Ajker Patrika

মুদি কর্মচারী থেকে ‘সাম্রাজ্যের মালিক’ সাড়ে ৬ কেজি হেরোইনসহ গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১৮: ৩৭
যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার মাদক কারবারি তারেক হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার মাদক কারবারি তারেক হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৩ লাখ টাকাসহ মাদক কারবারি তারেক হোসেনকে (৩৬) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার মাদারপুর মহল্লায় নিজের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাড়ে ৬ কেজি হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে; যার আনুমানিক মূল্য সাড়ে ৬ কোটি টাকা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে এই অভিযান চালায়।

স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, মাদক কারবারি তারেক হোসেন ২০১৭ সাল পর্যন্ত এলাকায় মুদিদোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। হেরোইনের সাম্রাজ্যে ঢুকে পড়েন ২০১৮ সালে। হয়ে উঠেছিলেন গোদাগাড়ীর অন্যতম শীর্ষ মাদক কারবারি। তবে ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এখন তিনি বিপুল সম্পত্তির মালিক। কিনেছেন ৬০ থেকে ৭০ বিঘা জমি। রাজশাহী শহরে কিনেছেন ফ্ল্যাট ও জমি। ১৫০ বিঘা জমিতে রয়েছে মাছের খামার। আছে মার্কেট, চারটি দোকান ও দুটি গরুর খামার। বেনামে আরও সম্পদ আছে তাঁর।

মঙ্গলবার তারেককে গ্রেপ্তারের অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহা. জিললুর রহমান ও সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট আবু সাদাত মো. সায়েম। অভিযানে অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা ও ২৪ সেনাসদস্য অংশ নেন।

এ ব্যাপারে মঙ্গলবার বিকেলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. গোলাম আজম জানান, অধিদপ্তর ও সেনাবাহিনীর যৌথ দল সকালে মাদারপুর মহল্লায় তারেকের বাড়ি ঘেরাও করে। এ সময় তারেক টাকার ব্যাগ নিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাঁকে হাতেনাতে ধরা হয়। এরপর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারেক স্বীকার করেন, গোদাগাড়ীর তিরিন্দা ভাজনপুর গ্রামে তাঁর নিজস্ব একটি মার্কেট ও গরুর খামার আছে এবং সেখান থেকে তিনি আগে হেরোইনের কারবার পরিচালনা করতেন। তখন তাঁকে ওই মার্কেটে নিয়ে গিয়ে তল্লাশি করা হয়। এ সময় ওই মার্কেটের একটি স্টোর রুমে রাখা সাড়ে ৬ কেজি হেরোইন পাওয়া যায়।

১৩ লাখ টাকা ও মাদকসহ গ্রেপ্তার মাদক কারবারি তারেক হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৩ লাখ টাকা ও মাদকসহ গ্রেপ্তার মাদক কারবারি তারেক হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোলাম আজম বলেন, তারেক হেরোইন চোরাচালানের গডফাদার। চক্রের অন্য হোতাদেরও নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আগামীতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এ সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মাসুদ হোসেন বলেন, আফগানিস্তানে আফিম নিষিদ্ধ হয়েছে। সেটা পুরোপুরি মিয়ানমারে শিফট হয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের বর্ডার আছে, তাই দেশে মাদক ঢোকা সহজ হয়েছে। তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বসে নেই। এখন মাদক ধরা পড়ছে বেশি, আইনের আওতায় আসছে কারবারিরা।

সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহা. জিললুর রহমান জানান, তারেক তাঁদের নজরদারিতে ছিলেন। তারেকের বিরুদ্ধে তিনি বাদী হয়ে মামলা করবেন। এরপর আসামিকে থানায় হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত