Ajker Patrika

দিনাজপুরে বাস চলাচল করলেও যাত্রী কম, শ্রমিকদের ক্ষোভ

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২২, ১৩: ৫১
দিনাজপুরে বাস চলাচল করলেও যাত্রী কম, শ্রমিকদের ক্ষোভ

রংপুর পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা ধর্মঘট গতকাল শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে। কিন্তু দিনাজপুরে আজ বাস চলাচল স্বাভাবিক ছিল। যদিও যাত্রী চলাচল অনেক কম ছিল। এদিকে যাত্রী কম থাকায়, সব মিলিয়ে খরচ উঠবে কি না—এই শঙ্কায় শ্রমিকদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। 

ময়মনসিংহ ও খুলনার পর রংপুরেও বিএনপির সমাবেশের এক দিন আগে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহন মালিক সমিতি।

গত বৃহস্পতিবার মহাসড়কে তিন চাকার নছিমন ও করিমন চলাচলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দেয় রংপুর পরিবহন মালিক সমিতি। 

আজ সকালে দিনাজপুর বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন রুটে বাস ছেড়ে যাচ্ছে ও আসছে। তবে অন্যদিনের মতো কোলাহল নেই। আর রংপুর রুটে কোনো বাস চলাচল করেনি। যাত্রীর সংখ্যাও বেশ কম। হাতে গোনা যাত্রী নিয়ে অধিকাংশ সিট ফাঁকা রেখে গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে বাসগুলো।

দিনাজপুরের সীমানা সৈয়দপুর রাবেয়া মোড় থেকে ছেড়ে আসা সুজাত পরিবহনের একটি বাস সকালে টার্মিনালে দাঁড়ালে মাত্র ছয়জন যাত্রী নামতে দেখা যায়। অন্য সময় দিনাজপুর-রংপুর পর্যন্ত চলাচল করলেও ধর্মঘটের কারণে গত বৃহস্পতিবার থেকে দিনাজপুর-সৈয়দপুর পর্যন্ত চলাচল করছে বাসটি।

রংপুর রুটের গাড়িচালক রাজা মিয়া জানান, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে গাড়ি নিয়ে রংপুর বাসটার্মিনালে পৌঁছান তিনি। সে সময় রংপুর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন গাড়ি ফেরত পাঠান। সেই সঙ্গে গাড়ি যেন রংপুরে না ঢোকে, সে ব্যাপারে হুঁশিয়ার করে দেন। এরপর থেকে সৈয়দপুর রাবেয়া মোড় পর্যন্ত গাড়ি চালাচ্ছেন তিনি।

দিনাজপুরে পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা ধর্মঘটের মধ্যে অনেক কম যাত্রী নিয়েই চলছে।রাজা মিয়া আরও বলেন, ‘গতকাল ১ হাজার ৩০০ টাকা বাকিতে তেল কিনেছি। দিনাজপুর-রংপুর যাতায়াতে ৭-৮ হাজার টাকা ভাড়া পাই। বৃহস্পতিবার থেকে অর্ধেক টাকাও হয় না। আমাদের চলবে কী করে।’

এইচএ পরিবহনের সুপারভাইজার সুলতান আহমেদ বলেন, ‘শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজনের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনও রংপুরে গাড়ি ঢোকাতে নিষেধ করছে। গাড়ির হর্ন পর্যন্ত খুলে নিয়েছে।’

আল রশিদ পরিবহনের সুপারভাইজার আতিয়ার রহমান বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার দিনাজপুর-দাউদপুর রুটে গাড়ি চালিয়ে তেলের খরচও তুলতে পারিনি। শ্রমিকদের বেতন দূরে থাক, পাম্পে তেলের বকেয়া পড়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকা।’

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘প্রতিদিন দিনাজপুর থেকে বিভিন্ন রুটে ২৫০টি বাস চলাচল করে। এর মধ্যে দিনাজপুর-রংপুর রুটে যাতায়াত করে ৬০টি। এই বাসগুলোর সঙ্গে দুই শতাধিক শ্রমিক নিযুক্ত রয়েছেন। এমনিতে শুক্র-শনিবার যাত্রী কম থাকে। তার ওপর ধর্মঘট। যাত্রী না থাকায় প্রতিটি গাড়িকে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাদিক রিয়াজ চৌধুরী বলেন, ‘ধর্মঘটের বিষয়ে আমরা ফেডারেশনের পক্ষ থেকে কোনো চিঠি পাইনি। কেন্দ্রীয় কোনো সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতেও এই ধর্মঘট হচ্ছে না। আমরা বাস চালু রেখেছি। তবে সৈয়দপুরের পরে আর গাড়ি যেতে দিচ্ছে না। ধর্মঘটের বিষয়টি সবারই জানা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত