ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে তিন ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে ‘নর্থস এগ লিমিটেড’ নামে একটি পোলট্রি খামার। পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ পাঁচ বছর আগে এই খামার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।
স্থানীয়রা বলেন, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও স্বাস্থ্য খাতের বিতর্কিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম ওরফে মিঠু এই প্রতিষ্ঠানের মালিক। তবে এর সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো নথিপত্র পাওয়া যায়নি।
এই খামার সদর উপজেলার দৌলতপুর ও গৌরীপুর মৌজার কয়েক গ্রামের মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খামারের বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। তীব্র দুর্গন্ধে ওই দুই মৌজার পাঁচ-সাত গ্রামের বাসিন্দা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, ২০০৯ সালে সদর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে প্রায় ৯০ বিঘা জমির ওপর নর্থস এগ লিমিটেড পোলট্রি খামার স্থাপন করা হয়।
আজ শুক্রবার দৌলতপুর এলাকায় সরেজমিন গিয়ে খামারের ব্যবস্থাপক ডা. ফেরদৌস আলমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এই খামারে তিন লাখের বেশি মুরগি আছে। এসব মুরগির বিষ্ঠা বিক্রি করা হয় ব্যবসায়ী ও মৎস্য খামারিদের কাছে।
খামারটির ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, পেছনে বিষ্ঠা ফেলার ভাগাড়। এর দেয়াল ঘেঁষেই জনবসতি। গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, বিষ্ঠার দুর্গন্ধে টেকা দায়। রোদ উঠলে বাতাসে গন্ধ আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ে। একই গ্রামের খাদেজা বেগমসহ কয়েকজন নারী অভিযোগ করে বলেন, ‘গন্ধে বমি আসে। তৃপ্তি নিয়ে খাওয়াদাওয়া করা যায় না! মশা-মাছির উপদ্রবের কারণে রাত-দিন মশারি টাঙিয়ে থাকতে হয়।’ শিউলি আক্তার বলেন, ‘গন্ধে ঘুমাতেও কষ্ট হয়।’ উপজেলা পরিষদের বলাকা উদ্যান নামে একটি বিনোদন পার্কের ব্যবস্থাপক হাসান আলী বলেন, ‘মুরগির বিষ্ঠার গন্ধ ও মশা-মাছি-পোকার উপদ্রবের কারণে পার্কে কেউ আসতে চায় না।’
একই চিত্র দেখা যায় গৌরীপুর, বৌরাণী, কুমিল্লাহাড়ীসহ কয়েকটি গ্রামে। দৌলতপুর গ্রামের দিনমজুর সিরাজুল বলেন, ‘গরিব মানুষের কথা কে শুনব! খামারের গন্ধের কথা বলতে গেলেই বিপদে পড়তে হয়। তার ওপর আবার “বেনজীরের খামার”!’
ঠাকুরগাঁও আড়াই শ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট তোজাম্মেল হক বলেন, ‘পোলট্রি বর্জ্যের কণা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকে ফুসফুসের রোগের কারণ হতে পারে। এর থেকে শ্বাসকষ্ট এবং হার্টের ক্ষতি হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। এসব খামারসংলগ্ন এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে থাকে।’
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আলাল বলেন, ‘দুর্গন্ধে দুর্ভোগে পড়েছে দৌলতপুর ও গৌরীপুর মৌজার কয়েক এলাকার মানুষ। আর লাভবান হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এসব ব্যক্তি অত্যন্ত প্রভাবশালী, এদের হাত অনেক লম্বা। তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। ভুক্তভোগীরা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে প্রতিকার পাননি। পরে প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠেন। আন্দোলনকারীদের দমন করতে ওই খামারে ছুটে আসেন বেনজীর আহমেদ।’
আলাউদ্দিন বলেন, ‘২০১৮ সালে আকাশপথে ঠাকুরগাঁওয়ে আসেন বেনজীর আহমেদ। তাঁকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি নেমেছিল সদর উপজেলার বড়খোচাবাড়ি এস কে দৌলতপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। পরে তিনি সড়কপথে খামারে যান এবং প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দেখেন। তখন থেকে সবাই এই খামারের নাম বলেন “বেনজীর খামার”।’
তবে খামার ব্যবস্থাপক ডা. ফেরদৌস আলম দুর্গন্ধ ছড়ানোর কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, গন্ধ যাতে খামারের বাইরে না যায়, সে ব্যবস্থা তাঁদের নেওয়া আছে। বিষ্ঠা থেকে সার উৎপাদন করা হচ্ছে।
এই খামারের মালিক সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ কি না জানতে চাইলে ফেরদৌস আলম বলেন, ‘আমি জানি না। তবে তিনি এই খামারে এসেছিলেন।’
ওই খামারের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে কি না জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।’
বেনজীর আহমেদ সম্পকিত আরও খবর পড়ুন—
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে তিন ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে ‘নর্থস এগ লিমিটেড’ নামে একটি পোলট্রি খামার। পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ পাঁচ বছর আগে এই খামার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।
স্থানীয়রা বলেন, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও স্বাস্থ্য খাতের বিতর্কিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম ওরফে মিঠু এই প্রতিষ্ঠানের মালিক। তবে এর সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো নথিপত্র পাওয়া যায়নি।
এই খামার সদর উপজেলার দৌলতপুর ও গৌরীপুর মৌজার কয়েক গ্রামের মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খামারের বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। তীব্র দুর্গন্ধে ওই দুই মৌজার পাঁচ-সাত গ্রামের বাসিন্দা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, ২০০৯ সালে সদর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে প্রায় ৯০ বিঘা জমির ওপর নর্থস এগ লিমিটেড পোলট্রি খামার স্থাপন করা হয়।
আজ শুক্রবার দৌলতপুর এলাকায় সরেজমিন গিয়ে খামারের ব্যবস্থাপক ডা. ফেরদৌস আলমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এই খামারে তিন লাখের বেশি মুরগি আছে। এসব মুরগির বিষ্ঠা বিক্রি করা হয় ব্যবসায়ী ও মৎস্য খামারিদের কাছে।
খামারটির ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, পেছনে বিষ্ঠা ফেলার ভাগাড়। এর দেয়াল ঘেঁষেই জনবসতি। গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, বিষ্ঠার দুর্গন্ধে টেকা দায়। রোদ উঠলে বাতাসে গন্ধ আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ে। একই গ্রামের খাদেজা বেগমসহ কয়েকজন নারী অভিযোগ করে বলেন, ‘গন্ধে বমি আসে। তৃপ্তি নিয়ে খাওয়াদাওয়া করা যায় না! মশা-মাছির উপদ্রবের কারণে রাত-দিন মশারি টাঙিয়ে থাকতে হয়।’ শিউলি আক্তার বলেন, ‘গন্ধে ঘুমাতেও কষ্ট হয়।’ উপজেলা পরিষদের বলাকা উদ্যান নামে একটি বিনোদন পার্কের ব্যবস্থাপক হাসান আলী বলেন, ‘মুরগির বিষ্ঠার গন্ধ ও মশা-মাছি-পোকার উপদ্রবের কারণে পার্কে কেউ আসতে চায় না।’
একই চিত্র দেখা যায় গৌরীপুর, বৌরাণী, কুমিল্লাহাড়ীসহ কয়েকটি গ্রামে। দৌলতপুর গ্রামের দিনমজুর সিরাজুল বলেন, ‘গরিব মানুষের কথা কে শুনব! খামারের গন্ধের কথা বলতে গেলেই বিপদে পড়তে হয়। তার ওপর আবার “বেনজীরের খামার”!’
ঠাকুরগাঁও আড়াই শ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট তোজাম্মেল হক বলেন, ‘পোলট্রি বর্জ্যের কণা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকে ফুসফুসের রোগের কারণ হতে পারে। এর থেকে শ্বাসকষ্ট এবং হার্টের ক্ষতি হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। এসব খামারসংলগ্ন এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে থাকে।’
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আলাল বলেন, ‘দুর্গন্ধে দুর্ভোগে পড়েছে দৌলতপুর ও গৌরীপুর মৌজার কয়েক এলাকার মানুষ। আর লাভবান হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এসব ব্যক্তি অত্যন্ত প্রভাবশালী, এদের হাত অনেক লম্বা। তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। ভুক্তভোগীরা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে প্রতিকার পাননি। পরে প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠেন। আন্দোলনকারীদের দমন করতে ওই খামারে ছুটে আসেন বেনজীর আহমেদ।’
আলাউদ্দিন বলেন, ‘২০১৮ সালে আকাশপথে ঠাকুরগাঁওয়ে আসেন বেনজীর আহমেদ। তাঁকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি নেমেছিল সদর উপজেলার বড়খোচাবাড়ি এস কে দৌলতপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। পরে তিনি সড়কপথে খামারে যান এবং প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দেখেন। তখন থেকে সবাই এই খামারের নাম বলেন “বেনজীর খামার”।’
তবে খামার ব্যবস্থাপক ডা. ফেরদৌস আলম দুর্গন্ধ ছড়ানোর কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, গন্ধ যাতে খামারের বাইরে না যায়, সে ব্যবস্থা তাঁদের নেওয়া আছে। বিষ্ঠা থেকে সার উৎপাদন করা হচ্ছে।
এই খামারের মালিক সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ কি না জানতে চাইলে ফেরদৌস আলম বলেন, ‘আমি জানি না। তবে তিনি এই খামারে এসেছিলেন।’
ওই খামারের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে কি না জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।’
বেনজীর আহমেদ সম্পকিত আরও খবর পড়ুন—
রাজধানীর দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী ভবনটির কাঠামোই দৃশ্যত সোমবারের বিপর্যয়কে এতটা প্রাণঘাতী করে তুলেছে। সরেজমিন ঘুরে এবং ভুক্তভোগী অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণাই পাওয়া গেছে।
১ ঘণ্টা আগেঝালকাঠি শহরের কিফাইতনগর এলাকায় দেড় কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত আরসিসি সড়ক উদ্বোধনের মাত্র দুই মাসের মাথায় ধসে পড়েছে। খালের পাড়ঘেঁষা গাইড ওয়াল ভেঙে পড়ায় সড়কের একটি বড় অংশ এখন কার্যত শূন্যে ঝুলছে। ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে পুরো রাস্তা ধসে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
৩ ঘণ্টা আগেস্বপ্নের দেশ ইতালি। সেখানে গিয়ে নিজেরসহ পরিবারের সব স্বপ্ন পূরণ করবেন। এই আশায় লিবিয়া হয়ে অবৈধভাবে ইউরোপের দেশটিতে যাওয়ার জন্য বের হয়ে নিখোঁজ আছেন মাদারীপুরের রাজৈরের ১৪ যুবক। পাঁচ মাস ধরে তাঁদের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা।
৩ ঘণ্টা আগেবাবার কপালে চুমু দিয়ে স্কুলে গিয়েছিল সারিয়া আক্তার। আর মাকে সালাম করে বিদায় নিয়েছিল জুনায়েত হাসান। হাসিমুখে স্কুলে যাওয়া এই দুই শিশু দিনশেষে ঘরে ফেরে লাশ হয়ে। সম্পর্কে তারা চাচাতো ভাই-বোন। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ‘সেকশন ক্লাউডের’ শিক্ষার্থী ছিল তারা। বাংলা মাধ্যমের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত এই দুই ভ
৩ ঘণ্টা আগে