Ajker Patrika

অজ্ঞাত ১২০০ লোকের ভিজিএফের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে 

প্রতিনিধি, নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম): 
অজ্ঞাত ১২০০ লোকের ভিজিএফের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে 

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভেরখাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকমল হোসেনের বিরুদ্ধে ভিজিএফের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়নটির কয়েকজন ইউপি সদস্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আকারে এ অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ঈদুল ফিতর ও করোনায় উপজেলার দরিদ্র, অতিদরিদ্র, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ ৬ হাজার ৬৭১ জনের জন্য ভিজিএফের নগদ ৪৫০ টাকা করে মোট ৩০ লাখ ১ হাজার ৯৫০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। চেয়ারম্যান আকমল হোসেন বিভিন্ন জনের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ১২শ নাম দিয়ে প্রায় ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। 

সরেজমিনে দেখা যায়, একই পরিবারের একাধিক সদস্য, চাকরিজীবী, সচ্ছল, এবং ইউনিয়নের বাইরের বাসিন্দার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অনেকে জানেনই না যে তাঁদের নাম ভিজিএফের তালিকায় রয়েছে। যেসব পরিবারের একাধিক নাম রয়েছে সেসব পরিবারেরও একজনকে টাকা দেওয়া হয়েছে। 

তালিকায় ৪৩৬ নম্বরে নাম থাকা খাইরুল আলমের পরিবারের তিন সন্তানের নাম থাকলেও টাকা পেয়েছেন শুধু তাঁর মেয়ে। তালিকায় ৭০১ নম্বরে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষক কমল চন্দ্র জানেনই না কীভাবে তালিকায় তাঁর এবং তাঁর স্ত্রী পপি রাণীর নাম গেল। তালিকায় ৪১৩ নম্বরে থাকা আবুল কাশেমের নাম ভিজিএফ’র তালিকায় থাকলেও তিনি জানেন না, টাকাও পাননি। নামের পাশে মোবাইল ফোন নম্বরে ফোন দিয়ে দেখা যায়, তালিকায় ২৪৮ নম্বরে থাকা নূরুন্নাহার পীরগঞ্জের এবং ২৫৮২ নম্বরের মনিরুজ্জামান গাজিপুরের বাসিন্দা। এমন জানা-অজানা লোকের নামের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ইউপি সদস্যদের। 
 
ভিজিএফ ছাড়াও উপজেলা পরিষদ থেকে প্রাপ্ত ইউনিয়নটির বাৎসরিক ভূমি হস্তান্তর কর ১ শতাংশ এবং হাট বাজার ব্যবস্থাপনার ১৫ শতাংশ টাকা উন্নয়নকাজে ব্যয় না করে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। ইউনিয়নটিতে ২০২০-২০২১ সালের টিআর, কাবিখা, এডিপি, এলজিএসপিসহ অন্যান্য উন্নয়ন বরাদ্দ নয়ছয় করার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। 
 
ইউপি সদস্য ছইফুর রহমান জানান, এবার ভিজিএফ নগদ টাকা হওয়ায় ইউপি সদস্যদের কাছ থেকে অল্প কিছু নাম নিলেও চেয়ারম্যান ৪ হাজার ২৭১টি নাম রাখেন। এর মাঝে প্রায় ১২শ নামের বিপরীতে বরাদ্দের টাকা তিনি আত্মসাৎ করেন। 

ইউপি সদস্য হুজুর আলী বলেন, ইউনিয়নটির সকল প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন না করেই সিংহভাগ টাকা আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান। তিনি আরও জানান, চেয়ারম্যানের অনিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। 
এমন অভিযোগের প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান আকমল হোসেন বলেন, শুরু থেকেই পরিষদের দুই-তিনজন সদস্য আমার বিরুদ্ধে লেগে আছে। তাঁরা ইতিপূর্বে আমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ করেছিল সেগুলো মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। ভিজিএফ এবং উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে কোন দুর্নীতি হয়নি। তারা আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ করেছে। 
 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর আহমেদ মাছুম বলেন, ভিজিএফ’র টাকা পায়নি এ রকম কোন সুবিধাভোগী আমার কাছে অভিযোগ করেনি। ইউপি সদস্যদের অভিযোগটি এখন পর্যন্ত দেখিনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত