Ajker Patrika

মেছো বিড়ালের ৩টি ছানা ফিরল মায়ের কোলে

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
Thumbnail image

একটি মা মেছো বিড়াল তার তিনটি ছানা (বাচ্চা) এক স্কুল শিক্ষিকার বাড়ির পরিত্যক্ত শৌচাগারে রেখে গিয়েছিলেন। এগুলো সাধারণ বিড়ালের ছানা মনে করে উদ্ধার করেছিলেন ওই স্কুল শিক্ষিকা। কিন্তু উদ্ধারের পর বুঝতে পারেন বাচ্চাগুলো মেছো বিড়ালের। তখন তিনি এগুলো নিয়ে বিপাকে পড়েন। পরদিন আবার পরিত্যক্ত শৌচাগারে রেখে দিলে মা মেছো বিড়ালটি বাচ্চাগুলো ফেরত নিয়ে যায়। 

ঘটনাটি ঘটে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বরমচালের সিঙ্গুর এলাকায় শিক্ষিকা দিবা রানী করের বাড়িতে। দিবা রানী ওই এলাকার ইছলাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। 

শিক্ষিকা দিবা রানী কর জানান, গত শুক্রবার দুপুরে তাঁর বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত শৌচাগারে বিড়ালের বাচ্চার শব্দ শুনতে পান। সেখানে গিয়ে ছানাগুলোকে প্রথমে মনে করেন সাধারণ বিড়ালের বাচ্চা। তাই তিনি এগুলো উদ্ধার করে ঘরে নিয়ে যান। পরে ছানাগুলোকে দুধ ও ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ছানাগুলোকে খাওয়াতে ব্যর্থ হন। এগুলোকে নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন তিনি। তখন বিষয়টি চাউর হলে তিনি জানতে পারেন সাধারণ বিড়ালের বাচ্চা নয় এ ছানাগুলো। এগুলো মেছো বিড়ালের ছানা। 

দিবা রানী কর আরো জানান, বন বিভাগের লোকদের পরামর্শক্রমে পরদিন শনিবার উদ্ধারকৃত তিনটি ছানা আবার পরিত্যক্ত শৌচাগারে রেখে দেন তিনি। ওই দিন সন্ধ্যায় মা মেছো বিড়াল এসে ছানাগুলো নিয়ে যায়। 

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সিঙ্গুর এলাকাটি পাহাড়ি বন ও ছড়া এলাকা। তাই এদিকে বন্যপ্রাণীর আনাগোনা থাকে। ওই মা মেছো বিড়ালটি হয়তো ছানাগুলো পরিত্যক্ত শৌচাগারটির আশেপাশে মানুষের আনাগোনা না থাকায় সেখানে রেখে খাবার জোগাড়ের আশায় অন্যত্র চলে গিয়েছিল। 

পরিবেশকর্মী রিপন দে বলেন, সিলেট অঞ্চলে প্রায়ই মেছো বিড়ালের বাচ্চা উদ্ধারের খবর মিলে কিন্তু এই উদ্ধার এদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মেছো বিড়ালকে মানুষের পক্ষে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন। তাই কোথাও বাচ্চা পেলে সেখানেই রেখে দেওয়া উচিত। কয়েকটি ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে এটা বলা যায় যে, মা মেছো বিড়াল যখন বুঝতে পারে মানুষ তার বাচ্চাদের দেখে ফেলছে তখন বাচ্চাদের নিরাপত্তার জন্য সে বাচ্চাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়। 

রিপন দে বলেন, অতিরিক্ত মনযোগ আকর্ষণের জন্য মেছো বিড়ালকে মেছো বাঘ হিসেবে পরিচয় দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে থাকেন কেউ কেউ। মেছো বিড়ালকে বাঘ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন তা দুঃখজনক। এর ফলে এই প্রাণীকে ভয়ংকর ভেবে অনেকেই মেরে ফেলেন। মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি বন্যপ্রাণী নিয়ে সঠিক তথ্য উপস্থাপনের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের দায় আছে। গণমাধ্যমকর্মীরা সচেতন না হলে সাধারণ মানুষ সচেতন হবে না। 

এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (প্রকৃতি ও নিরাপত্তা) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, মেছো বিড়াল গহিন বনে থাকে না। মেছো বিড়াল লোকালয়ের আশেপাশে হাওর কিংবা ঝোপঝাড়ে থাকে। এটি হিংস্র প্রাণী নয়, তাই মেছো বিড়াল নিয়ে আতঙ্ক হওয়ার কিছু নেই। যে স্থান থেকে মেছো বিড়ালের বাচ্চাগুলো পাওয়া গেছে, সে স্থানেই আবার রেখে দেওয়ায় মা বিড়াল এসে বাচ্চাগুলো নিয়ে গেছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণের ১৩০০ কোটির এক টাকাও দেননি হলিডে ইনের মালিক

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

গণ–সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলেন বিএনপি নেতা

হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, সেনা ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত