Ajker Patrika

এসডিজি সংলাপ: কাঠামোগত বৈষম্য এখনো অটুট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বক্তব্য দেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ।
রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বক্তব্য দেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ।

সরকার বদল হলেও আগের সেই কাঠামোগত বৈষম্য এখনো বিদ্যমান রয়ে গেছে। আর্থিক বৈষম্য ও সামাজিক বিপন্নতা এখনো দূর হয়নি, বিশেষত নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন এখনো উন্নয়নের বাইরে রয়ে গেছে। এই বাস্তবতায় দেশে চলমান উন্নয়ন পরিকল্পনার মধ্যে এক মৌলিক প্রশ্ন উঠে এসেছে—কীভাবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মূলধারার উন্নয়নে সম্পৃক্ত করা যায়? জাতীয় এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) বাস্তবায়ন এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রক্রিয়ার আলোচনায় এটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, সংশ্লিষ্ট কমিটিগুলোর মধ্যে পিছিয়ে পড়া জনগণের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নেই। এই সমস্যার প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘জাতীয় এসডিজি রিপোর্ট (ভিএনআর) ২০২৫: পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশার অন্তর্ভুক্তি’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেবপ্রিয় বলেন, ‘যতক্ষণ না পিছিয়ে পড়া জনগণ প্রকৃত অর্থে উন্নয়নের সুযোগ পাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত যে সংস্কারপ্রক্রিয়া চলছে, তা নিছক ফরমালিটি ছাড়া কিছু নয়।’

তবে, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য শুধু সরকারের সংস্কারগুলোকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেননি, বরং সমগ্র সামাজিক কাঠামোর প্রতি অনুশীলনমূলক এক দৃশ্যমান বাস্তবতার উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, বাস্তবতায় তা কতটুকু কার্যকর হচ্ছে, সেই প্রশ্ন এখন গুরুত্বের সঙ্গে উঠেছে। তিনি বলেন, সরকার যেসব উন্নয়ন ও সংস্কারের কথা বলে, তার বাস্তবতায় বড় পার্থক্য রয়েছে। বিশেষত, পিছিয়ে পড়া জনগণের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে না।

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ভেতরে পরিবর্তন সম্ভব নয়

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, সরকার বদল হলেও যে কাঠামোগত বৈষম্য বিদ্যমান ছিল, তা এখনো রয়ে গেছে। সরকার বদলে গেলেও বৈষম্য ও বিপন্নতা দূর হয়নি, বিশেষত নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, যারা এখনো উন্নয়নের বাইরে রয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা এবং অর্থনীতি—পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নের জন্য এক আলাদা ভিশন প্রয়োজন। দেবপ্রিয় আরও বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে যদি পিছিয়ে পড়া জনগণের জন্য আলাদা প্রতিশ্রুতি না থাকে, তবে সাধারণ জনগণ ওই ইশতেহার গ্রহণ করবে না। যখন সরকার বা রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দেয়, তখন তাদের অবশ্যই পিছিয়ে পড়া জনগণের জন্য পৃথক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া, শুধু দেশব্যাপী স্কুলের অন্তর্ভুক্তির হার বাড়ানো কিংবা গড় আয়ু বাড়ানো যথেষ্ট নয়। সমাজের অভ্যন্তরীণ বিভাজন এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য এখনো রয়ে গেছে।

উন্নয়নের বিভ্রান্তিকর তথ্য এবং বাস্তবতা

দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নতি হলেও বাস্তবে গরিব জনগণের গড় আয়ু বাড়েনি, তাদের স্কুলে যাওয়ার হার কম রয়েছে। উন্নয়নের তথ্য যখন বিভ্রান্তিকর, তখন সেটি কার্যকর নীতির মধ্যে রূপান্তরিত হতে পারে না।

এসডিজির অন্তর্ভুক্তি এবং প্রকৃত তথ্যের প্রয়োজন

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ বলেছেন, ‘এত দিন উন্নয়ন প্রকল্প এবং তথ্যগুলো সাধারণত ঢাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। বিশেষত, গ্রামাঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন এবং নানা সামাজিক সমস্যার যে প্রভাব পড়ছে, তা এখন প্রকৃত তথ্য দিয়ে তুলে ধরা হচ্ছে।’ তিনি জানান, সরকার আগামী জাতীয় এসডিজি রিপোর্টে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরার জন্য কাজ করছে।

লামিয়া মোরশেদ আরও বলেন, সমাজের প্রান্তিক জনগণের জন্য নীতি প্রণয়নে আরও সঠিক তথ্য ও গবেষণার মাধ্যমে কাজ করা উচিত। আসন্ন রিপোর্টে এসব বিষয় আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলি এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের মানবাধিকার-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খানসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন। এ সময় অংশগ্রহণকারী নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সদস্যরাও নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।

বিশ্বের পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের অবস্থান

বিশ্বব্যাপী একধরনের নতুন চ্যালেঞ্জ আসছে, যা শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং সমাজে বৈষম্য এবং উন্নয়নপ্রক্রিয়ার গভীরে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিপথকে সামনে রেখে এই জাতীয় বিতর্ক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। শুধু জাতীয় নির্বাচন বা সরকারের পরিবর্তনই একমাত্র সমাধান নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরের জনগণের স্বার্থে সঠিক প্রতিনিধিত্ব এবং সুষম সংস্কারের বিষয়টি অতীব জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও কর্মীদের সাফল্য উদ্‌যাপনে আবুল খায়ের স্টিলের ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইস্পাত উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের স্টিল (একেএস) ৬ ডিসেম্বর তাদের সব কর্মীকে নিয়ে ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। দিনব্যাপী এই উৎসবমুখর ও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে দেশের প্রতিটি স্থান থেকে আবুল খায়ের স্টিলের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। নামাজ ও খাবারের বিরতির পর একেএসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবার উদ্দেশে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন। বক্তব্যে কোম্পানির সাম্প্রতিক অর্জন ও মাইলফলকগুলো তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী রড একেএস টিএমটি বি৭০০ সি-আরের সফল উৎপাদন। বিশ্বের দ্রুততম রোলিং মিল স্থাপন। একেএস এবং কাউ ব্র্যান্ড কালার কোটেড স্টিলের মর্যাদাপূর্ণ সুপারব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন।

এই আলোচনায় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং কর্মীদের সম্মিলিত সাফল্যের প্রতিচ্ছবিও উঠে আসে।

সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‍্যাফেল ড্র পর্বটি উদ্‌যাপনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কিংবদন্তি শিল্পী জেমসের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা ও লেজার শো উপস্থিত সবাইকে মাতিয়ে রাখে।

সমাপনী ভাষণে একেএস পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান হয়। এরপর নৈশভোজ ও ডিজে সেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পরিষদের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার (৮ ডসিম্বের) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।

সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন, শরী’আহ সুপারভাইজরি কাউন্সলিরে সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মো. হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যাংকের নিট মুনাফা ছাড়া উৎসাহ বোনাস বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

কর ও সঞ্চিতি সংরক্ষণের পর নিট মুনাফা অর্জন না করলে কোনো ব্যাংকই আর উৎসাহ বোনাস দিতে পারবে না। পাশাপাশি মূলধন সংরক্ষণ ঘাটতি, প্রভিশন ঘাটতি বা পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকেই বোনাস দেওয়ার পথও পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতিতে আনরিয়েলাইজড বা নগদায়ন না করা আয়ের ভিত্তিতে বোনাস দেওয়া আর্থিক শৃঙ্খলা ও সুশাসনের পরিপন্থী। তাই এখন থেকে শুধু নির্ধারিত নিট মুনাফা অর্জন করতে পারলেই উৎসাহ বোনাস দেওয়ার অনুমতি পাবে ব্যাংকগুলো।

আরও বলা হয়, পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে কোনো ধরনের উৎসাহ বোনাস দেওয়া যাবে না। রেগুলেটরি মূলধন বা প্রভিশনের ঘাটতি থাকলে বোনাস দেওয়া নিষিদ্ধ। প্রভিশন সংরক্ষণে বাড়তি সময় পাওয়া ব্যাংকগুলোও সেই সময়কাল মুনাফা হিসাবের ক্ষেত্রে দেখাতে পারবে না। বোনাস প্রদানে ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন কর্মসূচির উন্নতি ও খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারে দৃশ্যমান সাফল্য বিবেচনায় নিতে হবে।

এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান নির্দেশিকা কার্যকর থাকবে, যেখানে নিট মুনাফা ছাড়া বোনাস না দেওয়ার কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। তবে কোনো ব্যাংক নির্দিষ্ট সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে বিশেষ বোনাসের জন্য আবেদন করতে পারবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৩
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

ভ্যাটব্যবস্থাকে পুরোপুরি ডিজিটাল ও সহজ করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক নতুন পর্যায়ে এগোচ্ছে। মাত্র একটি ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধের সুযোগ ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে এবং বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এটি ব্যবহারও শুরু করেছে।

এনবিআর জানিয়েছে, শিগগির এ পদ্ধতি সারা দেশে চালু করা হবে, যাতে সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভ্যাটের আওতায় আসে এবং নিবন্ধন ছাড়া আর কেউ ব্যবসা চালাতে না পারে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

মো. আবদুর রহমান বলেন, দেশের বড় একটি অংশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখনো ভ্যাট নিবন্ধনের বাইরে রয়েছে। আগামী বছর এমন একটি মেকানিজম চালু করা হবে, যার মাধ্যমে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসার সুযোগ থাকবে না। বর্তমানে নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠান ৬ লাখ ৪৪ হাজার; লক্ষ্য আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে তা ৩০ থেকে ৪০ লাখে উন্নীত করা। শুধু চলতি মাসেই ১ লাখ নতুন প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য—‘সময়মতো নিবন্ধন নিব, সঠিকভাবে ভ্যাট দিব’—ধরে আগামীকাল বুধবার সারা দেশে ভ্যাট দিবস পালিত হবে। ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর চলবে ভ্যাট সপ্তাহ। তবে নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় এ বছরও স্থগিত থাকছে ভ্যাট পুরস্কার।

রিটার্ন জমাদানেও বড় পরিবর্তন আসছে বলে জানান মো. আবদুর রহমান খান। গত অর্থবছরে ১৭ লাখ ই-রিটার্ন জমা পড়লেও চলতি অর্থবছরে তা ৪০ লাখে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জমা পড়েছে ২২ লাখ রিটার্ন। ভ্যাট আদায়েও গতি এসেছে—গত অর্থবছরে মোট রাজস্বের ৩৮ শতাংশ এসেছে ভ্যাট থেকে আর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেই ভ্যাট আদায় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ২২ শতাংশ।

করদাতাদের ঝামেলা কমাতে ই-রিটার্নে ব্যবহৃত ব্যাংকসংক্রান্ত চারটি তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান আবদুর রহমান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করদাতারা মনে করেন, রাজস্ব কর্মকর্তারা এসব তথ্য দেখতে পারবেন—এটি ভুল ধারণা।

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৫৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে কেন—এ প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বাস্তব প্রয়োজন থেকেই এ লক্ষ্য নির্ধারণ। তবে কারও ওপর হয়রানি বা অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হবে না; মূলত যাঁরা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেই কঠোরতা বাড়ানো হবে।

আমদানি করা মোবাইল ফোনে কর কমানোর সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এটি সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত; এককভাবে এনবিআর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য (মূসক নীতি) মো. আজিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত