Ajker Patrika

চড়া বাজারে ভোগান্তিতে ক্রেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ৫৬
চড়া বাজারে ভোগান্তিতে ক্রেতারা

দীর্ঘদিন ধরেই ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের দাম। রমজানের প্রথম দিনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পালে যেন হাওয়া লেগেছে। এতে বাজারে গিয়ে প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই না কিনে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে ক্রেতাদের। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, তেল,পরিবহন ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বৃদ্ধির ফলে তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বাড়তি দামে বিক্রির চ্যালেঞ্জ নিয়ে এখন তারা অসহায়। 

আজ রোববার রাজধানীর খিলগাঁও, সিপাহিবাগ, শাহজাহানপুর, মতিঝিল ও গুলিস্তানের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় সবজি, ফল, মাংসের অত্যধিক দামের কারণে অনেক ক্রেতাই কিনতে পারছেন না। অনেকেই এক কেজির পরিবর্তে কিনছেন আধা কেজি। আবার অনেকে প্রয়োজনীয় পণ্য না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন। 

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শসা ও বেগুণ ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। লেবুর ডজন ১২০ থেকে ১৮০ টাকা। প্রতি কেজি টমেটো ৪০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও করলা ৬০ টাকা কেজি। ছোলা ৮০ টাকা এবং চিনি ৮৫ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। 

খেজুরের একাধিক দোকানে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে দাম কষাকষির দৃশ্য দেখা গেলেও অনেকেই দাম অনুযায়ী কিনতে পারছেন না। মতিঝিলের একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা আহসানুল হাফিজ বলেন, ‘খেজুরের দাম অনেক বেশি। যেমন খেজুর চাচ্ছি তা দামে কুলাচ্ছে না। যা দামে কুলাচ্ছে সেগুলো কিনতে চাচ্ছি না। অনেকগুলো দোকান ঘুরলাম। সবাই একই দামে অনড়৷ মনে হচ্ছে জিম্মি হয়ে গেলাম।’ 

পাঁকা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি। তরমুজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কলা ডজন ৮০ থেকে ১২০ টাকা। সিপাহিবাগ বাজারে তরমুজ কিনতে আসা সালেহা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি হইলে একটা তরমুজের দাম পড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। তাই ছোট খুঁজতেছি। কিন্তু ছোট যে ভালো হবে না তা সবাই জানে। বড়টা কেনার সাধ্য নাই।’ 

শাহজাহানপুরে গরুর মাংস কিনতে এসেছিলেন জামিল আহমেদ। ৭০০ টাকা কেজি শুনে ধাতস্থ হতে সময় নিলেন কিছুক্ষণ। তারপর হাঁফ ছেড়ে মুরগির দোকানে ঢুকলে। তিনি জানান, রমজানের প্রথম দিনে ছেলে গরুর মাংস খাওয়ার আবদার করেছে। তিনি বলেন, ‘গরুর মাংসের দাম শুনে আর দোকানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না। এখনো বেতন হয়নি তাই মুরগি কিনে নিয়ে যাচ্ছি। ছেলেকে আজকে এটা দিয়েই বুঝ দিতে হবে।’  

কিছুদিন আগেও গরুর মাংস ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। খাসির মাংসের দাম ৯৫০ টাকা কেজি। দুধ, ডিম ও মাংস স্বল্পমূল্যে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে সরকার রাজধানীর ১৪টি স্থানে এসব পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। 

ক্রেতাদের ভোগান্তির চিত্রের বিপরীতে আছে বিক্রেতাদের অসহায়ত্বের চিত্রও। বিক্রেতারা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতিতে ভোগান্তিতে আছেন তারাও। এসব ব্যবসা ছেড়ে যাওয়ারও কোনো পথ নেই তাদের। তাই বিভিন্ন পক্ষের কাছে অসহায় তারা। 

মতিঝিলের ফল ব্যবসায়ী কাওছার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দাম যতই বাড়ুক, আমরা কোনো দিনই ২০ টাকা লাভ করতে পারি না। দাম বাড়লে আমাদের লাভ বেশি হয় না। কিছু ক্ষেত্রে আরও কমে। সবদিকে সিন্ডিকেট, রাস্তায় আনতে জায়গায় জায়গায় টোল দেওয়া লাগে। এমন চলতে থাকলে দাম বাড়তে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। যে পারবে বড় নেবে, বেশি নেবে। যে পারে না ছোট নেবে, কম নেবে। এ ছাড়া আর উপায় নাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা: কে এই ফ্লাইট এক্সপার্ট এমডি সালমান, বাবার হাত ধরে যাঁর উত্থান

গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপল্লিতে হামলাকারীদের উসকানি, স্থানীয় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জে হর্টিকালচারের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ‘সমকামিতার’ অভিযোগ, মামলা বাবুর্চির

অতিরিক্ত ফি দাবি করায় বিমানবন্দর স্টাফের চোয়াল ভেঙে দিলেন যাত্রী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত