Ajker Patrika

হাবিপ্রবিতে ছাত্রদের হলে রাতভর সংঘর্ষে আহত ১৫, তদন্ত কমিটি গঠন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
Thumbnail image

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ছাত্রদের কয়েকটি হলে রাতভর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমিটরি ২ হল, শেখ রাসেল হল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী পাল্টা-পাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে প্রায় ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

আহতদের মধ্যে ১৩ জন শিক্ষার্থী দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় হাবিপ্রবির ট্রেজারার প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদারকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদারকে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলে হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমিটরি ২ হলের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আনজারুল ইসলামকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শেখ রাসেল হলের ৮ থেকে ১০ জন শিক্ষার্থী বেধড়ক মারপিট করেন। এতে ওই শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এই খবর ডরমিটরি ২ হলের শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে তারা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ডরমিটরি ২ হলের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে শেখ রাসেল হলে গিয়ে চড়াও হলে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে থামানো হয়। এ সময় ডরমিটরি ২ হলের সামনে দিয়ে বঙ্গবন্ধু হলের এক শিক্ষার্থীকে চড়-থাপ্পড় মারে। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ডরমিটরি-২ হলের শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় আবারও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। লক্ষ্যহীন সংঘর্ষে শিক্ষার্থীরা ডরমিটরি-২ এবং বঙ্গবন্ধু হলে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় ও বিভিন্ন দাবিতে প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, ছাত্রনির্দেশনা বিভাগের পরিচালকসহ শিক্ষকদের হলে অবরুদ্ধ করে রাখে। শিক্ষার্থীরা এ সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল, বিভিন্ন রুমের দরজা, জানালা, থাই গ্লাস, ক্যানটিন রুমের গ্লাস, টিভি, ফ্যান, শিক্ষার্থীদের মোটরসাইকেল, ছাত্রলীগের অফিসসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ভাঙচুর করে। এ সংঘর্ষে অন্তত ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এদের মধ্যে ১৩ জনকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার সকালের মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে ১১ জন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ফেরত আসে। বর্তমানে ২ জন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী আজকের পত্রিকাকে জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হলগুলোতে ভাঙচুর করা হয়েছে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু হলে যে তাণ্ডব চালানো হয়েছে তা নজিরবিহীন। উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থীরা এ সময় হলের বিভিন্ন রুমসহ সামনে যা পেয়েছে সবকিছু বেপরোয়া ভাঙচুর করেছে।

এ বিষয়ে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটেছে উল্লেখ করে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ইমরান পারভেজ বলেন, ‘সংঘর্ষে ১৫ জনের মতো শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে বর্তমানে দুজন এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।’ 

শিক্ষকদের অবরোধের বিষয়ে অধ্যাপক ইমরান পারভেজ জানান, শিক্ষার্থীরা উত্তেজনার বশে বিভিন্ন দাবি আদায়ে হলের সামনে অবস্থান নেয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আমরা আহতসহ সকল শিক্ষার্থীর খোঁজ-খবর রাখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত