Ajker Patrika

আমদানি শুরু হওয়ায় কাঁচা মরিচের বাজার সহনীয়

  • ছয় দিনে ৩৪,২০০ টন আমদানির অনুমোদন।
  • ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি শুরু।
  • খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ১৮০-২০০ টাকা।
  • টানা বৃষ্টিতে মরিচের সরবরাহ ব্যাহত।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আমদানি শুরু হওয়ায় কাঁচা মরিচের বাজার সহনীয়

হঠাৎ ঊর্ধ্বমুখী কাঁচা মরিচের বাজার সামাল দিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। গত ছয় দিনে ৩৪ হাজার ২০০ টন কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে বাজারে সরবরাহ বাড়ছে এবং দামও কমতে শুরু করেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১০ জুলাই থেকে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মরিচ আমদানি শুরু হয়। এরই মধ্যে ভারত থেকে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ৮৩৮ টন কাঁচা মরিচ দেশের বাজারে প্রবেশ করেছে।

এখন রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। পাইকারি বাজারে তা আরও কম, ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। যেখানে মাত্র কয়েক দিন আগেই এই দাম উঠেছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়।

টানা বৃষ্টিতে মাঠঘাট ডুবে যাওয়ায় স্থানীয়ভাবে মরিচের সরবরাহ ব্যাহত হয়। ব্যবসায়ীরা জানান, এতে হঠাৎ করেই বাজারে ঘাটতি দেখা দেয়, যা দামের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। তবে এখন প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ আমদানি হওয়ায় দাম কমে আসছে। আমদানি অব্যাহত থাকলে কাঁচা মরিচের দাম আর বাড়ার আশঙ্কা নেই।

রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারে গতকাল খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহের শুরুতেও কাঁচা মরিচের দাম ছিল ১০০-১২০ টাকা কেজির মধ্যে। সেগুনবাগিচা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মিন্টু বলেন, গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে পাইকারি বাজারে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) কাঁচা মরিচের দাম উঠেছিল ১ হাজার ২০০ টাকা। এতে খুচরাতে দাম বেড়ে ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে এখন কমে এসেছে। আমদানির মরিচ বাজারে আসতে থাকায় দাম আর বাড়ার আশঙ্কা নেই।

হিলি স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সর্বশেষ গত বছরের ১৪ নভেম্বর হিলি দিয়ে তিনটি ট্রাকে ৩১ টন ৮৩ কেজি মরিচ আমদানি হয়েছিল। এরপর ৭ মাস ২৬ দিন বন্ধ থাকার পর এবার আমদানি ফের শুরু হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ বিভাগের উপপরিচালক (আমদানি) মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘সাধারণত বর্ষাকালে বেশি বৃষ্টি হলে মরিচের জমি নষ্ট হয়ে যায়। এতে দাম বাড়ে। তাই আমরা আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ৯ জুলাই থেকে আমদানির অনুমোদন প্রক্রিয়া শুরু করেছি। বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার পর আমদানি শুরু হয়। এতে দামও কমে আসে।’

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিবছর কাঁচা মরিচের চাহিদা প্রায় ১৫ লাখ টন। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয় সাড়ে ১৪ লাখ টনের বেশি। বর্ষাকালে ঘাটতি মেটাতে আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। দেশব্যাপী মরিচ চাষ হলেও সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় বগুড়ায়।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর একই সময়ে কাঁচা মরিচের দাম ছিল ১৬০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি। তবে আগস্টে তা একপর্যায়ে ১ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। এবার সেই আশঙ্কা নেই বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ পাইকারি কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি ইমরান মাস্টার বলেন, মরিচের দাম এখন স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে অনেক মরিচখেত ডুবে গাছ নষ্ট হয়েছে। এতে দাম বেড়েছিল। এখন যেটুকু বাড়তি রয়েছে বর্ষাকাল হিসেবে এটুকু স্বাভাবিক। গত বছর ফেনীসহ বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক বন্যা হওয়ায় দাম অনেক বেড়েছিল। এবার তেমনটা হয়নি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় উৎপাদন শুরু না হওয়া পর্যন্ত আমদানির অনুমোদন অব্যাহত থাকবে। ফলে দাম আরও স্থিতিশীল থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত