Ajker Patrika

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হলেন ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
শামসুল আলম সরকার ওরফে মোস্তফা শামসুল। ছবি: সংগৃহীত
শামসুল আলম সরকার ওরফে মোস্তফা শামসুল। ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার উমর মজিদ ইউনিয়নের কালীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন শামসুল আলম সরকার ওরফে মোস্তফা শামসুল। তিনি একজন সরকারি কর্মচারী হয়েও একটি রাজনৈতিক দলের গুরুপূর্ণ পদ দখলে রেখেছেন। অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে। যা সরকারি চাকরিবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন।

সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব পদে দায়িত্ব নেওয়ায় তাঁর নিজ দলসহ প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর বিধি-২৫(১)-এ বলা হয়েছে, ‘কোনো সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দল বা তাদের অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কোনোভাবে যুক্ত হতে বা কোনো প্রকারে অংশগ্রহণ বা সহযোগিতা করতে পারবেন না।’ বিধি ২৫(৩)-এ বলা হয়েছে, ‘কোনো সরকারি কর্মচারী আইন পরিষদ নির্বাচনে কোনো প্রকার প্রচারণা অথবা অন্য কোনোভাবে হস্তক্ষেপ বা প্রভাব প্রয়োগ অথবা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।’

গত ৩০ এপ্রিল উমর মজিদ ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। সরকারি চাকরিজীবীদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অংশগ্রহণ নিষেধ থাকলেও শিক্ষক শামসুল আলম বিধি ভঙ্গ করে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব পদ বাগিয়ে নিয়েছেন।

শামসুল আলম সরকার ওরফে মোস্তফা শামসুল। ছবি: সংগৃহীত
শামসুল আলম সরকার ওরফে মোস্তফা শামসুল। ছবি: সংগৃহীত

এ নিয়ে ১৮ মে আবু সাঈদ সরকার নামের আহ্বায়ক কমিটির এক সদস্য কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের (ডিপিইও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। ডিপিইও স্বপন কুমার রায় চৌধুরী অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ডিপিও স্বপন কুমার বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের রাজনৈতিক দল কিংবা কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ওই শিক্ষককে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব পদে থাকার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। তাঁকে সতর্ক করা হয়েছে। এরপরও তিনি রাজনৈতিক দলের পদ ছেড়ে না দিলে তাঁর বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে ডিপিইওর মৌখিক সতর্কবার্তার পরও ওই শিক্ষক দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে চলছেন বলে ইউনিয়ন বিএনপির একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বিএনপির কমিটি থেকে পদত্যাগ না করে ২২ মে কমিটির পরিচিতি পর্বসহ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য সভা আহ্বান করে তাতে অংশও নিয়েছেন। ইউনিয়ন বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অভিযোগকারী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য আবু সাঈদ সরকার বলেন, ‘ওই শিক্ষক সরকারি চাকরি করেও কীভাবে রাজনৈতিক দলের পদ বাগিয়ে নিতে পারেন? অর্থের বিনিময়ে পদ-পদবি পেয়েছেন বলে স্থানীয় বিএনপিতে আলোচনা আছে। আমি লিখিত অভিযোগ দিলেও এখনো ওই শিক্ষক দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন।’

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন বিরোধী দলের সময় সে দলে ছিল। একটা লোক নিয়া আপনাদের এত নাড়ানাড়ির দরকার নাই। হইছে হইছে। আপনি যে বিধিমালার কথা বলতেছেন, সেটা কমবেশি আমরাও জানি। তারপরও একটা লোককে পদ দেওয়া হইছে। এটা আমাদের নেতারাও জানেন। এখন সে (শিক্ষক শামসুল) চাকরি করবে না দলের পদে থাকবে, সেটা তাকে জিজ্ঞাসা করেন।’

জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক শামসুল আলম সরকার বলেন, ‘আমি দলীয় পদ ছেড়ে দেব। আর কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নেব না। এ নিয়ে ডিপিইও স্যারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্বে ১৮৬ দেশের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ মাত্র একটি: গবেষণা

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধান বিচারপতি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পদত্যাগের নাটক সাজানো হয়: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

শুধু নোটিশে চাকরি হারাবেন সরকারি কর্মচারীরা, আপিলের সুযোগ নেই

আপনার ছেলেমানুষি মানায় না: প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে দুদু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত