Ajker Patrika

সচল থাকবে নাসা গ্রুপের ব্যবসা, কারাগার থেকে স্বাক্ষর করবেন চেয়ারম্যান

  • ঋণখেলাপি হলেও মিলবে এলসি খোলার সুযোগ।
  • রপ্তানি আয়ের টাকা ঋণের কিস্তি বাবদ নিতে পারবে না ব্যাংক।
  • কারাগারে থাকা নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নেওয়ার উদ্যোগ।
শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১২: ২৯
সচল থাকবে নাসা গ্রুপের ব্যবসা, কারাগার থেকে স্বাক্ষর করবেন চেয়ারম্যান

নাসা গ্রুপের মালিকানাধীন রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে শিল্প গ্রুপটিকে সহায়তা করতে যাচ্ছে সরকার। নাসার খেলাপি হয়ে পড়া ঋণ সহজে পুনঃ তফসিল করে গ্রুপটিকে এলসি খোলার সুযোগ দিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে চিঠি দিয়েছে শ্রম ‍ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এখন বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।

অন্যদিকে কারাগারে আটক থাকায় বিভিন্ন ডকুমেন্টে নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদারের স্বাক্ষর নেওয়া যাচ্ছে না। ফলে নতুন ঋণগ্রহণ বা ঋণ পুনঃ তফসিলের ডকুমেন্টে তাঁর স্বাক্ষর গ্রহণের জন্য নাসা গ্রুপকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে বলা হয়েছে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে গত ১৭ জুলাই নাসা গ্রুপের ব্যবসায়িক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আন্তমন্ত্রণালয় সভা হয়। সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবেরা অংশ নেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, বিজিএমইএ সভাপতি, শিল্পাঞ্চল পুলিশের প্রতিনিধি, কয়েকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং নাসার বিভিন্ন শিল্পকারখানার প্রতিনিধিরাও ছিলেন এ সভায়।

শ্রম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সভায় বাংলাদেশের কোনো শিল্পকারখানা বন্ধ না করে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিয়ে কীভাবে সেগুলো সচল রাখা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়। এরপর সভায় চারটি সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নাসা গ্রুপের শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান চলমান রাখতে এবং শ্রমিক ও কর্মচারীদের জীবন-জীবিকার স্বার্থে ব্যাংকগুলোর দায় শ্রেণীকৃত থাকা অবস্থায় এলসি খোলাসহ অন্যান্য সুবিধা প্রদান অব্যাহত রাখার বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ পলিসি সাপোর্ট হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশনা দেবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেবে।

সূত্র জানায়, নাসা গ্রুপের অথরাইজড সিগনেটরির স্বাক্ষরে এখন শিল্পগ্রুপটির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তবে কিছু কিছু ডকুমেন্টে কোম্পানির মালিকের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক থাকায় বেশ কিছু বিষয় অনিষ্পন্ন রয়েছে। ফলে জেলে থাকা নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর গ্রহণের বিষয়ে নাসা গ্রুপকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর নাসা গ্রুপের ঋণ গ্রহণ বা ঋণ পুনঃ তফসিলকরণের সকল কাগজপত্র বা ডকুমেন্টসে নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নেওয়া হবে।

আন্তমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এক্সিম ব্যাংকে রাখা নাসা গ্রুপের শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড নগদায়নের ব্যাপারে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই টাকা ছাড়করণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এক্সিম ব্যাংককে দ্রুত নির্দেশনা দেবে। এ ছাড়া নাসা গ্রুপের সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট জব্দ করাসহ তাঁদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়েও সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সূত্র জানায়, সরকারি সহায়তায় নাসা গ্রুপ শতভাগ মার্জিনে যেসব ব্যাক টু ব্যাক এলসি খুলবে, সেগুলোর আয় থেকে পাওনাদার ব্যাংকগুলো ঋণের কিস্তি বাবদ কোনো অর্থ নিতে পারবে না। ওই অর্থ প্রথমে শ্রমিক, কর্মীদের বেতন পরিশোধসহ অন্যান্য নিয়মিত ব্যয় পরিশোধে ব্যবহার করা হবে। বাড়তি অর্থ থাকলে কোম্পানি ঋণ পরিশোধ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংক নাসা গ্রুপে অর্থায়নকারী ব্যাংকগুলোকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেবে।

এসব বিষয়ে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, নাসা গ্রুপের পোশাক কারখানাগুলোর কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সহায়তা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত ৮-৯ মাস প্রতিষ্ঠানটি চলতে পারলেও এখন আর নিজেরা চলতে পারছে না। এই গ্রুপে ২৫ থেকে ৩০ হাজার কর্মী কাজ করছেন। কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে এসব কর্মী বেকার হবেন, এতে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।

গত বছরের ১ অক্টোবর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন নাসা গ্রুপের মালিক নজরুল ইসলাম মজুমদার। বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আওয়ামী সরকারের সময় প্রায় দেড় দশক ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

গত ২২ জুলাই আদালতে নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘আমি জামিন পেলে সব টাকাই শোধ করে দেব। আমাকে জামিন দিয়ে কাজ করার সুযোগ করে দেন। আমি পালিয়ে যাব না। আমার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রায় ৩ লাখ মানুষ জড়িত। তাদেরকে মাসে ৬০ থেকে ৬৫ কোটি টাকা বেতন দিতে হয়। আমি কারাগার থেকে বের না হলে তারা সবাই কাজ হারাবে। আমার ব্যবসা ধরার কোনো লোকও নেই।’

নাসা গ্রুপের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, ১৯৯০ সালে যাত্রা শুরু করা এই গ্রুপের ৩৪টি কারখানা রয়েছে। এই গ্রুপের অধীনে ৩০ হাজারের বেশি কর্মী কাজ করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেশে প্রথম গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো

আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন: বাণিজ্য উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সোমবার তিন দিনব্যাপী গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো-২০২৫ ’র উদ্বোধন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সোমবার তিন দিনব্যাপী গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো-২০২৫ ’র উদ্বোধন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাণিজ্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব বাণিজ্যে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি টেকসই করতে আমাদের পণ্যকে বৈচিত্র্যময় করা, সরবরাহ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন।’

আজ সোমবার সকালে পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ‘গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো ২০২৫ ঢাকা’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ, নির্মাতা, নীতিনির্ধারক, বিনিয়োগকারী এবং উদ্ভাবকদের আইডিয়া শেয়ার, অর্থপূর্ণ আলোচনা, সহযোগিতা এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক অংশীদারত্বের দ্বার উন্মুক্ত করবে।’

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বাংলাদেশ শিগগিরই স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ করতে চলেছে। এই মাইলফলক আমাদের অগ্রগতি তুলে ধরেছে। কিন্তু এটি নতুন চ্যালেঞ্জও নিয়ে এসেছে। আমরা বর্তমানে যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা এবং ছাড় সুবিধা ভোগ করছি তা ধীরে ধীরে হারাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই রূপান্তর সফলভাবে মোকাবিলার জন্য আমাদের পণ্য এবং রপ্তানি বাজার বৈচিত্র্যকরণ, প্রতিযোগিতা উন্নত করা এবং দূরদর্শী বাণিজ্য নীতি গ্রহণে দ্রুত এগিয়ে যেতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে, গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো আয়োজন কেবল সময়োপযোগীই নয়; এটি আমাদের ভবিষ্যতের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই-এর প্রশাসক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. আব্দুর রহিম খান এবং বিকেএমই-এর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

সোমবার তিন দিনব্যাপী গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো-২০২৫ ’র উদ্বোধন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সোমবার তিন দিনব্যাপী গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো-২০২৫ ’র উদ্বোধন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি সম্ভাবনা তুলে ধরতে ঢাকায় প্রথমবারের মতো সরকারি উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে ‘গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো’।

আজ থেকে শুরু হয়ে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর পূর্বাচলে অবস্থিত বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী আয়োজন করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এবারের সোর্সিং এক্সপোতে বাংলাদেশের আটটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি খাতের পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। খাতগুলো হচ্ছে—তৈরিপোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষিজাত পণ্য, প্লাস্টিক ও কিচেনওয়্যার, হোম ডেকর ও ফার্নিচার, ওষুধ ও তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি)। প্রদর্শনীতে এসব খাতের শতাধিক প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কোম্পানি, পাইকারি ব্যবসায়ী ও সরবরাহ খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।

এক্সপোতে আফগানিস্তান, চীন, ইরান, জাপান, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের ক্রেতা, বিনিয়োগকারী ও সোর্সিং প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। তারা পণ্য ও সেবা নিয়ে সভা (বিটুবি), পণ্য কেনা বেচা ও চুক্তি করতে পারবে। সোর্সিং এক্সপোতে বিষয়ভিত্তিক ১০টি বিশেষ সেমিনার, অনলাইন ও অফলাইন বিজনেস-টু-বিজনেস (বিটুবি) বৈঠক, দেড় শতাধিক স্টল, নেটওয়ার্কিং, ফ্যাশন শোসহ নানা আয়োজন থাকছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিনিয়োগ খরায় বাড়ছে ব্যাংকের সুদ ব্যয়

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৫
বিনিয়োগ খরায় বাড়ছে ব্যাংকের সুদ ব্যয়

সরকার পরিবর্তনের পর ঋণ দেওয়া-সংক্রান্ত শর্তাবলি শিথিল হওয়ায় ব্যাংকগুলোতে আমানতের প্রবণতা বেড়েছে। কিন্তু সেই আমানত বিনিয়োগে রূপান্তরিত না হওয়ায় ব্যাংকগুলোর হাতে জমা তারল্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের আগস্টে এই অতিরিক্ত তারল্য ৩ লাখ কোটি টাকার ওপর পৌঁছেছে। এ অবস্থায় ব্যাংকগুলো বাধ্য হয়ে আমানতকারীদের উচ্চ সুদ দিতে হচ্ছে, যা তাদের ব্যয়কে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, ব্যাংকগুলো এই অতিরিক্ত টাকা সঞ্চয়কারীদের ৮-১০ শতাংশ হারে সুদ প্রদানে ব্যয় করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছরের আগস্টে ব্যাংক খাতে অতিরিক্ত তারল্য পৌঁছেছে ৩ লাখ ৬ হাজার ১১২ কোটি টাকায়। একই সময়ে গত বছর এর পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে অতিরিক্ত তারল্য বেড়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। এর পাশাপাশি কিছু ব্যাংক প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত অর্থ সংরক্ষণ করায় মোট তারল্য দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩২ হাজার ৮১৪ কোটি টাকা, যদিও আগস্টে প্রকৃত চাহিদা ছিল ২ লাখ ২৬ হাজার ৭০২ কোটি টাকা।

ব্যাংক এশিয়ার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী বলেন, ‘সরকারের পালাবদলের পর ব্যাংক খাতে কিছু সংস্কার ও পদক্ষেপ নেওয়া হলেও দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ এখনো স্থিতিশীল হয়নি। উচ্চ সুদের হার, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং বিনিয়োগের পূর্ব হিসাবনিকাশ মিলিয়ে অনেকে ঋণ নিতে সাহস পাচ্ছেন না। ফলে ব্যাংকে মোটা অঙ্কের টাকা অলস পড়ে রয়েছে। এসব টাকার কোনো অর্থনৈতিক বা উৎপাদনশীল ব্যবহার হচ্ছে না। অথচ গ্রাহকের অর্থ জমা হওয়ার বিপরীতে বা আমানতকারীদের ঠিকই সুদ দিতে বাধ্য ব্যাংকগুলো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, আশা করা যায়, সামনে ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙা হবে, তখন বিনিয়োগ বাড়বে। এতে ঋণের চাহিদা বাড়বে এবং তারল্য স্বাভাবিক পর্যায়ে আসবে। ব্যাংকের সুদদণ্ডও একটা পর্যায়ে আর থাকবে না।’

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আগস্ট শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের অতিরিক্ত তারল্য দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৩ কোটি টাকা। প্রচলিত ধারার ৪৩ বেসরকারি ব্যাংকে অতিরিক্ত তারল্য ১ লাখ ৭৩ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা। ১০টি ইসলামি ব্যাংকের অতিরিক্ত তারল্য ৬ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা এবং ৯টি বিদেশি ব্যাংকের অতিরিক্ত তারল্য ৩২ হাজার ১১৮ কোটি টাকা।

ব্যাংকভিত্তিক অবস্থান অনুযায়ী, সোনালী ব্যাংকের অতিরিক্ত তারল্য সর্বোচ্চ ৬২ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের ১৮ হাজার ৮৭৭ কোটি, পূবালী ব্যাংকের ১৮ হাজার ৩৯৮ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকের ১৮ হাজার ৩৫১ কোটি, ব্যাংক এশিয়ার ১৭ হাজার ৯০৫ কোটি, ডাচ্‌-বাংলার ১৬ হাজার ২২০ কোটি, যমুনা ব্যাংকের ১৪ হাজার ৮০১ কোটি, রূপালী ব্যাংকের ১২ হাজার ৫৫৩ কোটি, সিটি ব্যাংকের ১২ হাজার ৪৮১ কোটি এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ১২ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা।

অতিরিক্ত তারল্য হিসাব করা হয় স্ট্যাটুটরি লিকুইডিটি রেশিও (এসএলআর) এবং ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও (সিআরআর) বজায় রাখার পর। ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকে মোট আমানতের ৪ শতাংশ নগদে এবং ১৩ শতাংশ ট্রেজারি বিল-বন্ডের মাধ্যমে রাখতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অপর হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের আগস্টে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আমানতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ২ শতাংশ এবং ঋণে প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। এ সময় ব্যাংকগুলো আমানতের বিপরীতে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দেয়। তবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯.৮৬ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিক বলেন, ‘বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কম হওয়ায় ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত তারল্য বাড়ছে। যদিও তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিনিয়োগ অবস্থায় রয়েছে। ব্যাংকগুলো ঋণের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে চেষ্টা করছে। একটা সময় পর বিনিয়োগ বাড়লে ঋণের প্রবৃদ্ধিও বাড়বে।’

পরিস্থিতি বদলালেই ঋণের চাহিদা বাড়বে, সুদ ব্যয় কমবে

মো. শওকত আলী খান

ব্যবস্থাপনা পরিচালক. সোনালী ব্যাংক

পরিস্থিতি বদলালেই উদ্যোক্তারা ঋণ নিতে আগ্রহী হবেন, এতে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের প্রবৃদ্ধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমবে অতিরিক্ত তারল্যের বোঝা। এভাবে ব্যাংক যখন স্বাভাবিক ঋণচক্রে ফিরে আসবে, তখন আমানতের বিপরীতে যে বড় অঙ্কের সুদ দিচ্ছে, সেই ব্যয়ও শূন্যে নেমে আসবে।

অন্যদিকে ব্যাংকের শক্তির মূল ভরসাই গ্রাহক। রাজনৈতিক পালাবদলের পর দুর্বল ব্যাংকগুলোর নানান দুর্বলতা প্রকাশ্যে চলে আসায় অনেক আমানতকারী তাঁদের টাকার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন। ফলে এসব ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের আমানত সরতে থাকে এবং তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থায় থাকা ব্যাংকগুলোয় জমা হতে থাকে। এতে কম সময়ে ভালো ব্যাংকগুলোর তারল্য দ্রুত ফুলে ওঠে। কিন্তু এই প্রবাহ যত দ্রুত বাড়ছে, সেই গতিতে ঋণ বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে যথাযথ যাচাই-বাছাই, ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং ভালো গ্রাহক চিহ্নিত করতে সময় লাগে। এতে ঋণপ্রবাহ কিছুটা শ্লথ হলেও আমানত সংগ্রহের ধারাবাহিকতা কিন্তু থেমে থাকে না। সেই কারণে তারল্যের পাহাড় তৈরি হয়, যা বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ না থাকলে ব্যাংকের জন্য চাপ হয়ে দাঁড়ায়।

সাম্প্রতিক সময়ে অনেক ব্যাংক ঋণ বিতরণ বাড়াতে না পারলেও অলস পড়ে থাকা আমানত যেন অকার্যকর না হয়, এ জন্য তারা অগ্রাধিকার খাতে ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি সরকারি সিকিউরিটিজ, ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করছে। কারণ, আমানতকারীদের সঞ্চয়ের অর্থ ব্যাংক যতক্ষণ ধরে রাখে, ততক্ষণই তাদের সুদ দিতে হয়। ফলে বিনিয়োগ স্থবির থাকলে এই সুদই পরিণত হয় ব্যাংকের বাড়তি ব্যয়ে।

তবে অর্থনীতিতে আবার গতি ফিরলে এবং বিনিয়োগের পরিবেশ পরিষ্কার হলে এখন ব্যাংকগুলোর হাতে জমে থাকা এই তারল্যই আশীর্বাদ হিসেবে কাজ করবে। অতএব পরিস্থিতি বদলালে অর্থাৎ নতুন বিনিয়োগ এলে, ঋণের চাহিদা বাড়লে বর্তমান উদ্বৃত্ত তারল্য আর থাকবে না; বরং ব্যাংকিং খাতকে স্বস্তির জায়গায় ফিরিয়ে আনবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ০১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ডিজেল, অকটেন, পেট্রল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি দুই টাকা বাড়িয়েছে সরকার। নতুন এই দাম ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। প্রতি লিটারে দুই টাকা করে দাম বাড়ায় ডিজেলের দাম ১০৪ টাকা, অকটেন ১২৪ টাকা, পেট্রল ১২০ টাকা ও কেরোসিনের দাম ১১৬ টাকা হয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে হেরফেরের কারণে সংশোধিত প্রাইসিং ফর্মুলার আলোকে ভোক্তা পর্যায়ে ডিসেম্বর মাসের জন্য জ্বালানি তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইআরডির প্রতিবেদন

বিদেশি ঋণ পরিশোধ বাড়ছে, রিজার্ভে চাপ বাড়ার ইঙ্গিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই–অক্টোবর) বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি অস্বাভাবিকভাবে কম। পুরোনো প্রকল্পে ঋণছাড় চলমান থাকলেও লক্ষ্যের চেয়ে অনেক পিছিয়ে; প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বেশ মন্থর। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ দ্রুত বাড়ছে, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করছে। আজ রোববার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বৈদেশিক ঋণ, অনুদান, প্রকল্প সহায়তা ও ঋণ পরিশোধের পূর্ণাঙ্গ চিত্র মিলেছে।

ইআরডির চার মাসের প্রতিবেদন থেকে যে সার্বিক চিত্র পাওয়া যায়, তা হলো— প্রকল্প বাস্তবায়ন মন্থর এবং ঋণ পরিশোধের বোঝা বাড়ছে। বড় অংশীদারেরা (রাশিয়া, চীন, জাপান ও ভারত) নতুন করে কোনো চুক্তি না করলেও পুরোনো প্রকল্পে অর্থছাড় অব্যাহত রেখেছে। বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রতিশ্রুতি অস্বাভাবিকভাবে কম। আর ঋণ পরিশোধের চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে, যা রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বাংলাদেশ প্রায় ১২০ কোটি ৯০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ বিদেশি সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে । গত অর্থবছরের একই সময়ে এই অঙ্ক ছিল মাত্র ২৫ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। অর্থাৎ সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রায় পাঁচ গুণ বেড়েছে। এখানে সবচেয়ে বড় অবদান এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি)।

এডিবি মোট ৫৮ কোটি ১৭ লাখ ডলারের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা মোট প্রতিশ্রুতির প্রায় ৪৮ শতাংশ। এর বাইরে ইউরোপীয় অংশীদারদের প্রতিশ্রুতি ২৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার আর এশিয়া, জাপান ইকোনমিক কো-অপারেশন জেইসি ও ফ্রেন্ডশিপ অ্যান্ড ফ্রেমওয়ার্ক উইং ৩২ কোটি ৫৯ কোটি ডলার।

অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক (আইডিএ) থেকে নতুন প্রতিশ্রুতি এসেছে মাত্র ১ কোটি ২৪ লাখ ডলার, যা অস্বাভাবিকভাবে কম। এর মধ্য দিয়ে আলোচনাধীন প্রকল্পগুলোতে ধীরগতি বা নতুন চুক্তির স্বল্পতার ইঙ্গিত মেলে।

ছাড় বাড়লেও লক্ষ্য থেকে অনেক পিছিয়ে

বিদেশি সহায়তার মোট অর্থছাড় হয়েছে ১৬৬ কোটি ৪৯ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে পাওয়া ১২০ কোটি ২০ লাখ ডলারের চেয়ে বেশি।

কিন্তু সমস্যা হলো—এ বছরের মোট বাজেট লক্ষ্য ছিল ৯২২ কোটি ৬০ লাখ ডলার। তার বিপরীতে চার মাসে বাস্তবায়ন মাত্র ১৮ শতাংশ।

উইং-ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, আমেরিকা ও জাপান থেকে বাজেটে বরাদ্দ ছিল ১৫৮ কোটি ২০ লাখ ডলার, পাওয়া গেছে মাত্র ৮ কোটি ডলার। আর এডিবি থেকে বরাদ্দ ২২০ কোটি ৯০ লাখ ডলারের বিপরীতে এসেছে ২৪ কোটি ৮৮ লাখ ডলার।

তবে ইউরোপ তুলনামূলক ভালো করেছে। বাজেটে ধরা ১৭২ কোটি ৩০ লাখ ডলারের বিপরীতে ছাড় হয়েছে ৪৯ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। আর বিশ্বব্যাংকের (আইডিএ) ১৯০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের বিপরীতে ছাড় ৪০ কোটি ৫২ ডলার। অর্থাৎ বড় অংশীদারদের কাছ থেকে অর্থছাড়ের গতি কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেই।

পুরোনো বড় প্রকল্পে রাশিয়া, চীন ও ভারতের অর্থছাড়ে নতুন প্রতিশ্রুতি না এলেও আগের প্রকল্পগুলো থেকে রাশিয়া, চীন, ভারত ও জাপানের অর্থছাড় চলমান রয়েছে। হালনাগাদ হিসাবে দেখা যায়, এই চার মাসে রাশিয়া ৪০ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, চীন ১৯ কোটি ৪০ লাখ, ভারত ৮ কোটি ১৮ লাখ ও জাপান ৮ কোটি ডলার ছাড় করেছে।

এই চার দেশ থেকে এ সময়ের মধ্যে কোনো নতুন ঋণসহায়তার প্রতিশ্রুতি আসেনি; সবই পুরোনো অবকাঠামো প্রকল্পের ছাড়।

ঋণ পরিশোধ বেড়েছে, রিজার্ভে চাপ বাড়ার ইঙ্গিত

ইআরডির প্রতিবেদনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসেই সুদ ও আসল মিলিয়ে বাংলাদেশকে ১৫৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে।

গত অর্থবছরের একই সময়ে এই অঙ্ক ছিল ১৪৩ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ ঋণ পরিশোধ প্রায় ১০ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হার বৃদ্ধির চাপও বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত