Ajker Patrika

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে কোটিপতি অফিস সহকারী

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
Thumbnail image

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম চাকরিজীবন শুরু করেছিলেন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক হিসেবে। পরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে প্রধান সহকারী হিসাবরক্ষক হন। সর্বশেষ ২০১৯ সালে পদোন্নতি পেয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এই সময়ের মধ্যে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন নজরুল ইসলাম। স্থানীয়দের মতে, তাঁর সম্পদের মূল্য কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারী কীভাবে এত সম্পদের মালিক হলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌর শহরের মুসলিমনগর এলাকায় নজরুলের ১৫ শতাংশ জমির ওপর বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। ওই এলাকায় বর্তমানে জমির শতাংশ ১০-১২ লাখ টাকা। সেই হিসাবে নজরুলের ওই বাড়ির দাম দেড় কোটি টাকার বেশি।

এ ছাড়া ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর আরও দুটি প্লট রয়েছে। জমির পরিমাণ ২৫ শতাংশ। যার বর্তমান মূল্য ৪ কোটি টাকা। একই ওয়ার্ডের তেলিপাড়া হাইওয়েসংলগ্ন ১০ শতাংশের একটি প্লট রয়েছে নজরুলের, যার বর্তমান মূল্য ২ কোটি টাকা। গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুরে রয়েছে তাঁর ১৫-১৬ বিঘা কৃষিজমি।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯২ সালে ১ হাজার ৯৫০ টাকা বেতনে অফিস সহকারী পদে রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন নজরুল। পরে তদবিরের মাধ্যমে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে প্রধান সহকারী হিসাবরক্ষক হন। এর কয়েক বছরের মধ্যে কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে যান নজরুল।

ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার মাদারগঞ্জ গ্রামে কথা হয় নজরুলের প্রতিবেশী শুক্কুর আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, গ্রামের চারদিকে শুধু নজরুলের জমি আর জমি। এখানে ১৫-১৬ বিঘা জমি আছে তাঁর।

শুক্কর আলী আরও জানান, নজরুল তাঁর বড় ভাইয়ের দুই ছেলেকেও হাসপাতালে চাকরি দিয়েছেন। ভাতিজাদের চাকরি পাইয়ে দিতে নজরুল ভাইয়ের কাছ থেকে ৫ বিঘা জমি লিখে নেন।

জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম স্বীকার করেন হাইওয়ে রোড ও গোয়ালপাড়ার জমিসহ মুসলিমনগরে ১৫ শতক জমির ওপর বাড়ি আছে তাঁর।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ে থাকাকালীন টেন্ডার ও নিয়োগ-বাণিজ্যে জড়িত থেকে সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগের বিষয়ে নজরুল বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট কথা।’

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, নজরুলের অনিয়মের বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ যে কারও থাকলে নিয়ম অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে, যাচাই-বাছাইয়ের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত