Ajker Patrika

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ: মুক্তি মিলল না ২০ হাজার চরবাসীর

  • নির্মাণের মাত্র ৯ মাসের মাথায় স্রোতে ভেসে যায় সেতুটি
  • ভেঙে যাওয়ার সাত মাস পেরিয়ে গেলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা 
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা বাজার খেয়াঘাটে তিস্তার শাখা নদীতে ভেঙে যাওয়া সেতু। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা বাজার খেয়াঘাটে তিস্তার শাখা নদীতে ভেঙে যাওয়া সেতু। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা বাজার খেয়াঘাটে তিস্তার শাখা নদীতে নির্মিত সেতু ভেঙে যাওয়ার সাত মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নির্মাণের মাত্র ৯ মাসের মাথায় গত বছরের অক্টোবরে বন্যার স্রোতে ভেসে যায় সেতুটি। তা আজও পুনর্নির্মাণ বা মেরামত করা হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কংক্রিটের খুঁটির ওপর নির্মাণ করা হয় কাঠের সেতুটি। ভেঙে পড়ার পর সেই সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন চরবাসীর কষ্ট দূর করার জন্য ভেসে যাওয়া সেতুটি মেরামত বা পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। তবে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

স্থানীয় লোকজন বলছে, উপজেলার বেলকা ও হরিপুর ইউনিয়নের ২০ হাজার চরবাসীর ভোগান্তি থেকে মুক্তির আশা অধরাই রয়ে গেছে। আর কিছুদিন পর নদীতে পানি হলে যাতায়াতে নৌকা হবে তাদের একমাত্র ভরসা।

স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সেতুটি নির্মাণে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে সেতু নির্মাণ করা না হলে ফের দুই ইউনিয়নের কমপক্ষে ২০ হাজার বাসিন্দাকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

জানা গেছে, চরবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিবির অর্থ থেকে কংক্রিটের খুঁটির ওপর কাঠের সেতু নির্মাণের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। এ জন্য ২৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় উপজেলা পরিষদ। শুরুতে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে সেতুটি নির্মাণে। গত বছরের ৩০ জুন সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ দেখিয়ে ঠিকাদারের টাকা ছাড় করানো হয়। ঠিকাদার শাহানুর ইসলামের পক্ষে সেতুটি নির্মাণে সাব-ঠিকাদারের কাজ করেন বামনডাঙ্গার সাগীর খান। সেতুটির নকশা করেন উপজেলা প্রকৌশলী। মাত্র ৯ মাসের মাথায় তিস্তার স্রোতে ভেসে যায় সেতুটি।

বেলকা বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বেলকা ও হরিপুর ইউনিয়নের ২০ হাজার চরবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া-পাওয়ার এখন কী হবে? এ দায় কার?’ এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তাঁরা।

শিক্ষার্থী ছানা মিয়া বলে, সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় চরের শিক্ষার্থীরা খুশি হয়েছিল। কিন্তু বিধিবাম। উদ্বোধন না হতেই সেই সেতুটি ভেসে গেছে তিস্তা নদীর স্রোতে। এখন আবারও সেই নৌকা চরবাসীর একমাত্র ভরসা।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা বাজার খেয়াঘাটে তিস্তার শাখা নদীতে ভেঙে যাওয়া সেতু। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা বাজার খেয়াঘাটে তিস্তার শাখা নদীতে ভেঙে যাওয়া সেতু। ছবি: আজকের পত্রিকা

হরিপুর চরের স্কুলশিক্ষক আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধিদের গাফিলতি ও অনিয়মের কারণে সেতুটির এই অবস্থা হয়েছে। যার খেসারত জনগণকে দিতে হতে হচ্ছে। তিনি দ্রুত সেতুটি পুনর্নির্মাণের জোর দাবি জানান।

বেলকা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ বলেন, ‘নদীতে পানি আসার আগেই সেতুটি পুনর্নির্মাণে জোর দাবি জানাই।’

উপজেলা প্রকৌশলী মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বেলকা খেয়াঘাটের তিস্তার শাখা নদীর ওপর পুনরায় কাঠের সেতু নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা এলজিইডির নেই।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা বাজার খেয়াঘাটে তিস্তার শাখা নদীতে ভেঙে যাওয়া সেতু। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা বাজার খেয়াঘাটে তিস্তার শাখা নদীতে ভেঙে যাওয়া সেতু। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সবেমাত্র এই উপজেলায় যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

পিরোজপুরে ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও সমিতির পরিচালক, সদস্যদের বিক্ষোভ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত