কামরুল হাসান

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
একদিন গভীর রাতে সেই বাড়িতে শুরু হলো গোলাগুলি। একটি-দুটি নয়, শত শত, হাজার হাজার। বৃষ্টির মতো গুলির শব্দে কেঁপে উঠল পুরো এলাকা। ঘণ্টা দুয়েক ধরে চলল।
এত গোলাগুলির শব্দে এলাকার মানুষের ঘুম উবে গেল। স্বাভাবিকভাবে ক্রাইম রিপোর্টারদের মোবাইল ফোনও গরম হয়ে উঠল। কী হচ্ছে তা বুঝে উঠতে উঠতে ভোর হয়ে গেল।
মোটরবাইক নিয়ে ছুটলাম পোস্তগোলার দিকে। স্বামীবাগ-দয়াগঞ্জ বিশাল সড়কটি তখনো হয়নি। পোস্তগোলায় যেতে হতো লক্ষ্মীবাজার হয়ে অথবা সায়েদাবাদ পার হয়ে পোস্তগোলা ব্রিজ বাঁ হাতে রেখে।
২০০০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বুধবারের ভোর। যখন পৌঁছালাম, লোকজন তখন ফজরের নামাজ শেষে বের হয়েছেন। মনু জমিদারের বাড়ির সামনে উৎসুক মানুষের ভিড় বাড়ছে। ভিড় ঠেলে সামনে গিয়ে দেখি গোটা দশেক পুলিশের গাড়ি, সবই গোয়েন্দা পুলিশের। ‘ডিবি’ লেখা জ্যাকেটের প্রচলন তখনো শুরু হয়নি, ডিবির পুলিশ সদস্যরা সাদাপোশাকে অপারেশনে যেতেন। সেখানে দেখি অনেকে আবার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটও পরে আছেন। এটা কোন টিম? প্রশ্ন করতেই মুখচেনা এক পুলিশ সদস্য বললেন, এসি তানভীর স্যারের। দূরে দাঁড়িয়ে ডিবির তৎকালীন এসি তানভীর হায়দার চৌধুরী (বর্তমানে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি) নির্দেশনা দিচ্ছেন। তাঁর কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম কী হয়েছে। তিনি বললেন, যা বলার, ডিসি স্যার বলবেন। ডিবিতে তখন একজনই ডিসি–মুক্তিযোদ্ধা ব্যাচের মুহাম্মদ আবদুল হান্নান।
ঘটনাস্থলের একটু দূরে দেখি, রাস্তার এক পাশে ওয়াকিটকি হাতে দাঁড়িয়ে শ্যামপুর থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক। তিনি বললেন, রাতভর এ বাড়ি থেকে পুলিশের সঙ্গেই গোলাগুলি হয়েছে। বাড়ির ভেতরে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, একজন মারাও গেছে। যিনি মারা গেছেন তাঁর নাম সুমন, মনু জমিদারের ছোট ছেলে। গোলাগুলি থামার পর পুরো বাড়ি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। এখন ঘরে ঘরে তল্লাশি চলছে।
ওসিকে বললাম, বাড়ির ভেতরে যেতে চাই। তিনি আমাকে নিয়ে ভেতরে গেলেন। দেখি পুরো বাড়ি পুলিশে ভরা। একটি কক্ষে পুলিশের সঙ্গে সুদর্শন এক যুবক তর্ক করছেন। সাংবাদিক পরিচয় দিতে সেই যুবক এগিয়ে এসে বললেন, তাঁর নাম মোহাম্মদ শাহাদত, এ বাড়ির মালিকের তৃতীয় ছেলে। ঘরভর্তি পুলিশের সামনেই তিনি অভিযোগ করলেন, বিনা কারণে পুলিশ তাঁর বাড়ি লক্ষ্য করে রাতভর গুলি ছুড়েছে। সেই গুলিতে তাঁর ছোট ভাই সুমন মারা গেছে, আরেক ভাই শামিম ও ভাতিজা তুলি আহত হয়েছে। দেখলাম পুলিশ সদস্যদের কেউ তাঁর কথা গ্রাহ্য করছেন না। কিন্তু তিনি বারবার অভিযোগ করেই যাচ্ছেন।
বাড়ির ভেতরটা ভালো করে দেখলাম, এত যে গুলি হয়েছে, তার তেমন কোনো চিহ্ন নেই। মনে হলো পুলিশ সদস্যদের বেশির ভাগ শূন্যে গুলি ছুড়েছেন। শাহাদত বললেন, তিনি জানালা দিয়ে দেখেছেন, রাতে পুলিশের সঙ্গে আবুল, ইবন ও জাকির নামের তিনজন সন্ত্রাসীও ছিল। তারাও গুলি করেছে। সেই তিনজন কারা? প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, এরা কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী। শাহাদতের মুখে কালা জাহাঙ্গীরের নাম শুনে মনে হলো, পেছনে বড় ঘটনা আছে। কালা জাহাঙ্গীর তখন ঢাকা আন্ডারওয়ার্ল্ডের ‘অদৃশ্য ডন’। একের পর এক খুন করে যাচ্ছেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারছে না।
সকাল নয়টার দিকে ঘটনাস্থলে এলেন ডিবির তখনকার ডিসি মুহাম্মদ আবদুল হান্নান। তিনি এসে সব খোলাসা করলেন। বললেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে মনু জমিদারের বাড়িতে অবস্থান করছেন জেনেই তাঁরা অভিযান করেছেন, কিন্তু আসিফকে তাঁরা ধরতে পারেননি। ডিসি জোর দিয়ে বললেন, দুদিন ধরে তাঁরা বাড়িটি রেকি করেছিলেন। ৮ ফেব্রুয়ারি (২০০০ সাল) রাত নয়টার দিকে আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে এ বাড়িতে আসেন। এ খবর নিশ্চিত হওয়ার পর রাত তিনটার দিকে তাঁরা অভিযান শুরু করেন। তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন, এ বাড়িতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফ ছিলেন। কিন্তু অভিযানের সময় সুযোগ বুঝে পেছনের দরজা দিয়ে দলবল নিয়ে পালিয়ে গেছেন। তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমও সাংবাদিকদের একই কথা বলেছিলেন।
মনু জমিদারের পরিবার এলাকায় অনেক প্রভাবশালী। পুলিশের গুলিতে সুমন নিহত হওয়ার পর এলাকায় বেশ উত্তেজনা দেখা দেয়। পরের দিন লোকজন বিক্ষোভ মিছিল করে। পুরো পোস্তগোলায় দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। আমাদেরও কাজ বেড়ে গেল। পোস্তগোলায় এসে লোকজনের সঙ্গে কথা বলতেই বেরিয়ে এল অনেক তথ্য।
মনু মিয়ার যে সুদর্শন সন্তানের কথা বললাম, সেই শাহাদত সেবার ওয়ার্ড কমিশনার পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সেখানকার প্রভাবশালী ওয়ার্ড কমিশনার সাইদুর রহমান ওরফে শহীদ কমিশনার নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে চান। স্বাভাবিকভাবেই শাহাদত নির্বাচনে আসুন, তা তিনি চান না। শাহাদত যেখানে যান, সেখানেই তিনি লোক পাঠিয়ে গোলযোগ করার চেষ্টা করেন। এ রকম গোলযোগের সময় বাবু নামের এক যুবক নিহত হন। সেই মামলায় শাহাদতকে প্রধান আসামি করা হয়। শাহাদত আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছেন।
লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, জামিনে এসে শাহাদত শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছেন। আসিফের লোকজন দিনরাত তাঁকে চোখে চোখে রাখছে, যাতে শহীদ কমিশনারের সন্ত্রাসীরা ছুঁতে না পারে। শহীদ কমিশনারও কম নন, তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরকে আশ্রয় দিয়েছেন। কালা জাহাঙ্গীর এখন তাঁর হয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
শাহাদতের বাড়িতে পুলিশি অভিযানের পর কালা জাহাঙ্গীরের সুবিধা হয়েছে। আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে পোস্তগোলা ছেড়ে খিলগাঁওয়ে আস্তানা গেড়েছে। এতে করে কালা জাহাঙ্গীরের পুরান ঢাকায় আশ্রয় আরও নিরাপদ হয়েছে। আসিফ অনেকবার পুরান ঢাকায় ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আন্ডারওয়ার্ল্ডে এ নিয়ে অনেক দেনদরবার হয়েছে, কিন্তু লাভ হয়নি। একপর্যায়ে আসিফের আস্তানার খোঁজে মরিয়া হয়ে ওঠেন কালা জাহাঙ্গীর।
এ জন্য তাঁকে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ছয় মাসের মাথায় আসিফের এক বান্ধবীকে খুঁজে বের করেন কালা জাহাঙ্গীর। তাঁর সাহায্য নিয়ে একদিন আসিফের বাসায় হানা দেয় কালা জাহাঙ্গীরের দলবল। তারা আসিফ, তাঁর বডিগার্ড টিপু ও রিপনকে খুন করে দরজায় তালা দিয়ে সটকে পড়ে। ২০০০ সালের ২৯ আগস্ট সেই বাসা থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার পর পুলিশ লাশের সন্ধান পায়। কিন্তু তারপরও কালা জাহাঙ্গীর শান্ত থাকতে পারেননি। আসিফ খুনের এক মাসের মাথায় ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালত চত্বরে প্রকাশ্যে খুন করেন হুমায়ুন কবির মিলন ওরফে মুরগি মিলনকে।
এসব ঘটনার পরে শাহাদত খুব সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে শুরু করেন। তিনি কালা জাহাঙ্গীরের সব তৎপরতা নজরে রাখেন। বিএনপির তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বিভিন্নভাবে শাহাদতকে সহায়তা করেন। একসময় বিপুল ভোটে ওয়ার্ড কমিশনার হিসেবে শাহাদত নির্বাচিত হন। তারপরও কালা জাহাঙ্গীর তাঁর পিছু ছাড়েননি। ২০০২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উত্তরার একটি স্কুলে ছেলেকে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বিমানবন্দর সড়কে গাড়িতে গুলি করে শাহাদতকে খুন করেন কালা জাহাঙ্গীর। এরপর জনকণ্ঠ অফিসে ফোন করে সেই খুনের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষদের এভাবে হত্যা করেও বাঁচতে পারেননি ভয়ংকর কালা জাহাঙ্গীর। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর মা পেয়ারা বেগম র্যাব সদর দপ্তরে হাজির হয়ে বলেন, তাঁর ছেলে কালা জাহাঙ্গীর ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। এর পর থেকেই আন্ডারওয়ার্ল্ডে কালা জাহাঙ্গীরের তৎপরতা থেমে যায়। এরপর তাঁর আশ্রয়দাতা সেই শহীদ কমিশনারও একটি মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ নিয়ে পলাতক হন।
শাহাদত খুনের মামলার শেষ পর্যন্ত কোনো বিচার হয়নি। কালা জাহাঙ্গীরের ভয়ে কেউ আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাননি। আদালত একপর্যায়ে আসামিদের অব্যাহতি দেন।
শাহাদতের তিন ছেলে লেখাপড়া শেষ করে পরিবারের হাল ধরেছেন। তাঁরা এখন ব্যস্ত নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে। আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে ফোন করেছিলাম শাহাদতের আইনজীবী ও স্বজন রফিকুল ইসলামকে। তিনি বললেন, অন্ধকার জগতের সব আঁধার কেটে গেছে। শাহাদতের পরিবার এখন আলোতে, তাঁরা ভালোই আছেন।
আরও পড়ুন:

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
একদিন গভীর রাতে সেই বাড়িতে শুরু হলো গোলাগুলি। একটি-দুটি নয়, শত শত, হাজার হাজার। বৃষ্টির মতো গুলির শব্দে কেঁপে উঠল পুরো এলাকা। ঘণ্টা দুয়েক ধরে চলল।
এত গোলাগুলির শব্দে এলাকার মানুষের ঘুম উবে গেল। স্বাভাবিকভাবে ক্রাইম রিপোর্টারদের মোবাইল ফোনও গরম হয়ে উঠল। কী হচ্ছে তা বুঝে উঠতে উঠতে ভোর হয়ে গেল।
মোটরবাইক নিয়ে ছুটলাম পোস্তগোলার দিকে। স্বামীবাগ-দয়াগঞ্জ বিশাল সড়কটি তখনো হয়নি। পোস্তগোলায় যেতে হতো লক্ষ্মীবাজার হয়ে অথবা সায়েদাবাদ পার হয়ে পোস্তগোলা ব্রিজ বাঁ হাতে রেখে।
২০০০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বুধবারের ভোর। যখন পৌঁছালাম, লোকজন তখন ফজরের নামাজ শেষে বের হয়েছেন। মনু জমিদারের বাড়ির সামনে উৎসুক মানুষের ভিড় বাড়ছে। ভিড় ঠেলে সামনে গিয়ে দেখি গোটা দশেক পুলিশের গাড়ি, সবই গোয়েন্দা পুলিশের। ‘ডিবি’ লেখা জ্যাকেটের প্রচলন তখনো শুরু হয়নি, ডিবির পুলিশ সদস্যরা সাদাপোশাকে অপারেশনে যেতেন। সেখানে দেখি অনেকে আবার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটও পরে আছেন। এটা কোন টিম? প্রশ্ন করতেই মুখচেনা এক পুলিশ সদস্য বললেন, এসি তানভীর স্যারের। দূরে দাঁড়িয়ে ডিবির তৎকালীন এসি তানভীর হায়দার চৌধুরী (বর্তমানে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি) নির্দেশনা দিচ্ছেন। তাঁর কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম কী হয়েছে। তিনি বললেন, যা বলার, ডিসি স্যার বলবেন। ডিবিতে তখন একজনই ডিসি–মুক্তিযোদ্ধা ব্যাচের মুহাম্মদ আবদুল হান্নান।
ঘটনাস্থলের একটু দূরে দেখি, রাস্তার এক পাশে ওয়াকিটকি হাতে দাঁড়িয়ে শ্যামপুর থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক। তিনি বললেন, রাতভর এ বাড়ি থেকে পুলিশের সঙ্গেই গোলাগুলি হয়েছে। বাড়ির ভেতরে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, একজন মারাও গেছে। যিনি মারা গেছেন তাঁর নাম সুমন, মনু জমিদারের ছোট ছেলে। গোলাগুলি থামার পর পুরো বাড়ি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। এখন ঘরে ঘরে তল্লাশি চলছে।
ওসিকে বললাম, বাড়ির ভেতরে যেতে চাই। তিনি আমাকে নিয়ে ভেতরে গেলেন। দেখি পুরো বাড়ি পুলিশে ভরা। একটি কক্ষে পুলিশের সঙ্গে সুদর্শন এক যুবক তর্ক করছেন। সাংবাদিক পরিচয় দিতে সেই যুবক এগিয়ে এসে বললেন, তাঁর নাম মোহাম্মদ শাহাদত, এ বাড়ির মালিকের তৃতীয় ছেলে। ঘরভর্তি পুলিশের সামনেই তিনি অভিযোগ করলেন, বিনা কারণে পুলিশ তাঁর বাড়ি লক্ষ্য করে রাতভর গুলি ছুড়েছে। সেই গুলিতে তাঁর ছোট ভাই সুমন মারা গেছে, আরেক ভাই শামিম ও ভাতিজা তুলি আহত হয়েছে। দেখলাম পুলিশ সদস্যদের কেউ তাঁর কথা গ্রাহ্য করছেন না। কিন্তু তিনি বারবার অভিযোগ করেই যাচ্ছেন।
বাড়ির ভেতরটা ভালো করে দেখলাম, এত যে গুলি হয়েছে, তার তেমন কোনো চিহ্ন নেই। মনে হলো পুলিশ সদস্যদের বেশির ভাগ শূন্যে গুলি ছুড়েছেন। শাহাদত বললেন, তিনি জানালা দিয়ে দেখেছেন, রাতে পুলিশের সঙ্গে আবুল, ইবন ও জাকির নামের তিনজন সন্ত্রাসীও ছিল। তারাও গুলি করেছে। সেই তিনজন কারা? প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, এরা কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী। শাহাদতের মুখে কালা জাহাঙ্গীরের নাম শুনে মনে হলো, পেছনে বড় ঘটনা আছে। কালা জাহাঙ্গীর তখন ঢাকা আন্ডারওয়ার্ল্ডের ‘অদৃশ্য ডন’। একের পর এক খুন করে যাচ্ছেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারছে না।
সকাল নয়টার দিকে ঘটনাস্থলে এলেন ডিবির তখনকার ডিসি মুহাম্মদ আবদুল হান্নান। তিনি এসে সব খোলাসা করলেন। বললেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে মনু জমিদারের বাড়িতে অবস্থান করছেন জেনেই তাঁরা অভিযান করেছেন, কিন্তু আসিফকে তাঁরা ধরতে পারেননি। ডিসি জোর দিয়ে বললেন, দুদিন ধরে তাঁরা বাড়িটি রেকি করেছিলেন। ৮ ফেব্রুয়ারি (২০০০ সাল) রাত নয়টার দিকে আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে এ বাড়িতে আসেন। এ খবর নিশ্চিত হওয়ার পর রাত তিনটার দিকে তাঁরা অভিযান শুরু করেন। তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন, এ বাড়িতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফ ছিলেন। কিন্তু অভিযানের সময় সুযোগ বুঝে পেছনের দরজা দিয়ে দলবল নিয়ে পালিয়ে গেছেন। তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমও সাংবাদিকদের একই কথা বলেছিলেন।
মনু জমিদারের পরিবার এলাকায় অনেক প্রভাবশালী। পুলিশের গুলিতে সুমন নিহত হওয়ার পর এলাকায় বেশ উত্তেজনা দেখা দেয়। পরের দিন লোকজন বিক্ষোভ মিছিল করে। পুরো পোস্তগোলায় দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। আমাদেরও কাজ বেড়ে গেল। পোস্তগোলায় এসে লোকজনের সঙ্গে কথা বলতেই বেরিয়ে এল অনেক তথ্য।
মনু মিয়ার যে সুদর্শন সন্তানের কথা বললাম, সেই শাহাদত সেবার ওয়ার্ড কমিশনার পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সেখানকার প্রভাবশালী ওয়ার্ড কমিশনার সাইদুর রহমান ওরফে শহীদ কমিশনার নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে চান। স্বাভাবিকভাবেই শাহাদত নির্বাচনে আসুন, তা তিনি চান না। শাহাদত যেখানে যান, সেখানেই তিনি লোক পাঠিয়ে গোলযোগ করার চেষ্টা করেন। এ রকম গোলযোগের সময় বাবু নামের এক যুবক নিহত হন। সেই মামলায় শাহাদতকে প্রধান আসামি করা হয়। শাহাদত আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছেন।
লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, জামিনে এসে শাহাদত শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছেন। আসিফের লোকজন দিনরাত তাঁকে চোখে চোখে রাখছে, যাতে শহীদ কমিশনারের সন্ত্রাসীরা ছুঁতে না পারে। শহীদ কমিশনারও কম নন, তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরকে আশ্রয় দিয়েছেন। কালা জাহাঙ্গীর এখন তাঁর হয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
শাহাদতের বাড়িতে পুলিশি অভিযানের পর কালা জাহাঙ্গীরের সুবিধা হয়েছে। আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে পোস্তগোলা ছেড়ে খিলগাঁওয়ে আস্তানা গেড়েছে। এতে করে কালা জাহাঙ্গীরের পুরান ঢাকায় আশ্রয় আরও নিরাপদ হয়েছে। আসিফ অনেকবার পুরান ঢাকায় ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আন্ডারওয়ার্ল্ডে এ নিয়ে অনেক দেনদরবার হয়েছে, কিন্তু লাভ হয়নি। একপর্যায়ে আসিফের আস্তানার খোঁজে মরিয়া হয়ে ওঠেন কালা জাহাঙ্গীর।
এ জন্য তাঁকে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ছয় মাসের মাথায় আসিফের এক বান্ধবীকে খুঁজে বের করেন কালা জাহাঙ্গীর। তাঁর সাহায্য নিয়ে একদিন আসিফের বাসায় হানা দেয় কালা জাহাঙ্গীরের দলবল। তারা আসিফ, তাঁর বডিগার্ড টিপু ও রিপনকে খুন করে দরজায় তালা দিয়ে সটকে পড়ে। ২০০০ সালের ২৯ আগস্ট সেই বাসা থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার পর পুলিশ লাশের সন্ধান পায়। কিন্তু তারপরও কালা জাহাঙ্গীর শান্ত থাকতে পারেননি। আসিফ খুনের এক মাসের মাথায় ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালত চত্বরে প্রকাশ্যে খুন করেন হুমায়ুন কবির মিলন ওরফে মুরগি মিলনকে।
এসব ঘটনার পরে শাহাদত খুব সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে শুরু করেন। তিনি কালা জাহাঙ্গীরের সব তৎপরতা নজরে রাখেন। বিএনপির তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বিভিন্নভাবে শাহাদতকে সহায়তা করেন। একসময় বিপুল ভোটে ওয়ার্ড কমিশনার হিসেবে শাহাদত নির্বাচিত হন। তারপরও কালা জাহাঙ্গীর তাঁর পিছু ছাড়েননি। ২০০২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উত্তরার একটি স্কুলে ছেলেকে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বিমানবন্দর সড়কে গাড়িতে গুলি করে শাহাদতকে খুন করেন কালা জাহাঙ্গীর। এরপর জনকণ্ঠ অফিসে ফোন করে সেই খুনের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষদের এভাবে হত্যা করেও বাঁচতে পারেননি ভয়ংকর কালা জাহাঙ্গীর। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর মা পেয়ারা বেগম র্যাব সদর দপ্তরে হাজির হয়ে বলেন, তাঁর ছেলে কালা জাহাঙ্গীর ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। এর পর থেকেই আন্ডারওয়ার্ল্ডে কালা জাহাঙ্গীরের তৎপরতা থেমে যায়। এরপর তাঁর আশ্রয়দাতা সেই শহীদ কমিশনারও একটি মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ নিয়ে পলাতক হন।
শাহাদত খুনের মামলার শেষ পর্যন্ত কোনো বিচার হয়নি। কালা জাহাঙ্গীরের ভয়ে কেউ আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাননি। আদালত একপর্যায়ে আসামিদের অব্যাহতি দেন।
শাহাদতের তিন ছেলে লেখাপড়া শেষ করে পরিবারের হাল ধরেছেন। তাঁরা এখন ব্যস্ত নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে। আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে ফোন করেছিলাম শাহাদতের আইনজীবী ও স্বজন রফিকুল ইসলামকে। তিনি বললেন, অন্ধকার জগতের সব আঁধার কেটে গেছে। শাহাদতের পরিবার এখন আলোতে, তাঁরা ভালোই আছেন।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
একদিন গভীর রাতে সেই বাড়িতে শুরু হলো গোলাগুলি। একটি-দুটি নয়, শত শত, হাজার হাজার। বৃষ্টির মতো গুলির শব্দে কেঁপে উঠল পুরো এলাকা। ঘণ্টা দুয়েক ধরে চলল।
এত গোলাগুলির শব্দে এলাকার মানুষের ঘুম উবে গেল। স্বাভাবিকভাবে ক্রাইম রিপোর্টারদের মোবাইল ফোনও গরম হয়ে উঠল। কী হচ্ছে তা বুঝে উঠতে উঠতে ভোর হয়ে গেল।
মোটরবাইক নিয়ে ছুটলাম পোস্তগোলার দিকে। স্বামীবাগ-দয়াগঞ্জ বিশাল সড়কটি তখনো হয়নি। পোস্তগোলায় যেতে হতো লক্ষ্মীবাজার হয়ে অথবা সায়েদাবাদ পার হয়ে পোস্তগোলা ব্রিজ বাঁ হাতে রেখে।
২০০০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বুধবারের ভোর। যখন পৌঁছালাম, লোকজন তখন ফজরের নামাজ শেষে বের হয়েছেন। মনু জমিদারের বাড়ির সামনে উৎসুক মানুষের ভিড় বাড়ছে। ভিড় ঠেলে সামনে গিয়ে দেখি গোটা দশেক পুলিশের গাড়ি, সবই গোয়েন্দা পুলিশের। ‘ডিবি’ লেখা জ্যাকেটের প্রচলন তখনো শুরু হয়নি, ডিবির পুলিশ সদস্যরা সাদাপোশাকে অপারেশনে যেতেন। সেখানে দেখি অনেকে আবার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটও পরে আছেন। এটা কোন টিম? প্রশ্ন করতেই মুখচেনা এক পুলিশ সদস্য বললেন, এসি তানভীর স্যারের। দূরে দাঁড়িয়ে ডিবির তৎকালীন এসি তানভীর হায়দার চৌধুরী (বর্তমানে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি) নির্দেশনা দিচ্ছেন। তাঁর কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম কী হয়েছে। তিনি বললেন, যা বলার, ডিসি স্যার বলবেন। ডিবিতে তখন একজনই ডিসি–মুক্তিযোদ্ধা ব্যাচের মুহাম্মদ আবদুল হান্নান।
ঘটনাস্থলের একটু দূরে দেখি, রাস্তার এক পাশে ওয়াকিটকি হাতে দাঁড়িয়ে শ্যামপুর থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক। তিনি বললেন, রাতভর এ বাড়ি থেকে পুলিশের সঙ্গেই গোলাগুলি হয়েছে। বাড়ির ভেতরে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, একজন মারাও গেছে। যিনি মারা গেছেন তাঁর নাম সুমন, মনু জমিদারের ছোট ছেলে। গোলাগুলি থামার পর পুরো বাড়ি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। এখন ঘরে ঘরে তল্লাশি চলছে।
ওসিকে বললাম, বাড়ির ভেতরে যেতে চাই। তিনি আমাকে নিয়ে ভেতরে গেলেন। দেখি পুরো বাড়ি পুলিশে ভরা। একটি কক্ষে পুলিশের সঙ্গে সুদর্শন এক যুবক তর্ক করছেন। সাংবাদিক পরিচয় দিতে সেই যুবক এগিয়ে এসে বললেন, তাঁর নাম মোহাম্মদ শাহাদত, এ বাড়ির মালিকের তৃতীয় ছেলে। ঘরভর্তি পুলিশের সামনেই তিনি অভিযোগ করলেন, বিনা কারণে পুলিশ তাঁর বাড়ি লক্ষ্য করে রাতভর গুলি ছুড়েছে। সেই গুলিতে তাঁর ছোট ভাই সুমন মারা গেছে, আরেক ভাই শামিম ও ভাতিজা তুলি আহত হয়েছে। দেখলাম পুলিশ সদস্যদের কেউ তাঁর কথা গ্রাহ্য করছেন না। কিন্তু তিনি বারবার অভিযোগ করেই যাচ্ছেন।
বাড়ির ভেতরটা ভালো করে দেখলাম, এত যে গুলি হয়েছে, তার তেমন কোনো চিহ্ন নেই। মনে হলো পুলিশ সদস্যদের বেশির ভাগ শূন্যে গুলি ছুড়েছেন। শাহাদত বললেন, তিনি জানালা দিয়ে দেখেছেন, রাতে পুলিশের সঙ্গে আবুল, ইবন ও জাকির নামের তিনজন সন্ত্রাসীও ছিল। তারাও গুলি করেছে। সেই তিনজন কারা? প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, এরা কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী। শাহাদতের মুখে কালা জাহাঙ্গীরের নাম শুনে মনে হলো, পেছনে বড় ঘটনা আছে। কালা জাহাঙ্গীর তখন ঢাকা আন্ডারওয়ার্ল্ডের ‘অদৃশ্য ডন’। একের পর এক খুন করে যাচ্ছেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারছে না।
সকাল নয়টার দিকে ঘটনাস্থলে এলেন ডিবির তখনকার ডিসি মুহাম্মদ আবদুল হান্নান। তিনি এসে সব খোলাসা করলেন। বললেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে মনু জমিদারের বাড়িতে অবস্থান করছেন জেনেই তাঁরা অভিযান করেছেন, কিন্তু আসিফকে তাঁরা ধরতে পারেননি। ডিসি জোর দিয়ে বললেন, দুদিন ধরে তাঁরা বাড়িটি রেকি করেছিলেন। ৮ ফেব্রুয়ারি (২০০০ সাল) রাত নয়টার দিকে আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে এ বাড়িতে আসেন। এ খবর নিশ্চিত হওয়ার পর রাত তিনটার দিকে তাঁরা অভিযান শুরু করেন। তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন, এ বাড়িতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফ ছিলেন। কিন্তু অভিযানের সময় সুযোগ বুঝে পেছনের দরজা দিয়ে দলবল নিয়ে পালিয়ে গেছেন। তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমও সাংবাদিকদের একই কথা বলেছিলেন।
মনু জমিদারের পরিবার এলাকায় অনেক প্রভাবশালী। পুলিশের গুলিতে সুমন নিহত হওয়ার পর এলাকায় বেশ উত্তেজনা দেখা দেয়। পরের দিন লোকজন বিক্ষোভ মিছিল করে। পুরো পোস্তগোলায় দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। আমাদেরও কাজ বেড়ে গেল। পোস্তগোলায় এসে লোকজনের সঙ্গে কথা বলতেই বেরিয়ে এল অনেক তথ্য।
মনু মিয়ার যে সুদর্শন সন্তানের কথা বললাম, সেই শাহাদত সেবার ওয়ার্ড কমিশনার পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সেখানকার প্রভাবশালী ওয়ার্ড কমিশনার সাইদুর রহমান ওরফে শহীদ কমিশনার নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে চান। স্বাভাবিকভাবেই শাহাদত নির্বাচনে আসুন, তা তিনি চান না। শাহাদত যেখানে যান, সেখানেই তিনি লোক পাঠিয়ে গোলযোগ করার চেষ্টা করেন। এ রকম গোলযোগের সময় বাবু নামের এক যুবক নিহত হন। সেই মামলায় শাহাদতকে প্রধান আসামি করা হয়। শাহাদত আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছেন।
লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, জামিনে এসে শাহাদত শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছেন। আসিফের লোকজন দিনরাত তাঁকে চোখে চোখে রাখছে, যাতে শহীদ কমিশনারের সন্ত্রাসীরা ছুঁতে না পারে। শহীদ কমিশনারও কম নন, তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরকে আশ্রয় দিয়েছেন। কালা জাহাঙ্গীর এখন তাঁর হয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
শাহাদতের বাড়িতে পুলিশি অভিযানের পর কালা জাহাঙ্গীরের সুবিধা হয়েছে। আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে পোস্তগোলা ছেড়ে খিলগাঁওয়ে আস্তানা গেড়েছে। এতে করে কালা জাহাঙ্গীরের পুরান ঢাকায় আশ্রয় আরও নিরাপদ হয়েছে। আসিফ অনেকবার পুরান ঢাকায় ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আন্ডারওয়ার্ল্ডে এ নিয়ে অনেক দেনদরবার হয়েছে, কিন্তু লাভ হয়নি। একপর্যায়ে আসিফের আস্তানার খোঁজে মরিয়া হয়ে ওঠেন কালা জাহাঙ্গীর।
এ জন্য তাঁকে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ছয় মাসের মাথায় আসিফের এক বান্ধবীকে খুঁজে বের করেন কালা জাহাঙ্গীর। তাঁর সাহায্য নিয়ে একদিন আসিফের বাসায় হানা দেয় কালা জাহাঙ্গীরের দলবল। তারা আসিফ, তাঁর বডিগার্ড টিপু ও রিপনকে খুন করে দরজায় তালা দিয়ে সটকে পড়ে। ২০০০ সালের ২৯ আগস্ট সেই বাসা থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার পর পুলিশ লাশের সন্ধান পায়। কিন্তু তারপরও কালা জাহাঙ্গীর শান্ত থাকতে পারেননি। আসিফ খুনের এক মাসের মাথায় ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালত চত্বরে প্রকাশ্যে খুন করেন হুমায়ুন কবির মিলন ওরফে মুরগি মিলনকে।
এসব ঘটনার পরে শাহাদত খুব সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে শুরু করেন। তিনি কালা জাহাঙ্গীরের সব তৎপরতা নজরে রাখেন। বিএনপির তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বিভিন্নভাবে শাহাদতকে সহায়তা করেন। একসময় বিপুল ভোটে ওয়ার্ড কমিশনার হিসেবে শাহাদত নির্বাচিত হন। তারপরও কালা জাহাঙ্গীর তাঁর পিছু ছাড়েননি। ২০০২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উত্তরার একটি স্কুলে ছেলেকে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বিমানবন্দর সড়কে গাড়িতে গুলি করে শাহাদতকে খুন করেন কালা জাহাঙ্গীর। এরপর জনকণ্ঠ অফিসে ফোন করে সেই খুনের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষদের এভাবে হত্যা করেও বাঁচতে পারেননি ভয়ংকর কালা জাহাঙ্গীর। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর মা পেয়ারা বেগম র্যাব সদর দপ্তরে হাজির হয়ে বলেন, তাঁর ছেলে কালা জাহাঙ্গীর ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। এর পর থেকেই আন্ডারওয়ার্ল্ডে কালা জাহাঙ্গীরের তৎপরতা থেমে যায়। এরপর তাঁর আশ্রয়দাতা সেই শহীদ কমিশনারও একটি মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ নিয়ে পলাতক হন।
শাহাদত খুনের মামলার শেষ পর্যন্ত কোনো বিচার হয়নি। কালা জাহাঙ্গীরের ভয়ে কেউ আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাননি। আদালত একপর্যায়ে আসামিদের অব্যাহতি দেন।
শাহাদতের তিন ছেলে লেখাপড়া শেষ করে পরিবারের হাল ধরেছেন। তাঁরা এখন ব্যস্ত নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে। আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে ফোন করেছিলাম শাহাদতের আইনজীবী ও স্বজন রফিকুল ইসলামকে। তিনি বললেন, অন্ধকার জগতের সব আঁধার কেটে গেছে। শাহাদতের পরিবার এখন আলোতে, তাঁরা ভালোই আছেন।
আরও পড়ুন:

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
একদিন গভীর রাতে সেই বাড়িতে শুরু হলো গোলাগুলি। একটি-দুটি নয়, শত শত, হাজার হাজার। বৃষ্টির মতো গুলির শব্দে কেঁপে উঠল পুরো এলাকা। ঘণ্টা দুয়েক ধরে চলল।
এত গোলাগুলির শব্দে এলাকার মানুষের ঘুম উবে গেল। স্বাভাবিকভাবে ক্রাইম রিপোর্টারদের মোবাইল ফোনও গরম হয়ে উঠল। কী হচ্ছে তা বুঝে উঠতে উঠতে ভোর হয়ে গেল।
মোটরবাইক নিয়ে ছুটলাম পোস্তগোলার দিকে। স্বামীবাগ-দয়াগঞ্জ বিশাল সড়কটি তখনো হয়নি। পোস্তগোলায় যেতে হতো লক্ষ্মীবাজার হয়ে অথবা সায়েদাবাদ পার হয়ে পোস্তগোলা ব্রিজ বাঁ হাতে রেখে।
২০০০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বুধবারের ভোর। যখন পৌঁছালাম, লোকজন তখন ফজরের নামাজ শেষে বের হয়েছেন। মনু জমিদারের বাড়ির সামনে উৎসুক মানুষের ভিড় বাড়ছে। ভিড় ঠেলে সামনে গিয়ে দেখি গোটা দশেক পুলিশের গাড়ি, সবই গোয়েন্দা পুলিশের। ‘ডিবি’ লেখা জ্যাকেটের প্রচলন তখনো শুরু হয়নি, ডিবির পুলিশ সদস্যরা সাদাপোশাকে অপারেশনে যেতেন। সেখানে দেখি অনেকে আবার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটও পরে আছেন। এটা কোন টিম? প্রশ্ন করতেই মুখচেনা এক পুলিশ সদস্য বললেন, এসি তানভীর স্যারের। দূরে দাঁড়িয়ে ডিবির তৎকালীন এসি তানভীর হায়দার চৌধুরী (বর্তমানে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি) নির্দেশনা দিচ্ছেন। তাঁর কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম কী হয়েছে। তিনি বললেন, যা বলার, ডিসি স্যার বলবেন। ডিবিতে তখন একজনই ডিসি–মুক্তিযোদ্ধা ব্যাচের মুহাম্মদ আবদুল হান্নান।
ঘটনাস্থলের একটু দূরে দেখি, রাস্তার এক পাশে ওয়াকিটকি হাতে দাঁড়িয়ে শ্যামপুর থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক। তিনি বললেন, রাতভর এ বাড়ি থেকে পুলিশের সঙ্গেই গোলাগুলি হয়েছে। বাড়ির ভেতরে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, একজন মারাও গেছে। যিনি মারা গেছেন তাঁর নাম সুমন, মনু জমিদারের ছোট ছেলে। গোলাগুলি থামার পর পুরো বাড়ি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। এখন ঘরে ঘরে তল্লাশি চলছে।
ওসিকে বললাম, বাড়ির ভেতরে যেতে চাই। তিনি আমাকে নিয়ে ভেতরে গেলেন। দেখি পুরো বাড়ি পুলিশে ভরা। একটি কক্ষে পুলিশের সঙ্গে সুদর্শন এক যুবক তর্ক করছেন। সাংবাদিক পরিচয় দিতে সেই যুবক এগিয়ে এসে বললেন, তাঁর নাম মোহাম্মদ শাহাদত, এ বাড়ির মালিকের তৃতীয় ছেলে। ঘরভর্তি পুলিশের সামনেই তিনি অভিযোগ করলেন, বিনা কারণে পুলিশ তাঁর বাড়ি লক্ষ্য করে রাতভর গুলি ছুড়েছে। সেই গুলিতে তাঁর ছোট ভাই সুমন মারা গেছে, আরেক ভাই শামিম ও ভাতিজা তুলি আহত হয়েছে। দেখলাম পুলিশ সদস্যদের কেউ তাঁর কথা গ্রাহ্য করছেন না। কিন্তু তিনি বারবার অভিযোগ করেই যাচ্ছেন।
বাড়ির ভেতরটা ভালো করে দেখলাম, এত যে গুলি হয়েছে, তার তেমন কোনো চিহ্ন নেই। মনে হলো পুলিশ সদস্যদের বেশির ভাগ শূন্যে গুলি ছুড়েছেন। শাহাদত বললেন, তিনি জানালা দিয়ে দেখেছেন, রাতে পুলিশের সঙ্গে আবুল, ইবন ও জাকির নামের তিনজন সন্ত্রাসীও ছিল। তারাও গুলি করেছে। সেই তিনজন কারা? প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, এরা কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী। শাহাদতের মুখে কালা জাহাঙ্গীরের নাম শুনে মনে হলো, পেছনে বড় ঘটনা আছে। কালা জাহাঙ্গীর তখন ঢাকা আন্ডারওয়ার্ল্ডের ‘অদৃশ্য ডন’। একের পর এক খুন করে যাচ্ছেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারছে না।
সকাল নয়টার দিকে ঘটনাস্থলে এলেন ডিবির তখনকার ডিসি মুহাম্মদ আবদুল হান্নান। তিনি এসে সব খোলাসা করলেন। বললেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে মনু জমিদারের বাড়িতে অবস্থান করছেন জেনেই তাঁরা অভিযান করেছেন, কিন্তু আসিফকে তাঁরা ধরতে পারেননি। ডিসি জোর দিয়ে বললেন, দুদিন ধরে তাঁরা বাড়িটি রেকি করেছিলেন। ৮ ফেব্রুয়ারি (২০০০ সাল) রাত নয়টার দিকে আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে এ বাড়িতে আসেন। এ খবর নিশ্চিত হওয়ার পর রাত তিনটার দিকে তাঁরা অভিযান শুরু করেন। তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন, এ বাড়িতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফ ছিলেন। কিন্তু অভিযানের সময় সুযোগ বুঝে পেছনের দরজা দিয়ে দলবল নিয়ে পালিয়ে গেছেন। তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমও সাংবাদিকদের একই কথা বলেছিলেন।
মনু জমিদারের পরিবার এলাকায় অনেক প্রভাবশালী। পুলিশের গুলিতে সুমন নিহত হওয়ার পর এলাকায় বেশ উত্তেজনা দেখা দেয়। পরের দিন লোকজন বিক্ষোভ মিছিল করে। পুরো পোস্তগোলায় দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। আমাদেরও কাজ বেড়ে গেল। পোস্তগোলায় এসে লোকজনের সঙ্গে কথা বলতেই বেরিয়ে এল অনেক তথ্য।
মনু মিয়ার যে সুদর্শন সন্তানের কথা বললাম, সেই শাহাদত সেবার ওয়ার্ড কমিশনার পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সেখানকার প্রভাবশালী ওয়ার্ড কমিশনার সাইদুর রহমান ওরফে শহীদ কমিশনার নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে চান। স্বাভাবিকভাবেই শাহাদত নির্বাচনে আসুন, তা তিনি চান না। শাহাদত যেখানে যান, সেখানেই তিনি লোক পাঠিয়ে গোলযোগ করার চেষ্টা করেন। এ রকম গোলযোগের সময় বাবু নামের এক যুবক নিহত হন। সেই মামলায় শাহাদতকে প্রধান আসামি করা হয়। শাহাদত আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছেন।
লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, জামিনে এসে শাহাদত শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছেন। আসিফের লোকজন দিনরাত তাঁকে চোখে চোখে রাখছে, যাতে শহীদ কমিশনারের সন্ত্রাসীরা ছুঁতে না পারে। শহীদ কমিশনারও কম নন, তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরকে আশ্রয় দিয়েছেন। কালা জাহাঙ্গীর এখন তাঁর হয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
শাহাদতের বাড়িতে পুলিশি অভিযানের পর কালা জাহাঙ্গীরের সুবিধা হয়েছে। আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে পোস্তগোলা ছেড়ে খিলগাঁওয়ে আস্তানা গেড়েছে। এতে করে কালা জাহাঙ্গীরের পুরান ঢাকায় আশ্রয় আরও নিরাপদ হয়েছে। আসিফ অনেকবার পুরান ঢাকায় ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আন্ডারওয়ার্ল্ডে এ নিয়ে অনেক দেনদরবার হয়েছে, কিন্তু লাভ হয়নি। একপর্যায়ে আসিফের আস্তানার খোঁজে মরিয়া হয়ে ওঠেন কালা জাহাঙ্গীর।
এ জন্য তাঁকে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ছয় মাসের মাথায় আসিফের এক বান্ধবীকে খুঁজে বের করেন কালা জাহাঙ্গীর। তাঁর সাহায্য নিয়ে একদিন আসিফের বাসায় হানা দেয় কালা জাহাঙ্গীরের দলবল। তারা আসিফ, তাঁর বডিগার্ড টিপু ও রিপনকে খুন করে দরজায় তালা দিয়ে সটকে পড়ে। ২০০০ সালের ২৯ আগস্ট সেই বাসা থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার পর পুলিশ লাশের সন্ধান পায়। কিন্তু তারপরও কালা জাহাঙ্গীর শান্ত থাকতে পারেননি। আসিফ খুনের এক মাসের মাথায় ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালত চত্বরে প্রকাশ্যে খুন করেন হুমায়ুন কবির মিলন ওরফে মুরগি মিলনকে।
এসব ঘটনার পরে শাহাদত খুব সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে শুরু করেন। তিনি কালা জাহাঙ্গীরের সব তৎপরতা নজরে রাখেন। বিএনপির তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বিভিন্নভাবে শাহাদতকে সহায়তা করেন। একসময় বিপুল ভোটে ওয়ার্ড কমিশনার হিসেবে শাহাদত নির্বাচিত হন। তারপরও কালা জাহাঙ্গীর তাঁর পিছু ছাড়েননি। ২০০২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উত্তরার একটি স্কুলে ছেলেকে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বিমানবন্দর সড়কে গাড়িতে গুলি করে শাহাদতকে খুন করেন কালা জাহাঙ্গীর। এরপর জনকণ্ঠ অফিসে ফোন করে সেই খুনের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষদের এভাবে হত্যা করেও বাঁচতে পারেননি ভয়ংকর কালা জাহাঙ্গীর। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর মা পেয়ারা বেগম র্যাব সদর দপ্তরে হাজির হয়ে বলেন, তাঁর ছেলে কালা জাহাঙ্গীর ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। এর পর থেকেই আন্ডারওয়ার্ল্ডে কালা জাহাঙ্গীরের তৎপরতা থেমে যায়। এরপর তাঁর আশ্রয়দাতা সেই শহীদ কমিশনারও একটি মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ নিয়ে পলাতক হন।
শাহাদত খুনের মামলার শেষ পর্যন্ত কোনো বিচার হয়নি। কালা জাহাঙ্গীরের ভয়ে কেউ আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাননি। আদালত একপর্যায়ে আসামিদের অব্যাহতি দেন।
শাহাদতের তিন ছেলে লেখাপড়া শেষ করে পরিবারের হাল ধরেছেন। তাঁরা এখন ব্যস্ত নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে। আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে ফোন করেছিলাম শাহাদতের আইনজীবী ও স্বজন রফিকুল ইসলামকে। তিনি বললেন, অন্ধকার জগতের সব আঁধার কেটে গেছে। শাহাদতের পরিবার এখন আলোতে, তাঁরা ভালোই আছেন।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
০২ জুলাই ২০২২
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
০২ জুলাই ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
০২ জুলাই ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
০২ জুলাই ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে