কামরুল হাসান

আপনি যে সাংবাদিক তার কোনো প্রমাণ আছে? পঙ্গু হাসপাতালের ভেতরের একটি অপারেশন থিয়েটারের সামনে এ প্রশ্ন করলেন এক যুবক। বললাম, কার্ড আছে, সেটা তো গাড়িতে। নিয়ে আসব?
যেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, তার পাশে একটি বিছানা রাখা। এক ছেলে সেই বিছানায় শুয়ে কাঁদছে। তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন পাশে থাকা এক বয়স্ক লোক, এক নারী আর পাহারায় থাকা দুই পুলিশ সদস্য।
আমার কথা শুনে কান্না থামিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকা ছেলেটি পরিচয় জানতে চাইল। আবার বললাম, আমি একজন সাংবাদিক। আপনার ব্যাপারে খোঁজ নিতে এসেছি। ছেলেটির পাহারায় থাকা দুই পুলিশ সদস্যের একজন কথা বলতে বাধা দিচ্ছিলেন। কিন্তু কী কারণে অন্যজন তাঁকে থামিয়ে দিলেন? ছেলেটির সঙ্গে আমার আলাপ শুরু হলো। এটা ২০১১ সালের ৫ এপ্রিল সকালের কথা।
এই ছেলের নামই লিমন হোসেন। আপনাদের অনেকের নিশ্চয়ই মনে আছে, র্যাবের গুলিতে পা হারানো সেই লিমনের কথা? আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’-এর নায়ক সেই লিমন। তবে সেই দিনের ১৬ বছরের লিমন এখন অনেক পরিণত। লেখাপড়া শেষ করে গতকাল বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। রাতে এ গল্প লেখার সময় বউ নিয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন লিমন।
এমনিতেই পঙ্গু হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে কাউকে খুঁজে বের করা খুব সহজ নয়। হাসপাতালে অভ্যর্থনাকেন্দ্র থাকলেও সেখানে কোনো তথ্য থাকে না। তবে কী কারণে যেন সহজেই লিমনের খোঁজ পেয়ে গেলাম। কিন্তু ওয়ার্ডে গিয়ে তাঁকে আর পেলাম না। একজন বললেন, জরুরি অপারেশন আছে, তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেছে। এলাম নিচতলায় অপারেশন থিয়েটারের সামনে। শুরুতে যে যুবক আমাকে জেরা করেছিলেন, তিনি লিমনের মামা এরশাদ।
লিমনের খোঁজ পেলাম কী করে, সে এক গল্প। পুলিশের নগর বিশেষ শাখায় প্রতিদিন রাজধানীর পরিস্থিতি নিয়ে একটি করে প্রতিবেদন তৈরি হয়, যার পরিচিত নাম ডিআর বা ডেইলি রিপোর্ট। সেই প্রতিবেদন কপি যায় পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ সব ব্যক্তির কাছে। পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর লিমন হোসেনের খবরও সম্ভবত সেই প্রতিবেদনে এসেছিল। আমি সেটা দেখিনি, তবে একজন পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে সেই ঘটনা জানিয়ে ভালো করে খোঁজ নিতে বলেছিলেন।
বিকালে অফিসে এসে মফস্বল বিভাগে কথা তুলতেই একজন বললেন, এটা বাসি খবর। ঝালকাঠি প্রতিনিধি দুই দিন আগে পাঠিয়েছেন, কিন্তু ছাপা হয়নি। সেই রিপোর্ট হাতে নিয়ে দেখি, ক্রসফায়ারের পর বাহিনীগুলো যেভাবে ঘটনার বিবরণ দিয়ে থাকে, ঠিক সেভাবেই এ ঘটনারও বিবরণ। ফোন দিলাম প্রথম আলোর তৎকালীন ঝালকাঠি প্রতিনিধি আক্কাস শিকদারকে। তিনি বললেন, দুই দিন আগে লিমনের মা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আক্বাস শিকদারের সঙ্গে কথা বলার সময় পাশে ছিলেন এবিসি রেডিওর সাংবাদিক, বর্তমানে নেক্সাস টিভির কারেন্ট অ্যাফেয়ার এডিটর আমিন আল রশীদ। বললেন, আমিন আর তিনি পরদিন ঘটনাস্থলে যাবেন।
প্রথম আলোর অপরাধ বিভাগের রিপোর্টার, বর্তমানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী আনিছকে বললাম আমাকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যেতে। তিনি রাজি হলেন। ৯টার দিকে তাঁর বাইকে চেপে রওনা দিলাম পঙ্গু হাসপাতালের দিকে। আকাশে তখন প্রচণ্ড মেঘ। কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে যেতেই শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি। কাজী আনিছ চিৎকার শুরু করে দিলেন–ভাই, ভিজে গেলে আমার জ্বর এসে যাবে। অগত্যা অভিযান ক্ষান্ত দিয়ে কাকভেজা হয়ে অফিসে ফিরে এলাম। গেলাম পরদিন সকালে।

সেদিন ছিল মঙ্গলবার। ওই দিনই লিমনের এইচএসসি পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। তখন তার বাঁ পা কেটে ফেলা হয়েছে। লিমন আমাকে বললেন, তাঁর বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে। বাবা দিনমজুর তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারের সবার ছোট তিনি। পড়তেন কাঁঠালিয়া পিজিএস কারিগরি কলেজে। ২০১১ সালের ২৩ মার্চ বিকেলে তিনি মাঠ থেকে গরু আনতে বাড়ির বাইরে যান। পথে স্থানীয় শহীদ জমাদ্দারের বাড়ির সামনে র্যাব-৮-এর একটি দল তাঁকে থামিয়ে শার্টের কলার ধরে নাম জিজ্ঞেস করে। লিমন নিজেকে ছাত্র পরিচয় দেন। কিন্তু র্যাবের এক সদস্য কোনো কথাবার্তা ছাড়াই তাঁর বাঁ পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে দেন। লিমন সেখানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। ২৪ মার্চ লিমনকে রাজাপুর হাসপাতাল থেকে নেওয়া হয় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ২৫ মার্চ লিমনকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে। ২৭ মার্চ চিকিৎসকেরা লিমনের বাঁ পায়ের হাঁটু থেকে কেটে ফেলেন। লিমনের সঙ্গে আমার দেখা হয় তারও আট দিন পর।
লিমন প্রথমে বললেন, ‘আমি গরিব বাবা-মায়ের ছেলে। কষ্ট করে লেখাপড়া করি। লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য বাড়ির পাশে ইটভাটায় কাজ করি। মানুষের কাছ থেকে জামাকাপড় চেয়ে নিয়ে কলেজে যাই। র্যাব কোনো কথা না শুনেই আমার পায়ে গুলি করে বলে, তুই সন্ত্রাসী।’ পাশে থাকা পুলিশ সদস্য আমাকে বললেন, লিমনের চিকিৎসার জন্য গ্রামের সবাই সাহায্য করেছেন। যাঁদের কাছে নগদ টাকা নেই, তাঁরা চাল-ডালও দিয়েছেন।
পায়ে গুলি করার পর লিমনের বিরুদ্ধে রাজাপুর থানায় দুটি মামলা করা হয়। একটি অস্ত্র আইনে, অন্যটি সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে। দুটি মামলাতেই লিমনকে ১ নম্বর আসামি করা হয়। বলা হয়, লিমন এলাকার সন্ত্রাসী মোরশেদ জমাদ্দারের সহযোগী। র্যাব-৮-এর তখনকার অধিনায়ক ছিলেন লে. কর্নেল মনিরুল হক। আমি তাঁকে ফোন দিতেই তিনি খুব জোর দিয়ে বললেন, লিমন সন্ত্রাসীর সহযোগী—এ ব্যাপারে তাঁর কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে। এরপর দীর্ঘ সময় চেষ্টা হয়েছে লিমনকে সন্ত্রাসী প্রমাণের।
লিমনকে নিয়ে আমার রিপোর্টটি প্রকাশিত হয় ৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় ‘নিষ্ঠুর নির্যাতন’ শিরোনামে। রিপোর্টটি প্রকাশের পর সারা দেশে হইচই পড়ে যায়। ওই দিনই সকালে পঙ্গু হাসপাতালে লিমনকে দেখতে যান তৎকালীন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। তিনি লিমনের কথা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপর দেশ-বিদেশের মানুষ লিমনের পাশে দাঁড়ান। আইন ও সালিশ কেন্দ্র লিমনকে দেখভাল করতে শুরু করে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র লিমনের লেখাপড়া ও চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। লিমনের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুটি মামলা রাষ্ট্রপক্ষ প্রত্যাহার করে নেয়।
ধীরে ধীরে লিমনের জীবনে সুদিন আসে। সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ২০১৮ সালে স্নাতক (সম্মান) পাস করেন। এরপর কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করেন। ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গণবিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিভাগে শিক্ষা সহকারী হিসেবে যুক্ত হন। আর ২০২০ সালের ১ আগস্ট প্রভাষক হন লিমন। লিমন গতকাল বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করতে চলেছেন।
মানুষের জীবন বড়ই অদ্ভুত। উত্থান-পতনের লেখচিত্রে তা সতত গতিশীল। লিমনের এই ঘুরে দাঁড়ানো যেন সব অনাচারের বিরুদ্ধে মধুর প্রতিশোধ। আহা, জীবন আসলেই সুন্দর!

আপনি যে সাংবাদিক তার কোনো প্রমাণ আছে? পঙ্গু হাসপাতালের ভেতরের একটি অপারেশন থিয়েটারের সামনে এ প্রশ্ন করলেন এক যুবক। বললাম, কার্ড আছে, সেটা তো গাড়িতে। নিয়ে আসব?
যেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, তার পাশে একটি বিছানা রাখা। এক ছেলে সেই বিছানায় শুয়ে কাঁদছে। তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন পাশে থাকা এক বয়স্ক লোক, এক নারী আর পাহারায় থাকা দুই পুলিশ সদস্য।
আমার কথা শুনে কান্না থামিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকা ছেলেটি পরিচয় জানতে চাইল। আবার বললাম, আমি একজন সাংবাদিক। আপনার ব্যাপারে খোঁজ নিতে এসেছি। ছেলেটির পাহারায় থাকা দুই পুলিশ সদস্যের একজন কথা বলতে বাধা দিচ্ছিলেন। কিন্তু কী কারণে অন্যজন তাঁকে থামিয়ে দিলেন? ছেলেটির সঙ্গে আমার আলাপ শুরু হলো। এটা ২০১১ সালের ৫ এপ্রিল সকালের কথা।
এই ছেলের নামই লিমন হোসেন। আপনাদের অনেকের নিশ্চয়ই মনে আছে, র্যাবের গুলিতে পা হারানো সেই লিমনের কথা? আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’-এর নায়ক সেই লিমন। তবে সেই দিনের ১৬ বছরের লিমন এখন অনেক পরিণত। লেখাপড়া শেষ করে গতকাল বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। রাতে এ গল্প লেখার সময় বউ নিয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন লিমন।
এমনিতেই পঙ্গু হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে কাউকে খুঁজে বের করা খুব সহজ নয়। হাসপাতালে অভ্যর্থনাকেন্দ্র থাকলেও সেখানে কোনো তথ্য থাকে না। তবে কী কারণে যেন সহজেই লিমনের খোঁজ পেয়ে গেলাম। কিন্তু ওয়ার্ডে গিয়ে তাঁকে আর পেলাম না। একজন বললেন, জরুরি অপারেশন আছে, তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেছে। এলাম নিচতলায় অপারেশন থিয়েটারের সামনে। শুরুতে যে যুবক আমাকে জেরা করেছিলেন, তিনি লিমনের মামা এরশাদ।
লিমনের খোঁজ পেলাম কী করে, সে এক গল্প। পুলিশের নগর বিশেষ শাখায় প্রতিদিন রাজধানীর পরিস্থিতি নিয়ে একটি করে প্রতিবেদন তৈরি হয়, যার পরিচিত নাম ডিআর বা ডেইলি রিপোর্ট। সেই প্রতিবেদন কপি যায় পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ সব ব্যক্তির কাছে। পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর লিমন হোসেনের খবরও সম্ভবত সেই প্রতিবেদনে এসেছিল। আমি সেটা দেখিনি, তবে একজন পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে সেই ঘটনা জানিয়ে ভালো করে খোঁজ নিতে বলেছিলেন।
বিকালে অফিসে এসে মফস্বল বিভাগে কথা তুলতেই একজন বললেন, এটা বাসি খবর। ঝালকাঠি প্রতিনিধি দুই দিন আগে পাঠিয়েছেন, কিন্তু ছাপা হয়নি। সেই রিপোর্ট হাতে নিয়ে দেখি, ক্রসফায়ারের পর বাহিনীগুলো যেভাবে ঘটনার বিবরণ দিয়ে থাকে, ঠিক সেভাবেই এ ঘটনারও বিবরণ। ফোন দিলাম প্রথম আলোর তৎকালীন ঝালকাঠি প্রতিনিধি আক্কাস শিকদারকে। তিনি বললেন, দুই দিন আগে লিমনের মা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আক্বাস শিকদারের সঙ্গে কথা বলার সময় পাশে ছিলেন এবিসি রেডিওর সাংবাদিক, বর্তমানে নেক্সাস টিভির কারেন্ট অ্যাফেয়ার এডিটর আমিন আল রশীদ। বললেন, আমিন আর তিনি পরদিন ঘটনাস্থলে যাবেন।
প্রথম আলোর অপরাধ বিভাগের রিপোর্টার, বর্তমানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী আনিছকে বললাম আমাকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যেতে। তিনি রাজি হলেন। ৯টার দিকে তাঁর বাইকে চেপে রওনা দিলাম পঙ্গু হাসপাতালের দিকে। আকাশে তখন প্রচণ্ড মেঘ। কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে যেতেই শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি। কাজী আনিছ চিৎকার শুরু করে দিলেন–ভাই, ভিজে গেলে আমার জ্বর এসে যাবে। অগত্যা অভিযান ক্ষান্ত দিয়ে কাকভেজা হয়ে অফিসে ফিরে এলাম। গেলাম পরদিন সকালে।

সেদিন ছিল মঙ্গলবার। ওই দিনই লিমনের এইচএসসি পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। তখন তার বাঁ পা কেটে ফেলা হয়েছে। লিমন আমাকে বললেন, তাঁর বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে। বাবা দিনমজুর তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারের সবার ছোট তিনি। পড়তেন কাঁঠালিয়া পিজিএস কারিগরি কলেজে। ২০১১ সালের ২৩ মার্চ বিকেলে তিনি মাঠ থেকে গরু আনতে বাড়ির বাইরে যান। পথে স্থানীয় শহীদ জমাদ্দারের বাড়ির সামনে র্যাব-৮-এর একটি দল তাঁকে থামিয়ে শার্টের কলার ধরে নাম জিজ্ঞেস করে। লিমন নিজেকে ছাত্র পরিচয় দেন। কিন্তু র্যাবের এক সদস্য কোনো কথাবার্তা ছাড়াই তাঁর বাঁ পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে দেন। লিমন সেখানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। ২৪ মার্চ লিমনকে রাজাপুর হাসপাতাল থেকে নেওয়া হয় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ২৫ মার্চ লিমনকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে। ২৭ মার্চ চিকিৎসকেরা লিমনের বাঁ পায়ের হাঁটু থেকে কেটে ফেলেন। লিমনের সঙ্গে আমার দেখা হয় তারও আট দিন পর।
লিমন প্রথমে বললেন, ‘আমি গরিব বাবা-মায়ের ছেলে। কষ্ট করে লেখাপড়া করি। লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য বাড়ির পাশে ইটভাটায় কাজ করি। মানুষের কাছ থেকে জামাকাপড় চেয়ে নিয়ে কলেজে যাই। র্যাব কোনো কথা না শুনেই আমার পায়ে গুলি করে বলে, তুই সন্ত্রাসী।’ পাশে থাকা পুলিশ সদস্য আমাকে বললেন, লিমনের চিকিৎসার জন্য গ্রামের সবাই সাহায্য করেছেন। যাঁদের কাছে নগদ টাকা নেই, তাঁরা চাল-ডালও দিয়েছেন।
পায়ে গুলি করার পর লিমনের বিরুদ্ধে রাজাপুর থানায় দুটি মামলা করা হয়। একটি অস্ত্র আইনে, অন্যটি সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে। দুটি মামলাতেই লিমনকে ১ নম্বর আসামি করা হয়। বলা হয়, লিমন এলাকার সন্ত্রাসী মোরশেদ জমাদ্দারের সহযোগী। র্যাব-৮-এর তখনকার অধিনায়ক ছিলেন লে. কর্নেল মনিরুল হক। আমি তাঁকে ফোন দিতেই তিনি খুব জোর দিয়ে বললেন, লিমন সন্ত্রাসীর সহযোগী—এ ব্যাপারে তাঁর কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে। এরপর দীর্ঘ সময় চেষ্টা হয়েছে লিমনকে সন্ত্রাসী প্রমাণের।
লিমনকে নিয়ে আমার রিপোর্টটি প্রকাশিত হয় ৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় ‘নিষ্ঠুর নির্যাতন’ শিরোনামে। রিপোর্টটি প্রকাশের পর সারা দেশে হইচই পড়ে যায়। ওই দিনই সকালে পঙ্গু হাসপাতালে লিমনকে দেখতে যান তৎকালীন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। তিনি লিমনের কথা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপর দেশ-বিদেশের মানুষ লিমনের পাশে দাঁড়ান। আইন ও সালিশ কেন্দ্র লিমনকে দেখভাল করতে শুরু করে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র লিমনের লেখাপড়া ও চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। লিমনের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুটি মামলা রাষ্ট্রপক্ষ প্রত্যাহার করে নেয়।
ধীরে ধীরে লিমনের জীবনে সুদিন আসে। সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ২০১৮ সালে স্নাতক (সম্মান) পাস করেন। এরপর কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করেন। ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গণবিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিভাগে শিক্ষা সহকারী হিসেবে যুক্ত হন। আর ২০২০ সালের ১ আগস্ট প্রভাষক হন লিমন। লিমন গতকাল বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করতে চলেছেন।
মানুষের জীবন বড়ই অদ্ভুত। উত্থান-পতনের লেখচিত্রে তা সতত গতিশীল। লিমনের এই ঘুরে দাঁড়ানো যেন সব অনাচারের বিরুদ্ধে মধুর প্রতিশোধ। আহা, জীবন আসলেই সুন্দর!
কামরুল হাসান

আপনি যে সাংবাদিক তার কোনো প্রমাণ আছে? পঙ্গু হাসপাতালের ভেতরের একটি অপারেশন থিয়েটারের সামনে এ প্রশ্ন করলেন এক যুবক। বললাম, কার্ড আছে, সেটা তো গাড়িতে। নিয়ে আসব?
যেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, তার পাশে একটি বিছানা রাখা। এক ছেলে সেই বিছানায় শুয়ে কাঁদছে। তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন পাশে থাকা এক বয়স্ক লোক, এক নারী আর পাহারায় থাকা দুই পুলিশ সদস্য।
আমার কথা শুনে কান্না থামিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকা ছেলেটি পরিচয় জানতে চাইল। আবার বললাম, আমি একজন সাংবাদিক। আপনার ব্যাপারে খোঁজ নিতে এসেছি। ছেলেটির পাহারায় থাকা দুই পুলিশ সদস্যের একজন কথা বলতে বাধা দিচ্ছিলেন। কিন্তু কী কারণে অন্যজন তাঁকে থামিয়ে দিলেন? ছেলেটির সঙ্গে আমার আলাপ শুরু হলো। এটা ২০১১ সালের ৫ এপ্রিল সকালের কথা।
এই ছেলের নামই লিমন হোসেন। আপনাদের অনেকের নিশ্চয়ই মনে আছে, র্যাবের গুলিতে পা হারানো সেই লিমনের কথা? আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’-এর নায়ক সেই লিমন। তবে সেই দিনের ১৬ বছরের লিমন এখন অনেক পরিণত। লেখাপড়া শেষ করে গতকাল বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। রাতে এ গল্প লেখার সময় বউ নিয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন লিমন।
এমনিতেই পঙ্গু হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে কাউকে খুঁজে বের করা খুব সহজ নয়। হাসপাতালে অভ্যর্থনাকেন্দ্র থাকলেও সেখানে কোনো তথ্য থাকে না। তবে কী কারণে যেন সহজেই লিমনের খোঁজ পেয়ে গেলাম। কিন্তু ওয়ার্ডে গিয়ে তাঁকে আর পেলাম না। একজন বললেন, জরুরি অপারেশন আছে, তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেছে। এলাম নিচতলায় অপারেশন থিয়েটারের সামনে। শুরুতে যে যুবক আমাকে জেরা করেছিলেন, তিনি লিমনের মামা এরশাদ।
লিমনের খোঁজ পেলাম কী করে, সে এক গল্প। পুলিশের নগর বিশেষ শাখায় প্রতিদিন রাজধানীর পরিস্থিতি নিয়ে একটি করে প্রতিবেদন তৈরি হয়, যার পরিচিত নাম ডিআর বা ডেইলি রিপোর্ট। সেই প্রতিবেদন কপি যায় পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ সব ব্যক্তির কাছে। পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর লিমন হোসেনের খবরও সম্ভবত সেই প্রতিবেদনে এসেছিল। আমি সেটা দেখিনি, তবে একজন পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে সেই ঘটনা জানিয়ে ভালো করে খোঁজ নিতে বলেছিলেন।
বিকালে অফিসে এসে মফস্বল বিভাগে কথা তুলতেই একজন বললেন, এটা বাসি খবর। ঝালকাঠি প্রতিনিধি দুই দিন আগে পাঠিয়েছেন, কিন্তু ছাপা হয়নি। সেই রিপোর্ট হাতে নিয়ে দেখি, ক্রসফায়ারের পর বাহিনীগুলো যেভাবে ঘটনার বিবরণ দিয়ে থাকে, ঠিক সেভাবেই এ ঘটনারও বিবরণ। ফোন দিলাম প্রথম আলোর তৎকালীন ঝালকাঠি প্রতিনিধি আক্কাস শিকদারকে। তিনি বললেন, দুই দিন আগে লিমনের মা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আক্বাস শিকদারের সঙ্গে কথা বলার সময় পাশে ছিলেন এবিসি রেডিওর সাংবাদিক, বর্তমানে নেক্সাস টিভির কারেন্ট অ্যাফেয়ার এডিটর আমিন আল রশীদ। বললেন, আমিন আর তিনি পরদিন ঘটনাস্থলে যাবেন।
প্রথম আলোর অপরাধ বিভাগের রিপোর্টার, বর্তমানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী আনিছকে বললাম আমাকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যেতে। তিনি রাজি হলেন। ৯টার দিকে তাঁর বাইকে চেপে রওনা দিলাম পঙ্গু হাসপাতালের দিকে। আকাশে তখন প্রচণ্ড মেঘ। কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে যেতেই শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি। কাজী আনিছ চিৎকার শুরু করে দিলেন–ভাই, ভিজে গেলে আমার জ্বর এসে যাবে। অগত্যা অভিযান ক্ষান্ত দিয়ে কাকভেজা হয়ে অফিসে ফিরে এলাম। গেলাম পরদিন সকালে।

সেদিন ছিল মঙ্গলবার। ওই দিনই লিমনের এইচএসসি পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। তখন তার বাঁ পা কেটে ফেলা হয়েছে। লিমন আমাকে বললেন, তাঁর বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে। বাবা দিনমজুর তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারের সবার ছোট তিনি। পড়তেন কাঁঠালিয়া পিজিএস কারিগরি কলেজে। ২০১১ সালের ২৩ মার্চ বিকেলে তিনি মাঠ থেকে গরু আনতে বাড়ির বাইরে যান। পথে স্থানীয় শহীদ জমাদ্দারের বাড়ির সামনে র্যাব-৮-এর একটি দল তাঁকে থামিয়ে শার্টের কলার ধরে নাম জিজ্ঞেস করে। লিমন নিজেকে ছাত্র পরিচয় দেন। কিন্তু র্যাবের এক সদস্য কোনো কথাবার্তা ছাড়াই তাঁর বাঁ পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে দেন। লিমন সেখানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। ২৪ মার্চ লিমনকে রাজাপুর হাসপাতাল থেকে নেওয়া হয় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ২৫ মার্চ লিমনকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে। ২৭ মার্চ চিকিৎসকেরা লিমনের বাঁ পায়ের হাঁটু থেকে কেটে ফেলেন। লিমনের সঙ্গে আমার দেখা হয় তারও আট দিন পর।
লিমন প্রথমে বললেন, ‘আমি গরিব বাবা-মায়ের ছেলে। কষ্ট করে লেখাপড়া করি। লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য বাড়ির পাশে ইটভাটায় কাজ করি। মানুষের কাছ থেকে জামাকাপড় চেয়ে নিয়ে কলেজে যাই। র্যাব কোনো কথা না শুনেই আমার পায়ে গুলি করে বলে, তুই সন্ত্রাসী।’ পাশে থাকা পুলিশ সদস্য আমাকে বললেন, লিমনের চিকিৎসার জন্য গ্রামের সবাই সাহায্য করেছেন। যাঁদের কাছে নগদ টাকা নেই, তাঁরা চাল-ডালও দিয়েছেন।
পায়ে গুলি করার পর লিমনের বিরুদ্ধে রাজাপুর থানায় দুটি মামলা করা হয়। একটি অস্ত্র আইনে, অন্যটি সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে। দুটি মামলাতেই লিমনকে ১ নম্বর আসামি করা হয়। বলা হয়, লিমন এলাকার সন্ত্রাসী মোরশেদ জমাদ্দারের সহযোগী। র্যাব-৮-এর তখনকার অধিনায়ক ছিলেন লে. কর্নেল মনিরুল হক। আমি তাঁকে ফোন দিতেই তিনি খুব জোর দিয়ে বললেন, লিমন সন্ত্রাসীর সহযোগী—এ ব্যাপারে তাঁর কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে। এরপর দীর্ঘ সময় চেষ্টা হয়েছে লিমনকে সন্ত্রাসী প্রমাণের।
লিমনকে নিয়ে আমার রিপোর্টটি প্রকাশিত হয় ৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় ‘নিষ্ঠুর নির্যাতন’ শিরোনামে। রিপোর্টটি প্রকাশের পর সারা দেশে হইচই পড়ে যায়। ওই দিনই সকালে পঙ্গু হাসপাতালে লিমনকে দেখতে যান তৎকালীন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। তিনি লিমনের কথা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপর দেশ-বিদেশের মানুষ লিমনের পাশে দাঁড়ান। আইন ও সালিশ কেন্দ্র লিমনকে দেখভাল করতে শুরু করে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র লিমনের লেখাপড়া ও চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। লিমনের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুটি মামলা রাষ্ট্রপক্ষ প্রত্যাহার করে নেয়।
ধীরে ধীরে লিমনের জীবনে সুদিন আসে। সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ২০১৮ সালে স্নাতক (সম্মান) পাস করেন। এরপর কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করেন। ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গণবিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিভাগে শিক্ষা সহকারী হিসেবে যুক্ত হন। আর ২০২০ সালের ১ আগস্ট প্রভাষক হন লিমন। লিমন গতকাল বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করতে চলেছেন।
মানুষের জীবন বড়ই অদ্ভুত। উত্থান-পতনের লেখচিত্রে তা সতত গতিশীল। লিমনের এই ঘুরে দাঁড়ানো যেন সব অনাচারের বিরুদ্ধে মধুর প্রতিশোধ। আহা, জীবন আসলেই সুন্দর!

আপনি যে সাংবাদিক তার কোনো প্রমাণ আছে? পঙ্গু হাসপাতালের ভেতরের একটি অপারেশন থিয়েটারের সামনে এ প্রশ্ন করলেন এক যুবক। বললাম, কার্ড আছে, সেটা তো গাড়িতে। নিয়ে আসব?
যেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, তার পাশে একটি বিছানা রাখা। এক ছেলে সেই বিছানায় শুয়ে কাঁদছে। তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন পাশে থাকা এক বয়স্ক লোক, এক নারী আর পাহারায় থাকা দুই পুলিশ সদস্য।
আমার কথা শুনে কান্না থামিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকা ছেলেটি পরিচয় জানতে চাইল। আবার বললাম, আমি একজন সাংবাদিক। আপনার ব্যাপারে খোঁজ নিতে এসেছি। ছেলেটির পাহারায় থাকা দুই পুলিশ সদস্যের একজন কথা বলতে বাধা দিচ্ছিলেন। কিন্তু কী কারণে অন্যজন তাঁকে থামিয়ে দিলেন? ছেলেটির সঙ্গে আমার আলাপ শুরু হলো। এটা ২০১১ সালের ৫ এপ্রিল সকালের কথা।
এই ছেলের নামই লিমন হোসেন। আপনাদের অনেকের নিশ্চয়ই মনে আছে, র্যাবের গুলিতে পা হারানো সেই লিমনের কথা? আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’-এর নায়ক সেই লিমন। তবে সেই দিনের ১৬ বছরের লিমন এখন অনেক পরিণত। লেখাপড়া শেষ করে গতকাল বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। রাতে এ গল্প লেখার সময় বউ নিয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন লিমন।
এমনিতেই পঙ্গু হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে কাউকে খুঁজে বের করা খুব সহজ নয়। হাসপাতালে অভ্যর্থনাকেন্দ্র থাকলেও সেখানে কোনো তথ্য থাকে না। তবে কী কারণে যেন সহজেই লিমনের খোঁজ পেয়ে গেলাম। কিন্তু ওয়ার্ডে গিয়ে তাঁকে আর পেলাম না। একজন বললেন, জরুরি অপারেশন আছে, তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেছে। এলাম নিচতলায় অপারেশন থিয়েটারের সামনে। শুরুতে যে যুবক আমাকে জেরা করেছিলেন, তিনি লিমনের মামা এরশাদ।
লিমনের খোঁজ পেলাম কী করে, সে এক গল্প। পুলিশের নগর বিশেষ শাখায় প্রতিদিন রাজধানীর পরিস্থিতি নিয়ে একটি করে প্রতিবেদন তৈরি হয়, যার পরিচিত নাম ডিআর বা ডেইলি রিপোর্ট। সেই প্রতিবেদন কপি যায় পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ সব ব্যক্তির কাছে। পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর লিমন হোসেনের খবরও সম্ভবত সেই প্রতিবেদনে এসেছিল। আমি সেটা দেখিনি, তবে একজন পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে সেই ঘটনা জানিয়ে ভালো করে খোঁজ নিতে বলেছিলেন।
বিকালে অফিসে এসে মফস্বল বিভাগে কথা তুলতেই একজন বললেন, এটা বাসি খবর। ঝালকাঠি প্রতিনিধি দুই দিন আগে পাঠিয়েছেন, কিন্তু ছাপা হয়নি। সেই রিপোর্ট হাতে নিয়ে দেখি, ক্রসফায়ারের পর বাহিনীগুলো যেভাবে ঘটনার বিবরণ দিয়ে থাকে, ঠিক সেভাবেই এ ঘটনারও বিবরণ। ফোন দিলাম প্রথম আলোর তৎকালীন ঝালকাঠি প্রতিনিধি আক্কাস শিকদারকে। তিনি বললেন, দুই দিন আগে লিমনের মা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আক্বাস শিকদারের সঙ্গে কথা বলার সময় পাশে ছিলেন এবিসি রেডিওর সাংবাদিক, বর্তমানে নেক্সাস টিভির কারেন্ট অ্যাফেয়ার এডিটর আমিন আল রশীদ। বললেন, আমিন আর তিনি পরদিন ঘটনাস্থলে যাবেন।
প্রথম আলোর অপরাধ বিভাগের রিপোর্টার, বর্তমানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী আনিছকে বললাম আমাকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যেতে। তিনি রাজি হলেন। ৯টার দিকে তাঁর বাইকে চেপে রওনা দিলাম পঙ্গু হাসপাতালের দিকে। আকাশে তখন প্রচণ্ড মেঘ। কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে যেতেই শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি। কাজী আনিছ চিৎকার শুরু করে দিলেন–ভাই, ভিজে গেলে আমার জ্বর এসে যাবে। অগত্যা অভিযান ক্ষান্ত দিয়ে কাকভেজা হয়ে অফিসে ফিরে এলাম। গেলাম পরদিন সকালে।

সেদিন ছিল মঙ্গলবার। ওই দিনই লিমনের এইচএসসি পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। তখন তার বাঁ পা কেটে ফেলা হয়েছে। লিমন আমাকে বললেন, তাঁর বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে। বাবা দিনমজুর তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারের সবার ছোট তিনি। পড়তেন কাঁঠালিয়া পিজিএস কারিগরি কলেজে। ২০১১ সালের ২৩ মার্চ বিকেলে তিনি মাঠ থেকে গরু আনতে বাড়ির বাইরে যান। পথে স্থানীয় শহীদ জমাদ্দারের বাড়ির সামনে র্যাব-৮-এর একটি দল তাঁকে থামিয়ে শার্টের কলার ধরে নাম জিজ্ঞেস করে। লিমন নিজেকে ছাত্র পরিচয় দেন। কিন্তু র্যাবের এক সদস্য কোনো কথাবার্তা ছাড়াই তাঁর বাঁ পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে দেন। লিমন সেখানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। ২৪ মার্চ লিমনকে রাজাপুর হাসপাতাল থেকে নেওয়া হয় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ২৫ মার্চ লিমনকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে। ২৭ মার্চ চিকিৎসকেরা লিমনের বাঁ পায়ের হাঁটু থেকে কেটে ফেলেন। লিমনের সঙ্গে আমার দেখা হয় তারও আট দিন পর।
লিমন প্রথমে বললেন, ‘আমি গরিব বাবা-মায়ের ছেলে। কষ্ট করে লেখাপড়া করি। লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য বাড়ির পাশে ইটভাটায় কাজ করি। মানুষের কাছ থেকে জামাকাপড় চেয়ে নিয়ে কলেজে যাই। র্যাব কোনো কথা না শুনেই আমার পায়ে গুলি করে বলে, তুই সন্ত্রাসী।’ পাশে থাকা পুলিশ সদস্য আমাকে বললেন, লিমনের চিকিৎসার জন্য গ্রামের সবাই সাহায্য করেছেন। যাঁদের কাছে নগদ টাকা নেই, তাঁরা চাল-ডালও দিয়েছেন।
পায়ে গুলি করার পর লিমনের বিরুদ্ধে রাজাপুর থানায় দুটি মামলা করা হয়। একটি অস্ত্র আইনে, অন্যটি সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে। দুটি মামলাতেই লিমনকে ১ নম্বর আসামি করা হয়। বলা হয়, লিমন এলাকার সন্ত্রাসী মোরশেদ জমাদ্দারের সহযোগী। র্যাব-৮-এর তখনকার অধিনায়ক ছিলেন লে. কর্নেল মনিরুল হক। আমি তাঁকে ফোন দিতেই তিনি খুব জোর দিয়ে বললেন, লিমন সন্ত্রাসীর সহযোগী—এ ব্যাপারে তাঁর কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে। এরপর দীর্ঘ সময় চেষ্টা হয়েছে লিমনকে সন্ত্রাসী প্রমাণের।
লিমনকে নিয়ে আমার রিপোর্টটি প্রকাশিত হয় ৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় ‘নিষ্ঠুর নির্যাতন’ শিরোনামে। রিপোর্টটি প্রকাশের পর সারা দেশে হইচই পড়ে যায়। ওই দিনই সকালে পঙ্গু হাসপাতালে লিমনকে দেখতে যান তৎকালীন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। তিনি লিমনের কথা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপর দেশ-বিদেশের মানুষ লিমনের পাশে দাঁড়ান। আইন ও সালিশ কেন্দ্র লিমনকে দেখভাল করতে শুরু করে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র লিমনের লেখাপড়া ও চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। লিমনের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুটি মামলা রাষ্ট্রপক্ষ প্রত্যাহার করে নেয়।
ধীরে ধীরে লিমনের জীবনে সুদিন আসে। সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ২০১৮ সালে স্নাতক (সম্মান) পাস করেন। এরপর কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করেন। ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গণবিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিভাগে শিক্ষা সহকারী হিসেবে যুক্ত হন। আর ২০২০ সালের ১ আগস্ট প্রভাষক হন লিমন। লিমন গতকাল বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করতে চলেছেন।
মানুষের জীবন বড়ই অদ্ভুত। উত্থান-পতনের লেখচিত্রে তা সতত গতিশীল। লিমনের এই ঘুরে দাঁড়ানো যেন সব অনাচারের বিরুদ্ধে মধুর প্রতিশোধ। আহা, জীবন আসলেই সুন্দর!

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

আপনি যে সাংবাদিক তার কোনো প্রমাণ আছে? পঙ্গু হাসপাতালের ভেতরের একটি অপারেশন থিয়েটারের সামনে এ প্রশ্ন করলেন এক যুবক। বললাম, কার্ড আছে, সেটা তো গাড়িতে। নিয়ে আসব?
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

আপনি যে সাংবাদিক তার কোনো প্রমাণ আছে? পঙ্গু হাসপাতালের ভেতরের একটি অপারেশন থিয়েটারের সামনে এ প্রশ্ন করলেন এক যুবক। বললাম, কার্ড আছে, সেটা তো গাড়িতে। নিয়ে আসব?
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

আপনি যে সাংবাদিক তার কোনো প্রমাণ আছে? পঙ্গু হাসপাতালের ভেতরের একটি অপারেশন থিয়েটারের সামনে এ প্রশ্ন করলেন এক যুবক। বললাম, কার্ড আছে, সেটা তো গাড়িতে। নিয়ে আসব?
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

আপনি যে সাংবাদিক তার কোনো প্রমাণ আছে? পঙ্গু হাসপাতালের ভেতরের একটি অপারেশন থিয়েটারের সামনে এ প্রশ্ন করলেন এক যুবক। বললাম, কার্ড আছে, সেটা তো গাড়িতে। নিয়ে আসব?
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে