শিপুল ইসলাম, রংপুর
রংপুরের তারাগঞ্জের প্রামাণিকপাড়া গ্রামের সবজিচাষি আশরাফুল আলম। প্রতিদিন খেত থেকে সবজি তুলে হাটে নিয়ে যান বিক্রির জন্য। কিন্তু হাটে তাঁর জন্য কোনো নির্ধারিত জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়ে সড়কের ওপর বসে বিক্রি করেন নিজের উৎপাদিত শাকসবজি। অথচ হাটের ৫০ গজ দূরে কৃষকদের জন্য ২ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারিভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ‘ইকরচালী কৃষিবাজার’। কিন্তু সেখানে নেই কোনো কৃষক বা ক্রেতা-বিক্রেতা। দেড় যুগেও চালু না হওয়ায় সেটি এখন জুয়া-মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
আশরাফুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, ‘কষ্ট করে শাক-সবজি ফলাই। পাইকারকে দিলে তো উৎপাদন খরচই ওঠে না। নিজে বেচি দুই টাকা লাভের আশায়। কিন্তু হাটে আসি জায়গা পাই না। রাস্তায় বসি, পথচারীদের গালমন্দ খাই। আমার মতো প্রতিদিন শতাধিক কৃষক রাস্তায় বসে সবজি বেচি। কিন্তু বাজারের পাশে একটা কৃষি মার্কেট বানাইছে, ওটা ১৬ বছর থাকি বন্ধ। হামরা সবজি বেচার পাই না, ওইটা মানুষ জুয়া খেলায় নেশা করে।’
এই আক্ষেপ শুধু ইকরচালীর কৃষক আশরাফুল ইসলামের নয়; রংপুর বিভাগের হাজারো কৃষকের। যাঁরা জায়গার অভাবে কষ্টে উপার্জিত ফসল বিক্রির জন্য হাটে জায়গা না পেয়ে বাধ্য হন ফড়িয়াদের হাতে তুলে দিতে। সরকারিভাবে কোটি টাকা ব্যয় কৃষকদের জন্য কৃষিবাজার গড়ে তোলা হলেও তদারকি ও ব্যবস্থাপনার অভাবে সেগুলোর কোনোটি কসাইখানা, কোনোটিতে জুয়া মাদকের আসর, আবার কোনোটি কমিউনিটি সেন্টার, ব্যায়ামাগার হিসেবে গড়ে উঠেছে।
রংপুর কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কৃষকের উৎপাদিত পণ্য মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়া সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে এনসিডিপি প্রকল্পের আওতায় ২০০৭-৮ অর্থবছরে রংপুরে ৬টি, দিনাজপুরে ৮টি, ঠাকুরগাঁওয়ে ৬টি, পঞ্চগড়ে ৩টি, কুড়িগ্রামে একটি, নীলফামারীতে ৫টি, লালমনিরহাটে ৩টিসহ মোট ৩২টি কৃষিবাজার নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি কৃষিবাজার তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ২ কোটি টাকা করে। নির্মাণের পর কৃষিবাজারগুলো কৃষি বিপণন অধিদপ্তরকে হস্তান্তর করা হয়। তবে ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এসব কৃষিবাজার থেকে কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না কৃষকেরা।
জানা গেছে, রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ কৃষিবাজার ও ট্রাক টার্মিনাল কৃষিবাজার দুটি রংপুর সিটি করপোরেশনের দখলে। মাহিগঞ্জ কৃষিবাজার নিয়ন্ত্রণ করে ওই এলাকার প্রভাবশালী দেলোয়ার হোসেন। এটিতে এখন কমিউনিটি সেন্টার ও ব্যায়ামাগার বানানো হয়েছে। ট্রাক টার্মিনালের বাজারে প্রতিদিন ১০-১২টি গরু জবাই করা হয়; যার ভাড়া খাস হিসেবে সিটি করপোরেশন নিয়ে থাকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা বলেন, ‘মার্কেট দুটি কৃষি বিপণনের। সিটি করপোরেশন এগুলো থেকে ভাড়া পায় কি না জানি না।’
তবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপপরিচালক (উপসচিব) এন এম আলমগীর বাদশা বলেন, ‘মাহিগঞ্জ ও ট্রাক টার্মিনালের মার্কেটগুলো সিটি করপোরেশন দখল করে নিয়েছে। আমাদের কন্ট্রোলে নেই। অনেক চেষ্টার পরও ওই দুটি মার্কেট উদ্ধার করা যাচ্ছে না।’
রংপুর কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক পলাশ কান্তি নাগ বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে কৃষকের জন্য বাজার তৈরি করলেও, বাস্তবে সেগুলো এখন প্রভাবশালীদের দখলে। কৃষকেরা রোদে-পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে রাস্তার ধারে বসে থাকেন আর ওই ‘কৃষক বাজারে’ চলে জুয়া আর মাদক, কমিউনিটি সেন্টার। এটি শুধু অব্যবস্থাপনা নয়, বরং কৃষকের সঙ্গে অবিচার। কৃষকের পণ্য যেন সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে পারে, সেই ব্যবস্থা এখনই নিতে হবে।
একই চিত্র দেখা গেছে বদরগঞ্জের কৃষিবাজার ও নীলফামারীর সৈয়দপুরের চিকলী কৃষিবাজারের। এসব দেখভালের দায়িত্ব কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, রংপুর বিভাগের উপপরিচালক (উপসচিব) এন এম আলমগীর বাদশার। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মার্কেটগুলো কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ একটি প্রকল্পের মাধ্যমে করেছিল। প্রজেক্ট শেষ হওয়ার পর কৃষি বিপণনের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়। আমরা যেটা দেখছি, মার্কেটের লোকেশনগুলো খুব খারাপ, যেখানে কোনো কাজ চলে না। যে উদ্দেশ্যে এগুলো করা হয়েছে, তা বাস্তবায়ন হয়নি। সেগুলো দখল হয়ে গেছে। রাজনৈতিক প্রভাব তো আছেই। মার্কেটগুলোর জরাজীর্ণ অবস্থা। আমরা একটা প্রজেক্ট নিয়েছি, মেরামত করে চালু করা হবে।’
এ বিষয়ে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘নীতিমালাগত সীমাবদ্ধতা ও স্থানীয় পর্যায়ের সমন্বয় জটিলতায় কৃষকের বাজার বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়েছে।’
রংপুরের তারাগঞ্জের প্রামাণিকপাড়া গ্রামের সবজিচাষি আশরাফুল আলম। প্রতিদিন খেত থেকে সবজি তুলে হাটে নিয়ে যান বিক্রির জন্য। কিন্তু হাটে তাঁর জন্য কোনো নির্ধারিত জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়ে সড়কের ওপর বসে বিক্রি করেন নিজের উৎপাদিত শাকসবজি। অথচ হাটের ৫০ গজ দূরে কৃষকদের জন্য ২ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারিভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ‘ইকরচালী কৃষিবাজার’। কিন্তু সেখানে নেই কোনো কৃষক বা ক্রেতা-বিক্রেতা। দেড় যুগেও চালু না হওয়ায় সেটি এখন জুয়া-মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
আশরাফুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, ‘কষ্ট করে শাক-সবজি ফলাই। পাইকারকে দিলে তো উৎপাদন খরচই ওঠে না। নিজে বেচি দুই টাকা লাভের আশায়। কিন্তু হাটে আসি জায়গা পাই না। রাস্তায় বসি, পথচারীদের গালমন্দ খাই। আমার মতো প্রতিদিন শতাধিক কৃষক রাস্তায় বসে সবজি বেচি। কিন্তু বাজারের পাশে একটা কৃষি মার্কেট বানাইছে, ওটা ১৬ বছর থাকি বন্ধ। হামরা সবজি বেচার পাই না, ওইটা মানুষ জুয়া খেলায় নেশা করে।’
এই আক্ষেপ শুধু ইকরচালীর কৃষক আশরাফুল ইসলামের নয়; রংপুর বিভাগের হাজারো কৃষকের। যাঁরা জায়গার অভাবে কষ্টে উপার্জিত ফসল বিক্রির জন্য হাটে জায়গা না পেয়ে বাধ্য হন ফড়িয়াদের হাতে তুলে দিতে। সরকারিভাবে কোটি টাকা ব্যয় কৃষকদের জন্য কৃষিবাজার গড়ে তোলা হলেও তদারকি ও ব্যবস্থাপনার অভাবে সেগুলোর কোনোটি কসাইখানা, কোনোটিতে জুয়া মাদকের আসর, আবার কোনোটি কমিউনিটি সেন্টার, ব্যায়ামাগার হিসেবে গড়ে উঠেছে।
রংপুর কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কৃষকের উৎপাদিত পণ্য মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়া সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে এনসিডিপি প্রকল্পের আওতায় ২০০৭-৮ অর্থবছরে রংপুরে ৬টি, দিনাজপুরে ৮টি, ঠাকুরগাঁওয়ে ৬টি, পঞ্চগড়ে ৩টি, কুড়িগ্রামে একটি, নীলফামারীতে ৫টি, লালমনিরহাটে ৩টিসহ মোট ৩২টি কৃষিবাজার নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি কৃষিবাজার তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ২ কোটি টাকা করে। নির্মাণের পর কৃষিবাজারগুলো কৃষি বিপণন অধিদপ্তরকে হস্তান্তর করা হয়। তবে ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এসব কৃষিবাজার থেকে কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না কৃষকেরা।
জানা গেছে, রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ কৃষিবাজার ও ট্রাক টার্মিনাল কৃষিবাজার দুটি রংপুর সিটি করপোরেশনের দখলে। মাহিগঞ্জ কৃষিবাজার নিয়ন্ত্রণ করে ওই এলাকার প্রভাবশালী দেলোয়ার হোসেন। এটিতে এখন কমিউনিটি সেন্টার ও ব্যায়ামাগার বানানো হয়েছে। ট্রাক টার্মিনালের বাজারে প্রতিদিন ১০-১২টি গরু জবাই করা হয়; যার ভাড়া খাস হিসেবে সিটি করপোরেশন নিয়ে থাকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা বলেন, ‘মার্কেট দুটি কৃষি বিপণনের। সিটি করপোরেশন এগুলো থেকে ভাড়া পায় কি না জানি না।’
তবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপপরিচালক (উপসচিব) এন এম আলমগীর বাদশা বলেন, ‘মাহিগঞ্জ ও ট্রাক টার্মিনালের মার্কেটগুলো সিটি করপোরেশন দখল করে নিয়েছে। আমাদের কন্ট্রোলে নেই। অনেক চেষ্টার পরও ওই দুটি মার্কেট উদ্ধার করা যাচ্ছে না।’
রংপুর কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক পলাশ কান্তি নাগ বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে কৃষকের জন্য বাজার তৈরি করলেও, বাস্তবে সেগুলো এখন প্রভাবশালীদের দখলে। কৃষকেরা রোদে-পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে রাস্তার ধারে বসে থাকেন আর ওই ‘কৃষক বাজারে’ চলে জুয়া আর মাদক, কমিউনিটি সেন্টার। এটি শুধু অব্যবস্থাপনা নয়, বরং কৃষকের সঙ্গে অবিচার। কৃষকের পণ্য যেন সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে পারে, সেই ব্যবস্থা এখনই নিতে হবে।
একই চিত্র দেখা গেছে বদরগঞ্জের কৃষিবাজার ও নীলফামারীর সৈয়দপুরের চিকলী কৃষিবাজারের। এসব দেখভালের দায়িত্ব কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, রংপুর বিভাগের উপপরিচালক (উপসচিব) এন এম আলমগীর বাদশার। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মার্কেটগুলো কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ একটি প্রকল্পের মাধ্যমে করেছিল। প্রজেক্ট শেষ হওয়ার পর কৃষি বিপণনের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়। আমরা যেটা দেখছি, মার্কেটের লোকেশনগুলো খুব খারাপ, যেখানে কোনো কাজ চলে না। যে উদ্দেশ্যে এগুলো করা হয়েছে, তা বাস্তবায়ন হয়নি। সেগুলো দখল হয়ে গেছে। রাজনৈতিক প্রভাব তো আছেই। মার্কেটগুলোর জরাজীর্ণ অবস্থা। আমরা একটা প্রজেক্ট নিয়েছি, মেরামত করে চালু করা হবে।’
এ বিষয়ে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘নীতিমালাগত সীমাবদ্ধতা ও স্থানীয় পর্যায়ের সমন্বয় জটিলতায় কৃষকের বাজার বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়েছে।’
রমজান আলীর অভিযোগ—’’আমাদের বাসায় প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে দেশের সব উচ্চপদস্থ ব্যক্তি এসেছেন, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিও আমাদের বাসায় আসেন। সবার কাছে আমরা চেয়েছিলাম শুধু আমার ভাই হত্যার বিচার। কিন্তু এক বছরে আমরা এই বিচারের কোন অগ্রগতি পাইনি।"
৬ মিনিট আগেগত ৮ জুলাই দুপুরে ওই শিশুটি বাড়ির পাশে বসে খেলা করছিল। এ সময় ওই কিশোর অটোভ্যানে চড়িয়ে বেড়ানোর লোভ দেখিয়ে তাকে নিয়ে যায়। পরে তাকে পাশের কুমারখালী গ্রামের একটি বাঁশঝাড়ে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এরপর তাকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি কাউকে জানাতে নিষেধ করে পুনরায় তার খেলার স্থানে রেখে যায়।
১ ঘণ্টা আগে২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ৯৯ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করে। ২০২১ সালের জুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। সেতুটির দক্ষিণ পাশে সংযোগ সড়ক থাকলেও উত্তর পাশে এখনো পাকা রাস্তা নির্মাণ হয়নি। বরং উত্তর পাশের সংযোগ সড়কের বালু সরে গিয়ে সেখানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, যা দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা, ঠিকভাবে...
১ ঘণ্টা আগেপেট্রোল পাম্প, দুর্গাবাড়ী ও পঞ্চসার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা পানিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। আর মানিকপুর ১০ তলা ভবন এলাকা থেকে সুপার মার্কেট পর্যন্ত রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এতে গর্তে পানি জমে গিয়ে চলাচল হয়ে পড়েছে দুঃসাধ্য। সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতি দেখা গেছে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল...
২ ঘণ্টা আগে