Ajker Patrika

বিক্রিতে আরও চাপে ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিক্রিতে আরও চাপে ডলার

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট ডলার-সংকট ঠেকাতে একের পর এক পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে আমদানিতে কড়াকড়ি শর্ত আরোপ এবং এলসি নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত জুনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার গণমাধ্যমকে জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে কোনো ব্যাংকের কাছে সস্তায় কিংবা স্বাভাবিক দামেও ডলার বিক্রি করা হবে না। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। এতে রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৫ বিলয়নের ঘরে, যা বিপিএম ৬ অনুযায়ী প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার-সংকট থাকায় জ্বালানি ও নিত্যপণ্য আমদানি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়ছে। রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি অব্যাহত রাখায় রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন, যা গত বছর একই সময়ে ছিল প্রায় ৩৭ বিলিয়ন ডলার।

আইএমএফের পরামর্শে বিপিএম ৬ অনুযায়ী রিজার্ভ প্রায় ২০ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। তবে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ হয়েছে ১৭ বিলিয়ন ডলারের সামান্য বেশি। এদিকে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে গতকাল পর্যন্ত (৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন) ৫৩২ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের আমদানি বিল পরিশোধ বাবদ সোনালী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ১১১ টাকা দরে প্রায়ই ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই রেট বাজারের তুলনায় সস্তা। কেননা, বাজারে প্রতি ডলার ১১৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে অবৈধ চ্যানেলে ডলার লেনদেন হবে। এ জন্য রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাড়ার পরেও ডলার-সংকট শিগগির কাটছে না। এই ডলার পাচার হয় কি না, তা ভেবে দেখা দরকার।

সেপ্টেম্বরে বড় বিপর্যয়ের পর অক্টোবরে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। গত বছরের অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছিল। সে হিসাবে গত মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

এর আগে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় বিপর্যয় হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল মাত্র ১৩৩ কোটি ডলার, যা ছিল ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। ডলারের বিনিময় হার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নমনীয় অবস্থানের কারণেই রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।

অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসের মধ্যে গত অক্টোবরেই সবচেয়ে কম এসেছে রপ্তানি আয়। গত অক্টোবরে গত বছরের একই মাসের চেয়ে রপ্তানি কমেছে ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গত মাসে ৩৭৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের একই মাসের চেয়ে যা ৬০ কোটি ডলার কম। গত বছরের অক্টোবরে ৪৩৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের আমদানি ব্যয় মেটাতে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে, যা দেশের স্বার্থেই করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত