Ajker Patrika

বড়লেখায় বিশুদ্ধ পানির সংকট  মোচনে চলছে নলকূপ উঁচুকরণ

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ জুন ২০২২, ১৫: ২৩
বড়লেখায় বিশুদ্ধ পানির সংকট  মোচনে চলছে নলকূপ উঁচুকরণ

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় বন্যার পানিতে অধিকাংশ এলাকার নলকূপ তলিয়ে গেছে। এতে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। ফলে বিপাকে পড়েছে এসব এলাকার বানভাসি মানুষেরা। তারা বন্যার পানি পান করার পাশাপাশি থালাবাসন ধোয়াসহ রান্নাবান্নার কাজে ব্যবহার করছে। এতে অনেকে পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানির সংকট দূর করতে উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এর অংশ হিসেবে উপজেলার নলকূপগুলো উঁচুকরণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এতে বানভাসি মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে ইতিমধ্যে ২০টি নলকূপ উঁচু করা হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া এসব নলকূপের মধ্যে ১২টি ছিল আশ্রয়কেন্দ্রর এবং ৮টি ছিল স্থানীয় বিভিন্ন বাড়িতে। নলকূপ উঁচুকরণ শুরু হওয়ায় এ উপজেলার বন্যাকবলিত মানুষের বিশুদ্ধ পানির সংকট দূর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পর্যায়ক্রমে অবশিষ্ট নলকূপগুলোও উঁচু করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে হাকালুকি হাওরে আকস্মিক বন্যায় বড়লেখা উপজেলার ২০০ গ্রাম প্লাবিত হয়। এসব এলাকার নলকূপগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এ কারণে অনেকেই বন্যার পানি পান করছে। আবার নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজকর্মে ব্যবহার করছে। এ কারণে উপজেলার বর্ণি, তালিমপুর, সুজানগর, নিজবাহাদুরপুর, বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ১২টি আশ্রয়কেন্দ্র ও আটটি বাড়ির নলকূপ উঁচু করেছে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। নলকূপ উঁচুকরণ সার্বক্ষণিক তদারক করছেন অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালেদুজ্জামান।

দেখা গেছে, বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া বর্ণি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়, ফবিরবাজার উচ্চবিদ্যালয়, এম মুন্তাজিম কলেজ, টেকাহালি উচ্চবিদ্যালয়, সোনাতোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ছোটলেখা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রের নলকূপ উঁচু করা হয়েছে। এ ছাড়া হাওরপারের হাল্লা গ্রামের আব্দুল মতলিব ও মুর্শিবাদকুরা গ্রামের দফতর আলীর বাড়ির নলকূপ উঁচু করা হয়েছে। এসব নলকূপ থেকে পানি সংগ্রহ করছে বানভাসি অনেক মানুষ। 
হাল্লা গ্রামের আব্দুল মতলিব বলেন, বন্যার পানিতে বাড়ির নলকূপ তলিয়ে গিয়েছিল। এতে তাঁদের বিশুদ্ধ পানির জন্য সমস্যায় পড়তে হয়। এখন তাঁর নলকূপ থেকে বিশুদ্ধ পানি ওঠাতে পারছেন। কারণ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর তাঁর নলকূপটি উঁচু করে দিয়েছে।

আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা কয়েকজন বলেন, তাঁদের বাড়ি-ঘরে পানি উঠেছে। বাড়ির নলকূপও ডুবে গেছে। বাড়িতে টিকতে না পেরে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আশ্রয়কেন্দ্রের চারদিকেও পানি। এখানকার নলকূপগুলো ডুবে গিয়েছিল। প্রথমে পানির জন্য কষ্ট করতে হয়েছে। পরে সংশ্লিষ্টরা নলকূপ উঁচু করেছেন। এখন তাঁরা বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছেন। এতে তাঁদের বিশুদ্ধ পানির সংকট দূর হয়েছে।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপসহকারী প্রকৌশলী মঈন উদ্দিন বলেন, ‘বিশুদ্ধ পানির সংকট দূর করতে বন্যাকবলিত এলাকার ১২টি আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি ৮টি বাড়ির নলকূপের প্ল্যাটফর্ম উঁচু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোও উঁচু করা হচ্ছে। তবে কিছু এলাকার নলকূপ একেবারে পানি নিচে তলিয়ে গেছে। সেগুলো উঁচু করতে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে।’

মঈন উদ্দিন আরও বলেন, ‘এ ছাড়া আমরা এ পর্যন্ত পানি বিশুদ্ধকরণে ২৩ হাজার ট্যাবলেট বিতরণ করেছি। পাশাপাশি ৫০টি জারিকেন (পানি রাখার পাত্র) বিতরণ করা হয়েছে। আরও ২৫ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের বিশুদ্ধ পানির সংকট দূর করতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বদ্ধপরিকর।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত