Ajker Patrika

চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ, ক্লিনিক সিলগালা, গ্রেপ্তার ৩

নীলফামারী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ জুন ২০২৫, ২৩: ১৭
ডোমার উপজেলার জনতা ক্লিনিক সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোমার উপজেলার জনতা ক্লিনিক সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় বেবী আক্তার (২৮) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মৃত বেবী আক্তার উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের বড়গাছা দরগাপাড়া এলাকার নূর আলমের স্ত্রী। মায়ের মৃত্যু হলেও নবজাতক সুস্থ রয়েছে।

এ ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছে বেবী আক্তারের পরিবার। এর মধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ডা. নাজমুস সাকিব, সেবিকা সুমনা আক্তার ও সাবিয়া আক্তার। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। আজ রোববার ক্লিনিকটি সিলগালা করেন ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শায়লা সাঈদ তন্বী।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ১৪ জুন বিকেলে বেবী আক্তারের প্রসববেদনা উঠলে পরিবারের লোকজন তাঁকে ডোমার উপজেলার জনতা ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে ডাক্তার রিজওয়ানা ইয়াসমিন রোমাকে দেখালে তিনি কিছু পরীক্ষা দেন। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখার পর ডাক্তার রিজওয়ানা বলেন, রোগীর পেটে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না থাকায় তাঁর অস্ত্রোপচার করতে হবে। তখন বেবী আক্তারকে অস্ত্রোপচারের জন্য জনতা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ৬টায় অস্ত্রোপচার হলে একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন তিনি। অস্ত্রোপচারের সময় ডাক্তার রিজওয়ানা, ডাক্তার নিহাররঞ্জন এবং ওটি বয় বিপুল সরকার উপস্থিত ছিলেন। অস্ত্রোপচারের পর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় রোগীকে পরিবারের লোকজন রাতেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ রোববার ভোরে বেবী আক্তার মারা যান।

এর আগে রাতেই ডাক্তারের অবহেলার কারণে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে রোগীর স্বজনেরা ক্লিনিকে এসে চিকিৎসকের বিচার দাবি করেন। এ সময় পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে পুলিশ প্রশাসন গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা চালায়। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

খবর পেয়ে আজ রোববার দুপুরে ইউএনও শায়লা সাঈদ তন্বী এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রায়হান বারী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অবহেলার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে ক্লিনিক সিলগালা করে দেন।

এ ব্যাপারে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রায়হান বারী জানান, এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ না পেলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইউএনও জানান, প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় জনতা ক্লিনিককে সিলগালা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহসীন আলী বলেন, এ ঘটনায় সকালে নিহতের স্বামী মো. নূর আলম বাদী হয়ে ডোমার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্ত চিকিৎসক মো. নাজমুস সাকিব, সেবিকা সুমনা আক্তার ও সাবিয়া আক্তারকে গ্রেপ্তার করে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বেবি আক্তারের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত