Ajker Patrika

সেরা করদাতার সম্মাননা পেলেন ১৪১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১: ৪৭
সেরা করদাতার সম্মাননা পেলেন ১৪১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান 

২০২২-২৩ করবর্ষে সেরা করদাতার সম্মাননা পেয়েছেন ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। আজ বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) এক অনুষ্ঠানে তাঁদের হাতে ট্যাক্স কার্ড বা কর কার্ড তুলে দেওয়া হয়। 

৭৬ ব্যক্তি, ৫৪ প্রতিষ্ঠান ও ১১টি অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা সনদ ও কর কার্ড দেওয়া হয়।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি ছিলেন না। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার।

আজ বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স কার্ড বা কর কার্ড দেওয়া হয়। ছবি: পিআইডিঅনুষ্ঠানে অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, রাজস্ব খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে পারলে ২০২৬ সালের মধ্যে এক কোটি প্রত্যক্ষ করদাতা পাওয়া যাবে। আগামী জুন মাসের মধ্যে পরিকল্পনা অনুযায়ী এনবিআরের মধ্যমেয়াদি সংস্কার কৌশল ঠিক হলে আগামী তিন বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী রাজস্ব আদায় বাড়ানো সম্ভব।

একই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিভাগের সিটি করপোরেশন ও জেলা পর্যায়ে তিনজন সর্বোচ্চ করদাতা, দুজন দীর্ঘ সময় ধরে কর প্রদানকারী এবং একজন করে নারী ও তরুণ করদাতাকে সম্মাননা হিসেবে সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। 

এ বছর জেলা পর্যায়ে সব মিলিয়ে ৫২৫ করদাতাকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন কর অঞ্চল থেকে তাঁদের এই সম্মাননা দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাপেক্সের সক্ষমতা বৃদ্ধি

দুই বড় প্রকল্পে সরকারের ব্যয় হবে ২,১৩২ কোটি

  • ‘২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয়’ প্রকল্প।
  • চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপসহ শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১ অনুসন্ধান কূপ প্রকল্প।
  • লক্ষ্য দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধি।
  • দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা প্রায় ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।
  • সরবরাহ হচ্ছে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
দুই বড় প্রকল্পে সরকারের ব্যয় হবে ২,১৩২ কোটি

দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়াতে দুটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ‘২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয়’ এবং অন্যটি চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপসহ শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১ অনুসন্ধান কূপ। দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট বাজেট ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৩২ কোটি টাকা।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত এই প্রকল্পগুলো ইতিমধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা প্রায় ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট, কিন্তু সরবরাহ করা হচ্ছে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এ ব্যবধানের কারণে শিল্প, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গৃহস্থালি ব্যবহারকারীরা প্রায়ই সংকটে পড়ছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্প নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দিকেও মনোযোগী হওয়া উচিত। আগে দেখা গেছে, প্রকল্প শুরু হলেও সময়মতো শেষ হয় না। এমনটি যেন আর না ঘটে। তবে এর জন্য পরিকল্পনা কমিশন ও জ্বালানি বিভাগের আরও সক্রিয় নজরদারি জরুরি।’

২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয় প্রকল্প

প্রথম প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ৫২০ কোটি, বাপেক্স নিজস্ব অর্থায়ন করবে ৫৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হয়েছে চলতি বছরের জুলাই থেকে, যার বাস্তবায়নের সময়সীমা ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই রিগ কেনার মাধ্যমে বাপেক্স নতুন গ্যাস কূপ খননের সক্ষমতা বাড়াবে। বর্তমানে পুরোনো রিগের কারণে খনন কার্যক্রমে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের জন্যই নতুন প্রকল্প।

ভোলা ও শাহবাজপুরে পাঁচটি কূপ খনন

দ্বিতীয় প্রকল্পের আওতায় ভোলা অঞ্চলে চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপ (শাহবাজপুর-৫ ও ৭, ভোলা নর্থ-৩ ও ৪) এবং একটি অনুসন্ধান কূপ (শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১) খনন করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৫৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে সরকার দেবে ১ হাজার ২৪৪ কোটি ৮০ লাখ, আর বাপেক্সের নিজস্ব অর্থায়ন ৩১০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত।

পরিকল্পনা কমিশনের নথি অনুযায়ী, কূপ খননের পাশাপাশি সংযোগ সড়ক নির্মাণ, কূপ পরীক্ষণ, উন্নয়নমূলক কাজ, সিমুলেশন সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ক্রয়সহ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। বাপেক্সের এমডি প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক জানান, কূপগুলোর মাধ্যমে নতুন গ্যাসের মজুত আবিষ্কারের সম্ভাবনা রয়েছে। পরীক্ষণ সফল হলে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে গ্যাস আমদানির ওপর নির্ভরতা কমবে। ভোলা অঞ্চলের নতুন গ্যাসক্ষেত্র বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হবে।’

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই দুটি প্রকল্পের পাশাপাশি সিলেটে ১২নং কূপ খনন এবং হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ ও মেঘনা ফিল্ডে ৩ডি সাইসমিক জরিপের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যদিও প্রকল্পগুলো শুরু হওয়ার কথা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে, তবে এখনো তা একনেক সভায় আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিইউএফএল কারখানা: পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনে ফেরার প্রস্তুতি

  • গ্যাস সংকটে সার উৎপাদন বন্ধ ছিল ৬ মাস।
  • ১৯ অক্টোবর ফের সংযোগ।
  • ২৯ অক্টোবর থেকে আবার উৎপাদন।
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ও কর্ণফুলী প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাষ্ট্রায়ত্ত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) দীর্ঘ ৬ মাস ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে আবার পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে এর আগে চলতি বছরের ১১ এপ্রিল থেকে হঠাৎ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পুরো সময়টায় সার উৎপাদন বন্ধ থাকে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিইউএফএলএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, ১৯ অক্টোবর বেলা ১১টায় কারখানায় আবার গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, গ্যাস সরবরাহ পুনরায় চালু হওয়ায় সার উৎপাদন প্রক্রিয়াও এখন স্টার্টআপ পর্যায়ে রয়েছে। উৎপাদন শুরু হলে কারখানার দৈনিক গ্যাস চাহিদা হবে ৪৫ থেকে ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট। তিনি আশা প্রকাশ করছেন, ২৯ অথবা ৩০ অক্টোবরের দিকে কারখানা পুরোপুরি উৎপাদনে ফিরবে।

সিইউএফএল সচল থাকলে দৈনিক ১১ হাজার টন ইউরিয়া সার উৎপাদন সম্ভব, প্রতি টন ৩৮ হাজার টাকা হিসাবে যার মোট বাজারমূল্য ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এ ছাড়া কারখানায় প্রতিদিন ৮০০ টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন হয়। তবে কয়েক বছর ধরেই যান্ত্রিক ত্রুটি, গ্যাস সরবরাহে ব্যাঘাত এবং অন্যান্য জটিলতায় উৎপাদন অনেক সময় বন্ধ থাকছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কারখানাটি মাত্র ৫ দিন উৎপাদন করেছে। ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ ছিল, এরপর চালু হলেও ২০২৫ সালের ৩ জানুয়ারি আবার যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সর্বশেষ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি চালু হয় কারখানা। এরপর টানা উৎপাদন দেড় মাস চলার পর ১১ এপ্রিল আবারও বন্ধ হয়ে যায়। এ বছর ২৪০ দিন উৎপাদন বন্ধ থাকার ফলে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

এ অবস্থায় দেশের ইউরিয়া সারের চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে, যাতে সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিইউএফএল স্থিতিশীলভাবে উৎপাদন চালু থাকলে সরকার কম খরচে দেশের চাহিদা পূরণ করতে পারবে। তবে নানা জটিলতায় বছরের পর বছর কারখানাটি নিয়মিত উৎপাদনে থাকতে পারছে না। পাশেই অবস্থিত বেসরকারি বহুজাতিক সার কারখানা কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার লিমিটেড (কাফকো) নিয়মিত গ্যাস পায় অথচ সরকারি প্রতিষ্ঠান সিইউএফএলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকে। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা ও প্রশ্ন রয়েছে।

কারখানা চালু হলে দৈনিক উৎপাদিত ইউরিয়া এবং অ্যামোনিয়ার মাধ্যমে দেশের সার সরবরাহ নিশ্চিত হবে এবং সরকারের অর্থনৈতিক ক্ষতি কমবে। একই সঙ্গে, দেশের কৃষি খাতের জন্য প্রয়োজনীয় সার সরবরাহে স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সার রফতানি ও সরবরাহের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বেনাপোল স্থলবন্দর: সপ্তাহ ধরে সন্ধ্যা ৬টার পর বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ

  • ক্ষতিতে পড়ছে ব্যবসা, উদ্বেগ ডিসিসিআইয়ের।
  • চোরাচালান ঠেকাতে বন্দর বন্ধ রাখা অযৌক্তিক।
  • অবিলম্বে সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করে ব্যবসা স্বাভাবিক করার আহ্বান।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

কোনো পূর্বঘোষণা বা প্রস্তুতি ছাড়াই দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর রয়েছে, এই নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন জানায়, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে স্থলবন্দর দিয়ে আর কোনো পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা যাচ্ছে না। এতে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক উভয় পক্ষই বিপাকে পড়েছে। পণ্যবাহী ট্রাকগুলো দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় পচনশীল পণ্যের ক্ষতির আশঙ্কাও বাড়ছে।

এ বিষয়ে গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) জানায়, চোরাচালান বা অবৈধ পণ্যের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তবে এর অজুহাতে সন্ধ্যার পর বন্দর কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়। ডিসিসিআই মনে করে, বৈধ বাণিজ্য সচল থাকলে বরং অবৈধ কার্যক্রম কমে আসবে। চেম্বারটি বলছে, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অধিকাংশ বাণিজ্য পরিচালিত হয়। এখানে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হলে তা সার্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তারা অবিলম্বে সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করে ব্যবসা স্বাভাবিক করার আহ্বান জানিয়েছে।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেনাপোল দিয়ে ২০ লাখ ১১ হাজার টন পণ্য আমদানি এবং ৪ লাখ ২১ হাজার টন পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই বিশাল বাণিজ্যপ্রবাহ সন্ধ্যার পর বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন, একই সঙ্গে রাজস্ব আয়েও ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। বন্দরের দুই পাশে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক অপেক্ষায় থাকায় বিশেষ করে খাদ্য ও কৃষিজাত পণ্য দ্রুত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত সিদ্ধান্ত শুধু বাণিজ্য ব্যাহত করছে না, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের লিড টাইমও বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা আরও দুর্বল করে তুলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সরকারের ১৪ মাস

ভালো উদ্যোগে রিজার্ভে স্বস্তি

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৩: ০৮
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে অস্থিতিশীলতা দেখা দেয় মার্কিন ডলারের বাজারে। টাকার বিপরীতে বাড়তে থাকে ডলারের দাম, ক্ষয় শুরু হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে। ২০২৪ সালের আগস্টে যখন শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে, সেই মাসে রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভের এমন বিপজ্জনক পতন ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নেয়। ফলে ১৪ মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ বেড়েছে অন্তত ৭ বিলিয়ন ডলার।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, গত বছরের জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে সরকার বদলের পর দেশে ডলার বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরতে শুরু করে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মিথ্যা ইনভয়েসিং বন্ধ, হুন্ডির মাধ্যমে পাচার রোধ, দক্ষ জনবল পাঠিয়ে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি এবং বিক্রির পরিবর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় এবং অধিক বিদেশি ঋণছাড়ে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে রিজার্ভ।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ডলারের বাজার স্থিতিশীল করতে নানা উদ্যোগ নেয়। বাজার মনিটরিং করে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে মিথ্যা ঘোষণা বন্ধ করে ডলার পাচার ঠেকানো হয়। হুন্ডিতে লেনদেনও কমেছে অনেক। কারিগরি ও ভাষার দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স বেড়েছে। এতে রিজার্ভ বেড়েছে, যা অর্থনীতিতে স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের সময় মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। সর্বশেষ গতকাল দেশের মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার। যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে বিপিএম-৬ অনুযায়ী এদিন রিজার্ভ ছিল ২৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। আর নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) বা ব্যয়যোগ্য পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে মাত্র ১৪ মাসের কম সময়ে রিজার্ভ বেড়েছে ৭ বিলিয়ন ডলার।

রিজার্ভ বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নানামুখী উদ্যোগের ফলে এখন রপ্তানি ভালো। প্রবাসী আয়েও জোয়ার দৃশ্যমান। আইএমএফ, এডিবি ও বিশ্বব্যাংক থেকেও তুলনামূলক বেশি অর্থ পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এখন “ডলার নেই” এমন অভিযোগ আসছে না। আমরা যখন বিনিময় হার উন্মুক্ত করি (ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া), তখন আমাদের অনেক টেনশন ছিল, হঠাৎ কী না কী হয়! কিন্তু তেমন অস্বাভাবিক কিছু ঘটেনি। বরং বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, চলতি বছরের আগস্টে ডলারের দর ছিল ১২২ টাকা, যা ২০২৪ সালের আগস্টে ছিল ১২০ টাকা। কিন্তু দাম কম থাকলেও গত সরকারের সময় ডলারের জন্য হাহাকার ছিল। ব্যবসায়ীরা ঘোষিত দরে ব্যাংক থেকে চাহিদামতো ডলার কিনতে পারেননি। তখন বিশেষ কৌশলে প্রতি ডলার ১২৮ টাকা পর্যন্ত কেনাবেচা হয়েছে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বাংলাদেশ ব্যাংক যৌথ বাহিনীর সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে।

এতে ডলার দর কারসাজির প্রমাণ পাওয়া যায়। সে জন্য কমপক্ষে ১০ ব্যাংকের সিইও, ট্রেজারিপ্রধানকে জরিমানাও করা হয়। কিন্তু বর্তমানে ডলারের দর ১২২ টাকা ছাড়ালেও এ দাম বাজারভিত্তিক হওয়ায় ব্যাংকগুলোর কাছে আমদানির জন্য পর্যাপ্ত ডলার রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর মনে করেন, সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা বেড়েছে বলেই রেমিট্যান্স বাড়ছে। মানুষ যখন সরকারের ওপর আস্থা রাখতে পারেন, তখন কষ্টার্জিত টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠিয়ে শান্তি পান। এতে হুন্ডি কমেছে। হুন্ডি কমায় অর্থ পাচারও কমেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্য বলছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে বৈদেশিক ঋণ এসেছে ১ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮৫৬ মিলিয়ন ডলার।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের হুন্ডিবিরোধী অভিযান, মানি লন্ডারিং রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়া নজরদারির যৌথ চেষ্টায় অবৈধ চ্যানেল (হুন্ডি) প্রায় থমকে গেছে। এতে বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানো বেড়েছে। পাশাপাশি দক্ষ কর্মী প্রশিক্ষণ, আরবি ভাষাশিক্ষা এবং শ্রমিক পাঠানো বাড়ায় প্রবাসী আয় বেড়েছে; যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ২০২২ সালে বিভিন্ন দেশে কাজ নিয়ে গেছেন ১১ লাখের বেশি কর্মী। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ লাখে। তবে ২০২৪ সালে ৩ লাখ কমে হয় ১০ লাখ। আর চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে দেশ ছেড়েছেন ৫ লাখ ২০ হাজার কর্মী।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, রেমিট্যান্স বাড়াতে আগের নগদ প্রণোদনা অব্যাহত রয়েছে। আর অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর অবস্থানের ফলে হুন্ডি প্রবণতা কমে যায় এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো ব্যাপক হারে বেড়েছে। রপ্তানি বেড়েছে। বৈদেশিক ঋণের অর্থ যোগ হয়েছে। সব মিলিয়ে ডলার বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি না করে এখনো কেনা অব্যাহত রেখেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত