Ajker Patrika

প্রণোদনা পেলেন সচ্ছলেরা, বঞ্চিত প্রান্তিক খামারি

এম মেহেদী হাসিন ও গোলাম কবীর বিলু, রংপুর ও পীরগঞ্জ 
প্রণোদনা পেলেন সচ্ছলেরা, বঞ্চিত প্রান্তিক খামারি

রংপুরের পীরগঞ্জে প্রান্তিক খামারিদের জন্য সরকারি প্রণোদনা বণ্টনে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সহায়তা উপযুক্ত ব্যক্তিদের না দিয়ে সচ্ছল, ইটভাটা ও শো–রুমের মালিকের মতো ব্যক্তিদেরও দেওয়া হয়েছে। ক্ষুব্ধ খামারিরা এ ঘটনা তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন।

রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের প্রণোদনার আওতায় আনা হয়। এর মধ্যে যাঁদের এক থেকে পাঁচটি গরু রয়েছে তাঁদের জন্য ১০ হাজার আর যাঁদের ছয় বা তার বেশি গরু রয়েছে তাঁদের জন্য ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল।

এই প্রণোদনা পীরগঞ্জ উপজেলার মিঠিপুর ইউনিয়নে দেওয়া হয়েছে ১৮২ জনকে। এ ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন খামারিরা।

মিঠিপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান অভিযোগ করেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে তোজাম্মেল হক নামের এক ব্যক্তিকে তালিকা করতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তোজাম্মেল গরিব খামারিদের নাম দেননি। টাকা নিয়ে ধনী ব্যক্তিদের নাম পাঠিয়েছেন।

গবরা কুতুবপুর গ্রামে গিয়ে কথা হয় জমিলা বেগম নামের এক খামারির সঙ্গে। তাঁর বাড়িতে রয়েছে পাঁচটি গরু। তিনি দাবি করেন, টাকা না দিতে পারায় প্রণোদনার তালিকায় তাঁর নাম যুক্ত করা হয়নি। তাঁকে না দিয়ে যাঁদের অনেক টাকা আছে তাঁদের ঘরে প্রণোদনা গেছে।

সোহরাব আলী নামের এক খামারি দাবি করেন, তালিকায় নাম আনার জন্য তাঁর কাছে তিন হাজার টাকা দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু দিতে না পারায় তিনি প্রণোদনা পাননি। 

বঞ্চিতরা জানান, মোহাম্মদ আলী নামে একজনকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। সচ্ছল এই ব্যক্তির ২০ বিঘা জমি আছে। তিনি দুটি গরুর ওপর ১০ হাজার টাকা প্রণোদনা পেয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি কারও কাছে প্রণোদনার জন্য যাইনি। তোজাম্মেল আমার প্রতিবেশী। সে তালিকায় আমার নাম দিয়েছে।’

আরেক ব্যক্তি ইসাহাক আলীর একটি ইটভাটা ও ইলেক্ট্রনিক পণ্যের শো–রুম রয়েছে। তিনিও প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন। ইসাহাক বলেন, ‘আমি পোল্ট্রি খামারের ওপর ১৬ হাজার টাকা পেয়েছি। তবে কাউকে ঘুষ দিতে হয়নি। তোজাম্মেলের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকায় প্রণোদনা পেয়েছি।’

তবে তোজাম্মেল হক বলেন, ‘অভিযোগ সত্য নয়। আমি সঠিকভাবে তালিকা দিয়েছি। যারা প্রণোদনা পায়নি তারা আমার নামে মিথ্যা কথা ছড়াচ্ছে।’

এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. সিরাজুল হক বলেন, ‘প্রণোদনার জন্য খামারি নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের ভুল বা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত