Ajker Patrika

‘মনের অজান্তে’ দুজনকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন, বাবা-মা মেনে নেওয়ায় খুশি রোহিনী

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২২, ১৯: ৫৮
‘মনের অজান্তে’ দুজনকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন, বাবা-মা মেনে নেওয়ায় খুশি রোহিনী

স্বামীর ঘরেই অবস্থান করছেন রোহিনী চন্দ্র বর্মণের দুই স্ত্রী ইতি রাণী ও মমতা রাণী। মা-বাবাসহ আত্মীয়স্বজনদের ছেড়ে এলেও শ্বশুর-শাশুড়ির ভালোবাসায় আপ্লুত তাঁরা।

আজ শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় রোহিনীর পরিবারের সঙ্গে। রোহিনীর বাবা যামিনী চন্দ্র রায় বলেন, ‘এত দিন আমার দুই ছেলে-মেয়ে ছিল, এখন থেকে চার ছেলে-মেয়ের বাবা আমি। ছেলে হয়তো ভুল করেছে, তার বয়স এবং আবেগের কারণে, তাই বলে কি আমি তাকে ফেলে দিব? ঘটনার সন্তোষজনক পরিসমাপ্তি  ঘটানো যেতো, আমরা চেষ্টা করেছিও, কিন্তু পারিনি। সুবিধাবাদী একটি মহলের কারণে আজ আমাদের এই পরিস্থিতি। ভগবান একজন আছেন তিনি দেখবেন, আমি নিরাশ হইনি। আমার দুই পুত্রবধূ এখন আমার ঘরের লক্ষ্মী।’

 গত ২০ এপ্রিল পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীদুয়ার গ্রামে দুই প্রেমিকাকে এক বৈঠকে বিয়ে করেছেন রোহিনী চন্দ্র বর্মণ (২৫)। এই বিয়ের ছবি-ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।  

ব্যতিক্রম এই ঘটনা সাধারণ মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনার পর থেকেই রোহিনীর বাড়িতে জোড়া বউ দেখতে ভিড় করছেন মানুষ।

জানা গেছে, রোহিনী চন্দ্র বর্মণ জেলার আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীদ্বার এলাকার যামিনী চন্দ্র বর্মণের ছেলে। রোহিনী প্রথম স্ত্রী ইতি রাণী একই ইউনিয়নের গাঠিশাপাড়া এলাকার গিরিশ চন্দ্রের মেয়ে। আরেক স্ত্রী মমতা রাণী একই  ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্মীদ্বার এলাকার টনোকিশোর রায়ের মেয়ে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বলরামপুর ইউনিয়নের গাঠিয়াপাড়া এলাকার গিরিশ চন্দ্রের মেয়ে ইতি রাণীর সঙ্গে রোহিনীর দীর্ঘ দিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কয়েক মাসে আগে দুজনে মন্দির গিয়ে বিয়ে করেন এবং সে কথা গোপন রাখেন। এর মধ্যে রোহিনী মমতা রাণী সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যান। গত ১২ এপ্রিল রাতে মমতার সঙ্গে দেখা করতে যান রোহিনী। সেখানে বাড়ির লোকজন রোহিনীকে আটকে রাখেন। পরদিন তাঁদের বিয়ে দেন। রোহিনীর বিয়ের খবর শুনে গত বুধবার সকালে তাঁর বাড়িতে গিয়ে অনশন শুরু করেন ইতি রাণী। রাতে তিন পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ইতি ও মমতার সঙ্গে রোহিনীর বিয়ে  সম্পন্ন হয়।

এ বিষয়ে আজ শুক্রবার সরেজমিনে রোহিনী বর্মণের পরিবারের সঙ্গে কথা হয়। রোহিনী বলেন, ‘আমরা দুই ভাই-বোন। আমার বাবা-মা অনেক কষ্ট করেই এই অজপাড়াগাঁয়ে আমাদের পড়ালেখা শিখিয়েছে। আমি মেকানিক্যালে ডিপ্লোমা করে বিএসসিতে ভর্তি হয়েছি। চাকরির চেষ্টা করছি। আমার বোন প্রিয়াঙ্কা বীথি রাণী কলেজে পড়ে। 

দুই জনের সঙ্গে প্রেম সম্পর্কে রোহিনী বলেন, ‘মনের অজান্তে কখন যে ভালোবাসা হয়ে গেল যার পরিণতি এমন হবে ভাবতেই পারিনি। এমন পরিস্থিতিতে  সবাইকে চিনতে পেরেছি— কে আপন আর কে পর। আমার বাবা-মা আমাদের গ্রহণ করেছে, আর কিছু চাই না।’

কথা হয় রোহিনীর জ্যেঠা সুধীর চন্দ্র বর্মণের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা অতি সাধারণ মানুষ। সন্তানের ভুলের কারণে সম্মান হারিয়ে গ্লানি বহন করতে হচ্ছে। সমাজপতিরা পারত সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানে এগিয়ে আসতে। কিন্তু তা তারা করেনি। আমরা আমাদের পুত্রবধূদের মেনে নিয়েছি। তারা ভালোভাবে জীবনযাপন করুক, সেটাই চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘ক্রিকেটাররা আমাকে ন্যুড পাঠাত’, বিস্ফোরক ভারতের সাবেক কোচের সন্তান

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

পরপর সংঘর্ষে উড়ে গেল বাসের ছাদ, যাত্রীসহ ৫ কিমি নিয়ে গেলেন চালক

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত