Ajker Patrika

হবিগঞ্জে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট

সহিবুর রহমান, হবিগঞ্জ
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩, ২০: ০০
হবিগঞ্জে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট

হবিগঞ্জে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট চলছে। অ্যাম্বুলেন্সচালকদের ৯টি দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে আজ রোববার থেকে এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে জেলা বাস মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন। তবে এসব দাবিকে অযৌক্তিক ও অমানবিক আখ্যা দিয়েছে জেলার সচেতন মহল। 

 ৯ মার্চ হবিগঞ্জের ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতাল থেকে পার্কিং উচ্ছেদের পর থেকে অ্যাম্বুলেন্সচালকেরা ধর্মঘট পালন করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সারা জেলায় যাত্রী পরিবহন ধর্মঘট আজ শুরু হয়েছে। এতে জেলায় জনদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।

অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট আহ্বানে ৯ দফা দাবি হলো—হবিগঞ্জ হাসপাতাল প্রাঙ্গণেও অ্যাম্বুলেন্স পার্কিংয়ের ব্যবস্থা, পুলিশ দ্বারা অহেতুক অ্যাম্বুলেন্সচালকদের হয়রানি বন্ধ করা, হাসপাতাল থেকে দালাল চক্র উচ্ছেদ, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল পরিচালনা কমিটি ও হবিগঞ্জ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে জেলা বাস মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আমিনুল ইসলাম সরকারকে প্রত্যাহার, অবিলম্বে চালকদের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ডোপ টেস্ট চালু, জেলা আনসার কমান্ডার অফিসের পশ্চিম দিকে রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের খালি জায়গায় মাইক্রোবাস পার্কিংয়ের জন্য স্ট্যান্ডের জায়গা নির্ধারণ, জেলাব্যাপী বিভিন্ন রাস্তায় চলাচলরত অবৈধ গাড়ি চলাচল বন্ধ ও যাত্রীবাহী গাড়ি রিকুইজিশন বন্ধ। 

হবিগঞ্জ পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সজিব বলেন, ‘৯ দফা দাবি আদায়ে আজ সকাল থেকে হবিগঞ্জের ৯টি রুটে সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু হয়েছে। দাবি পূরণ না হলে কিংবা আলোচনা ভিত্তিতে কোনো সমাধান না করা হলে ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।’

হবিগঞ্জ জেলা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স রাখার কারণে চিকিৎসাকাজ ব্যাহত হচ্ছিল। কোনো কোনো অ্যাম্বুলেন্সচালক রোগীকে রেফার করার জন্য বিভিন্নভাবে চিকিৎসকদের চাপ সৃষ্টি করেন। হাসপাতাল চত্বরে অসংখ্য অ্যাম্বুলেন্স থাকায় মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে স্বজনেরা প্রবেশ করতে পারে না। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ও জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সকে হাসপাতাল আঙিনায় পার্কিংয়ে নিষেধ করা হয়েছে।’ 

হবিগঞ্জ পৌর বাস টার্মিনাল। ছবি: আজকের পত্রিকাহবিগঞ্জ জেলা যাত্রীকল্যাণ পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরহাদ বলেন, ‘হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মুমূর্ষু রোগীদের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সমালিক ও শ্রমিকদের আচরণ এককথায় অমানবিক এবং বর্বরতার সমতুল্য। হবিগঞ্জের প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স মালিক সিন্ডিকেটের ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ডে অনেক দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা নানাবিধ হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’ 

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, ‘হবিগঞ্জে পরিবহন শ্রমিকেরা যে আন্দোলন শুরু করেছেন, তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অমানবিক। সাধারণ মানুষ এই আন্দোলনকে সমর্থন করছেন না। বিষয়টি নিয়ে পরিবহনমালিক ও শ্রমিকনেতাদের আরও মানবিক হওয়া দরকার।’

হবিগঞ্জের বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক হুমায়ুন খান বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সসেবা বন্ধ করে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা ঠিক করা হয়নি। জেলা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে স্থান কম থাকায় রোগী নিয়ে চলাফেরা করা কঠিন। তাই অ্যাম্বুলেন্সকে হাসপাতালের বাইরে রাখার বিষয়ে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমরা একমত।’

হবিগঞ্জ সম্মিলিত নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি পীযূষ চক্রবর্তী বলেন, ‘শ্রমিকনেতাদের হবিগঞ্জবাসীকে জিম্মি করা ঠিক করা হয়নি। আমরা সাধারণ নাগরিকদের পক্ষ থেকে এর প্রতিকারে কর্মসূচি গ্রহণ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত