Ajker Patrika

পুনরুজ্জীবিত হওয়ার আশায় ঘুণেধরা পুঁজিবাজার

আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
পুনরুজ্জীবিত হওয়ার আশায় ঘুণেধরা পুঁজিবাজার

দীর্ঘদিন পরে হলেও ঘুণেধরা পুঁজিবাজার ফের পুনরুজ্জীবিত হওয়ার পথ তৈরি হয়েছে। দেশে অন্তর্বর্তীকালীন নতুন সরকারের যাত্রার মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব সুগম করবে এই পুনরুজ্জীবনের পথ। পুঁজিবাজার বিশ্লেষক, অংশীজন ও বিনিয়োগকারীরা এখন এমনটিই মনে করছেন। তাঁরা বলছেন, সরকারের পালাবদলের কারণে অর্থনীতিতে এখন বড় ধরনের সংস্কার আসবে। সম্ভাবনা রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক শীর্ষ পদে বড় রদবদলেরও। এসব ইতিবাচক পরিবর্তনের কারণে পুঁজিবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে। একই সঙ্গে জমে থাকা হতাশাও দূর হবে। যার মধ্য দিয়ে পুঁজিবাজার থেকে হারিয়ে যাওয়া গতিশীল রূপও ফের পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হবে। 

প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ  আজকের পত্রিকাকে বলেন, এত দিন কিছু দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি বাজার উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। অর্থনীতি পড়েছিল মাফিয়া গ্রুপের হাতে। এতে মানুষ হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। হতাশা থাকলে পুঁজিবাজার কখনো ভালো হয় না। এখন সে হতাশা কেটে গেছে। মানুষের বিজয় হয়েছে, পুঁজিবাজারেরও বিজয় হবে। তিনি মনে করেন, এ পরিবর্তন পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট নীতিমালা বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা ব্যক্তিদের অপসারণের পথ খুলবে। এতে রেমিট্যান্স, বিদেশি বিনিয়োগ আসা শুরু হয়ে যাবে। দেশীয় মানুষেরা বিনিয়োগ করা শুরু করবে। ফলে পুঁজিবাজারও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘুরে দাঁড়াবে। তবে এর জন্য নতুন সরকারকে অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে। তাহলেই পুঁজিবাজার ভালো হবে। 

আর সাময়িকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও খুব তাড়াতাড়ি উড়ন্ত পুঁজিবাজারের স্বপ্ন দেখছেন বিনিয়োগকারী সানী মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার অর্থনীতির প্রকৃত তথ্য লুকিয়ে রেখেছিল। আমাদের রিজার্ভ কত, বিদেশি ঋণ কত ইত্যাদি। পরবর্তী সরকার প্রথমেই ঋণ শোধ করার কথা ভাবতে পারে। এর জন্য কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তবে ধীরে ধীরে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠাতে শুরু করবেন, তখন বড় উত্থান হবে পুঁজিবাজারে।’ 

অপর পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আল-আমিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজার অবহেলিত ছিল। আমরা যেসব সমস্যার কথা বলেছি, নতুন সরকার সেগুলো চিহ্নিত করবে বলে আশা করি। এসব সংস্কার হলে দীর্ঘদিন পুঁজিবাজারে যে জঞ্জাল আটকে আছে, সেগুলো থেকে বিনিয়োগকারীরা মুক্তি পাবেন। তবে শুধু সরকার পরিবর্তনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে সুফল মিলবে না বলে মনে করেন অধ্যাপক আল-আমিন। তিনি বলেন, যদি সত্যিকার অর্থে সংস্কার হয়, তাহলে বিনিয়োগকারীবান্ধব বাজার হবে। বড় ধরনের যেসব অনিয়ম হতো, সেগুলো কমে আসবে বলে প্রত্যাশা করি। পরবর্তী সময়ে কী হয়, সেটা সময়েই বোঝা যাবে। 

তবে হঠাৎ সরকার পরিবর্তনের কারণে সাময়িকভাবে পুঁজিবাজারে একটি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে বলে জানান অধ্যাপক আল-আমিন। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের মেকারদের মধ্যে সরকারপন্থীরা আস্থা পাবেন না, ভয় পাবেন। তাঁরা বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার চেষ্টাতেই থাকবেন। নতুন মেকার তৈরি না হওয়া পর্যন্ত একটা পরিবর্তনকালীন সময় (ট্রানজিশন পিরিয়ড) যাবে। সে জন্য কিছুটা নেতিবাচক হতে পারে পুঁজিবাজার। 

ব্রোকারেজ হাউস এআইবিএল ক্যাপিটাল মার্কেট সার্ভিসেসের সিইও মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, ‘পুঁজিবাজার, ব্যাংকসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের বিষয় আছে। পুঁজিবাজার নিয়ে মানুষের কাছে চাওয়া থাকবে। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজার আগামী দিন থেকে ভালো হবে বলে মনে করি।’ 

ট্রেজার সিকিউরিটিজের সিওও মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘ভবিষ্যতে যেন কোনো দুর্বল কোম্পানি তালিকাভুক্ত না হতে পারে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো সঠিক তথ্য দিতে বাধ্য থাকে সে ব্যবস্থা করতে হবে। এগুলো নিশ্চিত করতে পারলেই সুন্দর একটা পুঁজিবাজার পাব আমরা।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাচার করা ৭৮১ কোটি টাকা ফেরত দিতে চেয়েও জামিন পেলেন না নাসার চেয়ারম্যান নজরুল

জীবন বিলিয়ে দিয়ে উত্তরার মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীদের বাঁচালেন, কে এই মাহরীন চৌধুরী

পাইলটের শেষ বার্তা: বিমান ভাসছে না, নিচে পড়ছে

মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীরাই ছিল ৩৭ বছরের মাসুকার ‘সংসার’, যুদ্ধবিমান তছনছ করে দিল

চোখের জলে পাইলট তৌকিরের বিদায়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত