Ajker Patrika

ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দুর্ভোগে শতাধিক পরিবার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৪, ১৩: ৫৩
Thumbnail image

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলা সদরের যাত্রাপুর ও উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার নিম্নাঞ্চলের বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করে শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বাড়ছে ধরলা ও দুধকুমার নদ-নদীর পানি। এ অবস্থায় এসব নদ-নদীর নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। 

গতকাল সোমবার দুপুরে পাউবো বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, দেশের উত্তরাঞ্চল ও এর উজানে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এই সময়ে উত্তরাঞ্চলের দুধকুমার, ধরলা ও তিস্তা নদীসমূহের পানি বেড়ে কয়েকটি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। 

পাউবোর কুড়িগ্রাম নিয়ন্ত্রণকক্ষ জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) দুধকুমার অববাহিকার পাটেশ্বরী পয়েন্টে ১৪১ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার বেড়েছে। একই সময়ে ধরলার পানি কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার দিকে ধাবিত হচ্ছে। 

ব্রহ্মপুত্রে অব্যাহত পানি বাড়ার কারণে এর নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সঙ্গে চলছে তীব্র ভাঙন। উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চর বালাডোবা, বতুয়াতলী মূসার চর, ব্যাপারীপাড়া নতুন চর এবং পূর্ব ও পশ্চিম মশালের চরের অর্ধশতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। বাধ্য হয়ে এসব পরিবারের অনেকে নৌকায় আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে যাচ্ছে। ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী মোল্লাহাট বাজার এলাকায় শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। বাজার রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

বতুয়াতলী মূসার চরের বাসিন্দা শরিফুল বলেন, ‘আমাদের গ্রামে ৪০টিরও বেশি পরিবারের বসবাস। সব পরিবারের ঘরের ভেতরে পানি। বাইরে চারপাশে পানি। পানি বাড়তে আছে।’ 

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতিতে পানিবন্দী পরিবারে খাদ্যসহায়তা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। এ ছাড়া দুর্গত পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’ 

এদিকে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে যাত্রাপুরের রলাকাটা চরে একের পর এক বসতভিটা বিলীন হচ্ছে। চরের উত্তর দিকে অব্যাহত ভাঙনে গত এক সপ্তাহে অন্তত ১৫ পরিবার বাস্তুহারা হয়েছে। ওই গ্রামের বাসিন্দা বেলাল বলেন, ‘বন্যার পানি এখনো বাড়িঘরে প্রবেশ করেনি। তবে ভাঙনে এলাকার মানুষ দিশেহারা। রলাকাটার পশ্চিমে মাঝের চর ও চিড়াখাওয়ার চরের আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বাড়তে থাকলে দু-এক দিনের মধ্যে বাড়িঘরে ঢুকবে। 

যাত্রাপুরের কালির আলগা ও গোয়াইলপুরির চরে গত দুই দিনে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সেখানকার বেশ কিছু পরিবারের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। বেশির ভাগ পরিবারের বসতবাড়ির চারপাশে পানি। 

গোয়াইলপুরির চরের বাসিন্দা মাহবুব বলেন, ‘পরিস্থিতি খারাপ। বন্যার কবলে পইড়া গেছি। ঘরবাড়িতে পানি ঢুকতাছে। আইজ-কাইলের মধ্যে সব ঘরবাড়িতে পানি ঢুইকা পড়ব।’ 

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা ত্রাণসহায়তা বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। জেলার চার শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবারও পানি বাড়ার কারণে যেসব এলাকা প্লাবিত হচ্ছে আমরা সেদিকে বাড়তি নজর রাখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত