রোকন উদ্দীন, ঢাকা

ঈদ বাণিজ্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের জন্য যেমন একটি অপরিহার্য অংশ, তেমনি দেশের অর্থনীতির জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ঈদের আগের বাজারে বাণিজ্য যেমন তুঙ্গে পৌঁছায়, তেমনি এটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্রও তুলে ধরে। যদিও দেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র এবং স্বল্প আয়ের মধ্যে তারা জীবন যাপন করে, তবে ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটায় সবার অংশগ্রহণের ফলে প্রতিবছর অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থার তুলনায় লেনদেনের পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যায়। এই প্রবণতা প্রতিবছর তার সীমা ছাড়িয়ে যায়। এবারের ঈদও এর ব্যতিক্রম নয়। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যাপক সামাজিক বৈষম্য এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে মানুষ তবু বাজারে উন্মুখ হয়ে উঠেছে। মাসব্যাপী রোজা ও ঈদ উৎসবকে আরও বর্ণিল ও আনন্দমুখর করতে সবাই সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে কেনাকাটায় যুক্ত হয়েছে। গ্রামে গ্রামে ঈদ উদ্যাপন করতে লাখ লাখ মানুষ ফিরেছে, যা বাজারের পরিবেশকে আরও প্রাণবন্ত করেছে।
বাজার বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতি, বাজারের উজ্জীবিত অবস্থা, মূল্যস্ফীতির পতন এবং রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স প্রবাহ—সব মিলিয়ে এবারের ঈদ বাণিজ্য গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে; যা দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য আশাব্যঞ্জক সিগন্যাল হয়ে উঠতে পারে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেছেন, ঈদ উপলক্ষে বাজারে চাঙাভাব দেখা গেছে, যা শপিং মল, বিপণিবিতান, ফুটপাত এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ক্রেতাদের সরব উপস্থিতিতে প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি আরও জানান, এলসি খোলার পরিস্থিতির উন্নতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ার ফলে পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে, যার কারণে বাজারে অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমে গেছে এবং এবারের কেনাকাটায় স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে এসেছে।
ঈদ বাণিজ্য: বৃহত্তম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অংশ
ঈদ বাণিজ্য শুধু বাণিজ্যিক নয়, এটি একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইভেন্টের অংশও। এবারের ঈদ বাণিজ্য দেশের জন্য নয়, বরং একটি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিবেশে পরিণত হয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স, মূল্যস্ফীতি হ্রাস এবং সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের ফলে বাজারে নতুন গতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে; বিশেষ করে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় ঈদ বাজারে চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, এবারের ঈদ বাণিজ্যে মোট ব্যবসা ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হবে; যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। গত বছর এই লেনদেন ছিল ১ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকার। সমিতির হিসাব অনুযায়ী, এবারের ঈদ বাণিজ্যের মধ্যে শুধু পোশাকের বাজারে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকা যোগ হতে পারে। নিত্যপণ্যের বাজারে এই অতিরিক্ত জোগান ৩০-৩৫ হাজার কোটি টাকা। ধনী মানুষদের দেওয়া জাকাত ও ফিতরা বাবদ ৩৮-৪০ হাজার কোটি টাকা আসছে। পরিবহন খাতে অতিরিক্ত বাণিজ্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাড়ছে। এ ছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে ভ্রমণ এবং বিনোদন খাতে ব্যয় হয় ৪-৫ হাজার কোটি টাকা।
এ ছাড়া প্রায় সাড়ে ১২ লাখ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী, ৬০ লাখ দোকান কর্মচারী এবং তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের ৭০ লাখ শ্রমিক ঈদ বোনাস পাবেন, যা ঈদ অর্থনীতিতে যুক্ত হবে। পাশাপাশি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা করে এসেছে। ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা তাঁদের আত্মীয়স্বজনের জন্য বাড়তি ব্যয় মেটাতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়েছেন, যা ঈদ অর্থনীতি চাঙা করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘রোজার শুরুতে মার্কেটগুলোতে বিক্রি কিছুটা কম ছিল, তবে মধ্য রোজার পর থেকে বিক্রি বাড়তে থাকে। আর ঈদের শেষ দিকে এসে মার্কেটে ক্রেতাদের এত ভিড় হয়েছে যে পা ফেলার জায়গা ছিল না। সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীরা বোনাস হাতে পাওয়ার পর বাজারে কেনাকাটা আরও বেড়ে গেছে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, এবারের ঈদকেন্দ্রিক বাণিজ্য প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা হবে। যদিও অনেক ব্যবসায়ী মনে করেন, আড়াই লাখ কোটি টাকা না হলেও এর কাছাকাছি বাণিজ্য হবে। তথ্যমতে, মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটি পরিবার ঈদকে কেন্দ্র করে ন্যূনতম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করে, এবং তাদের সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে এই অঙ্ক আরও বাড়ে।

মূল্যস্ফীতি এবং রেমিট্যান্স: অর্থনীতির মেরুদণ্ড
এবারের ঈদ বাণিজ্যকে গতিশীল করেছে দুটি বড় পরিবর্তন—মূল্যস্ফীতি হ্রাস এবং রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স প্রবাহ। গত বছরের ৯ শতাংশের ওপরে থাকা মূল্যস্ফীতি এ বছরের মার্চে ৯.৩২ শতাংশে নেমে এসেছে; যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রধান কারণ। এর ফলে মানুষ ঈদ উপলক্ষে বড় আকারে কেনাকাটা করতে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে, ২৬ মার্চ পর্যন্ত এটি ২৯৪ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। এই রেমিট্যান্স প্রবাহ দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে এবং সাধারণ মানুষের হাতে অতিরিক্ত অর্থ আসায় তারা ঈদের বাজারে বেশি খরচ করতে পারছে।
সরবরাহ ব্যবস্থা: পণ্যের সহজলভ্যতা
এবারের ঈদ বাণিজ্যে পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। গত বছর ডলারের সংকটে কিছু পণ্যের সরবরাহে সমস্যা ছিল, তবে ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের উদ্যোগে আমদানির সমস্যা সমাধান হয়েছে এবং পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে; বিশেষ করে খাদ্যপণ্য, পোশাক এবং উপহারসামগ্রী বেশি সরবরাহ করা হয়েছে। সরকারের পণ্য মজুত এবং মূল্য নিয়ন্ত্রণের কারণে বাজারে অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির চাপ সৃষ্টি হয়নি এবং ব্যবসায়ীরা সংকট অনুভব করেননি, যা বাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছে।
খাদ্যসামগ্রী, পোশাক এবং অন্যান্য পণ্যের চাহিদা
ঈদে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় পোশাকসামগ্রী। ঈদকেন্দ্রিক শীর্ষ ১০ পণ্যের কেনাকাটায় দেড় লাখ কোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে পোশাক, জুতা-স্যান্ডেল, লুঙ্গি, গেঞ্জি, গামছা ও খাদ্যপণ্যের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। খাদ্যসামগ্রীর বিক্রি ৪০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে এবং পোশাক খাতে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হবে। মূলত তরুণ প্রজন্মের ফ্যাশন ও ডিজাইনের প্রতি আগ্রহ এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেসে বিক্রি বৃদ্ধির কারণে পোশাকশিল্পের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাজারে বিক্রি বেড়েছে।
সুপারশপ স্বপ্নের এমডি সাব্বির হাসান নাসির জানান, মাসখানেক আগে বিক্রি কমে যাওয়ার যে আশঙ্কা ছিল, তা মধ্য রমজানের আগে কেটে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় গত বছরের তুলনায় বিক্রি ১৮-২০ শতাংশ বেশি হয়েছে।
দেশীয় ফ্যাশন হাউস রঙ বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাস বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বাড়তি ভ্যাটের কারণে এবারের বিক্রির লক্ষ্য কিছুটা কম করা হয়েছে। তবে তাঁদের প্রত্যাশা, গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে এবং মধ্য রমজান থেকে বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে।
ঈদ বাণিজ্য এবং কর্মসংস্থান
এবারের ঈদ বাণিজ্য শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আনেনি, বরং এর মাধ্যমে বিভিন্ন খাতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। বড় বড় শপিং মল, দোকান এবং বিভিন্ন সেবামূলক খাতে শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন পণ্যের মজুত, প্যাকেজিং, পরিবহন ও বিক্রয় বিভাগে বিপুলসংখ্যক মানুষ কাজ করেছেন। দোকান মালিক সমিতি জানিয়েছে, এবারের ঈদে ১০ লাখের বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানে নিয়োজিত হয়েছে।

ঈদ বাণিজ্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের জন্য যেমন একটি অপরিহার্য অংশ, তেমনি দেশের অর্থনীতির জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ঈদের আগের বাজারে বাণিজ্য যেমন তুঙ্গে পৌঁছায়, তেমনি এটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্রও তুলে ধরে। যদিও দেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র এবং স্বল্প আয়ের মধ্যে তারা জীবন যাপন করে, তবে ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটায় সবার অংশগ্রহণের ফলে প্রতিবছর অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থার তুলনায় লেনদেনের পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যায়। এই প্রবণতা প্রতিবছর তার সীমা ছাড়িয়ে যায়। এবারের ঈদও এর ব্যতিক্রম নয়। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যাপক সামাজিক বৈষম্য এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে মানুষ তবু বাজারে উন্মুখ হয়ে উঠেছে। মাসব্যাপী রোজা ও ঈদ উৎসবকে আরও বর্ণিল ও আনন্দমুখর করতে সবাই সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে কেনাকাটায় যুক্ত হয়েছে। গ্রামে গ্রামে ঈদ উদ্যাপন করতে লাখ লাখ মানুষ ফিরেছে, যা বাজারের পরিবেশকে আরও প্রাণবন্ত করেছে।
বাজার বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতি, বাজারের উজ্জীবিত অবস্থা, মূল্যস্ফীতির পতন এবং রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স প্রবাহ—সব মিলিয়ে এবারের ঈদ বাণিজ্য গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে; যা দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য আশাব্যঞ্জক সিগন্যাল হয়ে উঠতে পারে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেছেন, ঈদ উপলক্ষে বাজারে চাঙাভাব দেখা গেছে, যা শপিং মল, বিপণিবিতান, ফুটপাত এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ক্রেতাদের সরব উপস্থিতিতে প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি আরও জানান, এলসি খোলার পরিস্থিতির উন্নতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ার ফলে পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে, যার কারণে বাজারে অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমে গেছে এবং এবারের কেনাকাটায় স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে এসেছে।
ঈদ বাণিজ্য: বৃহত্তম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অংশ
ঈদ বাণিজ্য শুধু বাণিজ্যিক নয়, এটি একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইভেন্টের অংশও। এবারের ঈদ বাণিজ্য দেশের জন্য নয়, বরং একটি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিবেশে পরিণত হয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স, মূল্যস্ফীতি হ্রাস এবং সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের ফলে বাজারে নতুন গতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে; বিশেষ করে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় ঈদ বাজারে চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, এবারের ঈদ বাণিজ্যে মোট ব্যবসা ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হবে; যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। গত বছর এই লেনদেন ছিল ১ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকার। সমিতির হিসাব অনুযায়ী, এবারের ঈদ বাণিজ্যের মধ্যে শুধু পোশাকের বাজারে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকা যোগ হতে পারে। নিত্যপণ্যের বাজারে এই অতিরিক্ত জোগান ৩০-৩৫ হাজার কোটি টাকা। ধনী মানুষদের দেওয়া জাকাত ও ফিতরা বাবদ ৩৮-৪০ হাজার কোটি টাকা আসছে। পরিবহন খাতে অতিরিক্ত বাণিজ্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাড়ছে। এ ছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে ভ্রমণ এবং বিনোদন খাতে ব্যয় হয় ৪-৫ হাজার কোটি টাকা।
এ ছাড়া প্রায় সাড়ে ১২ লাখ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী, ৬০ লাখ দোকান কর্মচারী এবং তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের ৭০ লাখ শ্রমিক ঈদ বোনাস পাবেন, যা ঈদ অর্থনীতিতে যুক্ত হবে। পাশাপাশি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা করে এসেছে। ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা তাঁদের আত্মীয়স্বজনের জন্য বাড়তি ব্যয় মেটাতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়েছেন, যা ঈদ অর্থনীতি চাঙা করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘রোজার শুরুতে মার্কেটগুলোতে বিক্রি কিছুটা কম ছিল, তবে মধ্য রোজার পর থেকে বিক্রি বাড়তে থাকে। আর ঈদের শেষ দিকে এসে মার্কেটে ক্রেতাদের এত ভিড় হয়েছে যে পা ফেলার জায়গা ছিল না। সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীরা বোনাস হাতে পাওয়ার পর বাজারে কেনাকাটা আরও বেড়ে গেছে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, এবারের ঈদকেন্দ্রিক বাণিজ্য প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা হবে। যদিও অনেক ব্যবসায়ী মনে করেন, আড়াই লাখ কোটি টাকা না হলেও এর কাছাকাছি বাণিজ্য হবে। তথ্যমতে, মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটি পরিবার ঈদকে কেন্দ্র করে ন্যূনতম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করে, এবং তাদের সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে এই অঙ্ক আরও বাড়ে।

মূল্যস্ফীতি এবং রেমিট্যান্স: অর্থনীতির মেরুদণ্ড
এবারের ঈদ বাণিজ্যকে গতিশীল করেছে দুটি বড় পরিবর্তন—মূল্যস্ফীতি হ্রাস এবং রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স প্রবাহ। গত বছরের ৯ শতাংশের ওপরে থাকা মূল্যস্ফীতি এ বছরের মার্চে ৯.৩২ শতাংশে নেমে এসেছে; যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রধান কারণ। এর ফলে মানুষ ঈদ উপলক্ষে বড় আকারে কেনাকাটা করতে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে, ২৬ মার্চ পর্যন্ত এটি ২৯৪ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। এই রেমিট্যান্স প্রবাহ দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে এবং সাধারণ মানুষের হাতে অতিরিক্ত অর্থ আসায় তারা ঈদের বাজারে বেশি খরচ করতে পারছে।
সরবরাহ ব্যবস্থা: পণ্যের সহজলভ্যতা
এবারের ঈদ বাণিজ্যে পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। গত বছর ডলারের সংকটে কিছু পণ্যের সরবরাহে সমস্যা ছিল, তবে ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের উদ্যোগে আমদানির সমস্যা সমাধান হয়েছে এবং পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে; বিশেষ করে খাদ্যপণ্য, পোশাক এবং উপহারসামগ্রী বেশি সরবরাহ করা হয়েছে। সরকারের পণ্য মজুত এবং মূল্য নিয়ন্ত্রণের কারণে বাজারে অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির চাপ সৃষ্টি হয়নি এবং ব্যবসায়ীরা সংকট অনুভব করেননি, যা বাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছে।
খাদ্যসামগ্রী, পোশাক এবং অন্যান্য পণ্যের চাহিদা
ঈদে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় পোশাকসামগ্রী। ঈদকেন্দ্রিক শীর্ষ ১০ পণ্যের কেনাকাটায় দেড় লাখ কোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে পোশাক, জুতা-স্যান্ডেল, লুঙ্গি, গেঞ্জি, গামছা ও খাদ্যপণ্যের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। খাদ্যসামগ্রীর বিক্রি ৪০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে এবং পোশাক খাতে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হবে। মূলত তরুণ প্রজন্মের ফ্যাশন ও ডিজাইনের প্রতি আগ্রহ এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেসে বিক্রি বৃদ্ধির কারণে পোশাকশিল্পের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাজারে বিক্রি বেড়েছে।
সুপারশপ স্বপ্নের এমডি সাব্বির হাসান নাসির জানান, মাসখানেক আগে বিক্রি কমে যাওয়ার যে আশঙ্কা ছিল, তা মধ্য রমজানের আগে কেটে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় গত বছরের তুলনায় বিক্রি ১৮-২০ শতাংশ বেশি হয়েছে।
দেশীয় ফ্যাশন হাউস রঙ বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাস বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বাড়তি ভ্যাটের কারণে এবারের বিক্রির লক্ষ্য কিছুটা কম করা হয়েছে। তবে তাঁদের প্রত্যাশা, গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে এবং মধ্য রমজান থেকে বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে।
ঈদ বাণিজ্য এবং কর্মসংস্থান
এবারের ঈদ বাণিজ্য শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আনেনি, বরং এর মাধ্যমে বিভিন্ন খাতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। বড় বড় শপিং মল, দোকান এবং বিভিন্ন সেবামূলক খাতে শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন পণ্যের মজুত, প্যাকেজিং, পরিবহন ও বিক্রয় বিভাগে বিপুলসংখ্যক মানুষ কাজ করেছেন। দোকান মালিক সমিতি জানিয়েছে, এবারের ঈদে ১০ লাখের বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানে নিয়োজিত হয়েছে।
রোকন উদ্দীন, ঢাকা

ঈদ বাণিজ্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের জন্য যেমন একটি অপরিহার্য অংশ, তেমনি দেশের অর্থনীতির জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ঈদের আগের বাজারে বাণিজ্য যেমন তুঙ্গে পৌঁছায়, তেমনি এটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্রও তুলে ধরে। যদিও দেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র এবং স্বল্প আয়ের মধ্যে তারা জীবন যাপন করে, তবে ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটায় সবার অংশগ্রহণের ফলে প্রতিবছর অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থার তুলনায় লেনদেনের পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যায়। এই প্রবণতা প্রতিবছর তার সীমা ছাড়িয়ে যায়। এবারের ঈদও এর ব্যতিক্রম নয়। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যাপক সামাজিক বৈষম্য এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে মানুষ তবু বাজারে উন্মুখ হয়ে উঠেছে। মাসব্যাপী রোজা ও ঈদ উৎসবকে আরও বর্ণিল ও আনন্দমুখর করতে সবাই সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে কেনাকাটায় যুক্ত হয়েছে। গ্রামে গ্রামে ঈদ উদ্যাপন করতে লাখ লাখ মানুষ ফিরেছে, যা বাজারের পরিবেশকে আরও প্রাণবন্ত করেছে।
বাজার বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতি, বাজারের উজ্জীবিত অবস্থা, মূল্যস্ফীতির পতন এবং রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স প্রবাহ—সব মিলিয়ে এবারের ঈদ বাণিজ্য গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে; যা দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য আশাব্যঞ্জক সিগন্যাল হয়ে উঠতে পারে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেছেন, ঈদ উপলক্ষে বাজারে চাঙাভাব দেখা গেছে, যা শপিং মল, বিপণিবিতান, ফুটপাত এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ক্রেতাদের সরব উপস্থিতিতে প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি আরও জানান, এলসি খোলার পরিস্থিতির উন্নতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ার ফলে পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে, যার কারণে বাজারে অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমে গেছে এবং এবারের কেনাকাটায় স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে এসেছে।
ঈদ বাণিজ্য: বৃহত্তম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অংশ
ঈদ বাণিজ্য শুধু বাণিজ্যিক নয়, এটি একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইভেন্টের অংশও। এবারের ঈদ বাণিজ্য দেশের জন্য নয়, বরং একটি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিবেশে পরিণত হয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স, মূল্যস্ফীতি হ্রাস এবং সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের ফলে বাজারে নতুন গতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে; বিশেষ করে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় ঈদ বাজারে চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, এবারের ঈদ বাণিজ্যে মোট ব্যবসা ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হবে; যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। গত বছর এই লেনদেন ছিল ১ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকার। সমিতির হিসাব অনুযায়ী, এবারের ঈদ বাণিজ্যের মধ্যে শুধু পোশাকের বাজারে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকা যোগ হতে পারে। নিত্যপণ্যের বাজারে এই অতিরিক্ত জোগান ৩০-৩৫ হাজার কোটি টাকা। ধনী মানুষদের দেওয়া জাকাত ও ফিতরা বাবদ ৩৮-৪০ হাজার কোটি টাকা আসছে। পরিবহন খাতে অতিরিক্ত বাণিজ্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাড়ছে। এ ছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে ভ্রমণ এবং বিনোদন খাতে ব্যয় হয় ৪-৫ হাজার কোটি টাকা।
এ ছাড়া প্রায় সাড়ে ১২ লাখ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী, ৬০ লাখ দোকান কর্মচারী এবং তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের ৭০ লাখ শ্রমিক ঈদ বোনাস পাবেন, যা ঈদ অর্থনীতিতে যুক্ত হবে। পাশাপাশি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা করে এসেছে। ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা তাঁদের আত্মীয়স্বজনের জন্য বাড়তি ব্যয় মেটাতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়েছেন, যা ঈদ অর্থনীতি চাঙা করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘রোজার শুরুতে মার্কেটগুলোতে বিক্রি কিছুটা কম ছিল, তবে মধ্য রোজার পর থেকে বিক্রি বাড়তে থাকে। আর ঈদের শেষ দিকে এসে মার্কেটে ক্রেতাদের এত ভিড় হয়েছে যে পা ফেলার জায়গা ছিল না। সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীরা বোনাস হাতে পাওয়ার পর বাজারে কেনাকাটা আরও বেড়ে গেছে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, এবারের ঈদকেন্দ্রিক বাণিজ্য প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা হবে। যদিও অনেক ব্যবসায়ী মনে করেন, আড়াই লাখ কোটি টাকা না হলেও এর কাছাকাছি বাণিজ্য হবে। তথ্যমতে, মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটি পরিবার ঈদকে কেন্দ্র করে ন্যূনতম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করে, এবং তাদের সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে এই অঙ্ক আরও বাড়ে।

মূল্যস্ফীতি এবং রেমিট্যান্স: অর্থনীতির মেরুদণ্ড
এবারের ঈদ বাণিজ্যকে গতিশীল করেছে দুটি বড় পরিবর্তন—মূল্যস্ফীতি হ্রাস এবং রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স প্রবাহ। গত বছরের ৯ শতাংশের ওপরে থাকা মূল্যস্ফীতি এ বছরের মার্চে ৯.৩২ শতাংশে নেমে এসেছে; যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রধান কারণ। এর ফলে মানুষ ঈদ উপলক্ষে বড় আকারে কেনাকাটা করতে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে, ২৬ মার্চ পর্যন্ত এটি ২৯৪ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। এই রেমিট্যান্স প্রবাহ দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে এবং সাধারণ মানুষের হাতে অতিরিক্ত অর্থ আসায় তারা ঈদের বাজারে বেশি খরচ করতে পারছে।
সরবরাহ ব্যবস্থা: পণ্যের সহজলভ্যতা
এবারের ঈদ বাণিজ্যে পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। গত বছর ডলারের সংকটে কিছু পণ্যের সরবরাহে সমস্যা ছিল, তবে ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের উদ্যোগে আমদানির সমস্যা সমাধান হয়েছে এবং পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে; বিশেষ করে খাদ্যপণ্য, পোশাক এবং উপহারসামগ্রী বেশি সরবরাহ করা হয়েছে। সরকারের পণ্য মজুত এবং মূল্য নিয়ন্ত্রণের কারণে বাজারে অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির চাপ সৃষ্টি হয়নি এবং ব্যবসায়ীরা সংকট অনুভব করেননি, যা বাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছে।
খাদ্যসামগ্রী, পোশাক এবং অন্যান্য পণ্যের চাহিদা
ঈদে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় পোশাকসামগ্রী। ঈদকেন্দ্রিক শীর্ষ ১০ পণ্যের কেনাকাটায় দেড় লাখ কোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে পোশাক, জুতা-স্যান্ডেল, লুঙ্গি, গেঞ্জি, গামছা ও খাদ্যপণ্যের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। খাদ্যসামগ্রীর বিক্রি ৪০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে এবং পোশাক খাতে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হবে। মূলত তরুণ প্রজন্মের ফ্যাশন ও ডিজাইনের প্রতি আগ্রহ এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেসে বিক্রি বৃদ্ধির কারণে পোশাকশিল্পের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাজারে বিক্রি বেড়েছে।
সুপারশপ স্বপ্নের এমডি সাব্বির হাসান নাসির জানান, মাসখানেক আগে বিক্রি কমে যাওয়ার যে আশঙ্কা ছিল, তা মধ্য রমজানের আগে কেটে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় গত বছরের তুলনায় বিক্রি ১৮-২০ শতাংশ বেশি হয়েছে।
দেশীয় ফ্যাশন হাউস রঙ বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাস বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বাড়তি ভ্যাটের কারণে এবারের বিক্রির লক্ষ্য কিছুটা কম করা হয়েছে। তবে তাঁদের প্রত্যাশা, গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে এবং মধ্য রমজান থেকে বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে।
ঈদ বাণিজ্য এবং কর্মসংস্থান
এবারের ঈদ বাণিজ্য শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আনেনি, বরং এর মাধ্যমে বিভিন্ন খাতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। বড় বড় শপিং মল, দোকান এবং বিভিন্ন সেবামূলক খাতে শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন পণ্যের মজুত, প্যাকেজিং, পরিবহন ও বিক্রয় বিভাগে বিপুলসংখ্যক মানুষ কাজ করেছেন। দোকান মালিক সমিতি জানিয়েছে, এবারের ঈদে ১০ লাখের বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানে নিয়োজিত হয়েছে।

ঈদ বাণিজ্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের জন্য যেমন একটি অপরিহার্য অংশ, তেমনি দেশের অর্থনীতির জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ঈদের আগের বাজারে বাণিজ্য যেমন তুঙ্গে পৌঁছায়, তেমনি এটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্রও তুলে ধরে। যদিও দেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র এবং স্বল্প আয়ের মধ্যে তারা জীবন যাপন করে, তবে ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটায় সবার অংশগ্রহণের ফলে প্রতিবছর অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থার তুলনায় লেনদেনের পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যায়। এই প্রবণতা প্রতিবছর তার সীমা ছাড়িয়ে যায়। এবারের ঈদও এর ব্যতিক্রম নয়। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যাপক সামাজিক বৈষম্য এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে মানুষ তবু বাজারে উন্মুখ হয়ে উঠেছে। মাসব্যাপী রোজা ও ঈদ উৎসবকে আরও বর্ণিল ও আনন্দমুখর করতে সবাই সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে কেনাকাটায় যুক্ত হয়েছে। গ্রামে গ্রামে ঈদ উদ্যাপন করতে লাখ লাখ মানুষ ফিরেছে, যা বাজারের পরিবেশকে আরও প্রাণবন্ত করেছে।
বাজার বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতি, বাজারের উজ্জীবিত অবস্থা, মূল্যস্ফীতির পতন এবং রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স প্রবাহ—সব মিলিয়ে এবারের ঈদ বাণিজ্য গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে; যা দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য আশাব্যঞ্জক সিগন্যাল হয়ে উঠতে পারে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেছেন, ঈদ উপলক্ষে বাজারে চাঙাভাব দেখা গেছে, যা শপিং মল, বিপণিবিতান, ফুটপাত এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ক্রেতাদের সরব উপস্থিতিতে প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি আরও জানান, এলসি খোলার পরিস্থিতির উন্নতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ার ফলে পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে, যার কারণে বাজারে অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমে গেছে এবং এবারের কেনাকাটায় স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে এসেছে।
ঈদ বাণিজ্য: বৃহত্তম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অংশ
ঈদ বাণিজ্য শুধু বাণিজ্যিক নয়, এটি একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইভেন্টের অংশও। এবারের ঈদ বাণিজ্য দেশের জন্য নয়, বরং একটি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিবেশে পরিণত হয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স, মূল্যস্ফীতি হ্রাস এবং সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের ফলে বাজারে নতুন গতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে; বিশেষ করে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় ঈদ বাজারে চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, এবারের ঈদ বাণিজ্যে মোট ব্যবসা ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হবে; যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। গত বছর এই লেনদেন ছিল ১ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকার। সমিতির হিসাব অনুযায়ী, এবারের ঈদ বাণিজ্যের মধ্যে শুধু পোশাকের বাজারে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকা যোগ হতে পারে। নিত্যপণ্যের বাজারে এই অতিরিক্ত জোগান ৩০-৩৫ হাজার কোটি টাকা। ধনী মানুষদের দেওয়া জাকাত ও ফিতরা বাবদ ৩৮-৪০ হাজার কোটি টাকা আসছে। পরিবহন খাতে অতিরিক্ত বাণিজ্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাড়ছে। এ ছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে ভ্রমণ এবং বিনোদন খাতে ব্যয় হয় ৪-৫ হাজার কোটি টাকা।
এ ছাড়া প্রায় সাড়ে ১২ লাখ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী, ৬০ লাখ দোকান কর্মচারী এবং তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের ৭০ লাখ শ্রমিক ঈদ বোনাস পাবেন, যা ঈদ অর্থনীতিতে যুক্ত হবে। পাশাপাশি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা করে এসেছে। ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা তাঁদের আত্মীয়স্বজনের জন্য বাড়তি ব্যয় মেটাতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়েছেন, যা ঈদ অর্থনীতি চাঙা করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘রোজার শুরুতে মার্কেটগুলোতে বিক্রি কিছুটা কম ছিল, তবে মধ্য রোজার পর থেকে বিক্রি বাড়তে থাকে। আর ঈদের শেষ দিকে এসে মার্কেটে ক্রেতাদের এত ভিড় হয়েছে যে পা ফেলার জায়গা ছিল না। সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীরা বোনাস হাতে পাওয়ার পর বাজারে কেনাকাটা আরও বেড়ে গেছে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, এবারের ঈদকেন্দ্রিক বাণিজ্য প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা হবে। যদিও অনেক ব্যবসায়ী মনে করেন, আড়াই লাখ কোটি টাকা না হলেও এর কাছাকাছি বাণিজ্য হবে। তথ্যমতে, মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটি পরিবার ঈদকে কেন্দ্র করে ন্যূনতম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করে, এবং তাদের সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে এই অঙ্ক আরও বাড়ে।

মূল্যস্ফীতি এবং রেমিট্যান্স: অর্থনীতির মেরুদণ্ড
এবারের ঈদ বাণিজ্যকে গতিশীল করেছে দুটি বড় পরিবর্তন—মূল্যস্ফীতি হ্রাস এবং রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স প্রবাহ। গত বছরের ৯ শতাংশের ওপরে থাকা মূল্যস্ফীতি এ বছরের মার্চে ৯.৩২ শতাংশে নেমে এসেছে; যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রধান কারণ। এর ফলে মানুষ ঈদ উপলক্ষে বড় আকারে কেনাকাটা করতে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে, ২৬ মার্চ পর্যন্ত এটি ২৯৪ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। এই রেমিট্যান্স প্রবাহ দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে এবং সাধারণ মানুষের হাতে অতিরিক্ত অর্থ আসায় তারা ঈদের বাজারে বেশি খরচ করতে পারছে।
সরবরাহ ব্যবস্থা: পণ্যের সহজলভ্যতা
এবারের ঈদ বাণিজ্যে পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। গত বছর ডলারের সংকটে কিছু পণ্যের সরবরাহে সমস্যা ছিল, তবে ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের উদ্যোগে আমদানির সমস্যা সমাধান হয়েছে এবং পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে; বিশেষ করে খাদ্যপণ্য, পোশাক এবং উপহারসামগ্রী বেশি সরবরাহ করা হয়েছে। সরকারের পণ্য মজুত এবং মূল্য নিয়ন্ত্রণের কারণে বাজারে অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির চাপ সৃষ্টি হয়নি এবং ব্যবসায়ীরা সংকট অনুভব করেননি, যা বাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছে।
খাদ্যসামগ্রী, পোশাক এবং অন্যান্য পণ্যের চাহিদা
ঈদে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় পোশাকসামগ্রী। ঈদকেন্দ্রিক শীর্ষ ১০ পণ্যের কেনাকাটায় দেড় লাখ কোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে পোশাক, জুতা-স্যান্ডেল, লুঙ্গি, গেঞ্জি, গামছা ও খাদ্যপণ্যের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। খাদ্যসামগ্রীর বিক্রি ৪০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে এবং পোশাক খাতে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হবে। মূলত তরুণ প্রজন্মের ফ্যাশন ও ডিজাইনের প্রতি আগ্রহ এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেসে বিক্রি বৃদ্ধির কারণে পোশাকশিল্পের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাজারে বিক্রি বেড়েছে।
সুপারশপ স্বপ্নের এমডি সাব্বির হাসান নাসির জানান, মাসখানেক আগে বিক্রি কমে যাওয়ার যে আশঙ্কা ছিল, তা মধ্য রমজানের আগে কেটে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় গত বছরের তুলনায় বিক্রি ১৮-২০ শতাংশ বেশি হয়েছে।
দেশীয় ফ্যাশন হাউস রঙ বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাস বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বাড়তি ভ্যাটের কারণে এবারের বিক্রির লক্ষ্য কিছুটা কম করা হয়েছে। তবে তাঁদের প্রত্যাশা, গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে এবং মধ্য রমজান থেকে বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে।
ঈদ বাণিজ্য এবং কর্মসংস্থান
এবারের ঈদ বাণিজ্য শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আনেনি, বরং এর মাধ্যমে বিভিন্ন খাতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। বড় বড় শপিং মল, দোকান এবং বিভিন্ন সেবামূলক খাতে শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন পণ্যের মজুত, প্যাকেজিং, পরিবহন ও বিক্রয় বিভাগে বিপুলসংখ্যক মানুষ কাজ করেছেন। দোকান মালিক সমিতি জানিয়েছে, এবারের ঈদে ১০ লাখের বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানে নিয়োজিত হয়েছে।

বৈশ্বিক লেনদেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ও মার্কিন মুদ্রা ডলারের মান শক্তিশালী হয়েছে এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা থিতিয়ে আসতে শুরু করেছে। এরই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
১ ঘণ্টা আগে
দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়াতে দুটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ‘২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয়’ এবং অন্যটি চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপসহ শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১ অনুসন্ধান কূপ। দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট বাজেট ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৩২ কোটি টাক
১৩ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রামের রাষ্ট্রায়ত্ত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) দীর্ঘ ৬ মাস ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে আবার পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৩ ঘণ্টা আগে
কোনো পূর্বঘোষণা বা প্রস্তুতি ছাড়াই দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর রয়েছে, এই নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
১৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বৈশ্বিক লেনদেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ও মার্কিন মুদ্রা ডলারের মান শক্তিশালী হয়েছে এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা থিতিয়ে আসতে শুরু করেছে। এরই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম কমেছে। ডলারের মান শক্তিশালী হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা কিছুটা কমে আসার ইঙ্গিত মেলার কারণে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে পরিচিত ধাতুটির চাহিদা কমে গেছে। এদিকে সপ্তাহের শেষভাগে বিশ্বের বড় কয়েকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী বৈঠককে ঘিরে দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে বিনিয়োগকারীরা।
গ্রিনউইচ মান সময় সকাল ৬টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত স্পট গোল্ড, অর্থাৎ তাৎক্ষণিকভাবে যেসব সোনা বিক্রি হবে তার দাম দশমিক ৮ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৭৭ দশমিক ১১ ডলারে দাঁড়ায়। ফিউচার গোল্ড, অর্থাৎ অদূর ভবিষ্যতে যেসব সোনা সরবরাহ করা হবে কিন্তু ক্রয়-বিক্রয় এখনই সম্পন্ন হবে—সেগুলোর দামও কিছুটা কমেছে। আগামী ডিসেম্বর সরবরাহের জন্য সোনার দাম ১ দশমিক ১ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৯০ দশমিক ৯০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
ডলারের মান জাপানি মুদ্রা ইয়েনের বিপরীতে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে গেছে, ফলে অন্য মুদ্রাধারীদের জন্য স্বর্ণ আরও ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে।
এদিকে, গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের শীর্ষ অর্থনৈতিক কর্মকর্তারা এক বৈঠকে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির একটি খসড়া কাঠামো নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে বা আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে এ চুক্তি নিয়ে শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।
ক্যাপিটাল ডটকমের বিশ্লেষক কাইল রডা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সম্ভাব্য এই বাণিজ্য চুক্তির খবরটা বেশ আকস্মিকভাবে এসেছে, তবে বাজারের জন্য এটি এক ইতিবাচক চমক। তবে এর উল্টো দিক হলো, এই পরিস্থিতি সোনার বাজারের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাজার এখন কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে এসেছে এবং বিনিয়োগকারীদের মনোভাবও স্বাভাবিক হচ্ছে। ভবিষ্যতে শিথিল আর্থিক ও মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে—এই প্রত্যাশাই স্বর্ণকে এখনো টিকিয়ে রেখেছে। যদি সেটি বজায় থাকে, স্বর্ণের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকবে।’
ফেডারেল রিজার্ভের এই সপ্তাহের বৈঠকে সুদহার এক-চতুর্থাংশ শতাংশ কমানোর সম্ভাবনাই সবচেয়ে প্রবল। শুক্রবার প্রকাশিত প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের পর এ অনুমান আরও জোরদার হয়েছে। তবে এই হার কমানো বাজারে আগেই মূল্যায়িত হয়েছে। এখন বিনিয়োগকারীরা ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের ভবিষ্যৎমুখী মন্তব্যের দিকেই তাকিয়ে আছেন।
সুদবিহীন সম্পদ হিসেবে স্বর্ণ সাধারণত নিম্ন সুদের পরিবেশে লাভবান হয়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বর্ণ এক্সচেঞ্জ—ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) এসপিডিআর গোল্ড ট্রাস্ট জানিয়েছে, শুক্রবার এর মজুত ১ হাজার ৫২ দশমিক ৩৭ টন থেকে কমে ১ হাজার ৪৬ দশমিক ৯৩ টনে নেমেছে, অর্থাৎ দশমিক ৫২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
অন্যদিকে, স্পট সিলভারের দাম দশমিক ৬ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৪৮ দশমিক ৩১ ডলার হয়। প্লাটিনামের দাম দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৬১৬ দশমিক ৩০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। প্যালাডিয়ামের দাম দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৪৩৫ দশমিক ৭৫ ডলারে উঠেছে।

বৈশ্বিক লেনদেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ও মার্কিন মুদ্রা ডলারের মান শক্তিশালী হয়েছে এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা থিতিয়ে আসতে শুরু করেছে। এরই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম কমেছে। ডলারের মান শক্তিশালী হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা কিছুটা কমে আসার ইঙ্গিত মেলার কারণে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে পরিচিত ধাতুটির চাহিদা কমে গেছে। এদিকে সপ্তাহের শেষভাগে বিশ্বের বড় কয়েকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী বৈঠককে ঘিরে দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে বিনিয়োগকারীরা।
গ্রিনউইচ মান সময় সকাল ৬টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত স্পট গোল্ড, অর্থাৎ তাৎক্ষণিকভাবে যেসব সোনা বিক্রি হবে তার দাম দশমিক ৮ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৭৭ দশমিক ১১ ডলারে দাঁড়ায়। ফিউচার গোল্ড, অর্থাৎ অদূর ভবিষ্যতে যেসব সোনা সরবরাহ করা হবে কিন্তু ক্রয়-বিক্রয় এখনই সম্পন্ন হবে—সেগুলোর দামও কিছুটা কমেছে। আগামী ডিসেম্বর সরবরাহের জন্য সোনার দাম ১ দশমিক ১ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৯০ দশমিক ৯০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
ডলারের মান জাপানি মুদ্রা ইয়েনের বিপরীতে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে গেছে, ফলে অন্য মুদ্রাধারীদের জন্য স্বর্ণ আরও ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে।
এদিকে, গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের শীর্ষ অর্থনৈতিক কর্মকর্তারা এক বৈঠকে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির একটি খসড়া কাঠামো নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে বা আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে এ চুক্তি নিয়ে শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।
ক্যাপিটাল ডটকমের বিশ্লেষক কাইল রডা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সম্ভাব্য এই বাণিজ্য চুক্তির খবরটা বেশ আকস্মিকভাবে এসেছে, তবে বাজারের জন্য এটি এক ইতিবাচক চমক। তবে এর উল্টো দিক হলো, এই পরিস্থিতি সোনার বাজারের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাজার এখন কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে এসেছে এবং বিনিয়োগকারীদের মনোভাবও স্বাভাবিক হচ্ছে। ভবিষ্যতে শিথিল আর্থিক ও মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে—এই প্রত্যাশাই স্বর্ণকে এখনো টিকিয়ে রেখেছে। যদি সেটি বজায় থাকে, স্বর্ণের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকবে।’
ফেডারেল রিজার্ভের এই সপ্তাহের বৈঠকে সুদহার এক-চতুর্থাংশ শতাংশ কমানোর সম্ভাবনাই সবচেয়ে প্রবল। শুক্রবার প্রকাশিত প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের পর এ অনুমান আরও জোরদার হয়েছে। তবে এই হার কমানো বাজারে আগেই মূল্যায়িত হয়েছে। এখন বিনিয়োগকারীরা ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের ভবিষ্যৎমুখী মন্তব্যের দিকেই তাকিয়ে আছেন।
সুদবিহীন সম্পদ হিসেবে স্বর্ণ সাধারণত নিম্ন সুদের পরিবেশে লাভবান হয়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বর্ণ এক্সচেঞ্জ—ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) এসপিডিআর গোল্ড ট্রাস্ট জানিয়েছে, শুক্রবার এর মজুত ১ হাজার ৫২ দশমিক ৩৭ টন থেকে কমে ১ হাজার ৪৬ দশমিক ৯৩ টনে নেমেছে, অর্থাৎ দশমিক ৫২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
অন্যদিকে, স্পট সিলভারের দাম দশমিক ৬ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৪৮ দশমিক ৩১ ডলার হয়। প্লাটিনামের দাম দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৬১৬ দশমিক ৩০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। প্যালাডিয়ামের দাম দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৪৩৫ দশমিক ৭৫ ডলারে উঠেছে।

ঈদ বাণিজ্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের জন্য যেমন একটি অপরিহার্য অংশ, তেমনি দেশের অর্থনীতির জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ঈদের আগের বাজারে বাণিজ্য যেমন তুঙ্গে পৌঁছায়, তেমনি এটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্রও তুলে ধরে। যদিও দেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র এবং স্বল্প আয়ের মধ্যে তারা জীবন যাপন করে...
৩০ মার্চ ২০২৫
দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়াতে দুটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ‘২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয়’ এবং অন্যটি চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপসহ শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১ অনুসন্ধান কূপ। দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট বাজেট ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৩২ কোটি টাক
১৩ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রামের রাষ্ট্রায়ত্ত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) দীর্ঘ ৬ মাস ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে আবার পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৩ ঘণ্টা আগে
কোনো পূর্বঘোষণা বা প্রস্তুতি ছাড়াই দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর রয়েছে, এই নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
১৩ ঘণ্টা আগেমাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়াতে দুটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ‘২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয়’ এবং অন্যটি চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপসহ শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১ অনুসন্ধান কূপ। দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট বাজেট ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৩২ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত এই প্রকল্পগুলো ইতিমধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা প্রায় ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট, কিন্তু সরবরাহ করা হচ্ছে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এ ব্যবধানের কারণে শিল্প, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গৃহস্থালি ব্যবহারকারীরা প্রায়ই সংকটে পড়ছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্প নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দিকেও মনোযোগী হওয়া উচিত। আগে দেখা গেছে, প্রকল্প শুরু হলেও সময়মতো শেষ হয় না। এমনটি যেন আর না ঘটে। তবে এর জন্য পরিকল্পনা কমিশন ও জ্বালানি বিভাগের আরও সক্রিয় নজরদারি জরুরি।’
২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয় প্রকল্প
প্রথম প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ৫২০ কোটি, বাপেক্স নিজস্ব অর্থায়ন করবে ৫৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হয়েছে চলতি বছরের জুলাই থেকে, যার বাস্তবায়নের সময়সীমা ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই রিগ কেনার মাধ্যমে বাপেক্স নতুন গ্যাস কূপ খননের সক্ষমতা বাড়াবে। বর্তমানে পুরোনো রিগের কারণে খনন কার্যক্রমে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের জন্যই নতুন প্রকল্প।
ভোলা ও শাহবাজপুরে পাঁচটি কূপ খনন
দ্বিতীয় প্রকল্পের আওতায় ভোলা অঞ্চলে চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপ (শাহবাজপুর-৫ ও ৭, ভোলা নর্থ-৩ ও ৪) এবং একটি অনুসন্ধান কূপ (শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১) খনন করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৫৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে সরকার দেবে ১ হাজার ২৪৪ কোটি ৮০ লাখ, আর বাপেক্সের নিজস্ব অর্থায়ন ৩১০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত।
পরিকল্পনা কমিশনের নথি অনুযায়ী, কূপ খননের পাশাপাশি সংযোগ সড়ক নির্মাণ, কূপ পরীক্ষণ, উন্নয়নমূলক কাজ, সিমুলেশন সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ক্রয়সহ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। বাপেক্সের এমডি প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক জানান, কূপগুলোর মাধ্যমে নতুন গ্যাসের মজুত আবিষ্কারের সম্ভাবনা রয়েছে। পরীক্ষণ সফল হলে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে গ্যাস আমদানির ওপর নির্ভরতা কমবে। ভোলা অঞ্চলের নতুন গ্যাসক্ষেত্র বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হবে।’
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই দুটি প্রকল্পের পাশাপাশি সিলেটে ১২নং কূপ খনন এবং হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ ও মেঘনা ফিল্ডে ৩ডি সাইসমিক জরিপের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যদিও প্রকল্পগুলো শুরু হওয়ার কথা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে, তবে এখনো তা একনেক সভায় আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পায়নি।

দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়াতে দুটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ‘২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয়’ এবং অন্যটি চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপসহ শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১ অনুসন্ধান কূপ। দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট বাজেট ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৩২ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত এই প্রকল্পগুলো ইতিমধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা প্রায় ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট, কিন্তু সরবরাহ করা হচ্ছে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এ ব্যবধানের কারণে শিল্প, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গৃহস্থালি ব্যবহারকারীরা প্রায়ই সংকটে পড়ছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্প নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দিকেও মনোযোগী হওয়া উচিত। আগে দেখা গেছে, প্রকল্প শুরু হলেও সময়মতো শেষ হয় না। এমনটি যেন আর না ঘটে। তবে এর জন্য পরিকল্পনা কমিশন ও জ্বালানি বিভাগের আরও সক্রিয় নজরদারি জরুরি।’
২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয় প্রকল্প
প্রথম প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ৫২০ কোটি, বাপেক্স নিজস্ব অর্থায়ন করবে ৫৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হয়েছে চলতি বছরের জুলাই থেকে, যার বাস্তবায়নের সময়সীমা ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই রিগ কেনার মাধ্যমে বাপেক্স নতুন গ্যাস কূপ খননের সক্ষমতা বাড়াবে। বর্তমানে পুরোনো রিগের কারণে খনন কার্যক্রমে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের জন্যই নতুন প্রকল্প।
ভোলা ও শাহবাজপুরে পাঁচটি কূপ খনন
দ্বিতীয় প্রকল্পের আওতায় ভোলা অঞ্চলে চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপ (শাহবাজপুর-৫ ও ৭, ভোলা নর্থ-৩ ও ৪) এবং একটি অনুসন্ধান কূপ (শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১) খনন করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৫৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে সরকার দেবে ১ হাজার ২৪৪ কোটি ৮০ লাখ, আর বাপেক্সের নিজস্ব অর্থায়ন ৩১০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত।
পরিকল্পনা কমিশনের নথি অনুযায়ী, কূপ খননের পাশাপাশি সংযোগ সড়ক নির্মাণ, কূপ পরীক্ষণ, উন্নয়নমূলক কাজ, সিমুলেশন সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ক্রয়সহ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। বাপেক্সের এমডি প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক জানান, কূপগুলোর মাধ্যমে নতুন গ্যাসের মজুত আবিষ্কারের সম্ভাবনা রয়েছে। পরীক্ষণ সফল হলে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে গ্যাস আমদানির ওপর নির্ভরতা কমবে। ভোলা অঞ্চলের নতুন গ্যাসক্ষেত্র বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হবে।’
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই দুটি প্রকল্পের পাশাপাশি সিলেটে ১২নং কূপ খনন এবং হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ ও মেঘনা ফিল্ডে ৩ডি সাইসমিক জরিপের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যদিও প্রকল্পগুলো শুরু হওয়ার কথা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে, তবে এখনো তা একনেক সভায় আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পায়নি।

ঈদ বাণিজ্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের জন্য যেমন একটি অপরিহার্য অংশ, তেমনি দেশের অর্থনীতির জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ঈদের আগের বাজারে বাণিজ্য যেমন তুঙ্গে পৌঁছায়, তেমনি এটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্রও তুলে ধরে। যদিও দেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র এবং স্বল্প আয়ের মধ্যে তারা জীবন যাপন করে...
৩০ মার্চ ২০২৫
বৈশ্বিক লেনদেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ও মার্কিন মুদ্রা ডলারের মান শক্তিশালী হয়েছে এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা থিতিয়ে আসতে শুরু করেছে। এরই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
১ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রামের রাষ্ট্রায়ত্ত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) দীর্ঘ ৬ মাস ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে আবার পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৩ ঘণ্টা আগে
কোনো পূর্বঘোষণা বা প্রস্তুতি ছাড়াই দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর রয়েছে, এই নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
১৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ও কর্ণফুলী প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের রাষ্ট্রায়ত্ত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) দীর্ঘ ৬ মাস ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে আবার পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে এর আগে চলতি বছরের ১১ এপ্রিল থেকে হঠাৎ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পুরো সময়টায় সার উৎপাদন বন্ধ থাকে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিইউএফএলএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, ১৯ অক্টোবর বেলা ১১টায় কারখানায় আবার গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, গ্যাস সরবরাহ পুনরায় চালু হওয়ায় সার উৎপাদন প্রক্রিয়াও এখন স্টার্টআপ পর্যায়ে রয়েছে। উৎপাদন শুরু হলে কারখানার দৈনিক গ্যাস চাহিদা হবে ৪৫ থেকে ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট। তিনি আশা প্রকাশ করছেন, ২৯ অথবা ৩০ অক্টোবরের দিকে কারখানা পুরোপুরি উৎপাদনে ফিরবে।
সিইউএফএল সচল থাকলে দৈনিক ১১ হাজার টন ইউরিয়া সার উৎপাদন সম্ভব, প্রতি টন ৩৮ হাজার টাকা হিসাবে যার মোট বাজারমূল্য ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এ ছাড়া কারখানায় প্রতিদিন ৮০০ টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন হয়। তবে কয়েক বছর ধরেই যান্ত্রিক ত্রুটি, গ্যাস সরবরাহে ব্যাঘাত এবং অন্যান্য জটিলতায় উৎপাদন অনেক সময় বন্ধ থাকছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কারখানাটি মাত্র ৫ দিন উৎপাদন করেছে। ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ ছিল, এরপর চালু হলেও ২০২৫ সালের ৩ জানুয়ারি আবার যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সর্বশেষ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি চালু হয় কারখানা। এরপর টানা উৎপাদন দেড় মাস চলার পর ১১ এপ্রিল আবারও বন্ধ হয়ে যায়। এ বছর ২৪০ দিন উৎপাদন বন্ধ থাকার ফলে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
এ অবস্থায় দেশের ইউরিয়া সারের চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে, যাতে সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিইউএফএল স্থিতিশীলভাবে উৎপাদন চালু থাকলে সরকার কম খরচে দেশের চাহিদা পূরণ করতে পারবে। তবে নানা জটিলতায় বছরের পর বছর কারখানাটি নিয়মিত উৎপাদনে থাকতে পারছে না। পাশেই অবস্থিত বেসরকারি বহুজাতিক সার কারখানা কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার লিমিটেড (কাফকো) নিয়মিত গ্যাস পায় অথচ সরকারি প্রতিষ্ঠান সিইউএফএলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকে। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা ও প্রশ্ন রয়েছে।
কারখানা চালু হলে দৈনিক উৎপাদিত ইউরিয়া এবং অ্যামোনিয়ার মাধ্যমে দেশের সার সরবরাহ নিশ্চিত হবে এবং সরকারের অর্থনৈতিক ক্ষতি কমবে। একই সঙ্গে, দেশের কৃষি খাতের জন্য প্রয়োজনীয় সার সরবরাহে স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সার রফতানি ও সরবরাহের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

চট্টগ্রামের রাষ্ট্রায়ত্ত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) দীর্ঘ ৬ মাস ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে আবার পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে এর আগে চলতি বছরের ১১ এপ্রিল থেকে হঠাৎ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পুরো সময়টায় সার উৎপাদন বন্ধ থাকে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিইউএফএলএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, ১৯ অক্টোবর বেলা ১১টায় কারখানায় আবার গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, গ্যাস সরবরাহ পুনরায় চালু হওয়ায় সার উৎপাদন প্রক্রিয়াও এখন স্টার্টআপ পর্যায়ে রয়েছে। উৎপাদন শুরু হলে কারখানার দৈনিক গ্যাস চাহিদা হবে ৪৫ থেকে ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট। তিনি আশা প্রকাশ করছেন, ২৯ অথবা ৩০ অক্টোবরের দিকে কারখানা পুরোপুরি উৎপাদনে ফিরবে।
সিইউএফএল সচল থাকলে দৈনিক ১১ হাজার টন ইউরিয়া সার উৎপাদন সম্ভব, প্রতি টন ৩৮ হাজার টাকা হিসাবে যার মোট বাজারমূল্য ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এ ছাড়া কারখানায় প্রতিদিন ৮০০ টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন হয়। তবে কয়েক বছর ধরেই যান্ত্রিক ত্রুটি, গ্যাস সরবরাহে ব্যাঘাত এবং অন্যান্য জটিলতায় উৎপাদন অনেক সময় বন্ধ থাকছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কারখানাটি মাত্র ৫ দিন উৎপাদন করেছে। ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ ছিল, এরপর চালু হলেও ২০২৫ সালের ৩ জানুয়ারি আবার যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সর্বশেষ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি চালু হয় কারখানা। এরপর টানা উৎপাদন দেড় মাস চলার পর ১১ এপ্রিল আবারও বন্ধ হয়ে যায়। এ বছর ২৪০ দিন উৎপাদন বন্ধ থাকার ফলে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
এ অবস্থায় দেশের ইউরিয়া সারের চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে, যাতে সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিইউএফএল স্থিতিশীলভাবে উৎপাদন চালু থাকলে সরকার কম খরচে দেশের চাহিদা পূরণ করতে পারবে। তবে নানা জটিলতায় বছরের পর বছর কারখানাটি নিয়মিত উৎপাদনে থাকতে পারছে না। পাশেই অবস্থিত বেসরকারি বহুজাতিক সার কারখানা কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার লিমিটেড (কাফকো) নিয়মিত গ্যাস পায় অথচ সরকারি প্রতিষ্ঠান সিইউএফএলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকে। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা ও প্রশ্ন রয়েছে।
কারখানা চালু হলে দৈনিক উৎপাদিত ইউরিয়া এবং অ্যামোনিয়ার মাধ্যমে দেশের সার সরবরাহ নিশ্চিত হবে এবং সরকারের অর্থনৈতিক ক্ষতি কমবে। একই সঙ্গে, দেশের কৃষি খাতের জন্য প্রয়োজনীয় সার সরবরাহে স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সার রফতানি ও সরবরাহের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

ঈদ বাণিজ্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের জন্য যেমন একটি অপরিহার্য অংশ, তেমনি দেশের অর্থনীতির জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ঈদের আগের বাজারে বাণিজ্য যেমন তুঙ্গে পৌঁছায়, তেমনি এটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্রও তুলে ধরে। যদিও দেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র এবং স্বল্প আয়ের মধ্যে তারা জীবন যাপন করে...
৩০ মার্চ ২০২৫
বৈশ্বিক লেনদেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ও মার্কিন মুদ্রা ডলারের মান শক্তিশালী হয়েছে এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা থিতিয়ে আসতে শুরু করেছে। এরই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
১ ঘণ্টা আগে
দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়াতে দুটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ‘২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয়’ এবং অন্যটি চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপসহ শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১ অনুসন্ধান কূপ। দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট বাজেট ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৩২ কোটি টাক
১৩ ঘণ্টা আগে
কোনো পূর্বঘোষণা বা প্রস্তুতি ছাড়াই দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর রয়েছে, এই নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
১৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

কোনো পূর্বঘোষণা বা প্রস্তুতি ছাড়াই দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর রয়েছে, এই নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন জানায়, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে স্থলবন্দর দিয়ে আর কোনো পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা যাচ্ছে না। এতে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক উভয় পক্ষই বিপাকে পড়েছে। পণ্যবাহী ট্রাকগুলো দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় পচনশীল পণ্যের ক্ষতির আশঙ্কাও বাড়ছে।
এ বিষয়ে গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) জানায়, চোরাচালান বা অবৈধ পণ্যের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তবে এর অজুহাতে সন্ধ্যার পর বন্দর কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়। ডিসিসিআই মনে করে, বৈধ বাণিজ্য সচল থাকলে বরং অবৈধ কার্যক্রম কমে আসবে। চেম্বারটি বলছে, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অধিকাংশ বাণিজ্য পরিচালিত হয়। এখানে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হলে তা সার্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তারা অবিলম্বে সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করে ব্যবসা স্বাভাবিক করার আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেনাপোল দিয়ে ২০ লাখ ১১ হাজার টন পণ্য আমদানি এবং ৪ লাখ ২১ হাজার টন পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই বিশাল বাণিজ্যপ্রবাহ সন্ধ্যার পর বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন, একই সঙ্গে রাজস্ব আয়েও ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। বন্দরের দুই পাশে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক অপেক্ষায় থাকায় বিশেষ করে খাদ্য ও কৃষিজাত পণ্য দ্রুত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত সিদ্ধান্ত শুধু বাণিজ্য ব্যাহত করছে না, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের লিড টাইমও বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা আরও দুর্বল করে তুলবে।

কোনো পূর্বঘোষণা বা প্রস্তুতি ছাড়াই দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর রয়েছে, এই নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন জানায়, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে স্থলবন্দর দিয়ে আর কোনো পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা যাচ্ছে না। এতে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক উভয় পক্ষই বিপাকে পড়েছে। পণ্যবাহী ট্রাকগুলো দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় পচনশীল পণ্যের ক্ষতির আশঙ্কাও বাড়ছে।
এ বিষয়ে গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) জানায়, চোরাচালান বা অবৈধ পণ্যের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তবে এর অজুহাতে সন্ধ্যার পর বন্দর কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়। ডিসিসিআই মনে করে, বৈধ বাণিজ্য সচল থাকলে বরং অবৈধ কার্যক্রম কমে আসবে। চেম্বারটি বলছে, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অধিকাংশ বাণিজ্য পরিচালিত হয়। এখানে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হলে তা সার্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তারা অবিলম্বে সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করে ব্যবসা স্বাভাবিক করার আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেনাপোল দিয়ে ২০ লাখ ১১ হাজার টন পণ্য আমদানি এবং ৪ লাখ ২১ হাজার টন পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই বিশাল বাণিজ্যপ্রবাহ সন্ধ্যার পর বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন, একই সঙ্গে রাজস্ব আয়েও ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। বন্দরের দুই পাশে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক অপেক্ষায় থাকায় বিশেষ করে খাদ্য ও কৃষিজাত পণ্য দ্রুত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত সিদ্ধান্ত শুধু বাণিজ্য ব্যাহত করছে না, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের লিড টাইমও বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা আরও দুর্বল করে তুলবে।

ঈদ বাণিজ্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের জন্য যেমন একটি অপরিহার্য অংশ, তেমনি দেশের অর্থনীতির জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ঈদের আগের বাজারে বাণিজ্য যেমন তুঙ্গে পৌঁছায়, তেমনি এটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্রও তুলে ধরে। যদিও দেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র এবং স্বল্প আয়ের মধ্যে তারা জীবন যাপন করে...
৩০ মার্চ ২০২৫
বৈশ্বিক লেনদেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ও মার্কিন মুদ্রা ডলারের মান শক্তিশালী হয়েছে এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা থিতিয়ে আসতে শুরু করেছে। এরই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
১ ঘণ্টা আগে
দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়াতে দুটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ‘২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয়’ এবং অন্যটি চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপসহ শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১ অনুসন্ধান কূপ। দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট বাজেট ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৩২ কোটি টাক
১৩ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রামের রাষ্ট্রায়ত্ত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) দীর্ঘ ৬ মাস ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে আবার পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৩ ঘণ্টা আগে