নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বা পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং মার্কিন শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
কোনো একটি দেশ মার্কিন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে যতটা শুল্ক আরোপ করে থাকে, গত ২ এপ্রিল থেকে সেই দেশের পণ্যগুলোর ওপর আনুপাতিক হারে শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে হিসেবে বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ হয়েছে, যা আগে ১৫ শতাংশ ছিল। ট্রাম্পের এই শুল্কারোপের কারণে বাংলাদেশ মোটা দাগে চার থেকে পাঁচটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদেরা।
তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালনায় সহায়ক কমিটির সদস্য শাশা গার্মেন্টসের এমডি শামস মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত শুল্ক বাংলাদেশের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা তৈরি করেছে। প্রথমত, বাংলাদেশ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে তার প্রতিযোগীদের তুলনায় উচ্চ শুল্ক কাঠামোর সম্মুখীন হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির জন্য চীন থেকে বাংলাদেশে শিল্প স্থানান্তরের বিষয়টি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। কারণ, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানি খরচ এখন চীনের তুলনায় বেশি হবে।’
শামস মাহমুদ আরও বলেন, ‘তৃতীয়ত, বাংলাদেশের কর আদায়ের ক্ষেত্রে আমাদের যে মৌলিক সমস্যা ছিল, যা মূলত আমদানি থেকে সংগ্রহ করা হয়, তা এখন আরও বেশি আলোচিত হচ্ছে। কারণ, আমাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমদানি শুল্ক হ্রাস বা মওকুফ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চতুর্থত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—বাংলাদেশ যখন একটি স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, তখন উদ্ভূত নতুন পরিস্থিতিতে এই উত্তরণ মসৃণ হবে না, যা উত্তরণের পুনর্মূল্যায়নের প্রশ্ন তৈরি করে। ৫ নম্বরে, আরএমজি খাতে রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের দ্বারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে বাংলাদেশের সামগ্রিক সামষ্টিক স্থিতিশীলতা চাপের মুখে পড়বে।’
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ৩ নম্বর অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রতিযোগীদের মধ্যে প্রথম অবস্থানে থাকা চীনের ওপর ৩৪ শতাংশ, দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভিয়েতনামের ওপর ৪৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশের পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিযোগী ভিয়েতনাম, চীন ও কম্বোডিয়ার শুল্ক বাংলাদেশের চেয়ে বেশি হবে, সে কারণে হয়তো তৈরি পোশাকশিল্প অতটা আক্রান্ত হবে না—এমন ধারণা কেউ কেউ করছেন।
তবে প্রতিবেশী ও প্রতিযোগী দেশ তুরস্কের ওপর ১০ শতাংশ, ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ, পাকিস্তানের ওপর ৩০ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ওপর ৪৪ শতাংশ ও কম্বোডিয়ার ওপর ৪৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, ভারত, পাকিস্তান ও তুরস্কের ওপর শুল্ক আমাদের চেয়ে কম। এই ফাঁকে ভারত হয়তো লাভবান হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মূল্যবৃদ্ধির কারণে মার্কিন ভোক্তারা এমনিতেই কিনবে কম; এর জেরে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হান বলেন, ‘বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য এই পরিবর্তন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। কারণ, তারা এমন এক অনিশ্চিত ব্যবস্থায় কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘এই নতুন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে বাংলাদেশকে তার অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যনীতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে, বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থার সংস্কারে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং মূল বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে হবে, যাতে বৈশ্বিক বাণিজ্যব্যবস্থায় তার অবস্থান নিরাপদ থাকে।’
আরও খবর পড়ুন:
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বা পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং মার্কিন শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
কোনো একটি দেশ মার্কিন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে যতটা শুল্ক আরোপ করে থাকে, গত ২ এপ্রিল থেকে সেই দেশের পণ্যগুলোর ওপর আনুপাতিক হারে শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে হিসেবে বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ হয়েছে, যা আগে ১৫ শতাংশ ছিল। ট্রাম্পের এই শুল্কারোপের কারণে বাংলাদেশ মোটা দাগে চার থেকে পাঁচটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদেরা।
তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালনায় সহায়ক কমিটির সদস্য শাশা গার্মেন্টসের এমডি শামস মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত শুল্ক বাংলাদেশের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা তৈরি করেছে। প্রথমত, বাংলাদেশ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে তার প্রতিযোগীদের তুলনায় উচ্চ শুল্ক কাঠামোর সম্মুখীন হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির জন্য চীন থেকে বাংলাদেশে শিল্প স্থানান্তরের বিষয়টি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। কারণ, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানি খরচ এখন চীনের তুলনায় বেশি হবে।’
শামস মাহমুদ আরও বলেন, ‘তৃতীয়ত, বাংলাদেশের কর আদায়ের ক্ষেত্রে আমাদের যে মৌলিক সমস্যা ছিল, যা মূলত আমদানি থেকে সংগ্রহ করা হয়, তা এখন আরও বেশি আলোচিত হচ্ছে। কারণ, আমাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমদানি শুল্ক হ্রাস বা মওকুফ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চতুর্থত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—বাংলাদেশ যখন একটি স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, তখন উদ্ভূত নতুন পরিস্থিতিতে এই উত্তরণ মসৃণ হবে না, যা উত্তরণের পুনর্মূল্যায়নের প্রশ্ন তৈরি করে। ৫ নম্বরে, আরএমজি খাতে রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের দ্বারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে বাংলাদেশের সামগ্রিক সামষ্টিক স্থিতিশীলতা চাপের মুখে পড়বে।’
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ৩ নম্বর অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রতিযোগীদের মধ্যে প্রথম অবস্থানে থাকা চীনের ওপর ৩৪ শতাংশ, দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভিয়েতনামের ওপর ৪৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশের পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিযোগী ভিয়েতনাম, চীন ও কম্বোডিয়ার শুল্ক বাংলাদেশের চেয়ে বেশি হবে, সে কারণে হয়তো তৈরি পোশাকশিল্প অতটা আক্রান্ত হবে না—এমন ধারণা কেউ কেউ করছেন।
তবে প্রতিবেশী ও প্রতিযোগী দেশ তুরস্কের ওপর ১০ শতাংশ, ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ, পাকিস্তানের ওপর ৩০ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ওপর ৪৪ শতাংশ ও কম্বোডিয়ার ওপর ৪৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, ভারত, পাকিস্তান ও তুরস্কের ওপর শুল্ক আমাদের চেয়ে কম। এই ফাঁকে ভারত হয়তো লাভবান হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মূল্যবৃদ্ধির কারণে মার্কিন ভোক্তারা এমনিতেই কিনবে কম; এর জেরে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হান বলেন, ‘বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য এই পরিবর্তন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। কারণ, তারা এমন এক অনিশ্চিত ব্যবস্থায় কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘এই নতুন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে বাংলাদেশকে তার অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যনীতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে, বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থার সংস্কারে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং মূল বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে হবে, যাতে বৈশ্বিক বাণিজ্যব্যবস্থায় তার অবস্থান নিরাপদ থাকে।’
আরও খবর পড়ুন:
রাশিয়ার জ্বালানি খাতকে লক্ষ্য করে ঘোষিত নতুন নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এই তেল শোধনাগারটি পরিচালনা করে নায়ারা এনার্জি লিমিটেড, যার মালিকানার বড় একটি অংশ রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রসনেফটের।
১৩ ঘণ্টা আগেরপ্তানি পণ্যে আরোপ করা পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে বাংলাদেশের। এই আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের দিকগুলো বড় আকারে সামনে এলেও বিষয়টিকে দেশটি ভূরাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য চাপ তৈরির একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে পর্যবেক্ষণ সরকারি ও বেসরকারি বিশ্লেষকদের।
১৪ ঘণ্টা আগেটানা ৯ বছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। রাজস্ব আদায়ে প্রতিবছর কিছুটা প্রবৃদ্ধি থাকলেও তা পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে থাকছে। প্রস্তাবিত ও সংশোধিত, উভয় লক্ষ্যেই তৈরি হচ্ছে বড় ফারাক। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের পর থেকে কোনো বছরই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি...
১ দিন আগে১১ বছরের সফল যাত্রা সম্পন্ন করল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। দেশের অন্যতম বেসরকারি এই বিমান সংস্থা গতকাল বৃহস্পতিবার ১২ বছরে পা রাখল। ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলা আজ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে বাংলাদেশের আকাশে একটি নির্ভরতার নাম হয়ে উঠেছে।
১ দিন আগে