Ajker Patrika

পুঁজি সরবরাহে পিছিয়ে পুঁজিবাজার

আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২৩, ১১: ১৯
পুঁজি সরবরাহে পিছিয়ে পুঁজিবাজার

অতীতের তুলনায় কিছুটা এগিয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য শিল্পসহ বিভিন্ন উৎপাদনমুখী খাতে অর্থায়নের দিক থেকে খুব বেশি উন্নতি হয়নি। পুঁজির জোগানে এখনো ব্যাংকমুখী উদ্যোক্তারা, যার কারণে কাছাকাছি দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিধারী দেশগুলোর চেয়েও প্রায় ১০ গুণ কম অর্থায়ন হয় বাংলাদেশের পুঁজিবাজার থেকে।

জিডিপিতে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে থাকা মালয়েশিয়া ২০২২ সালে আইপিওর মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের পুঁজির জোগান দিয়েছে ৭০ কোটি ডলার। অথচ বাংলাদেশের ছিল মাত্র ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। অর্থাৎ পুঁজিবাজারে উৎপাদনমুখী খাতে অর্থায়নে আইপিওর মাধ্যমে মূলধন সরবরাহে ১০ গুণ পিছিয়ে বাংলাদেশ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ংয়ের তথ্যে এসব জানা গেছে।

প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, ২০২১ সালে বাংলাদেশের জিডিপির পরিমাণ ৪১৬ বিলিয়ন ডলার। ওই বছর পুঁজিবাজার থেকে আইপিওর মাধ্যমে ১ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা তুলেছে ১৪টি কোম্পানি। ডলার ৮৪ টাকা ধরে হিসাব করলে সেটি ১৪ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। বিপরীতে একই বছর মালয়েশিয়ার জিডিপি ছিল ৩৭৩ বিলিয়ন ডলার। ওই বছর দেশটির পুঁজিবাজার থেকে আইপিওর মাধ্যমে ৬০ কোটি ডলার পুঁজি সংগ্রহ করে ২৩টি কোম্পানি। অর্থাৎ মালয়েশিয়ার চেয়ে ৪ গুণ কম অর্থায়ন এসেছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার থেকে।

পরের বছরও একই চিত্র দেখা গেছে। ২০২২ সালে দেশের পুঁজিবাজার থেকে আইপিওর মাধ্যমে ৬২৬ কোটি টাকা তুলেছে ছয়টি কোম্পানি। ডলার ৯৫ টাকা ধরে হিসাব করলে হয় ৬ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। একই বছর মালয়েশিয়ার পুঁজিবাজার থেকে ৭০ কোটি ডলার তোলে ২৯টি কোম্পানি। অর্থাৎ উৎপাদনশীল খাতে মালয়েশিয়ার চেয়ে পুঁজির জোগান কম ছিল ১০ গুণের বেশি।

কাছাকাছি জিডিপির দেশ থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনের চেয়েও পুঁজি সরবরাহে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। ২০২১ সালে থাইল্যান্ডের জিডিপি ছিল ৫০৬ বিলিয়ন ডলার। ওই বছর দেশটির পুঁজিবাজার থেকে আইপিওর মাধ্যমে ৪১০ কোটি ডলার তুলেছে ৪১টি কোম্পানি। পরের বছর ৩১০ কোটি ডলার তুলেছে ৩২টি কোম্পানি। অর্থাৎ, পুঁজি সরবরাহে বাংলাদেশের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে দেশটির পুঁজিবাজার।

২০২১ সালে ফিলিপাইনের জিডিপি ছিল ৩৯৪ বিলিয়ন ডলার। ওই বছর পুঁজিবাজার থেকে আইপিওর মাধ্যমে ২৫০ কোটি ডলার তোলে আটটি কোম্পানি। ২০২২ সালে দেশটির পুঁজিবাজার থেকে ৫০ কোটি ডলার পুঁজি সংগ্রহ করে আটটি কোম্পানি।

এর মানে হলো, বাংলাদেশের কাছাকাছি জিডিপির প্রায় সব দেশের চেয়েই পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অর্থায়নে পিছিয়ে বাংলাদেশ। এর কারণ হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে না পারার কথা জানান বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ হাফিজ। তিনি বলেন, ‘আমরা পুঁজিবাজার সম্পর্কে মানুষকে বোঝাতে পারিনি। এর ফলে আমাদের দেশে পুঁজিবাজারে অংশগ্রহণ অনেক কম। যাঁরা আমাদের দেশের পুঁজিবাজারে আছেন, তাঁরা কেউ বিনিয়োগকারী নন। তাঁদের বেশির ভাগই গ্যাম্বলার আর প্লেয়ার।’

এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তির জন্য আরও প্রণোদনা দরকার। দেশে ঋণের জন্য ব্যাংকনির্ভরতা বেশি।

রয়েছে কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ। কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ কমে এলে, প্রণোদনা বাড়ালে এবং এর পাশাপাশি বিনিয়োগ শিক্ষার মাধ্যমে সচেতন করতে পারলে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অর্থায়ন বাড়ানো যাবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত