Ajker Patrika

গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও প্রশিকার ব্যবস্থাপক, মাঠকর্মীর ‘আত্মহত্যা’

গাইবান্ধা ও ফুলছড়ি প্রতিনিধি
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মদনের পাড়া গ্রামের একটি ভাড়া বাসা থেকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রশিকার মাঠকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মদনের পাড়া গ্রামের একটি ভাড়া বাসা থেকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রশিকার মাঠকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধার ফুলছড়িতে বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) প্রশিকার এক নারী মাঠকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম হিরা খাতুন (৩৩)। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের মদনের পাড়া গ্রামের একটি ভাড়া বাসা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

হিরা খাতুন নাটোরের সিংড়া উপজেলার বনগ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে এবং প্রশিকার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া শাখায় মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশিকার কঞ্চিপাড়া শাখার ব্যবস্থাপক সুরেষ চন্দ্র বর্মণ গ্রাহকদের প্রায় ১ কোটি টাকা নিয়ে গত ঈদুল ফিতরের আগে পালিয়েছেন। গ্রাহকেরা তাঁদের টাকা ফেরতের জন্য হিরাসহ শাখার দায়িত্বরত কর্মীদের চাপ দেন। গ্রাহকদের টাকার চাপে তিনি আত্মহত্যা করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হিরা খাতুন গতকাল বুধবার প্রশিকা অফিসে কাজ শেষে বাসায় ফেরেন। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বাসায় মোটরের মাধ্যমে পানি তুলে গোসলও করেন। কিন্তু অফিসে না যাওয়ায় সহকর্মীরা তাঁর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও কোনো সাড়া পাননি। পরে তাঁরা বাসায় গিয়ে দরজায় ধাক্কাধাক্কি করেন। তবু সাড়া না পেয়ে জানালার ফাঁক দিয়ে দেখেন, ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় তাঁর লাশ ঝুলছে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে হিরার লাশ উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

বাসার মালিক শহিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা শুনেছি, প্রশিকার মদনের পাড়া শাখার ব্যবস্থাপক সুরেষ চন্দ্র বর্মণ গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে গত রোজার ঈদের সময় পালিয়েছেন। গ্রাহকেরা তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য কর্মী হিরাসহ শাখা কর্তৃপক্ষকে চাপ দেন। গ্রাহকদের এই টাকার চাপে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

প্রশিকার বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আনন্দ মোহন দাবি করেন, ‘মদনের পাড়া শাখার ব্যবস্থাপক সুরেষ চন্দ্র ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়ে এখনো অফিসে যোগদান করেননি। তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে পারি, তিনি এ শাখার প্রায় কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন। বিষয়টি তদন্ত করছি। গ্রাহকদের যে পরিমাণ টাকা নিয়ে গেছেন, তাঁদের প্রমাণ সাপেক্ষে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু হিরা কেন আত্মহত্যা করেছেন, তা আমার জানা নেই।’

কঞ্চিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহেল রানা সালু বলেন, ‘আমি কিছুদিন ধরে শুনছি, প্রশিকা মদনের পাড়া শাখার ব্যবস্থাপক নাকি গ্রাহকদের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছেন। সে কারণে তাদের কর্মী আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।’

ফুলছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এনজিও কর্মী হিরা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাঁর স্বজনেরা লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত