Ajker Patrika

যৌবনে বড়াল, তীরে প্রাণচাঞ্চল্য

প্রতিনিধি, চারঘাট (রাজশাহী)
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২১, ১৫: ১৬
Thumbnail image

এই বর্ষায় যৌবন ফিরে পেয়েছে পদ্মার শাখা নদ বড়াল। বেগে বয়ে চলেছে এই নদ। নতুন পানিতে মাছ ধরতে নেমেছেন জেলেরা। নদে ফেলা হচ্ছে সারি সারি চাঁই, খোপ ও জাল।

বড়াল নদের উৎপত্তিস্থল রাজশাহীর চারঘাটে। এই নদ পদ্মা ও যমুনার সংযোগ রক্ষাকারী হিসেবে পরিচিত। শুষ্ক মৌসুমে নদটি শুকিয়ে যায়। তখন এর বুকে ফসলের আবাদ হলেও, বর্ষায় কানায় কানায় ভরে উঠেছে এই নদ। এতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে জেলেসহ তীরের বাসিন্দাদের মধ্যে।

বড়াল রাজশাহীর চারঘাট থেকে নাটোর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যমুনায় মিশেছে পাবনার বেড়া উপজেলার কাছে। বড়াল চলনবিলের প্রধান নদ। বড় থেকে বড়াল শব্দটির উৎপত্তি বলে ধারণা করা হয়। বড়ালকে ‘বড়হর’ অর্থাৎ পদ্মার বড় হাওরও বলা হয়ে থাকে। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪৭ কিলোমিটার ও প্রস্থ প্রায় ১২৫ মিটার।

বড়াল ও পদ্মার মোহনা, চারঘাট স্লুইসগেট ও বাঘার আড়ানী অংশের বেশির ভাগ স্থান এখন ভ্রমণপিপাসুদের আনন্দ দেয়। নীল আকাশের নিচে নদটি বয়ে চলেছে।

বড়াল বর্ষা মৌসুমে রূপ ছড়িয়ে দিলেও পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে মরে যেতে থাকে। দখলদারেরা নদীর পাড় দখল এবং মাটি কেটে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে দূষিত বর্জ্য ও আবর্জনা ফেলে পানি দূষিত করা হয়।

বড়ালকে বাঁচাতে রাজশাহীর চারঘাট, পাবনার চাটমোহরসহ বিভিন্ন এলাকায় নদী রক্ষা কমিটি হয়েছে। কমিটির নেতারা স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে বিভিন্ন আন্দোলনও করে আসছেন। শেষে বড়ালে পদ্মার পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক রাখতে এবং নাব্য ফিরিয়ে আনতে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে নাটোরের নারদ ও মুসা খাঁ নদের আংশিক এবং চারঘাটের বড়ালের প্রবেশমুখ খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৩ কোটি ৩ লাখ টাকার প্রকল্পে নারদ, মুসা খাঁ ও বড়ালের প্রায় ১৯ দশমিক ১০ কিলোমিটার খনন করা হয়।

২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে চারঘাটে বড়ালের ইনটেক চ্যানেল খননকাজ শেষ হয়। কিন্তু বর্ষায় বড়ালে পানি যায়নি। নদ থেকে খনন করা বালু আবার নদেই চলে যায়। এ অবস্থায় শুষ্ক মৌসুমে পানিশূন্য হয়ে পড়ে বড়াল। প্রশাসনের চেষ্টায় বড়ালের অবৈধ বাঁধগুলো অপসারণ করায় এবার বর্ষায় স্রোত এসেছে এই নদে।

চারঘাট বড়াল নদ রক্ষা কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বাদশা বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমের মতো সারা বছর বড়ালে পানি থাকলেই একে বাঁচানো সম্ভব।’

বড়াল নদ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান বলেন, ‘বড়ালকে নিয়ে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রস্তুত করা হয়েছে। সেটি ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমাও দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি যদি অনুমোদন পায় তাহলে বড়াল আবারও খনন করা যাবে। স্লুইসগেটগুলো সংস্কার করা হবে। তখন স্বাভাবিক পানি প্রবাহ নিশ্চিত হবে। এতে বড়ালে সারা বছরই পানি থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত