন র্যাব জানিয়েছিল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী ত্রিমাতি সুব্রত বাইন, মুকুল এবং জয়। হামলার জন্য তাঁরা একটি বিশেষ সংস্থার সঙ্গে আড়াই কোটি টাকার চুক্তি করেছিলেন। চুক্তির ৫০ লাখ টাকা নাকি আগাম দেওয়া হয়েছিল। তখন নিজেদের তদন্ত বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ করতে ইন্টারপোলকেও ডেকে এনেছিল সিআইডি।
তখন অবশ্য আরেকটি কথা বাজারে চালু ছিল। ঠিক একই সময়ে এরশাদের মামলায় তাঁর স্ত্রী বিদিশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিদিশার ওপর সরকারি জুলুম-নির্যাতন নিয়ে মানবাধিকারকর্মীরা সোচ্চার হয়ে ওঠেন। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনাও হয়। শোনা যায়, সেই ঘটনা ধামাচাপা দিতে আরমানকে সামনে আনা হয়।
এরপর সিআইডি জজ মিয়ার কাছ থেকে গ্রেনেড হামলা নিয়ে একটি সাজানো স্বীকারোক্তি আদায় করে। আরমানের কাছ থেকেও স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হয়। তখন যেভাবেই হোক জজ মিয়ার একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গণমাধ্যমে চলে আসে। গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে জজ মিয়ার পরিবারকে খরচ দিচ্ছে সিআইডি। তাঁকে দিয়ে যা বলানো হচ্ছে সবই সাজানো। চারদিকে ছি ছি পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আরমানকে দিয়ে সাজানো জবানবন্দি দেওয়ানোর চেষ্টা থেকে সরে আসে ষড়যন্ত্রকারীরা। একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে নাটক সাজানোর চেষ্টা এভাবেই থেমে যায়। সেই থেকে গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি সেলে দিন কাটাচ্ছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমান।
আরও পড়ুন

বন্ধুমহলে আরিফ রহমানের নাম ছিল ‘মটু আরিফ’। যেমন দেহ তেমন খায়, উচ্চতাও সেই রকম। কথায় কথায় নিজেকে বলত ‘বোগরার ছৈল’ (বগুড়ার ছেলে)। যেন বগুড়া বাড়ি হওয়া বিরাট কিছু। খাওয়ার শেষপাতে বাচ্চাদের মুখে যেভাবে দুধভাত লেগে থাকে, আরিফের মুখেও সেভাবে লেপটে থাকত বগুড়ার আঞ্চলিক উচ্চারণ। ৯০-এর পর ঢাকায় থানা গাড়তে এসেছিল বগুড়ার দৈনিক করতোয়ার সাংবাদিক হিসেবে। তারপর আনন্দপত্র বাংলা সংবাদ থেকে চলে গেল আজকের কাগজে, ক্রাইম রিপোর্টার হয়ে। একদিন দুপুরে আরিফের ফোন।
বন্ধু, ‘হামাক একটা কাম করে দিবু। না করবু ন্যা কিন্তু। এক ছৈল খুব বিপদে পড়ছে। তুই না হলে হবি ন্যা।’
আরিফ এভাবেই বলে। আমি বললাম, আগে বল কী হয়েছে।
আরিফ যা বলল, তা আমাকে একটু চিন্তায় ফেলে দিল। এটিএন বাংলার প্ল্যানিং এডিটর কেরামত উল্লাহ বিপ্লব তখন বাংলাবাজার পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার। কসকো সাবানের উৎপাদনকারী কমান্ডার সোপ কোম্পানি ছিল পত্রিকাটির মালিক। তেজগাঁও শিল্প এলাকায় অফিস। সেখান থেকে রিকশায় করে বেশ রাতে মগবাজারের বাসায় ফিরছিলেন বিপ্লব। তাঁর রিকশাটি মগবাজার মসজিদের সামনে এলে একদল ছিনতাইকারী গতিরোধ করে। তারা বিপ্লবকে মেরেধরে তাঁর মোবাইল ফোনসহ সবকিছু কেড়ে নেয়। ছিনতাইকারীদের হাতে সবকিছু খোয়ালেও বিপ্লবের আফসোস ছিল শখের মোবাইল ফোনটি নিয়ে। যে করেই হোক ফোনটা উদ্ধার করে দিতে হবে। আরিফের পীড়াপীড়িতে বললাম, দেখি কাউকে অনুরোধ করে উদ্ধার করা যায় কি না। তখন সবার হাতে হাতে যেমন মোবাইল ফোন ছিল না, তেমনি মোবাইল ফোনের কলরেকর্ড, কললিস্ট বা অবস্থান জানার ব্যবস্থাও ছিল না। ফোন একবার হারালে মহাবিপদ।
বিপ্লবের সেই ফোন উদ্ধারের জন্য প্রথম কল দিলাম রমনা থানার তৎকালীন ওসি রফিকুল ইসলামকে। দেখি এ ঘটনা তিনি আমার আগেই শুনেছেন। বললেন, এই ফোন উদ্ধার করা তাঁর পক্ষে একেবারে অসম্ভব। তবে একটা পথ বাতলে দিলেন। বললেন, কারওয়ান বাজার থেকে মগবাজার রেলগেট পর্যন্ত এলাকায় যেসব চাঁদাবাজি-ছিনতাই হয়, সবই করে পিচ্চি হান্নানের ছেলেরা। আর রেলগেটের দক্ষিণ দিকের নিয়ন্ত্রণ আরমানের হাতে। আরমান যুবলীগের নেতা লিয়াকত হোসেনের ঘনিষ্ঠ। লিয়াকতকে বললে কাজ হতে পারে।
নিউ ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনের উলটো দিকে মোটর পার্টসের মার্কেট হেলেনা সেন্টারে যুবলীগের নেতা লিয়াকতের আস্তানা। সেই আস্তানায় টিঅ্যান্ডটির একটি ফোন ছিল। ফোন দিলাম সেই নম্বরে। লিয়াকত নিজেই ফোন ধরে সব শুনে বললেন, ‘একটু অপেক্ষা করেন, দেখি কী করা যায়।’ বিকেলের দিকে জনকণ্ঠের পিএবিএক্স নম্বরে ফোন দিলেন আরমান নিজেই। বললেন, ছিনতাইকারীদের তিনি শনাক্ত করেছেন, ফোনও পাওয়া গেছে। যাঁর ফোন তাঁকে এসে নিয়ে যেতে হবে। ছিনতাই হওয়ার পর বিপ্লব খুব ভয় পেয়ে গেছেন। ফোন আর নিতে আসেন না। পরে আরিফসহ এসে ফোনটা লিয়াকতের অফিস থেকে বুঝে নেন বিপ্লব।
এ গল্পের শেষের দিকে যে আরমানের কথা বললাম, সেই আরমানই ছিল সরকারের পুরস্কার ঘোষিত ১২ নম্বর শীর্ষ সন্ত্রাসী। তবে আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’–এ শুধু সন্ত্রাসী আরমানের গল্প বলব না। বলব এই সন্ত্রাসীকে সঙ্গে নিয়ে একটি রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের গল্প। যে ষড়যন্ত্র শুধু গণমাধ্যমের চাপে খুব বেশি দূর এগোতে পারেনি।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। আপনাদের নিশ্চয় সেই মামলার জজ মিয়ার কথা মনে আছে? এই জজ মিয়া গল্পের প্লট সাজাতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমানকেও আনা হয়েছিল। জজ মিয়াকে দিয়ে যেভাবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়, সেভাবে আরমানের জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু গণমাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক লেখালেখির পর সব ভেস্তে যায়। ‘জজ মিয়াকে নিয়ে পুলিশের আষাঢ়ে গল্প’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি রিপোর্ট তখন বেশ হইচই ফেলেছিল। তবে ষড়যন্ত্র নিয়ে বলার আগে আরমানের কীর্তিকলাপগুলো একটু বলি।
আরমানের বাবার নাম এস এম আইনুল হক। দুই ভাই, তিন বোনের মধ্যে আরমান সবার বড়। বড় মগবাজার এলাকায় বছরের পর বছর ধরে তাঁদের পরিবারের বসবাস। আরমান দেখতে যেমন স্মার্ট, কথাবার্তায় তেমনি বিনয়ী। খুব নিচু স্বরে কথা বলতেন। কথা বলার সময় কারও চোখের দিকে তাকাতেন না। তাঁর পোশাক-আশাক ছিল চোখধাঁধানো। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকার যে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল, তাতে আরমানের জন্য বরাদ্দ ছিল ৫০ হাজার টাকা। ওই সময় তাঁর ছবিসহ পোস্টার সারা দেশে সাঁটানো হয়। তখন আরমানের বিরুদ্ধে হত্যাসহ মামলা ছিল ১৩টি।
এবার বলি, আরমান কী করে এত বড় সন্ত্রাসী হলেন। আপনাদের নিশ্চয় সেই ‘সেভেন স্টার’ নামকরণের গল্পটা মনে আছে। কথিত সেই সেভেন স্টার বাহিনীর প্রধান ছিলেন ত্রিমাতি সুব্রত বাইন। মগবাজার ও এর আশপাশের এলাকা ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। সুব্রত বাইনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন মোল্লা মাসুদ আর টিক্কা। মগবাজারের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোখলেছুর রহমান ছিলেন টিক্কার আপন মামা। স্বাভাবিকভাবেই টিক্কা মগবাজার এলাকায় খুব প্রভাবশালী ছিলেন।
সেভেন স্টারের সেই সুব্রত বাইনের হাত ধরেই সন্ত্রাসী জগতে আসেন আরমান। সুদর্শন আরমান তখন চাঁদাবাজি করতেন। কিছুদিনের মধ্যে মোল্লা মাসুদ ও টিক্কার সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। সুব্রত বাইনের সঙ্গ ত্যাগ করে যোগ দেন লিয়াকতের দলে। খুব অল্প দিনেই তিনি মুরগি মিলন ও লিয়াকতের ডানহাতে পরিণত হন। সে সময় মুরগি মিলনের সঙ্গে তাঁর দারুণ ভাব জমে যায়। দুজন একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। মিলনের হয়ে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকার চোরাচালান নিয়ন্ত্রণের কাজ নেন আরমান।
এভাবে বেশ কয়েক বছর পার হয়। ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে। এরপর অবস্থা বুঝে লিয়াকত ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। আরমান তখন কারওয়ান বাজারের সন্ত্রাসী পিচ্ছি হান্নানের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। সেখানেও এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। সম্পর্কটাও ভেঙে যায়। শেষ পর্যন্ত লিয়াকতের সঙ্গে ভারতে পাড়ি জমান। সেখানে কিছুদিন কলকাতার একটি হোটেলে ছিলেন। কিন্তু ২০০২ সালের ১৯ নভেম্বর কলকাতা পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। তবে কিছুদিন পরেই তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। এরপর লিয়াকত দেশে ফিরে এলেও আরমান ভারতেই থেকে যান।
ফিরে আসেন ২০০৫ সালের মে মাসের দিকে। ঢাকায় ফিরে কেরানীগঞ্জে তাঁর বোনের বাড়ির পাশে একটি বাড়িভাড়া নিয়ে আত্মগোপন করেন। ওই বছরের ৩ জুন রাতে ধানমন্ডির একটি বাড়ি থেকে র্যাব তাঁকে গ্রেপ্তার করে। আরমানকে গ্রেপ্তারের পর শুরু হয় সেই ষড়যন্ত্রের খেলা।
আরমানকে গ্রেপ্তারের সাত-আট দিন পর, ২০০৫ সালের ১০ জুন নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে জজ মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি পুলিশ। তাঁকে কয়েক দফা রিমান্ডে এনে অনেক মারধর করা হয়। আরমানকে গ্রেপ্তারের পরের দিন (১১ জুন) মগবাজারের আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা মোখলেছুর রহমান ও আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর আরমান, জজ মিয়া এবং মোখলেছকে নিয়ে একটি গল্প ছেড়ে দেওয়া হয় বাজারে। সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়, মোখলেছুর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করার ষড়যন্ত্র করেছিল। মোখলেছুর রহমানকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেপ্তারও দেখানো হয়। আর বলা হয়, শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমান নোয়াখালীর জজ মিয়াকে আগে থেকেই চেনেন। গ্রেনেড হামলার পর তাঁরা একসঙ্গে ভিনদেশে অবস্থান করেছিলেন। (প্রথম আলো, ১৬ জুন ২০০৫)
র্যাবের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল চৌধুরী ফজলুল বারী এই সময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, র্যাব আরমানের কাছ থেকে ২১ আগস্ট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে (প্রথম আলো, ১৬ জুন ২০০৫)। আরমানকে জেরা করার পর তখন র্যাব জানিয়েছিল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী ত্রিমাতি সুব্রত বাইন, মুকুল এবং জয়। হামলার জন্য তাঁরা একটি বিশেষ সংস্থার সঙ্গে আড়াই কোটি টাকার চুক্তি করেছিলেন। চুক্তির ৫০ লাখ টাকা নাকি আগাম দেওয়া হয়েছিল। তখন নিজেদের তদন্ত বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ করতে ইন্টারপোলকেও ডেকে এনেছিল সিআইডি।
তখন অবশ্য আরেকটি কথা বাজারে চালু ছিল। ঠিক একই সময়ে এরশাদের মামলায় তাঁর স্ত্রী বিদিশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিদিশার ওপর সরকারি জুলুম-নির্যাতন নিয়ে মানবাধিকারকর্মীরা সোচ্চার হয়ে ওঠেন। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনাও হয়। শোনা যায়, সেই ঘটনা ধামাচাপা দিতে আরমানকে সামনে আনা হয়।
এরপর সিআইডি জজ মিয়ার কাছ থেকে গ্রেনেড হামলা নিয়ে একটি সাজানো স্বীকারোক্তি আদায় করে। আরমানের কাছ থেকেও স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হয়। তখন যেভাবেই হোক জজ মিয়ার একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গণমাধ্যমে চলে আসে। গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে জজ মিয়ার পরিবারকে খরচ দিচ্ছে সিআইডি। তাঁকে দিয়ে যা বলানো হচ্ছে সবই সাজানো। চারদিকে ছি ছি পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আরমানকে দিয়ে সাজানো জবানবন্দি দেওয়ানোর চেষ্টা থেকে সরে আসে ষড়যন্ত্রকারীরা। একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে নাটক সাজানোর চেষ্টা এভাবেই থেমে যায়। সেই থেকে গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি সেলে দিন কাটাচ্ছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমান।
আরও পড়ুন
কামরুল হাসান

বন্ধুমহলে আরিফ রহমানের নাম ছিল ‘মটু আরিফ’। যেমন দেহ তেমন খায়, উচ্চতাও সেই রকম। কথায় কথায় নিজেকে বলত ‘বোগরার ছৈল’ (বগুড়ার ছেলে)। যেন বগুড়া বাড়ি হওয়া বিরাট কিছু। খাওয়ার শেষপাতে বাচ্চাদের মুখে যেভাবে দুধভাত লেগে থাকে, আরিফের মুখেও সেভাবে লেপটে থাকত বগুড়ার আঞ্চলিক উচ্চারণ। ৯০-এর পর ঢাকায় থানা গাড়তে এসেছিল বগুড়ার দৈনিক করতোয়ার সাংবাদিক হিসেবে। তারপর আনন্দপত্র বাংলা সংবাদ থেকে চলে গেল আজকের কাগজে, ক্রাইম রিপোর্টার হয়ে। একদিন দুপুরে আরিফের ফোন।
বন্ধু, ‘হামাক একটা কাম করে দিবু। না করবু ন্যা কিন্তু। এক ছৈল খুব বিপদে পড়ছে। তুই না হলে হবি ন্যা।’
আরিফ এভাবেই বলে। আমি বললাম, আগে বল কী হয়েছে।
আরিফ যা বলল, তা আমাকে একটু চিন্তায় ফেলে দিল। এটিএন বাংলার প্ল্যানিং এডিটর কেরামত উল্লাহ বিপ্লব তখন বাংলাবাজার পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার। কসকো সাবানের উৎপাদনকারী কমান্ডার সোপ কোম্পানি ছিল পত্রিকাটির মালিক। তেজগাঁও শিল্প এলাকায় অফিস। সেখান থেকে রিকশায় করে বেশ রাতে মগবাজারের বাসায় ফিরছিলেন বিপ্লব। তাঁর রিকশাটি মগবাজার মসজিদের সামনে এলে একদল ছিনতাইকারী গতিরোধ করে। তারা বিপ্লবকে মেরেধরে তাঁর মোবাইল ফোনসহ সবকিছু কেড়ে নেয়। ছিনতাইকারীদের হাতে সবকিছু খোয়ালেও বিপ্লবের আফসোস ছিল শখের মোবাইল ফোনটি নিয়ে। যে করেই হোক ফোনটা উদ্ধার করে দিতে হবে। আরিফের পীড়াপীড়িতে বললাম, দেখি কাউকে অনুরোধ করে উদ্ধার করা যায় কি না। তখন সবার হাতে হাতে যেমন মোবাইল ফোন ছিল না, তেমনি মোবাইল ফোনের কলরেকর্ড, কললিস্ট বা অবস্থান জানার ব্যবস্থাও ছিল না। ফোন একবার হারালে মহাবিপদ।
বিপ্লবের সেই ফোন উদ্ধারের জন্য প্রথম কল দিলাম রমনা থানার তৎকালীন ওসি রফিকুল ইসলামকে। দেখি এ ঘটনা তিনি আমার আগেই শুনেছেন। বললেন, এই ফোন উদ্ধার করা তাঁর পক্ষে একেবারে অসম্ভব। তবে একটা পথ বাতলে দিলেন। বললেন, কারওয়ান বাজার থেকে মগবাজার রেলগেট পর্যন্ত এলাকায় যেসব চাঁদাবাজি-ছিনতাই হয়, সবই করে পিচ্চি হান্নানের ছেলেরা। আর রেলগেটের দক্ষিণ দিকের নিয়ন্ত্রণ আরমানের হাতে। আরমান যুবলীগের নেতা লিয়াকত হোসেনের ঘনিষ্ঠ। লিয়াকতকে বললে কাজ হতে পারে।
নিউ ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনের উলটো দিকে মোটর পার্টসের মার্কেট হেলেনা সেন্টারে যুবলীগের নেতা লিয়াকতের আস্তানা। সেই আস্তানায় টিঅ্যান্ডটির একটি ফোন ছিল। ফোন দিলাম সেই নম্বরে। লিয়াকত নিজেই ফোন ধরে সব শুনে বললেন, ‘একটু অপেক্ষা করেন, দেখি কী করা যায়।’ বিকেলের দিকে জনকণ্ঠের পিএবিএক্স নম্বরে ফোন দিলেন আরমান নিজেই। বললেন, ছিনতাইকারীদের তিনি শনাক্ত করেছেন, ফোনও পাওয়া গেছে। যাঁর ফোন তাঁকে এসে নিয়ে যেতে হবে। ছিনতাই হওয়ার পর বিপ্লব খুব ভয় পেয়ে গেছেন। ফোন আর নিতে আসেন না। পরে আরিফসহ এসে ফোনটা লিয়াকতের অফিস থেকে বুঝে নেন বিপ্লব।
এ গল্পের শেষের দিকে যে আরমানের কথা বললাম, সেই আরমানই ছিল সরকারের পুরস্কার ঘোষিত ১২ নম্বর শীর্ষ সন্ত্রাসী। তবে আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’–এ শুধু সন্ত্রাসী আরমানের গল্প বলব না। বলব এই সন্ত্রাসীকে সঙ্গে নিয়ে একটি রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের গল্প। যে ষড়যন্ত্র শুধু গণমাধ্যমের চাপে খুব বেশি দূর এগোতে পারেনি।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। আপনাদের নিশ্চয় সেই মামলার জজ মিয়ার কথা মনে আছে? এই জজ মিয়া গল্পের প্লট সাজাতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমানকেও আনা হয়েছিল। জজ মিয়াকে দিয়ে যেভাবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়, সেভাবে আরমানের জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু গণমাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক লেখালেখির পর সব ভেস্তে যায়। ‘জজ মিয়াকে নিয়ে পুলিশের আষাঢ়ে গল্প’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি রিপোর্ট তখন বেশ হইচই ফেলেছিল। তবে ষড়যন্ত্র নিয়ে বলার আগে আরমানের কীর্তিকলাপগুলো একটু বলি।
আরমানের বাবার নাম এস এম আইনুল হক। দুই ভাই, তিন বোনের মধ্যে আরমান সবার বড়। বড় মগবাজার এলাকায় বছরের পর বছর ধরে তাঁদের পরিবারের বসবাস। আরমান দেখতে যেমন স্মার্ট, কথাবার্তায় তেমনি বিনয়ী। খুব নিচু স্বরে কথা বলতেন। কথা বলার সময় কারও চোখের দিকে তাকাতেন না। তাঁর পোশাক-আশাক ছিল চোখধাঁধানো। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকার যে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল, তাতে আরমানের জন্য বরাদ্দ ছিল ৫০ হাজার টাকা। ওই সময় তাঁর ছবিসহ পোস্টার সারা দেশে সাঁটানো হয়। তখন আরমানের বিরুদ্ধে হত্যাসহ মামলা ছিল ১৩টি।
এবার বলি, আরমান কী করে এত বড় সন্ত্রাসী হলেন। আপনাদের নিশ্চয় সেই ‘সেভেন স্টার’ নামকরণের গল্পটা মনে আছে। কথিত সেই সেভেন স্টার বাহিনীর প্রধান ছিলেন ত্রিমাতি সুব্রত বাইন। মগবাজার ও এর আশপাশের এলাকা ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। সুব্রত বাইনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন মোল্লা মাসুদ আর টিক্কা। মগবাজারের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোখলেছুর রহমান ছিলেন টিক্কার আপন মামা। স্বাভাবিকভাবেই টিক্কা মগবাজার এলাকায় খুব প্রভাবশালী ছিলেন।
সেভেন স্টারের সেই সুব্রত বাইনের হাত ধরেই সন্ত্রাসী জগতে আসেন আরমান। সুদর্শন আরমান তখন চাঁদাবাজি করতেন। কিছুদিনের মধ্যে মোল্লা মাসুদ ও টিক্কার সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। সুব্রত বাইনের সঙ্গ ত্যাগ করে যোগ দেন লিয়াকতের দলে। খুব অল্প দিনেই তিনি মুরগি মিলন ও লিয়াকতের ডানহাতে পরিণত হন। সে সময় মুরগি মিলনের সঙ্গে তাঁর দারুণ ভাব জমে যায়। দুজন একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। মিলনের হয়ে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকার চোরাচালান নিয়ন্ত্রণের কাজ নেন আরমান।
এভাবে বেশ কয়েক বছর পার হয়। ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে। এরপর অবস্থা বুঝে লিয়াকত ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। আরমান তখন কারওয়ান বাজারের সন্ত্রাসী পিচ্ছি হান্নানের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। সেখানেও এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। সম্পর্কটাও ভেঙে যায়। শেষ পর্যন্ত লিয়াকতের সঙ্গে ভারতে পাড়ি জমান। সেখানে কিছুদিন কলকাতার একটি হোটেলে ছিলেন। কিন্তু ২০০২ সালের ১৯ নভেম্বর কলকাতা পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। তবে কিছুদিন পরেই তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। এরপর লিয়াকত দেশে ফিরে এলেও আরমান ভারতেই থেকে যান।
ফিরে আসেন ২০০৫ সালের মে মাসের দিকে। ঢাকায় ফিরে কেরানীগঞ্জে তাঁর বোনের বাড়ির পাশে একটি বাড়িভাড়া নিয়ে আত্মগোপন করেন। ওই বছরের ৩ জুন রাতে ধানমন্ডির একটি বাড়ি থেকে র্যাব তাঁকে গ্রেপ্তার করে। আরমানকে গ্রেপ্তারের পর শুরু হয় সেই ষড়যন্ত্রের খেলা।
আরমানকে গ্রেপ্তারের সাত-আট দিন পর, ২০০৫ সালের ১০ জুন নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে জজ মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি পুলিশ। তাঁকে কয়েক দফা রিমান্ডে এনে অনেক মারধর করা হয়। আরমানকে গ্রেপ্তারের পরের দিন (১১ জুন) মগবাজারের আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা মোখলেছুর রহমান ও আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর আরমান, জজ মিয়া এবং মোখলেছকে নিয়ে একটি গল্প ছেড়ে দেওয়া হয় বাজারে। সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়, মোখলেছুর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করার ষড়যন্ত্র করেছিল। মোখলেছুর রহমানকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেপ্তারও দেখানো হয়। আর বলা হয়, শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমান নোয়াখালীর জজ মিয়াকে আগে থেকেই চেনেন। গ্রেনেড হামলার পর তাঁরা একসঙ্গে ভিনদেশে অবস্থান করেছিলেন। (প্রথম আলো, ১৬ জুন ২০০৫)
র্যাবের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল চৌধুরী ফজলুল বারী এই সময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, র্যাব আরমানের কাছ থেকে ২১ আগস্ট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে (প্রথম আলো, ১৬ জুন ২০০৫)। আরমানকে জেরা করার পর তখন র্যাব জানিয়েছিল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী ত্রিমাতি সুব্রত বাইন, মুকুল এবং জয়। হামলার জন্য তাঁরা একটি বিশেষ সংস্থার সঙ্গে আড়াই কোটি টাকার চুক্তি করেছিলেন। চুক্তির ৫০ লাখ টাকা নাকি আগাম দেওয়া হয়েছিল। তখন নিজেদের তদন্ত বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ করতে ইন্টারপোলকেও ডেকে এনেছিল সিআইডি।
তখন অবশ্য আরেকটি কথা বাজারে চালু ছিল। ঠিক একই সময়ে এরশাদের মামলায় তাঁর স্ত্রী বিদিশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিদিশার ওপর সরকারি জুলুম-নির্যাতন নিয়ে মানবাধিকারকর্মীরা সোচ্চার হয়ে ওঠেন। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনাও হয়। শোনা যায়, সেই ঘটনা ধামাচাপা দিতে আরমানকে সামনে আনা হয়।
এরপর সিআইডি জজ মিয়ার কাছ থেকে গ্রেনেড হামলা নিয়ে একটি সাজানো স্বীকারোক্তি আদায় করে। আরমানের কাছ থেকেও স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হয়। তখন যেভাবেই হোক জজ মিয়ার একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গণমাধ্যমে চলে আসে। গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে জজ মিয়ার পরিবারকে খরচ দিচ্ছে সিআইডি। তাঁকে দিয়ে যা বলানো হচ্ছে সবই সাজানো। চারদিকে ছি ছি পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আরমানকে দিয়ে সাজানো জবানবন্দি দেওয়ানোর চেষ্টা থেকে সরে আসে ষড়যন্ত্রকারীরা। একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে নাটক সাজানোর চেষ্টা এভাবেই থেমে যায়। সেই থেকে গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি সেলে দিন কাটাচ্ছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমান।
আরও পড়ুন

বন্ধুমহলে আরিফ রহমানের নাম ছিল ‘মটু আরিফ’। যেমন দেহ তেমন খায়, উচ্চতাও সেই রকম। কথায় কথায় নিজেকে বলত ‘বোগরার ছৈল’ (বগুড়ার ছেলে)। যেন বগুড়া বাড়ি হওয়া বিরাট কিছু। খাওয়ার শেষপাতে বাচ্চাদের মুখে যেভাবে দুধভাত লেগে থাকে, আরিফের মুখেও সেভাবে লেপটে থাকত বগুড়ার আঞ্চলিক উচ্চারণ। ৯০-এর পর ঢাকায় থানা গাড়তে এসেছিল বগুড়ার দৈনিক করতোয়ার সাংবাদিক হিসেবে। তারপর আনন্দপত্র বাংলা সংবাদ থেকে চলে গেল আজকের কাগজে, ক্রাইম রিপোর্টার হয়ে। একদিন দুপুরে আরিফের ফোন।
বন্ধু, ‘হামাক একটা কাম করে দিবু। না করবু ন্যা কিন্তু। এক ছৈল খুব বিপদে পড়ছে। তুই না হলে হবি ন্যা।’
আরিফ এভাবেই বলে। আমি বললাম, আগে বল কী হয়েছে।
আরিফ যা বলল, তা আমাকে একটু চিন্তায় ফেলে দিল। এটিএন বাংলার প্ল্যানিং এডিটর কেরামত উল্লাহ বিপ্লব তখন বাংলাবাজার পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার। কসকো সাবানের উৎপাদনকারী কমান্ডার সোপ কোম্পানি ছিল পত্রিকাটির মালিক। তেজগাঁও শিল্প এলাকায় অফিস। সেখান থেকে রিকশায় করে বেশ রাতে মগবাজারের বাসায় ফিরছিলেন বিপ্লব। তাঁর রিকশাটি মগবাজার মসজিদের সামনে এলে একদল ছিনতাইকারী গতিরোধ করে। তারা বিপ্লবকে মেরেধরে তাঁর মোবাইল ফোনসহ সবকিছু কেড়ে নেয়। ছিনতাইকারীদের হাতে সবকিছু খোয়ালেও বিপ্লবের আফসোস ছিল শখের মোবাইল ফোনটি নিয়ে। যে করেই হোক ফোনটা উদ্ধার করে দিতে হবে। আরিফের পীড়াপীড়িতে বললাম, দেখি কাউকে অনুরোধ করে উদ্ধার করা যায় কি না। তখন সবার হাতে হাতে যেমন মোবাইল ফোন ছিল না, তেমনি মোবাইল ফোনের কলরেকর্ড, কললিস্ট বা অবস্থান জানার ব্যবস্থাও ছিল না। ফোন একবার হারালে মহাবিপদ।
বিপ্লবের সেই ফোন উদ্ধারের জন্য প্রথম কল দিলাম রমনা থানার তৎকালীন ওসি রফিকুল ইসলামকে। দেখি এ ঘটনা তিনি আমার আগেই শুনেছেন। বললেন, এই ফোন উদ্ধার করা তাঁর পক্ষে একেবারে অসম্ভব। তবে একটা পথ বাতলে দিলেন। বললেন, কারওয়ান বাজার থেকে মগবাজার রেলগেট পর্যন্ত এলাকায় যেসব চাঁদাবাজি-ছিনতাই হয়, সবই করে পিচ্চি হান্নানের ছেলেরা। আর রেলগেটের দক্ষিণ দিকের নিয়ন্ত্রণ আরমানের হাতে। আরমান যুবলীগের নেতা লিয়াকত হোসেনের ঘনিষ্ঠ। লিয়াকতকে বললে কাজ হতে পারে।
নিউ ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনের উলটো দিকে মোটর পার্টসের মার্কেট হেলেনা সেন্টারে যুবলীগের নেতা লিয়াকতের আস্তানা। সেই আস্তানায় টিঅ্যান্ডটির একটি ফোন ছিল। ফোন দিলাম সেই নম্বরে। লিয়াকত নিজেই ফোন ধরে সব শুনে বললেন, ‘একটু অপেক্ষা করেন, দেখি কী করা যায়।’ বিকেলের দিকে জনকণ্ঠের পিএবিএক্স নম্বরে ফোন দিলেন আরমান নিজেই। বললেন, ছিনতাইকারীদের তিনি শনাক্ত করেছেন, ফোনও পাওয়া গেছে। যাঁর ফোন তাঁকে এসে নিয়ে যেতে হবে। ছিনতাই হওয়ার পর বিপ্লব খুব ভয় পেয়ে গেছেন। ফোন আর নিতে আসেন না। পরে আরিফসহ এসে ফোনটা লিয়াকতের অফিস থেকে বুঝে নেন বিপ্লব।
এ গল্পের শেষের দিকে যে আরমানের কথা বললাম, সেই আরমানই ছিল সরকারের পুরস্কার ঘোষিত ১২ নম্বর শীর্ষ সন্ত্রাসী। তবে আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’–এ শুধু সন্ত্রাসী আরমানের গল্প বলব না। বলব এই সন্ত্রাসীকে সঙ্গে নিয়ে একটি রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের গল্প। যে ষড়যন্ত্র শুধু গণমাধ্যমের চাপে খুব বেশি দূর এগোতে পারেনি।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। আপনাদের নিশ্চয় সেই মামলার জজ মিয়ার কথা মনে আছে? এই জজ মিয়া গল্পের প্লট সাজাতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমানকেও আনা হয়েছিল। জজ মিয়াকে দিয়ে যেভাবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়, সেভাবে আরমানের জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু গণমাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক লেখালেখির পর সব ভেস্তে যায়। ‘জজ মিয়াকে নিয়ে পুলিশের আষাঢ়ে গল্প’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি রিপোর্ট তখন বেশ হইচই ফেলেছিল। তবে ষড়যন্ত্র নিয়ে বলার আগে আরমানের কীর্তিকলাপগুলো একটু বলি।
আরমানের বাবার নাম এস এম আইনুল হক। দুই ভাই, তিন বোনের মধ্যে আরমান সবার বড়। বড় মগবাজার এলাকায় বছরের পর বছর ধরে তাঁদের পরিবারের বসবাস। আরমান দেখতে যেমন স্মার্ট, কথাবার্তায় তেমনি বিনয়ী। খুব নিচু স্বরে কথা বলতেন। কথা বলার সময় কারও চোখের দিকে তাকাতেন না। তাঁর পোশাক-আশাক ছিল চোখধাঁধানো। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকার যে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল, তাতে আরমানের জন্য বরাদ্দ ছিল ৫০ হাজার টাকা। ওই সময় তাঁর ছবিসহ পোস্টার সারা দেশে সাঁটানো হয়। তখন আরমানের বিরুদ্ধে হত্যাসহ মামলা ছিল ১৩টি।
এবার বলি, আরমান কী করে এত বড় সন্ত্রাসী হলেন। আপনাদের নিশ্চয় সেই ‘সেভেন স্টার’ নামকরণের গল্পটা মনে আছে। কথিত সেই সেভেন স্টার বাহিনীর প্রধান ছিলেন ত্রিমাতি সুব্রত বাইন। মগবাজার ও এর আশপাশের এলাকা ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। সুব্রত বাইনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন মোল্লা মাসুদ আর টিক্কা। মগবাজারের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোখলেছুর রহমান ছিলেন টিক্কার আপন মামা। স্বাভাবিকভাবেই টিক্কা মগবাজার এলাকায় খুব প্রভাবশালী ছিলেন।
সেভেন স্টারের সেই সুব্রত বাইনের হাত ধরেই সন্ত্রাসী জগতে আসেন আরমান। সুদর্শন আরমান তখন চাঁদাবাজি করতেন। কিছুদিনের মধ্যে মোল্লা মাসুদ ও টিক্কার সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। সুব্রত বাইনের সঙ্গ ত্যাগ করে যোগ দেন লিয়াকতের দলে। খুব অল্প দিনেই তিনি মুরগি মিলন ও লিয়াকতের ডানহাতে পরিণত হন। সে সময় মুরগি মিলনের সঙ্গে তাঁর দারুণ ভাব জমে যায়। দুজন একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। মিলনের হয়ে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকার চোরাচালান নিয়ন্ত্রণের কাজ নেন আরমান।
এভাবে বেশ কয়েক বছর পার হয়। ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে। এরপর অবস্থা বুঝে লিয়াকত ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। আরমান তখন কারওয়ান বাজারের সন্ত্রাসী পিচ্ছি হান্নানের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। সেখানেও এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। সম্পর্কটাও ভেঙে যায়। শেষ পর্যন্ত লিয়াকতের সঙ্গে ভারতে পাড়ি জমান। সেখানে কিছুদিন কলকাতার একটি হোটেলে ছিলেন। কিন্তু ২০০২ সালের ১৯ নভেম্বর কলকাতা পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। তবে কিছুদিন পরেই তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। এরপর লিয়াকত দেশে ফিরে এলেও আরমান ভারতেই থেকে যান।
ফিরে আসেন ২০০৫ সালের মে মাসের দিকে। ঢাকায় ফিরে কেরানীগঞ্জে তাঁর বোনের বাড়ির পাশে একটি বাড়িভাড়া নিয়ে আত্মগোপন করেন। ওই বছরের ৩ জুন রাতে ধানমন্ডির একটি বাড়ি থেকে র্যাব তাঁকে গ্রেপ্তার করে। আরমানকে গ্রেপ্তারের পর শুরু হয় সেই ষড়যন্ত্রের খেলা।
আরমানকে গ্রেপ্তারের সাত-আট দিন পর, ২০০৫ সালের ১০ জুন নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে জজ মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি পুলিশ। তাঁকে কয়েক দফা রিমান্ডে এনে অনেক মারধর করা হয়। আরমানকে গ্রেপ্তারের পরের দিন (১১ জুন) মগবাজারের আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা মোখলেছুর রহমান ও আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর আরমান, জজ মিয়া এবং মোখলেছকে নিয়ে একটি গল্প ছেড়ে দেওয়া হয় বাজারে। সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়, মোখলেছুর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করার ষড়যন্ত্র করেছিল। মোখলেছুর রহমানকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেপ্তারও দেখানো হয়। আর বলা হয়, শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমান নোয়াখালীর জজ মিয়াকে আগে থেকেই চেনেন। গ্রেনেড হামলার পর তাঁরা একসঙ্গে ভিনদেশে অবস্থান করেছিলেন। (প্রথম আলো, ১৬ জুন ২০০৫)
র্যাবের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল চৌধুরী ফজলুল বারী এই সময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, র্যাব আরমানের কাছ থেকে ২১ আগস্ট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে (প্রথম আলো, ১৬ জুন ২০০৫)। আরমানকে জেরা করার পর তখন র্যাব জানিয়েছিল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী ত্রিমাতি সুব্রত বাইন, মুকুল এবং জয়। হামলার জন্য তাঁরা একটি বিশেষ সংস্থার সঙ্গে আড়াই কোটি টাকার চুক্তি করেছিলেন। চুক্তির ৫০ লাখ টাকা নাকি আগাম দেওয়া হয়েছিল। তখন নিজেদের তদন্ত বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ করতে ইন্টারপোলকেও ডেকে এনেছিল সিআইডি।
তখন অবশ্য আরেকটি কথা বাজারে চালু ছিল। ঠিক একই সময়ে এরশাদের মামলায় তাঁর স্ত্রী বিদিশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিদিশার ওপর সরকারি জুলুম-নির্যাতন নিয়ে মানবাধিকারকর্মীরা সোচ্চার হয়ে ওঠেন। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনাও হয়। শোনা যায়, সেই ঘটনা ধামাচাপা দিতে আরমানকে সামনে আনা হয়।
এরপর সিআইডি জজ মিয়ার কাছ থেকে গ্রেনেড হামলা নিয়ে একটি সাজানো স্বীকারোক্তি আদায় করে। আরমানের কাছ থেকেও স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হয়। তখন যেভাবেই হোক জজ মিয়ার একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গণমাধ্যমে চলে আসে। গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে জজ মিয়ার পরিবারকে খরচ দিচ্ছে সিআইডি। তাঁকে দিয়ে যা বলানো হচ্ছে সবই সাজানো। চারদিকে ছি ছি পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আরমানকে দিয়ে সাজানো জবানবন্দি দেওয়ানোর চেষ্টা থেকে সরে আসে ষড়যন্ত্রকারীরা। একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে নাটক সাজানোর চেষ্টা এভাবেই থেমে যায়। সেই থেকে গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি সেলে দিন কাটাচ্ছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমান।
আরও পড়ুন

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

বন্ধুমহলে আরিফ রহমানের নাম ছিল ‘মটু আরিফ’। যেমন দেহ তেমন খায়, উচ্চতাও সেই রকম। কথায় কথায় নিজেকে বলত ‘বোগরার ছৈল’ (বগুড়ার ছেলে)। যেন বগুড়া বাড়ি হওয়া বিরাট কিছু। খাওয়ার শেষপাতে বাচ্চাদের মুখে যেভাবে দুধভাত লেগে থাকে, আরিফের মুখেও সেভাবে লেপটে থাকত বগুড়ার আঞ্চলিক উচ্চারণ। ৯০-এর পর ঢাকায় থানা গাড়তে এসেছ
১৪ আগস্ট ২০২১
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বন্ধুমহলে আরিফ রহমানের নাম ছিল ‘মটু আরিফ’। যেমন দেহ তেমন খায়, উচ্চতাও সেই রকম। কথায় কথায় নিজেকে বলত ‘বোগরার ছৈল’ (বগুড়ার ছেলে)। যেন বগুড়া বাড়ি হওয়া বিরাট কিছু। খাওয়ার শেষপাতে বাচ্চাদের মুখে যেভাবে দুধভাত লেগে থাকে, আরিফের মুখেও সেভাবে লেপটে থাকত বগুড়ার আঞ্চলিক উচ্চারণ। ৯০-এর পর ঢাকায় থানা গাড়তে এসেছ
১৪ আগস্ট ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

বন্ধুমহলে আরিফ রহমানের নাম ছিল ‘মটু আরিফ’। যেমন দেহ তেমন খায়, উচ্চতাও সেই রকম। কথায় কথায় নিজেকে বলত ‘বোগরার ছৈল’ (বগুড়ার ছেলে)। যেন বগুড়া বাড়ি হওয়া বিরাট কিছু। খাওয়ার শেষপাতে বাচ্চাদের মুখে যেভাবে দুধভাত লেগে থাকে, আরিফের মুখেও সেভাবে লেপটে থাকত বগুড়ার আঞ্চলিক উচ্চারণ। ৯০-এর পর ঢাকায় থানা গাড়তে এসেছ
১৪ আগস্ট ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

বন্ধুমহলে আরিফ রহমানের নাম ছিল ‘মটু আরিফ’। যেমন দেহ তেমন খায়, উচ্চতাও সেই রকম। কথায় কথায় নিজেকে বলত ‘বোগরার ছৈল’ (বগুড়ার ছেলে)। যেন বগুড়া বাড়ি হওয়া বিরাট কিছু। খাওয়ার শেষপাতে বাচ্চাদের মুখে যেভাবে দুধভাত লেগে থাকে, আরিফের মুখেও সেভাবে লেপটে থাকত বগুড়ার আঞ্চলিক উচ্চারণ। ৯০-এর পর ঢাকায় থানা গাড়তে এসেছ
১৪ আগস্ট ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে