Ajker Patrika

ইআরকিউ হিসাব থেকে নগদায়নে আগের হারেই সুদ পাবেন রপ্তানিকারকেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

রপ্তানিকারকদের রিটেনশন বা প্রত্যাবাসন কোটা (ইআরকিউ) হিসাবে জমা করা মেয়াদি আমানত অপরিপক্ব অবস্থায় নগদায়ন করলেও আগের হারেই সুদ পাবেন ব্যবসায়ীরা। মেয়াদপূর্তি বিবেচনায় ইআরকিউ কোটা থেকে নগদায়নের বিপরীতে শতভাগ সুদ দেওয়ার এ নির্দেশ আজ মঙ্গলবার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়ায় সরকার বিভিন্নভাবেই ডলারের প্রবাহ বাড়াতে চাইছে। এরই অংশ হিসেবে গত ১৪ জুলাই ইআরকিউ হিসাবে জমা থাকা অর্থের ৫০ শতাংশ নগদায়নের নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু এই নগদায়নের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা আগের হিসাবেই সুদ পাবেন কিনা, তা নিয়ে সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা সে সময় দেওয়া হয়নি। এবার সেই নির্দেশনাও এল।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ইআরকিউ হিসাবে জমা করা মেয়াদি আমানতের মেয়াদ পূর্ণ না হলেও বিদ্যমান চুক্তি অনুযায়ীই গ্রাহককে শতভাগ সুদ সুবিধা দিতে হবে ব্যাংককে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক নীতি বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামার পর বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে গত ১৪ জুলাই জারি করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইআরকিউ হিসাবে জমা করা বিদেশি মুদ্রার ৫০ শতাংশ দ্রুত নগদায়নের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে এই কোটার হিসাবে নতুন করে বিদেশি মুদ্রা জমার হার অর্ধেক করা হয়। 

মূলত দেশের বাজারে ডলার সরবরাহ বাড়াতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ১৪ জুলাই বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সার্কুলারে বলা হয়, রপ্তানিকারকেরা ইআরকিউ হিসাবে তাদের জমা করা বিদেশি মুদ্রা খরচ না করে দীর্ঘ সময় ধরে রাখেন। এতে এই মুদ্রার যথাযথ ব্যবহার হয় না। 

বাংলাদেশি টাকায় বিদেশি মুদ্রার বিনিময়মূল্য প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়। এতে রপ্তানিকারকেরা নানা সময় জটিলতার মুখে পড়েন। তাই তাঁরা নিজেদের রপ্তানি পণ্য ও সেবা থেকে হওয়া আয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ ইআরকিউ হিসাবে জমা রাখেন। এতে ডলারের দামের ওঠা-নামার কারণে তাঁদের ক্ষতির শিকার হতে হয় না। 

রিজার্ভ কমে যাওয়া, আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের তেজিভাব—সব মিলিয়ে দেশে ডলারের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ডলারের বিপরীতে টানা টাকার দাম কমার কারণে অভ্যন্তরীণ বাজার অস্থিতিশীল হচ্ছে। অন্য সময় রেমিট্যান্স প্রবাহের মাধ্যমে এ ধরনের সংকট কাটিয়ে ওঠা যায়। কিন্তু ইদানীং রেমিট্যান্স প্রবাহও কম। এ অবস্থায় সম্ভাব্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে দরকারি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে বিলাসপণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণের ক্ষেত্রেও কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে আগেই। সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে ইআরকিউ হিসাবে জমা অর্থ নগদায়নের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

একই সঙ্গে ইআরকিউ হিসাবে অর্থ জমার উচ্চসীমাও কমিয়ে আনা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, আগে দেশের স্থানীয় মুদ্রার মূল্যমান অনুযায়ী রিটেনশন কোটার হার সর্বনিম্ন ১৫ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ ছিল। প্রযুক্তি খাতে এই হার ছিল ৭০ শতাংশ। এখন প্রতিটি ক্ষেত্রে এ হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে যথাক্রমে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ৩০ শতাংশ ও ৩৫ শতাংশ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত