Ajker Patrika

ঠাকুরগাঁওয়ে মিশ্র ফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে বেকার যুবকদের 

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬: ৪১
ঠাকুরগাঁওয়ে মিশ্র ফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে বেকার যুবকদের 

ঠাকুরগাঁওয়ে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মিশ্র ফল চাষ। বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন জাতের ফল চাষের পাশাপাশি বেড়েছে ফলচাষির সংখ্যা। বিশেষ করে মিশ্র ফলবাগান গড়তে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন স্থানীয় বেকার যুবকেরা। পতিত জমিতে দেশীয় ফলের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের ফল চাষ করে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ হচ্ছে তাঁদের। 

সদর উপজেলার ছিট চিলারং এলাকার যুবক পারভেজ খান উপজেলার বুড়িবাঁধ এলাকায় সাড়ে চার একর জমি ১০ বছরের জন্য লিজ নিয়ে গড়ে তুলেছেন মিশ্র ফলের বিশাল বাগান। একসঙ্গে পেয়ারা, কুল, পেঁপে, ডালিম ও সবেদা আবাদ করে দারুণ সফলতা পেয়েছেন তিনি। আয় করছেন লাখ লাখ টাকা। ভালো ফলন এবং লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরই এলাকায় বাড়ছে পতিত জমিতে মিশ্র ফলবাগানের সংখ্যা। এতে কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হচ্ছে। 

পারভেজ খান বলেন, ‘পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে ২০১৯ সালে পড়াশোনা শেষ করে ইলেকট্রনিক ব্যবসা শুরু করি। এরপর করোনা চলে আসলে ব্যবসায় ভাটা পড়ে। একসময় লোকসানের মুখে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। পরে এক বন্ধুর পরামর্শে দুই একর জমিতে প্রথমে ফলের বাগান গড়ে তুলি। বর্তমানে চার একর জমিতে বাগান করেছি।’ 

পারভেজের মতো, ৩০ প্রজাতির ফলের বাগান করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের লধাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আবু বক্কর সিদ্দিক। বাগান করে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছেন অনেক বেকার যুবক। পড়াশোনার পাশাপাশি এমন উদ্যোগে সফল হওয়ায় সাড়া ফেলেছে এলাকাজুড়ে। 

তাঁর বাগানে শোভা পাচ্ছে লেবু, বরই, ত্বিন, আপেল, দার্জিলিং কমলাসহ বিভিন্ন ধরনের ফল। তাঁর দেখাদেখি মিশ্র ফলের বাগান করতে আগ্রহী অনেকেই তাঁর গাছের ডাল কিনে কলম চারা করছেন। 

আবু বক্কর বলেন, ‘২০১৮ সালে শখ থেকেই ফলের বাগান শুরু করি। পরে স্থানীয় বাজারে ফলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় গাছের প্রজাতি ও জায়গার পরিমাণ বাড়াতে থাকি। অন্য ফসলের তুলনায় মিশ্র ফল চাষ অধিক লাভজনক। মিশ্র ফলবাগানে তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। একই জমিতে কম সময়ে অধিক ফল ও ফসল হওয়ায় অত্যন্ত লাভজনক।’ 

বক্করের প্রতিবেশী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘একটা সময় ছিল, আমাদের এলাকায় ধান ও সবজি ছাড়া কিছুই হতো না। এখন বক্করের দেখাদেখি গ্রামের প্রায় প্রতিটি কৃষক কুল, কমলা, পেঁপেসহ নানা ধরনের ফল চাষ করছি। লাভবানও হচ্ছি।’ 

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল আজিজ বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরেই এ জেলার মানুষের মধ্যে ফলের বাগান করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বহু কৃষক পারভেজ ও আবু বক্করের মতো মিশ্র ফলবাগান গড়ে তোলার জন্য আমাদের কাছে পরামর্শ নিতে আসছেন। আমরা তাঁদের পরামর্শ দিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত