Ajker Patrika

বোনকে বিয়ে করতে না পেরে ভাইকে দ্বিখণ্ডিত করে হত্যা

পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
বোনকে বিয়ে করতে না পেরে ভাইকে দ্বিখণ্ডিত করে হত্যা

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে এক কিশোরীকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন প্রতিবেশী তরুণ। কিন্তু ছেলে মাদকাসক্ত হওয়ায়, রাজি হয়নি মেয়ের পরিবার। এরই জেরে গলা কেটে হত্যা করা হয় কিশোরীর চার বছর বয়সী ভাইকে। 

আজ মঙ্গলবার দুপুরে শিশু বায়েজিদ (৪) হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার কামাল হোসেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা শিকার করেছেন বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। 

নিহত শিশু বায়েজিদ উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা বালুখোলা গ্রামের সৌদিপ্রবাসী তাহারুল ব্যাপারীর ছেলে। গত ৮মে (সোমবার) বিকেল তিনটার দিকে বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সে। পরদিন ৯ মে (মঙ্গলবার) শিশুটির মা রায়হানা বেগম পলাশবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। 

নিখোঁজের পাঁচ দিন পর ১৩ মে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই গ্রামের একটি ধানখেত থেকে শিশু বায়েজিদের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন বিকেলে স্থানীয় দুজন ব্যক্তি ধানখেতে কাজ করতে গিয়ে দুর্গন্ধের সূত্র ধরে শিশুটির অর্ধগলিত খণ্ডিত মরদেহ দেখতে পান। পরে তারা পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে, ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। 

এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—একই এলাকার সাইফুল ইসলাম ওরফে শেরেকুলের ছেলে সাকিব হাসান ওরফে রোমান (১৯) ও সোহবার হোসেনের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২০)। 

পুলিশ সুপার কামাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, ৮ মে বিকেলে শিশু বায়েজিদ নিখোঁজ হয়। সে ঘটনার তদন্তে গিয়ে নিখোঁজ শিশুর বোনের সঙ্গে কিছু অপরাধের সংযোগ পাওয়া যায়। এরই জেরে ১০ মে দুজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ভুক্তভোগীর মা। পরে ওই দিনই অভিযুক্ত রোমান ও শরিফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

এ ব্যাপারে ১০ মে পলাশবাড়ী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন শিশুটির মা। একই দিনে প্রধান অভিযুক্ত রোমান ও শরিফুলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে সন্তোষজনক তথ্য না দেওয়ায় ২ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে রোববার আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

এসপি আরও জানান, রিমান্ডে সাকিব হাসান ওরফে রোমান ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। গতকাল সোমবার আদালতে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতের বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন রোমান। রোমানের দাবি বায়েজিদের বোনের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বর্তমানে ওই কিশোরী যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ায়, ক্ষোভে তার ছোট ভাই বায়েজিদকে নিখোঁজের দিনই হত্যা করেন তিনি। 

এ দিকে পুলিশ সুপারের কাছে স্থানীয় হরিনাবাড়ী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) বুলবুল আহম্মেদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেন শিশু বায়েজিদের মা। পরে কর্তব্যে অবহেলার দায়ে এসআই বুলবুলকে হরিনাবাড়ী পুলিশ তদন্তকেন্দ্র থেকে গাইবান্ধা পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় বলেও জানান পুলিশ সুপার কামাল হোসেন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন—জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মো. ইবনে মিজান, পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাসুদ রানা, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক নুর-ই আলম সিদ্দীকি প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত