Ajker Patrika

গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন: দুই বড় প্রকল্পে সরকারের ব্যয় হবে ২,১৩২ কোটি

  • ‘২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয়’ প্রকল্প।
  • চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপসহ শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১ অনুসন্ধান কূপ প্রকল্প।
  • লক্ষ্য দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধি।
  • দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা প্রায় ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।
  • সরবরাহ হচ্ছে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ২৪
গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন: দুই বড় প্রকল্পে সরকারের ব্যয় হবে ২,১৩২ কোটি

দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়াতে দুটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ‘২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয়’ এবং অন্যটি চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপসহ শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১ অনুসন্ধান কূপ। দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট বাজেট ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৩২ কোটি টাকা।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত এই প্রকল্পগুলো ইতিমধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা প্রায় ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট, কিন্তু সরবরাহ করা হচ্ছে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এ ব্যবধানের কারণে শিল্প, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গৃহস্থালি ব্যবহারকারীরা প্রায়ই সংকটে পড়ছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. শামসুল আলম আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘প্রকল্প নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দিকেও মনোযোগী হওয়া উচিত। আগে দেখা গেছে, প্রকল্প শুরু হলেও সময়মতো শেষ হয় না। এমনটি যেন আর না ঘটে। তবে এর জন্য পরিকল্পনা কমিশন ও জ্বালানি বিভাগের আরও সক্রিয় নজরদারি জরুরি।’

২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয় প্রকল্প

প্রথম প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ৫২০ কোটি, বাপেক্স নিজস্ব অর্থায়ন করবে ৫৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হয়েছে চলতি বছরের জুলাই থেকে, যার বাস্তবায়নের সময়সীমা ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই রিগ কেনার মাধ্যমে বাপেক্স নতুন গ্যাস কূপ খননের সক্ষমতা বাড়াবে। বর্তমানে পুরোনো রিগের কারণে খনন কার্যক্রমে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের জন্যই নতুন প্রকল্প।

ভোলা ও শাহবাজপুরে পাঁচটি কূপ খনন

দ্বিতীয় প্রকল্পের আওতায় ভোলা অঞ্চলে চারটি মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপ (শাহবাজপুর-৫ ও ৭, ভোলা নর্থ-৩ ও ৪) এবং একটি অনুসন্ধান কূপ (শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট-১) খনন করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৫৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে সরকার দেবে ১ হাজার ২৪৪ কোটি ৮০ লাখ, আর বাপেক্সের নিজস্ব অর্থায়ন ৩১০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত।

পরিকল্পনা কমিশনের নথি অনুযায়ী, কূপ খননের পাশাপাশি সংযোগ সড়ক নির্মাণ, কূপ পরীক্ষণ, উন্নয়নমূলক কাজ, সিমুলেশন সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ক্রয়সহ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। বাপেক্সের এমডি প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক জানান, কূপগুলোর মাধ্যমে নতুন গ্যাসের মজুত আবিষ্কারের সম্ভাবনা রয়েছে। পরীক্ষণ সফল হলে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে গ্যাস আমদানির ওপর নির্ভরতা কমবে। ভোলা অঞ্চলের নতুন গ্যাসক্ষেত্র বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হবে।’

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই দুটি প্রকল্পের পাশাপাশি সিলেটে ১২নং কূপ খনন এবং হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ ও মেঘনা ফিল্ডে ৩ডি সাইসমিক জরিপের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যদিও প্রকল্পগুলো শুরু হওয়ার কথা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে, তবে এখনো তা একনেক সভায় আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পায়নি।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

লটারিতে স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেল ৩ লাখ ৫ হাজার শিক্ষার্থী

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: গলার পোড়া দাগেই শনাক্ত হন গৃহকর্মী আয়েশা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই দফা কমার পর বাড়ল সোনার দাম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের বাজারে দুই দফা কমার পর বেড়েছে স্বর্ণের দাম। মূল্যবান ধাতুটির ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এতে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ১২ হাজার ১৪৫ টাকা নির্ধারিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিউর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ২ লাখ ১২ হাজার ১৪৫ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ২ হাজার ৪৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

সবশেষ ২ ডিসেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সেবার ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ১১ হাজার ৯৫ টাকা নির্ধারণ করে সংগঠনটি।

বিষয়:

দামসোনা
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

লটারিতে স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেল ৩ লাখ ৫ হাজার শিক্ষার্থী

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: গলার পোড়া দাগেই শনাক্ত হন গৃহকর্মী আয়েশা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী চীনা ব্যবসায়ীরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ বৃহস্পতিবার বিজিএমইএ কার্যালয়ে চীনের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সুযোগ নিয়ে আলোচনা করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বৃহস্পতিবার বিজিএমইএ কার্যালয়ে চীনের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সুযোগ নিয়ে আলোচনা করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশে বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে আগ্রহী চীনা ব্যবসায়ীরা। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, টেক্সটাইল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে যৌথ বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে তাঁরা বিজিএমইএর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের চীনের ফেব্রিকস উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। জানুয়ারিতে উভয় পক্ষের একটি সমন্বয় সভা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিজিএমইএ কার্যালয়ে চীনের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সুযোগ নিয়ে আলোচনা করে। বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান এবং চীনের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বেটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফ্রাঙ্ক য়ি। বৈঠকে বিজিএমইএর সহসভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, পরিচালক মো. হাসিব উদ্দিন, পরিচালক রুমানা রশীদ ও পরিচালক মোহাম্মদ সোহেল।

চীনা প্রতিনিধিদলে টেক্সটাইল, ফেব্রিকস, ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ, আইটি, এআই, হাইটেক শিল্প, শিক্ষা ও গবেষণা, আইন পরামর্শ ও বিরোধ নিষ্পত্তি খাতের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে। আলোচনায় বাংলাদেশের পোশাক খাতের ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ, বিশেষ করে ম্যানমেইড ফাইবার ও উচ্চমূল্যের পোশাক উৎপাদনে যৌথ বিনিয়োগের সম্ভাবনার ওপর জোর দেওয়া হয়।

বিজিএমইএর পক্ষ থেকে ইনামুল হক খান চীনা ব্যবসায়ীদের এমএমএফ-ভিত্তিক টেক্সটাইল, কেমিক্যাল ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ খাতে যৌথ বিনিয়োগের আহ্বান জানান। এ ছাড়া এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন-পরবর্তী সময়ের জন্য এআইচালিত প্রযুক্তি, সাপ্লাই চেইন, থ্রিডি ফটো প্রিন্টিং ও ডিজিটাল প্রোডাক্ট পাসপোর্ট খাতেও সহযোগিতা কামনা করা হয়। পর্যাপ্ত সমন্বয়ের জন্য জানুয়ারিতে বেটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের উদ্যোগে বিজিএমইএ ও চীনা ব্যবসায়ীদের একটি নিবিড় সভা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া শিক্ষা ও গবেষণার জন্য চীনের চেউং কং গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব বিজনেসের সঙ্গে একটি সহযোগিতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের প্রস্তাব এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

লটারিতে স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেল ৩ লাখ ৫ হাজার শিক্ষার্থী

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: গলার পোড়া দাগেই শনাক্ত হন গৃহকর্মী আয়েশা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রিমুখী চাপে অস্তিত্ব সংকটে দেশীয় সুতা শিল্প

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দেশীয় স্পিনিং শিল্প এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছে, যেখানে টিকে থাকাই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদেশি সুতার আগ্রাসী ডাম্পিং, দেশে উৎপাদন ব্যয়ের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার তীব্র চাপ—নেতিবাচক এই ত্রিমুখী প্রভাবের সম্মিলিত ধাক্কা শিল্পটিকে কার্যত ঠেলে দিয়েছে অস্তিত্ব সংকটে। এ পরিস্থিতিতে দেশের স্পিনিং কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী থেকে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা—সবাই মিলে সরকারের কাছে খাতটির জরুরি সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় বাজার এখন আর সমান প্রতিযোগিতার জায়গা নয়। এই অবস্থায় বিদেশি সুতার ওপর অ্যান্টি ডাম্পিং ট্যাক্স ও ১০ শতাংশ সেফ গার্ড ডিউটি আরোপ সময়োপযোগী পদক্ষেপ হবে। পাশাপাশি দেশীয় সুতায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বর্তমান ১ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা বাড়িয়ে কমপক্ষে ১০ শতাংশ করার দাবিও জানান তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে সালমা গ্রুপের চিফ অপারেটিং অফিসার ইঞ্জিনিয়ার আজহার আলী বলেন, অনেক দেশ ভর্তুকির কারণে অস্বাভাবিক কম দামে সুতা রপ্তানি করছে, ফলে স্থানীয় উৎপাদন মারাত্মকভাবে পিছিয়ে পড়ছে। তাঁর ভাষায়, বিদেশি সুতা এখন এমন দামে দেশে ঢুকছে, যা স্থানীয় মিলগুলোর উৎপাদন খরচেরও নিচে। এটি সরাসরি ডাম্পিং এবং বাজারে ন্যায্য প্রতিযোগিতার সুযোগ সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করছে।

আজহার আলী জানান, মহামারি-পরবর্তী মন্দা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, ডলার-সংকট এবং জ্বালানি-বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি মিলিয়ে স্পিনিং শিল্পের ওপর বহুস্তরীয় চাপ সৃষ্টি হয়েছে। টানা তিন দফায় গ্যাস-বিদ্যুতের দাম ৩৫০ শতাংশ বেড়ে গেলেও টেক্সটাইল ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পে পণ্যমূল্য সমন্বয় করা হয়নি। এতে ক্ষতির বোঝা চেপে বসেছে সরাসরি মিলগুলোর ওপর। গত কয়েক বছরে দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ স্পিনিং মিল উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। লক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মচারীর কর্মসংস্থান ঝুঁকিতে পড়েছে। যেসব কারখানা এখনো চলছে, সেগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা নেমে এসেছে অর্ধেকে।

এ সংকট মোকাবিলায় তিনি রপ্তানিমুখী কারখানার জন্য দুই বছরের জন্য ৩০ শতাংশ বিল রিবেটসহ বিশেষ প্রণোদনার দাবি জানান। একই সঙ্গে টাকার অবমূল্যায়নের ফলে কাঁচামাল আমদানির সক্ষমতা প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যাওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকেরা আরও কয়েকটি দাবি উপস্থাপন করেন। তাঁদের প্রস্তাব অনুযায়ী, বাতিল হওয়া রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) সুবিধা আগামী দুই বছর পুনর্বহাল করা উচিত। স্থানীয় কাঁচামালের বাধ্যতামূলক ব্যবহার ৭০ শতাংশে উন্নীত করা, রিসাইকেল ও সাসটেইনেবল পণ্য উৎপাদনে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনে ৫ শতাংশ সুদে ১০ বছরমেয়াদি বিশেষ ঋণ প্যাকেজ চালুর কথাও বলা হয়। তাঁদের দাবি, রপ্তানিনির্ভর কারখানাগুলোকে গ্যাস ও বিদ্যুতের বিলের ওপর ৩০ শতাংশ রিবেট দিতে হবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ও গ্রিনটেক্স কম্পোজিট মিলসের নির্বাহী পরিচালক রুহুল আমিন বলেন, ডাম্পিংয়ের কারণে দেশীয় সুতা তার স্বাভাবিক বাজার হারাচ্ছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে এই গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ভিত্তিকে ধসের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে মোশাররফ কম্পোজিট গ্রুপের পরিচালক (অপারেশন) শাহিনুল হক, আরমাডা গ্রুপের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, আহমেদ গ্রুপের অ্যাডভাইজর শান্তিময় দত্ত, যমুনা গ্রুপের পরিচালক এ বি এম সিরাজুল ইসলামসহ বিভিন্ন গ্রুপের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

লটারিতে স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেল ৩ লাখ ৫ হাজার শিক্ষার্থী

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: গলার পোড়া দাগেই শনাক্ত হন গৃহকর্মী আয়েশা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রোজার আগে কমল খেজুরের শুল্ক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
দীর্ঘ সময় রোজা রাখার পর পর দুটি বা তিনটি খেজুর শরীরে দ্রুত শক্তি এবং প্রাকৃতিক শর্করা জোগায়। ছবি: ভিজিট সৌদি ডট কম
দীর্ঘ সময় রোজা রাখার পর পর দুটি বা তিনটি খেজুর শরীরে দ্রুত শক্তি এবং প্রাকৃতিক শর্করা জোগায়। ছবি: ভিজিট সৌদি ডট কম

আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে খেজুরের আমদানি শুল্ক কমিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তাঁর সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শফিকুল আলম বলেন, ফেব্রুয়ারিতে রমজান মাস সামনে রেখে রোজাদারদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে খেজুরের ওপর শুল্ক ৫২ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪০ দশমিক ৭ শতাংশ করা হয়েছে।

এর আগে গত নভেম্বরে পবিত্র রমজান উপলক্ষে খেজুরের আমদানি শুল্ক ও অগ্রিম কর কমানোর প্রস্তাব দেয় ট্যারিফ কমিশন। রোজায় খেজুরের দাম সহনীয় রাখতে পণ্যটির আমদানি শুল্ক ২৫ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ এবং উৎসে করহার ১০ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার সুপারিশ করে সংস্থাটি।

এ ছাড়া খেজুর আমদানিতে বিদ্যমান ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

লটারিতে স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেল ৩ লাখ ৫ হাজার শিক্ষার্থী

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: গলার পোড়া দাগেই শনাক্ত হন গৃহকর্মী আয়েশা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত