Ajker Patrika

মৌলভীবাজারে পানিবন্দী লাখো মানুষ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১১: ২৫
Thumbnail image

মৌলভীবাজার জেলায় পাহাড়ি ঢল আর ভারী বর্ষণের কারণে জেলার নদ-নদীর পানি বেড়ে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে সাত উপজেলার প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এরই মধ্যে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অর্ণব মালাকার।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সদর উপজেলার খলিলপুর, মনুমুখ, আখাইলকুড়া, কনকপুর, কামালপুর, চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের আংশিক প্লাবিত হয়েছে। কুলাউড়া সদরসহ ভূকশিমইল, ভাটেরা, জয়চণ্ডী, ব্রাহ্মণবাজার, কাদিপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে জেলার জুড়ী উপজেলায় গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় এই উপজেলার ২৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের অধিকাংশ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনসাধারণের চলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া জায়ফরনগর ইউনিয়নের গৌরীপুর ও সাগরনাল ইউনিয়নের কাশিনগর, গোয়ালবাড়ী, পশ্চিম শিলুয়া গ্রামে জুড়ী নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে।

বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে গেছে সড়কবড়লেখা পৌর এলাকাসহ ১০টি ইউনিয়ন, রাজনগরের ৪টি, শ্রীমঙ্গলের ৫টি এবং কমলগঞ্জ উপজেলায় অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদীর পাড় ভেঙে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কুলাউড়া আঞ্চলিক বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ওসমান গণি বলেন, বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কুলাউড়া উপজেলার ইসলামগঞ্জ এবং জুড়ীর নার্সারি ফিডারের বিদ্যুৎ সরবরাহ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যার পানি কমে গেলে বিদ্যুৎ পুনরায় চালু করা হবে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়এর আগে গতকাল শনিবার রাত ৯টায় জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ‘জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির’ জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে জেলা পরিষদের প্রশাসক, পৌর মেয়র, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক বিভাগ, ফায়ার ব্রিগেডের প্রতিনিধিসহ জেলা পর্যায়ের সব কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। সভায় অতিবৃষ্টির কারণে সম্ভাব্য ভূমিধস এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও করণীয়বিষয়ক আলোচনা হয়।

এদিকে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, আজ রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলায় মনু নদের পানি মনু রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় বিপৎসীমার ১৪৫ সেন্টিমিটার নিচে, চাঁদনীঘাট ব্রিজ এলাকায় বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার নিচে, শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচে এবং রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত