Ajker Patrika

ঠায় দাঁড়িয়ে সেতুটি!

প্রতিনিধি
ঠায় দাঁড়িয়ে সেতুটি!

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ): সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে শান্তিপুর। নদীর ওপর রয়েছে পাকা সেতু আছে। কিন্তু সেতুর বয়স ৩ বছরের বেশি হয়ে গেলেও দুই পাশে মাটি ভরাট করে সড়ক তৈরি করা হয়নি। এ জন্য চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে আশপাশের তিনটি গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক বাসিন্দা।

তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বাদাঘাট-চানপুর সড়কে শান্তিপুর নদীর ওপর ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৭ সালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নির্মাণের পর সেতুর দুই পাশে মাটি ভরাট করা হয়নি। নির্মিত হয়নি সংযোগ সড়কও। তাই নদীর ওপর ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেতুটি।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হেমন্তে নদীটি শুকিয়ে গেলে চলাচল করা যায়। তবে বর্ষায় নদীটি ডুবে থাকার কারণে এ পথে যাতায়াত করতে গিয়ে পরতে হয় নানা সমস্যায়। তাঁদের অভিযোগ সেতু নির্মাণ হলেও ব্রিজ নির্মাণের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুর দুই পাশের এপ্রোচ সড়কের কাজ করেনি। এছাড়াও অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পে ইউপি সদস্য আবু তাহের মিয়াও শতভাগ মাটির কাজ না করায় ও সংযোগ সড়ক না থাকায় নির্মাণের পর থেকে একদিনের জন্যও ব্যবহার হয়নি সেতুটি।

উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এলজিইডি (সুনামগঞ্জ) হিলিপ প্রকল্প ৩২ লক্ষাধিক টাকা নির্মাণ ব্যয়ে ব্রিজের দরপত্র আহ্বান করে। আহ্বানের পর নির্মাণকাজের ঠিকাদারি পায় সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার পারভেজ এন্টারপ্রাইজ।

জানা যায়, উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বাদাঘাট-চানপুর সড়কটি দিয়ে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর, দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের ৩০ গ্রামের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ চলাচল করে। কিন্তু এই সড়কের শান্তিপুর নদীতে সেতুতে ওঠার জন্য দু-পাশে এপ্রোচ সড়কে মাটি নেই। সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালে কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্প থেকে উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন। শান্তিপুর বাজারের উত্তর পাশ হতে ব্রিজ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক প্রকল্পে ইউপি সদস্য আবু তাহের মিয়াকে প্রকল্প প্রধান করা হয়। প্রকল্প চেয়ারম্যান আবু তাহের প্রকল্পে শান্তিপুর বাজার হতে কাজ শুরু করে ব্রিজের উত্তর পাশে দু’শতাধিক ফিট দূর পর্যন্ত মাটির কাজ করান। অবশিষ্ট সংযোগ সড়কটি অসম্পূর্ণ রেখে দেয়। ফলে ২০১৮ সালে বর্ষায় সেই মাটিও সড়ে যায়।

এ ব্যাপারে স্থানীয় মাসুক মিয়া জানান, নির্মাণের পর ব্রিজটি ব্যবহার উপযোগী করতে প্রয়োজনীয় কোন পদক্ষেপ নেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সবার জন্য সেতুটি চলাচলের উপযোগী করতে হলে প্রোটেকশন ওয়াল দিয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে হবে। আর সেতুর সঙ্গে সংযোগ সড়ক হলে এলাকার অনেক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতো।

চানপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাশিদ বলেন, সংযোগ সড়কটি স্থাপন করে ব্রিজটি চলাচলের উপযোগী করা হলে আমরা সহজেই চানপুর-বাদাঘাট সড়ক ব্যবহার করে তাহিরপুর সদরে যাতায়াত করতে পারতাম, জনদুর্ভোগ কমে আসত বর্ষার সময়ও।

তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইকবাল করিব জানান, আমি একবারেই নতুন তাই এই সেতুটির বিষয়ে আমি অবগত নই, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, এই ব্রিজের সঙ্গে সড়কের সংযোগ না থাকায় ব্রিজটি কোন কাজেই আসছে না। ফলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে এই পথে চলাচলকারী সবাই।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, জনদুর্ভোগ লাগবে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতিহাস দরজায় কড়া নেড়ে বলছে, ১৯৭১ থেকে পাকিস্তান কি শেখেনি কিছুই

‘আমাদের মরদেহ বাড়িতে নিয়ো না’

কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের খামারবাড়ি অবরোধের ঘোষণা

মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীর পিঠে পাড়া দিয়ে অটোরিকশায় শহর ঘোরাল ছাত্রদল, সঙ্গে উচ্চ স্বরে গান

যশোরে আত্মগোপনে থাকা আ.লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত