নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সংস্কার শব্দটি বর্তমানে ঘৃণিত শব্দে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) সভাপতি জিল্লুর রহমান। তিনি বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা প্রতিফলিত হচ্ছে না। মানুষের প্রত্যাশা পূরণের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। দেশে নিরাপত্তার প্রধান সমস্যা হলো, সহমতের অভাব। পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য না থাকায় কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ’ শীর্ষক ধারাবাহিক সংলাপের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনার শুরুতে সিজিএসের সভাপতি জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সরকার কতখানি কর্মক্ষম ও কার্যক্ষম, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অনেকে মনে করেছিলেন, সরকারপ্রধান যেহেতু নোবেল লরিয়েট, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি, তিনি হয়তো দেশের জন্য অনেক কিছু নিয়ে আসতে পারবেন। এই ১১-১২ মাসে তিনি কতটা পারলেন, আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কতটা ঘনিষ্ঠ হলো, সেটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনার বিষয়। সরকারের ম্যান্ডেটটা আসলে কী, সেই ম্যান্ডেট থেকে সরকার কতটুকু বিচ্যুত হয়েছে, সেটাও বিবেচনার দাবি রাখে।’
জিল্লুর রহমান বলেন, ‘বেশ কিছু কমিশন করা হয়েছে। শিক্ষা নিয়ে কোনো কমিশন হয়নি। শিক্ষা সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয় না। আবার অনেক কমিশন রিপোর্ট দিয়েছে। সেই রিপোর্ট টাচও করা হয়েছে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশের দমন-পীড়ন ও দুর্নীতির একটা দীর্ঘকালীন চাপ, সেটা আগেও ছিল, এখনো আছে। পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। অর্থনীতির অবস্থা খুব একটা ভালো নয় ৷ বেকারত্ব বাড়ছে। আমরা তিন শূন্যের কথা শুনি, কিন্তু তিন শূন্যের কোনো প্রয়োগ বাংলাদেশে দেখি না। সংস্কার শব্দটি ঘৃণিত শব্দে পরিণত হয়েছে। প্রত্যাশা পূরণের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।’
পররাষ্ট্রনীতি প্রসঙ্গে সিজিএস সভাপতি বলেন, ‘পররাষ্ট্রনীতি আমাদের নিরাপত্তার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। গত ১৫ বছর আমাদের সঙ্গে পাকিস্তানের ভালো সম্পর্ক ছিল না। ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ এখন এমন হয়েছে যে, হয় আপনারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে থাকবেন, না হলে চীনের সঙ্গে থাকবেন। আমাদের অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। বেকারত্বের হার বেড়েছে এবং মানবাধিকার অবস্থাও অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এখনো টানাপোড়নে রয়েছে। চীন ও ভারতের সঙ্গে ব্যালেন্স করাটাও অনেক জরুরি।’
বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি অ্যাম্বাসেডর হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বাংলাদেশের কূটনীতির সবচেয়ে বড় বাধা হলো ঢাকা। ঢাকা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার শুরু এবং শেষ হয়। ঢাকা স্থিতিশীল না থাকলে মিশনকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের নিরাপত্তার প্রধান সমস্যা হলো, সহমতের অভাব। অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের কাঠামো কেমন হবে, তা নিয়ে সহমত থাকতে হবে। নেপালে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহমত ছিল। এখান থেকে আমাদের সহমত গঠন করা শিখতে হবে। আমরা আমাদের ডিফেন্স ও ডিপ্লোম্যাসিকে নজর দেই নাই। স্বাধীন দেশ হিসেবে টিকে থাকতে চাইলে এই দুটি জায়গায় যত্ন নিতে হবে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিয়ে কোনো সংস্কার হয় নাই। গত ৫৪ বছরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিয়ে কেবল দুটি কমিশন হয়েছে। আমাদের বাইরে বন্ধু তৈরি করতে হবে। এর জন্য কূটনীতিতেও পরিবর্তন আনতে হবে।’
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের সভাপতি মেজর জেনারেল আ ন ম মুনীরুজ্জামান (অব.) বলেন, ‘বিপ্লবের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিফলিত হয় নাই। ফ্যাসিজম একটা ইকোসিস্টেম। পুনর্গঠন করতে হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফ্যাসিবাদের দোসরদের সরাতে হবে। ফরেন পলিসিতে প্রাইভেট সেক্টরকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কেবল আমলা দিয়ে হবে না। প্রবাসীদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য দূতাবাসগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। সার্ককে আবার পুনর্জীবিত করতে হবে। হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার হতে হবে। আমাদের সামুদ্রিক নীতিমালা নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে এবং এটি বাইরের দেশের কাছে জানাতে হবে। পানি ও নদী কূটনীতি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পানিবণ্টন নিয়ে আমরা নতুন সমস্যার মুখোমুখি হতে চলেছি।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমাদের এখন জাতীয় স্বার্থের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নেগোসিয়েশন এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করার জন্য। আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে যাওয়া যাবে না। নেগোসিয়েশন করার দক্ষতা থাকতে হবে। এর জন্য একটা রাজনৈতিক কাঠামো ঠিক করতে হবে।’
গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘পররাষ্ট্রনীতির আগে আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি শক্ত করতে হবে। আমাদের কি ২৫টি বোয়িং কেনার ক্ষমতা আছে। এটি করা হয়েছে আমেরিকাকে খুশি করার জন্য। আমাদের বহুমুখী রপ্তানি নিয়ে চিন্তা করতে হবে। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছোটখাটো একটা সংঘাত হবে, যেমনটি হচ্ছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়াতে।’
সার্ক ছাড়া আর বিকল্প নেই উল্লেখ করে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, আঞ্চলিক সম্পর্ক গভীর করার জন্য সার্ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘আমাদের মতো রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি অনেক জটিল। হাসিনা অনেক সময় ধরে ভারতের প্রতি ঝুঁকে ছিল, যার কারণে সে লম্বা সময় ক্ষমতায় থাকতে পেরেছিল। ভারতের সঙ্গে আমাদের চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স করতে হবে। আমেরিকার ট্যারিফের জন্য আমাদের একটি বিপুলসংখ্যক মানুষ সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে। এর সমাধানের জন্য আমাদের কোনো এক দেশের প্রতি ঝুঁকে পড়তে হবে। না হলে আমাদের নীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ পথ অবলম্বন করতে হবে। অথবা আমাদের হিউম্যানিটেরিয়ান পথ অবলম্বন করতে হবে।’
সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘এই সরকার অনেক কমিশন গঠন করেছে। কিন্তু পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কোনো কমিশন গঠন করে নাই। চীনের সঙ্গে আমাদের সুদৃঢ় সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্যের ঘাটতি রয়েছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এখন ভালো নেই। ভারতের ওপর আমরা ডিপেনডেন্ট হয়ে গিয়েছিলাম। ভিসা বা পানি নিয়ে আমরা বিকল্প চিন্তা করতে পারি নাই। অন্তর্বর্তী সরকার শুরুতে অনেক প্রিভোকেটিভ কথা বলেছিল। কিন্তু কেউ এই কথায় পা দেয় নাই। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসে নাই। অন্য কোনো দেশের দালাল না হয়ে আমাদের হতে হবে বাংলাদেশের দালাল। ন্যাশনাল কনসেন্সাসের ওপরে কোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে না। আমাদের প্রবাসীবান্ধব নীতি করতে হবে। আমাদের দেশের সব নীতি আমরা নির্ধারণ করব।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন বলেন, ‘আমাদের এখন মতামতের মাধ্যমে সিধান্ত নিতে হবে। সমুদ্র নিরাপত্তা শক্ত করতে হবে। রোহিঙ্গাদের ডিগ্নিফাইডভাবে রিপ্যাট্রিয়ট করতে হবে। পানিসংকট সমাধানের জন্য দর-কষাকষি করতে হবে।’
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাম্বাসেডর মুন্সি ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য থাকা দরকার। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের নীতি ঠিক করতে হবে। এলডিসি উত্তরণ খারাপ কিছু না। কিন্তু এর সঙ্গে যে দায়িত্ব আসে, তা নিতে আমরা প্রস্তুত নই। বরং আমাদের এলডিসি উত্তরণকে কাজে লাগাতে হবে। ‘‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’’ এটি ভালোভাবে প্রয়োগ করতে হবে। ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করলে আমেরিকার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঠিক হয়ে যাবে, এমন না। পররাষ্ট্রনীতি নির্ভর করে আমাদের অভ্যন্তরীণ শক্তির ওপর। এর জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিকনির্দেশনা ঠিক করতে হবে।’
মিয়ানমারের সাবেক কনস্যুলেটপ্রধান ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) মো. এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ রিপোর্ট অনুসারে আমাদের আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আরাকান আর্মির সঙ্গে শিগগির রোহিঙ্গাদের একটা সংঘাত হবে, যা বাংলাদেশের জন্য জটিলতা সৃষ্টি করবে।’
কূটনীতিক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মধ্যে পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনীতিকে এক করে দেখার একটা প্রবণতা রয়েছে। কিন্তু এই দুটি এক নয়। গণতান্ত্রিক পররাষ্ট্রনীতির জন্য জনগণকে প্রাধান্য দিতে হবে। জুলাই বিপ্লবের পরে মানুষের মধ্যে দাবি উঠেছে যে, ভারত ও বাংলাদেশের সব ট্রিটি জনগণের সামনে আনতে হবে। এটি তাড়াতাড়ি করা উচিত।’
নৈতিক সমাজ বাংলাদেশের সংগঠক মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন বলেন, বাংলাদেশে কোনো ফরেন পলিসি ইন্টেলিজেন্স নেই। ভারত, আমেরিকা ও ইসরায়েল সবারই ফরেন পলিসি ইন্টেলিজেন্স রয়েছে।
অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের ট্রাক টু ডিপ্লোম্যাসি করতে হবে। ‘‘ফ্রেন্ডশিপ টু অল, ম্যালিস টু নান’’ হয়ে গিয়েছে ফ্রেন্ডশিপ টু ওয়ান। আমেরিকা আগে আমাদের বলেছিল, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক নরমাল করতে। এখন নন-ডিসক্লোজারের মধ্যে এটি চলে আসতে পারে। তখন আমাদের কিছু করার থাকবে না।’
ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘সরকার পতনের পরও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এখনো আগের লোকেরা বহাল রয়েছে। এটি ভালেো নয়। আগের সরকার দাসত্ব পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করত। অন্তর্বর্তী সরকারের জবাবদিহি থাকতে হবে। নন-ডিসক্লোজার নীতি করাটা ঠিক হয়নি। ভারতের সঙ্গে নদীর পানিবণ্টন কীভাবে হবে, তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। ভারত, আমেরিকা বা চীনের সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতির ব্যালেন্স করতে হবে। ভারত একটা রিয়েলিটি। ভারতের সঙ্গে আমাদের নতুন সম্পর্কটা কেমন হবে, তা নির্ধারণ করতে হবে।’
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআইপিএসএস) সিনিয়র গবেষণা ফেলো সাফকাত মুনির বলেন, ‘পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তানীতি নিয়ে কোনো কমিশন হয়নি। পররাষ্ট্রনীতি গতিশীল হবে না, যতক্ষণ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতিশীল হবে। গত ১৬ বছর আমাদের কোনো পররাষ্ট্রনীতি ছিল কি না, তা নিয়ে আমি সন্দিহান। কূটনীতিবিদদের বেতন অপেক্ষাকৃত অনেক কম অন্য দেশের তুলনায়। যোগ্য ব্যক্তিদের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।’
এবি পার্টির সহকারী সদস্যসচিব ও উইমেন উইংয়ের কো-অর্ডিনেটর ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নীতি ‘‘সবার সঙ্গে বন্ধুত, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’’ হয়ে গিয়েছে ফ্রেন্ডশিপ টু ওয়ান। আমরা কোনো বেসিক পররাষ্ট্রনীতি দাঁড় করাতে পারি নাই। ভারত, চীন বা আমেরিকাকে উপেক্ষা করার মতো অবস্থা আমাদের নেই।’
সংলাপে আরও অংশ নেন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক পারভেজ করিম আব্বাসী, সাবেক কূটনৈতিক এম শফিউল্লাহ, সেন্টার ফর নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশিজের চেয়ারম্যান এম এস সেকিল চৌধুরী প্রমুখ।
সংস্কার শব্দটি বর্তমানে ঘৃণিত শব্দে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) সভাপতি জিল্লুর রহমান। তিনি বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা প্রতিফলিত হচ্ছে না। মানুষের প্রত্যাশা পূরণের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। দেশে নিরাপত্তার প্রধান সমস্যা হলো, সহমতের অভাব। পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য না থাকায় কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ’ শীর্ষক ধারাবাহিক সংলাপের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনার শুরুতে সিজিএসের সভাপতি জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সরকার কতখানি কর্মক্ষম ও কার্যক্ষম, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অনেকে মনে করেছিলেন, সরকারপ্রধান যেহেতু নোবেল লরিয়েট, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি, তিনি হয়তো দেশের জন্য অনেক কিছু নিয়ে আসতে পারবেন। এই ১১-১২ মাসে তিনি কতটা পারলেন, আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কতটা ঘনিষ্ঠ হলো, সেটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনার বিষয়। সরকারের ম্যান্ডেটটা আসলে কী, সেই ম্যান্ডেট থেকে সরকার কতটুকু বিচ্যুত হয়েছে, সেটাও বিবেচনার দাবি রাখে।’
জিল্লুর রহমান বলেন, ‘বেশ কিছু কমিশন করা হয়েছে। শিক্ষা নিয়ে কোনো কমিশন হয়নি। শিক্ষা সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয় না। আবার অনেক কমিশন রিপোর্ট দিয়েছে। সেই রিপোর্ট টাচও করা হয়েছে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশের দমন-পীড়ন ও দুর্নীতির একটা দীর্ঘকালীন চাপ, সেটা আগেও ছিল, এখনো আছে। পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। অর্থনীতির অবস্থা খুব একটা ভালো নয় ৷ বেকারত্ব বাড়ছে। আমরা তিন শূন্যের কথা শুনি, কিন্তু তিন শূন্যের কোনো প্রয়োগ বাংলাদেশে দেখি না। সংস্কার শব্দটি ঘৃণিত শব্দে পরিণত হয়েছে। প্রত্যাশা পূরণের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।’
পররাষ্ট্রনীতি প্রসঙ্গে সিজিএস সভাপতি বলেন, ‘পররাষ্ট্রনীতি আমাদের নিরাপত্তার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। গত ১৫ বছর আমাদের সঙ্গে পাকিস্তানের ভালো সম্পর্ক ছিল না। ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ এখন এমন হয়েছে যে, হয় আপনারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে থাকবেন, না হলে চীনের সঙ্গে থাকবেন। আমাদের অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। বেকারত্বের হার বেড়েছে এবং মানবাধিকার অবস্থাও অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এখনো টানাপোড়নে রয়েছে। চীন ও ভারতের সঙ্গে ব্যালেন্স করাটাও অনেক জরুরি।’
বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি অ্যাম্বাসেডর হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বাংলাদেশের কূটনীতির সবচেয়ে বড় বাধা হলো ঢাকা। ঢাকা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার শুরু এবং শেষ হয়। ঢাকা স্থিতিশীল না থাকলে মিশনকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের নিরাপত্তার প্রধান সমস্যা হলো, সহমতের অভাব। অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের কাঠামো কেমন হবে, তা নিয়ে সহমত থাকতে হবে। নেপালে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহমত ছিল। এখান থেকে আমাদের সহমত গঠন করা শিখতে হবে। আমরা আমাদের ডিফেন্স ও ডিপ্লোম্যাসিকে নজর দেই নাই। স্বাধীন দেশ হিসেবে টিকে থাকতে চাইলে এই দুটি জায়গায় যত্ন নিতে হবে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিয়ে কোনো সংস্কার হয় নাই। গত ৫৪ বছরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিয়ে কেবল দুটি কমিশন হয়েছে। আমাদের বাইরে বন্ধু তৈরি করতে হবে। এর জন্য কূটনীতিতেও পরিবর্তন আনতে হবে।’
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের সভাপতি মেজর জেনারেল আ ন ম মুনীরুজ্জামান (অব.) বলেন, ‘বিপ্লবের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিফলিত হয় নাই। ফ্যাসিজম একটা ইকোসিস্টেম। পুনর্গঠন করতে হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফ্যাসিবাদের দোসরদের সরাতে হবে। ফরেন পলিসিতে প্রাইভেট সেক্টরকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কেবল আমলা দিয়ে হবে না। প্রবাসীদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য দূতাবাসগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। সার্ককে আবার পুনর্জীবিত করতে হবে। হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার হতে হবে। আমাদের সামুদ্রিক নীতিমালা নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে এবং এটি বাইরের দেশের কাছে জানাতে হবে। পানি ও নদী কূটনীতি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পানিবণ্টন নিয়ে আমরা নতুন সমস্যার মুখোমুখি হতে চলেছি।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমাদের এখন জাতীয় স্বার্থের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নেগোসিয়েশন এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করার জন্য। আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে যাওয়া যাবে না। নেগোসিয়েশন করার দক্ষতা থাকতে হবে। এর জন্য একটা রাজনৈতিক কাঠামো ঠিক করতে হবে।’
গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘পররাষ্ট্রনীতির আগে আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি শক্ত করতে হবে। আমাদের কি ২৫টি বোয়িং কেনার ক্ষমতা আছে। এটি করা হয়েছে আমেরিকাকে খুশি করার জন্য। আমাদের বহুমুখী রপ্তানি নিয়ে চিন্তা করতে হবে। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছোটখাটো একটা সংঘাত হবে, যেমনটি হচ্ছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়াতে।’
সার্ক ছাড়া আর বিকল্প নেই উল্লেখ করে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, আঞ্চলিক সম্পর্ক গভীর করার জন্য সার্ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘আমাদের মতো রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি অনেক জটিল। হাসিনা অনেক সময় ধরে ভারতের প্রতি ঝুঁকে ছিল, যার কারণে সে লম্বা সময় ক্ষমতায় থাকতে পেরেছিল। ভারতের সঙ্গে আমাদের চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স করতে হবে। আমেরিকার ট্যারিফের জন্য আমাদের একটি বিপুলসংখ্যক মানুষ সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে। এর সমাধানের জন্য আমাদের কোনো এক দেশের প্রতি ঝুঁকে পড়তে হবে। না হলে আমাদের নীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ পথ অবলম্বন করতে হবে। অথবা আমাদের হিউম্যানিটেরিয়ান পথ অবলম্বন করতে হবে।’
সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘এই সরকার অনেক কমিশন গঠন করেছে। কিন্তু পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কোনো কমিশন গঠন করে নাই। চীনের সঙ্গে আমাদের সুদৃঢ় সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্যের ঘাটতি রয়েছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এখন ভালো নেই। ভারতের ওপর আমরা ডিপেনডেন্ট হয়ে গিয়েছিলাম। ভিসা বা পানি নিয়ে আমরা বিকল্প চিন্তা করতে পারি নাই। অন্তর্বর্তী সরকার শুরুতে অনেক প্রিভোকেটিভ কথা বলেছিল। কিন্তু কেউ এই কথায় পা দেয় নাই। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসে নাই। অন্য কোনো দেশের দালাল না হয়ে আমাদের হতে হবে বাংলাদেশের দালাল। ন্যাশনাল কনসেন্সাসের ওপরে কোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে না। আমাদের প্রবাসীবান্ধব নীতি করতে হবে। আমাদের দেশের সব নীতি আমরা নির্ধারণ করব।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন বলেন, ‘আমাদের এখন মতামতের মাধ্যমে সিধান্ত নিতে হবে। সমুদ্র নিরাপত্তা শক্ত করতে হবে। রোহিঙ্গাদের ডিগ্নিফাইডভাবে রিপ্যাট্রিয়ট করতে হবে। পানিসংকট সমাধানের জন্য দর-কষাকষি করতে হবে।’
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাম্বাসেডর মুন্সি ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য থাকা দরকার। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের নীতি ঠিক করতে হবে। এলডিসি উত্তরণ খারাপ কিছু না। কিন্তু এর সঙ্গে যে দায়িত্ব আসে, তা নিতে আমরা প্রস্তুত নই। বরং আমাদের এলডিসি উত্তরণকে কাজে লাগাতে হবে। ‘‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’’ এটি ভালোভাবে প্রয়োগ করতে হবে। ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করলে আমেরিকার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঠিক হয়ে যাবে, এমন না। পররাষ্ট্রনীতি নির্ভর করে আমাদের অভ্যন্তরীণ শক্তির ওপর। এর জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিকনির্দেশনা ঠিক করতে হবে।’
মিয়ানমারের সাবেক কনস্যুলেটপ্রধান ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) মো. এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ রিপোর্ট অনুসারে আমাদের আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আরাকান আর্মির সঙ্গে শিগগির রোহিঙ্গাদের একটা সংঘাত হবে, যা বাংলাদেশের জন্য জটিলতা সৃষ্টি করবে।’
কূটনীতিক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মধ্যে পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনীতিকে এক করে দেখার একটা প্রবণতা রয়েছে। কিন্তু এই দুটি এক নয়। গণতান্ত্রিক পররাষ্ট্রনীতির জন্য জনগণকে প্রাধান্য দিতে হবে। জুলাই বিপ্লবের পরে মানুষের মধ্যে দাবি উঠেছে যে, ভারত ও বাংলাদেশের সব ট্রিটি জনগণের সামনে আনতে হবে। এটি তাড়াতাড়ি করা উচিত।’
নৈতিক সমাজ বাংলাদেশের সংগঠক মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন বলেন, বাংলাদেশে কোনো ফরেন পলিসি ইন্টেলিজেন্স নেই। ভারত, আমেরিকা ও ইসরায়েল সবারই ফরেন পলিসি ইন্টেলিজেন্স রয়েছে।
অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের ট্রাক টু ডিপ্লোম্যাসি করতে হবে। ‘‘ফ্রেন্ডশিপ টু অল, ম্যালিস টু নান’’ হয়ে গিয়েছে ফ্রেন্ডশিপ টু ওয়ান। আমেরিকা আগে আমাদের বলেছিল, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক নরমাল করতে। এখন নন-ডিসক্লোজারের মধ্যে এটি চলে আসতে পারে। তখন আমাদের কিছু করার থাকবে না।’
ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘সরকার পতনের পরও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এখনো আগের লোকেরা বহাল রয়েছে। এটি ভালেো নয়। আগের সরকার দাসত্ব পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করত। অন্তর্বর্তী সরকারের জবাবদিহি থাকতে হবে। নন-ডিসক্লোজার নীতি করাটা ঠিক হয়নি। ভারতের সঙ্গে নদীর পানিবণ্টন কীভাবে হবে, তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। ভারত, আমেরিকা বা চীনের সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতির ব্যালেন্স করতে হবে। ভারত একটা রিয়েলিটি। ভারতের সঙ্গে আমাদের নতুন সম্পর্কটা কেমন হবে, তা নির্ধারণ করতে হবে।’
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআইপিএসএস) সিনিয়র গবেষণা ফেলো সাফকাত মুনির বলেন, ‘পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তানীতি নিয়ে কোনো কমিশন হয়নি। পররাষ্ট্রনীতি গতিশীল হবে না, যতক্ষণ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতিশীল হবে। গত ১৬ বছর আমাদের কোনো পররাষ্ট্রনীতি ছিল কি না, তা নিয়ে আমি সন্দিহান। কূটনীতিবিদদের বেতন অপেক্ষাকৃত অনেক কম অন্য দেশের তুলনায়। যোগ্য ব্যক্তিদের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।’
এবি পার্টির সহকারী সদস্যসচিব ও উইমেন উইংয়ের কো-অর্ডিনেটর ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নীতি ‘‘সবার সঙ্গে বন্ধুত, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’’ হয়ে গিয়েছে ফ্রেন্ডশিপ টু ওয়ান। আমরা কোনো বেসিক পররাষ্ট্রনীতি দাঁড় করাতে পারি নাই। ভারত, চীন বা আমেরিকাকে উপেক্ষা করার মতো অবস্থা আমাদের নেই।’
সংলাপে আরও অংশ নেন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক পারভেজ করিম আব্বাসী, সাবেক কূটনৈতিক এম শফিউল্লাহ, সেন্টার ফর নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশিজের চেয়ারম্যান এম এস সেকিল চৌধুরী প্রমুখ।
কমিটিতে সভাপতি হয়েছেন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুলতান আহমেদ রাহী। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সংগীত বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সরদার জহুরুল ইসলাম।
১৬ মিনিট আগেআমরা ওই বাড়ি কেনার পর থেকে প্রতি মাসে ২২ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে তিনতলা বাসার নিচতলায় থাকতেন খাইরুল মোল্লার পরিবার। তবে গত এপ্রিল মাসের পর থেকে তারা আর ভাড়া দিচ্ছে না। ভাড়া চাইতে গেলে উল্টো হুমকি দেয় এবং প্রতি মাসে তাদের ৫০ হাজার টাকা দিতে বলে। কারণ জানতে চাইলে তারা এই বাসাসহ জায়গা তাদের বলে দাবি করে।
৩১ মিনিট আগেআজ সকাল সাড়ে ৭টায় রবীন্দ্রসরোবর থেকে শুরু হওয়া র্যালিতে ১৯০ জন সাইক্লিস্ট এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
৩৫ মিনিট আগেটানা বৃষ্টির মধ্যে রাজধানীর শাহবাগে আজ শুক্রবারও (১ আগস্ট) অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে। জুলাই সনদ ঘোষণা, বাস্তবায়ন ও তা স্থায়ী বিধানে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে জুলাই যোদ্ধাদের এই অবস্থান কর্মসূচি।
৪৩ মিনিট আগে