Ajker Patrika

৩ বছরে সভা করেই অপচয় ৩ কোটি টাকা, সিএমএসএফ কার্যকরে এবার কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
৩ বছরে সভা করেই অপচয় ৩ কোটি টাকা, সিএমএসএফ কার্যকরে এবার কমিটি

পুঁজিবাজারের সংকটে স্থিতিশীলতা আনতে সহায়তার জন্য গঠন করা হয়েছিল ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ)। তবে এ ফান্ডের সুফল আসেনি পুঁজিবাজারে। তিন বছরে শুধু বৈঠক করেই ৩ কোটি টাকার বেশি পকেটে পুরেছেন এই ফান্ডের পর্ষদ ও বিভিন্ন কমিটির দায়িত্বে থাকা বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ ও সুবিধাভোগীরা। 

এবার সিএমএসএফের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে তৎপর হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ফান্ডের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে রূপরেখা প্রণয়নের জন্য ৬ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। 

গত ২৬ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে সই করেছেন সিনিয়র সহকারী সচিব কাজী লুতফুল হাসান। 

কমিটির কাজ হবে— সিএমএসএফের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে করণীয় নির্ধারণ, তহবিল ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সুপারিশ প্রণয়ন এবং অন্যান্য কার্যক্রম নির্ধারণ করে দেওয়া। 

মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, কমিটির আহ্বায়ক থাকবেন অর্থ বিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপযুক্ত প্রতিনিধি সদস্যসচিব হিসেবে কাজ করবেন। 

এ ছাড়া কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন অর্থ বিভাগের ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপযুক্ত প্রতিনিধি, যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধক বা আরজেএসসির উপযুক্ত প্রতিনিধি, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের উপযুক্ত প্রতিনিধি। 

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে ৬ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ 

পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করার মতো কোনো ভূমিকাই রাখতে পারেনি সিএমএসএফ। বরং, এর পর্ষদ এবং কমিটির অন্য প্রায় এক ডজন সদস্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের চেয়ে সভা করতেই বেশি আগ্রহী ছিলেন। এর বিপরীতে মোটা অঙ্কের সম্মানী নিতেন তাঁরা। 

তথ্যমতে, গত তিন বছরে ৩২৩টি বৈঠক করেছে সিএমএসএফের বিভিন্ন কমিটি। অর্থাৎ, প্রতি বছর ১০০ টির বেশি বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে অংশ নেওয়া প্রত্যেক সদস্যের সম্মানী ছিল ৮ হাজার টাকা। তিন বছরে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে তেমন কোনো পদক্ষেপ না নিলেও কেবল বৈঠক করেই তাঁরা সম্মানী হিসেবে পকেটে পুরেছেন ৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা। 

এর বাইরে সিএমএসএফের পরিচালনা পর্ষদ ১ কোটি ৫২ লাখ টাকায় দুটি গাড়ি কিনেছে। অফিস সংস্কারের জন্য ব্যয় করেছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। 

সিএমএসএফের লক্ষ্য ও আকার যত বড়, সেই তুলনায় ফলাফল কিছুই আসেনি। চলতি বছরের ৩০ জুলাই পর্যন্ত সিএমএসএফের তহবিল দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। এ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) ২২৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। আইসিবি সেই টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু এই সামান্য বিনিয়োগ বাজারের সার্বিক স্থিতিশীলতা আনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে পারেনি। 

এ ছাড়া ৫০ কোটি টাকা দিয়ে একটি মিউচুয়াল ফান্ড চালু করা হয়েছে। এর বাইরে বাজার স্থিতিশীলতায় সিএমএসএফের কোনো ভূমিকা নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নভেম্বরে ঢাকায় বসছে তিন আন্তর্জাতিক মেলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীতে সেমস বাংলাদেশের কার্যালয়ে গতকাল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীতে সেমস বাংলাদেশের কার্যালয়ে গতকাল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নির্মাণ, আবাসন, জ্বালানি ও পানি প্রযুক্তি খাতের সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী আয়োজন করতে যাচ্ছে কনফারেন্স অ্যান্ড এক্সিবিশন ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস (সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ)। আগামী ১৩ থেকে ১৫ নভেম্বর রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) অনুষ্ঠিত হবে ৩০ তম বিল্ড সিরিজ অব এক্সিবিশনস, ২৭ তম পাওয়ার সিরিজ অব এক্সিবিশনস এবং সপ্তম ওয়াটার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৫। প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

গতকাল সোমবার রাজধানীতে সেমস বাংলাদেশের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট ও গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন ইসলাম। এ সময় গ্রুপ সিইও এস এস সারওয়ার, নির্বাহী পরিচালক তানভীর কামরুল ইসলাম ও পরিচালক অভিষেক দাস উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চীন, ভারত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্যসহ ২০ টিরও বেশি দেশের ২০০ টির বেশি প্রতিষ্ঠান এ আয়োজনে অংশ নেবে। ৫০০ টির বেশি বুথ ও আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়ন নিয়ে তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীতে প্রায় ৩৫ হাজার ব্যবসায়ী ও দর্শনার্থীর উপস্থিতির সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া থাকছে চারটি সেমিনার ও জ্ঞানবিনিময় সেশন, যেখানে বিশেষজ্ঞরা নির্মাণ, আবাসন, জ্বালানি ও পানি খাতের বৈশ্বিক প্রবণতা ও উদ্ভাবন নিয়ে আলোচনা করবেন।

ওয়ালটন, এসিআই, রহিম আফরোজ, ওমেরা, এসএসজিসহ দেশের শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলো তাদের নতুন পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে। ২২ তম সোলার বাংলাদেশ এক্সপো ২০২৫-এর নলেজ পার্টনার হিসেবে রয়েছে জার্মান উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জিআইজেড বাংলাদেশ। সেমস-গ্লোবাল ও জিআইজেড যৌথভাবে ১৫ নভেম্বর আইসিসিবিতে আয়োজন করবে ‘শেপিং টুমরোস এনার্জি ওয়ার্কফোর্স’ শীর্ষক দিনব্যাপী সম্মেলন। প্রদর্শনীর ভ্রমণ, কুরিয়ার ও কার্গো পার্টনার হিসেবে থাকছে বেঙ্গল এয়ারলিফট লিমিটেড।

১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত সেমস-গ্লোবাল এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৭৬০ টির বেশি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী আয়োজন করেছে, যেখানে অংশ নিয়েছে ৫৫ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান ও প্রায় ২০ লাখ ব্যবসায়ী দর্শনার্থী। প্রতিষ্ঠানটির ফ্ল্যাগশিপ প্রদর্শনীগুলোর মধ্যে রয়েছে টেক্সটাইল সিরিজ, পাওয়ার সিরিজ, বিল্ড সিরিজ, ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রো এক্সপো, মেডিটেক্স ও অটো সিরিজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পরিসংখ্যান অনুকূলে না থাকলে প্রকাশ করা হয় না: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। ফাইল ছবি
শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। ফাইল ছবি

পরিসংখ্যান অনুকূলে থাকলে প্রকাশ করা হয়। আবার অনুকূলে না থাকলে প্রকাশ করা হয় না। এভাবে অর্ধ সত্য প্রকাশিত হয়। আবার বিভিন্ন পদ্ধতিগতভাবে পরিসংখ্যান তৈরি করতে গিয়ে যেটা ভালো দেখায়, সেটা প্রকাশ করা হয়। এভাবে পরোক্ষ অপব্যবহার হয়।

আজ সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বিবিএসের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান। ’

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, বিবিএসের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সার্ভে পদ্ধতি জনসমক্ষে উপস্থাপন করতে হবে। আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনেই জরিপ পরিচালনা জরুরি। বিশ্বাসযোগ্য তথ্য তৈরি করাও একটি বিনিয়োগ। বিনিয়োগকারীরা কোনো দেশে প্রবেশের আগে তার পরিসংখ্যান দেখেন। তাই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে, দেশের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তথ্য তৈরি করতে হবে। শুধু জিডিপি প্রবৃদ্ধি দিয়ে দেশের উন্নয়ন মাপা যাবে না। মানুষের জীবনমান ও সামাজিক সূচকের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। আগে সরকার ভালো করছে—সেটা দেখাতে জিডিপির প্রবৃদ্ধি দেখানো হতো। মানুষের জীবনমান উন্নয়নের পরিমাপক হিসেবে জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সমবায় ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মহির বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মহিউদ্দিন আহমেদ মহি। ফাইল ছবি
মহিউদ্দিন আহমেদ মহি। ফাইল ছবি

আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সাড়ে তিন কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মহির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ সোমবার দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। শিগগির অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে বলে জানান তিনি।

দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৪৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি অবৈধভাবে আয় করা অর্থ বৈধ করার উদ্দেশ্যে ব্যবসার ছদ্মাবরণে ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ৫২৯ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত সম্পদ ভোগ ও দখলে রাখেন।

তদন্তে দেখা যায়, মহিউদ্দিন দুদকে দাখিল করা বিবরণীতে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট ৩ কোটি ৯৭ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৩ টাকার সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। তবে যাচাইকালে তাঁর নামে ৫ কোটি ১২ লাখ ৫৩ হাজার ২১৩ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ তিনি প্রায় ৪৬ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।

এ ছাড়া দুদকের তদন্তে তাঁর নিট সম্পদ, পারিবারিক ব্যয়সহ মোট ১০ কোটি ২১ লাখ ৪ হাজার ৬৭৩ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এর বিপরীতে তাঁর বৈধ আয় হিসেবে পাওয়া গেছে মাত্র ৬ কোটি ৬৫ লাখ ৬৪ হাজার ১৪৪ টাকা। সেই হিসাবে তাঁর জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ৫২৯ টাকা।

সম্পদের তথ্য গোপন, মিথ্যা তথ্য প্রদান, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত বছরের ১৬ অক্টোবর ২ কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার ৯৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সমবায় ব্যাংকের সাবেক এই ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যানের নামে মামলা দায়ের করে দুদক।

প্রসঙ্গত, মহিউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাবেক সহসভাপতি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে দলটির শীর্ষ নেতাদের মতো তিনিও আত্মগোপনে চলে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিনিয়োগ শিক্ষায় যুক্ত হচ্ছে জেলা-উপজেলা প্রশাসন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিনিয়োগ শিক্ষায় যুক্ত হচ্ছে জেলা-উপজেলা প্রশাসন

পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগ শিক্ষায় দেশব্যাপী সচেতনতা বাড়াতে মাঠ প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিনিয়োগ শিক্ষা ও আর্থিক সাক্ষরতা (ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি) কার্যক্রম বিস্তারে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বিএসইসির সুপারিশে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) প্রতি পাঁচটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো—পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের আগে মানুষকে শিক্ষিত করা, সঠিক তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করা এবং ভ্রান্ত সিদ্ধান্তজনিত ঝুঁকি হ্রাস করা।

বিএসইসি মনে করে, প্রশাসনিক কাঠামোকে যুক্ত করা গেলে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের প্রসার আরও গতিশীল হবে এবং দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে।

বিএসইসির অনুরোধে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে একটি চিঠি পাঠায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখা ৮ অক্টোবর সব জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানায়।

চিঠির অনুলিপি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, দেশের সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলা তথ্য কর্মকর্তাদেরও পাঠানো হয়েছে। এর মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনের সব পর্যায়ে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক সংযোগ স্থাপন করা হলো।

পাঁচ নির্দেশনা

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠিতে বিনিয়োগ শিক্ষা ও পুঁজিবাজার সচেতনতা বৃদ্ধিতে মাঠ প্রশাসনের জন্য পাঁচটি নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে লিঙ্ক সংযুক্তকরণ: প্রতিটি জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে ‘ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি ও বিনিয়োগ সচেতনতা’ শীর্ষক একটি লিঙ্ক যুক্ত করতে বলা হয়েছে। এর আওতায় বিএসইসির বিনিয়োগ শিক্ষা ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলের সংযোগ থাকবে।

স্থানীয় পর্যায়ে কর্মশালা ও সেমিনারে সহায়তা: জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিএসইসি আয়োজিত ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি সেমিনার, কর্মশালা বা প্রশিক্ষণ আয়োজনের ক্ষেত্রে প্রশাসনের সহযোগিতা ও সমন্বয় সাধনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচ্য বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্তি: প্রতিটি জেলার মাসিক সমন্বয় সভায় ‘বিনিয়োগ শিক্ষা ও নিরাপদ বিনিয়োগ’ বিষয়টি নিয়মিত আলোচনার অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে, যাতে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনিক কার্যক্রমের অংশ হয়ে ওঠে।

জেলা তথ্য কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রচারণা: বিনিয়োগ শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলা তথ্য অফিসের সহায়তায় প্রচার-প্রকাশনার উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনিক শাখার দায়িত্ব নির্ধারণ: প্রতিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার (ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ) বা সিনিয়র সহকারী কমিশনারকে পুঁজিবাজারসংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ ও সহযোগিতা প্রদানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া বিনিয়োগ শিক্ষার প্রসারে স্থানীয় প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি সম্প্রতি জাতীয় তথ্য বাতায়নে বিএসইসির বিনিয়োগ শিক্ষাবিষয়ক ওয়েবসাইট ও ইউটিউব লিঙ্ক সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে সরকারি ওয়েবসাইট থেকেই নাগরিকেরা সহজে বিনিয়োগসংক্রান্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে প্রবেশাধিকার পাবেন।

বিএসইসির মতে, ডিজিটাল সংযুক্তির মাধ্যমে এখন দেশের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষও পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নিতে পারবে, যা দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।

বিএসইসির মুখপাত্র ও পরিচালক মো. আবুল কালাম বলেন, জেলা-উপজেলা প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করা হলে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম সারা দেশে নতুন গতি পাবে। বিনিয়োগে ঝুঁকি কমাতে এবং জনসাধারণকে সচেতন করতে প্রশাসনের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আবুল কালাম আরও বলেন, ‘বিনিয়োগ শিক্ষা শুধু বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা নয়, বরং এটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার অন্যতম শর্ত। আমরা চাই, দেশের প্রতিটি মানুষ বিনিয়োগ সম্পর্কে সচেতন হোক। সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।’

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের গবেষণা ফেলো ও অর্থনীতিবিদ হেলাল আহমেদ জনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রশাসন, বিনিয়োগকারী, গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের সমন্বিত অংশগ্রহণেই গড়ে উঠতে পারে একটি সচেতন বিনিয়োগ সংস্কৃতি, যা দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতিকে আরও শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাবে।

তবে এই উদ্যোগের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে হেলাল আহমেদ জনি বলেন, মাঠপর্যায়ে কার্যকর করতে প্রশাসনের প্রশিক্ষণ, বাজেট ও মনিটরিং ব্যবস্থার অভাব বড় চ্যালেঞ্জ। শুধু নির্দেশনা নয়, বাস্তবায়নে ধারাবাহিক ফলোআপ ও প্রণোদনা নিশ্চিত করলেই উদ্যোগটি ফলপ্রসূ হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত