Ajker Patrika

মা-মেয়েকে উত্ত্যক্তের জের, মাইকিং করে সংঘর্ষে দুই গ্রামবাসী

রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দুই গ্রামের লোকজন মাইকিং করে সংঘর্ষে জড়ায়। ছবি: সংগৃহীত
কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দুই গ্রামের লোকজন মাইকিং করে সংঘর্ষে জড়ায়। ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দুই গ্রামবাসীর মধ্যে মাইকিং করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় নদীপারের বেশ কয়েকটি ঘর ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয়। ঈদে চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতুতে ঘুরতে যাওয়া মা-মেয়েকে উত্ত্যক্তের জেরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে শুরু হয়ে দফায় দফায় চলা এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে প্রথমে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চিলমারী থানা-পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে দুই পক্ষের শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে অংশ নেন। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি টিম দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

চিলমারীর রমনা ইউনিয়নের সাজু ও মোতালেব নামের দুই যুবকসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৪ এপ্রিল ওই ইউনিয়নের দক্ষিণ খড়খড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মা ও মেয়ে দ্বিতীয় তিস্তা সেতুতে ঘুরতে গেলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের শহরের মোড় এলাকার তিন যুবক গোপনে ছবি তোলে এবং উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করেন। পরে মা-মেয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করলে ওই যুবকেরা তাঁদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। বিষয়টি ঘটনাস্থলে উপস্থিত রমনা ইউনিয়নের ডাঙ্গার চর এলাকার কয়েক যুবকের চোখে পড়লে তাঁরা প্রতিবাদ করেন। এতে দুই পক্ষের যুবকদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার জেরে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

বৃহস্পতিবার সকালে রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খড়খড়িয়া এলাকার আলমগীর হোসেন (৩৫) তাঁদের ভুট্টাখেত দেখতে গেলে এক সপ্তাহ আগের ওই ঘটনার জেরে শহরের মোড় এলাকার মিস্টারসহ কয়েকজন যুবক মিলে তাঁকে মারধর করেন। খবর পেয়ে তাঁর পরিবারের লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় আলমগীরকে উদ্ধার করে। প্রথমে তাঁকে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ঘটনার পর মাইকিং করে দুই গ্রামের মানুষ সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে উভয় গ্রামের ২০-২৫ জন আহত হন। খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। পরে সেনাবাহিনী ও দুই জেলার পুলিশ প্রশাসন উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করে।

কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দুই গ্রামের লোকজন মাইকিং করে সংঘর্ষে জড়ায়। ছবি: সংগৃহীত
কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দুই গ্রামের লোকজন মাইকিং করে সংঘর্ষে জড়ায়। ছবি: সংগৃহীত

চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রহিম বলেন, দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। পরে দুপুরে ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর একটি টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই গ্রামবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। তাঁরা আর সংঘর্ষে জড়াবেন না বলে আশ্বস্ত করেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।

সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ঘটনার পর পুলিশ, প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উভয় পক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিষয়টি সমাধানের প্রস্তাবে উভয় পক্ষের লোকজন রাজি হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত